রাজবাড়ী জেলা
রাজবাড়ী জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।

রাজবাড়ী | |
---|---|
জেলা | |
রাজবাড়ী
![]() | |
![]() বাংলাদেশে রাজবাড়ী জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪২′ উত্তর ৮৯°৩০′ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
আয়তন | |
• মোট | ১১১৮.৮০ কিমি২ (৪৩১.৯৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ১০,১৫,৫১৯ |
• জনঘনত্ব | ৯১০/কিমি২ (২৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৮.৪১ % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৭৭০০ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৮২ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুহের নাম। কলেজ সমূহ। ১.সরকারী কলেজ রাজবাড়ী। ২.সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ রাজবাড়ী। ৩.সরকারী মহিলা কলেজ, রাজবাড়ী। ৪..ডক্টর আবুল হোসেন কলেজ রাজবাড়ী।
ভৌগোলিক সীমানা
রাজবাড়ী জেলার উত্তরে পদ্মা নদী, পশ্চিম থেকে পূর্বে পদ্মা ও যমুনার সঙ্গমস্থল দৌলতদিয়ার সামান্য উত্তরে আরিচা ঘাট। পদ্মার অপর পারে পাবনা ও মানিকগঞ্জ। দক্ষিণে পদ্মার শাখা নদী গড়াই নদী, গড়াই-এর ওপারে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলা। পূর্বে ফরিদপুর ও পশ্চিমে কুষ্টিয়া। রাজবাড়ীকে ঘিরে পদ্মা, চন্দনা, গড়াই নদী ও হড়াই নদী । ২৩.৪৫° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.০৯° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে পূর্ব-পশ্চিমে দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রশস্ত এ জেলার মোট আয়তন ১,০৯২.২৮ বর্গ কিলোমিটার ।
রাজবাড়ী জেলার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
রাজবাড়ী জেলার উত্তর দিকে প্রমত্তা পদ্মা নদী হাবাসপুর-সেনগ্রাম-ধাওয়াপাড়া ঘাট পর্যন্ত সরলভাবে প্রবাহিত হয়ে রাজবাড়ী জেলা শহরের কিঞ্চিৎ পশ্চিম হতে উত্তরে বাঁক নিয়ে দৌলতদিয়া পর্যন্ত প্রবাহিত । দৌলতদিয়ার সামান্য উত্তরে আরিচার ভাটিতে পদ্মা যমুনার সাথে মিলিত হয়েছে । পদ্মার অপর পারে পাবনা ও মানিকগঞ্জ জেলা । দক্ষিণে পদ্মার শাখা গড়াই নদী । গড়াইয়ের ওপারে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলা । এ জেলার পূর্বে ফরিদপুর ও পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলা । পশ্চিমে পাংশা উপজেলার শেষ প্রান্ত গফুগ্রাম থেকে ১৫ কিঃমিঃ দুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহাসিক কুঠিবাড়ী কুষ্টিয়ার শিলাইদহ । জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রাচীন নদী হড়াই, চত্রা ও চন্দনা মৃত প্রায় ।
জেলার নাতিশীতোষ আবহাওয়ায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৩ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস । বৃষ্টিপাত ২২.২৪ থেকে ৩৭.৭৭ মিঃমিঃ । বাতাসের আদ্রতা ৭৫ শতাংশ । ভৌগলিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে রাজবাড়ী জেলার রয়েছে নিজস্ব স্বকীয়তা । ফকীর সন্ন্যাস আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন, মুজাহিদ আন্দোলন, ওহাবী আন্দোলন, ফরায়েজী আন্দোলন, সিপাহী বিদ্রোহসহ বৃটিশ বিরোধী বহু আন্দোলন, কমিউনিস্ট আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ আন্দোলন, রেলশ্রমিক আন্দোলন এবং সর্বোপরি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে রাজবাড়ীর ভূমিকা উল্লেখ করার মত । সাংস্কৃতিক অঙ্গণে উপ-মহাদেশ খ্যাত জলতরঙ্গ বাদক বামন দাস গুহের জন্মস্থান এই রাজবাড়ী । বিশ্বখ্যাত শিল্পী রশিদ চৌধুরীর জন্ম দিয়েছে এই জেলা । অমর কথা সাহিত্যিক বিষাদসিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন এর সমাধিও এ জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার পদমদীতে ছায়া সুনিবিড় সুশীতল পরিবেশে অবস্থিত । এ ছাড়া বহু কীর্তিমান রাজনীতিবিদ ও আমলার পূণ্য জন্মভূমি এই রাজবাড়ী । ক্রীড়াঙ্গণেও রয়েছে এ জেলার গৌরবময় অতীত । বর্তমানেও এ জেলার ছেলেমেয়েরা বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের সাঁতার, এ্যাথলেটিকস,ভলিবল, ফুটবল, ক্রিকেট প্রভৃতি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে বিজয়ী হয়ে জেলার সম্মান বৃদ্ধি করেছে । সাঁতারে রাজবাড়ীর মেয়েরা জাতীয় পরিমন্ডল পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেছে ।
১,০৯২.২৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ জেলার জনসংখ্যা ৯,৫২,২৮০ জন । জনসংখ্যার ৯০ ভাগ মানুষ মুসলিম । দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায় সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু । এ ছাড়া খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীরাও এ জেলায় বসবাস করে । জেলার মানুষ ধর্মপ্রাণ হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী । অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভর । যুগের বিবর্তন ও সামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবিকার ব্যাপক পরিবর্তন হলেও আজও এ অঞ্চলের মানুষ কৃষির উপর নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি । শতকরা ১০ ভাগ স্বচ্ছল এবং শতকরা ২০ ভাগ মধ্যবিত্ত । সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এ জেলায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু শিল্প-কল-কারখানা গড়ে উঠলেও তা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেনি । বৃহৎ শিল্পের মধ্যে গোয়ালন্দ টেক্সটাইল মিল নামে একটি সুতাকল, রাজবাড়ী জুট মিল, সুনিপূন অর্গানিক্স নামে একটি রেক্টিফাইড স্পিরিট প্রস্তুতকারী কারখানা অন্যতম । এ ছাড়া শিল্পনগরী বিসিক এর অধীনে বেশ কিছু ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা রয়েছে । মূলতঃ কৃষি নির্ভর হলেও চাকুরী, ব্যবসা, দিনমজুরি করা এ জেলার মানুষের অন্যতম পেশা । কামার, কুমার, তাতী, জেলে ও হরিজন প্রভৃতি পেশার লোকজনও এ জেলায় বসবাস করে । কিছুসংখ্যক অবাঙ্গালী পরিবারও এ জেলায় বসবাস করে ।
রাজবাড়ী জেলার অভ্যন্তরীণ ও বহিরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের জন্য সড়ক, রেলপথ ও নৌ-পথ রয়েছে । দৌলতদিয়া হতে ফরিদপুরগামী মহাসড়কের মাধ্যমে বরিশাল, যশোর, খুলনা তথা দক্ষিণাঞ্চলে এবং রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়কের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের সাথে সড়কপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে । রাজবাড়ী হতে রেলপথেও খুলনা,রাজশাহী, রংপুর তথা উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে । এই রেলপথে প্রতিদিন স্থানীয় এবং আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে । নৌপথেও রাজবাড়ী হতে পার্শ্ববর্তী জেলায় যোগাযোগের ব্যবস্থা আছে । দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া-আরিচা, দৌলতদিয়া-নটাখোলা রুটে মানিকগঞ্জ, ঢাকা,ফরিদপুর ও তৎপার্শ্ববর্তী জেলা এবং জৌকুড়া ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে লঞ্চ ও ফেরী পারাপারের মাধ্যমে পাবনা তথা উত্তরবঙ্গের সংগে যোগাযোগের ব্যবস্থা আছে ।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
রাজবাড়ী জেলায় সর্বমোট ৪২টি ইউনিয়ন, ৩ টি পৌরসভা ও ৫টি উপজেলা রয়েছে।[2] উপজেলাগুলো হচ্ছেঃ
নামকরণের ইতিহাস
রাজবাড়ী যে কোন রাজার বাড়ীর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। রাজার নামে রাজবাড়ী। রাজবাড়ীর সেই রাজা নেই। কিন্তু রাজবাড়ী জেলা রাজার সেই ঐতিহ্য ধারণ করে আছে আজো। পদ্মা, হড়াই, গড়াই, চন্দনা, কুমার আর চত্রা পলিবাহিত এক কালের 'বাংলার প্রবেশদ্বার' বলে পরিচিত গোয়ালন্দ মহকুমা আজকের রাজবাড়ী জেলা । ১৯৮৪ সালের ১ লা মার্চ গোয়ালন্দ মহকুমা রাজবাড়ী জেলায় রুপান্তরিত হয় । তবে কখন থেকে ও কোন রাজার নামানুসারে রাজবাড়ী নামটি এসেছে তার সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলার রেল ভ্রমণ পুস্তকের (এল.এন. মিশ্র প্রকাশিত ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ক্যালকাটা ১৯৩৫) একশ নয় পৃষ্ঠায় রাজবাড়ী সম্বন্ধে যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, ১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে নবাব শায়েস্তা খান ঢাকায় সুবাদার নিযুক্ত হয়ে আসেন। এ সময় এ অঞ্চলে পর্তুগীজ জলদস্যুদের দমনের জন্যে তিনি সংগ্রাম শাহকে নাওয়ারা প্রধান করে পাঠান। তিনি বানিবহতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন এবং লালগোলা নামক স্থানে দুর্গ নির্মাণ করেন। এ লালগোলা দুর্গই রাজবাড়ী শহরের কয়েক কিলোমিটার উত্তরে বর্তমানে লালগোলা গ্রাম নামে পরিচিত। সংগ্রাম শাহ্ ও তার পরিবার পরবর্তীকালে বানিবহের নাওয়ারা চৌধুরী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
এল.এন. মিশ্র উক্ত পুস্তকে উল্লেখ করেন যে, রাজা সংগ্রাম শাহের রাজদরবার বা রাজকাচারী ও প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী অফিস বর্তমান রাজবাড়ী এলাকাকে কাগজে কলমে রাজবাড়ী লিখতেন (লোকমুখে প্রচলিত)। ঐ পুস্তকের শেষের পাতায় রেলওয়ে স্টেশন হিসেবে রাজবাড়ী নামটি লিখিত পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশনটি ১৮৯০ সালে স্থাপিত হয়। ঐতিহাসিক আনন্দনাথ রায় ফরিদপুরের ইতিহাস পুস্তকে বানিবহের বর্ণনায় লিখেছেন - নাওয়ারা চৌধুরীগণ পাঁচথুপি থেকে প্রায় ৩০০ বছর পূর্বে বানিবহে এসে বসবাস শুরু করেন। বানিবহ তখন ছিল জনাকীর্ণ স্থান। বিদ্যাবাগিশ পাড়া, আচার্য পাড়া, ভট্টাচার্য পাড়া, শেনহাটিপাড়া, বসুপাড়া, বেনেপাড়া, নুনেপাড়া নিয়ে ছিল বানিবহ এলাকা। নাওয়ারা চৌধুরীগণের বাড়ি স্বদেশীগণের নিকট রাজবাড়ী নামে অভিহিত ছিল। মতান্তরে রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে রাজবাড়ীর নামকরণ হয়। রাজা সূর্য কুমারের পিতামহ প্রভুরাম নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার রাজকর্মচারী থাকাকালীন কোন কারণে ইংরেজদের বিরাগভাজন হলে পলাশীর যুদ্ধের পর লক্ষীকোলে এসে আত্মগোপন করেন। পরে তার পুত্র দ্বিগেন্দ্র প্রসাদ এ অঞ্চলে জমিদারী গড়ে তোলেন। তারই পুত্র রাজা সুর্য কুমার ১৮৮৫ সালে জনহিতকর কাজের জন্য রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন। রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ করা হয় ১৮৯০ সালে। বিভিন্ন তথ্য হতে জানা যায় যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে করার দাবি তোলা হলে বানিবহের জমিদারগণ প্রবল আপত্তি তোলেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে যে স্থানটিতে রাজবাড়ী রেল স্টেশন অবস্থিত উক্ত জমির মালিকানা ছিল বানিবহের জমিদারগণের। তাদের প্রতিবাদের কারণেই স্টেশনের নাম রাজবাড়ীই থেকে যায়। এ সকল বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হয় যে, রাজবাড়ী নামটি বহু পূর্ব থেকেই প্রচলিত ছিল। এলাকার নাওয়ারা প্রধান, জমিদার, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিগণ রাজা বলে অভিহিত হতেন। তবে রাজা সূর্য কুমার ও তার পূর্ব পুরুষগণের লক্ষীকোলের বাড়ীটি লোকমুখে রাজার বাড়ি বলে সমধিক পরিচিত ছিল। এভাবেই আজকের রাজবাড়ী।
জেলার পটভূমি
বর্তমান রাজবাড়ী জেলা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভের পর উত্তর পশ্চিম ফরিদপুর (বর্তমান রাজবাড়ী জেলার কিয়দংশ) অঞ্চল রাজশাহীর জমিদারীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। নাটোর রাজার জমিদারী চিহ্ন হিসেবে রাজবাড়ী জেলার বেলগাছিতে রয়েছে স্নানমঞ্চ, দোলমঞ্চ। পরবর্তীতে এ জেলা এক সময় যশোর জেলার অংশ ছিল। ১৮১১ সালে ফরিদপুর জেলা সৃষ্টি হলে রাজবাড়ীকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এছাড়াও রাজবাড়ী জেলার বর্তমান উপজেলাগুলো অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাংশা থানা এক সময় পাবনাজেলার অংশ ছিল। ১৮৫৯ সালে পাংশা ও বালিয়াকান্দিকে নবগঠিত কুমারখালী মহকুমার অধীনে নেয়া হয়। ১৮৭১ সালে গোয়ালন্দ মহকুমা গঠিত হলে পাংশা ও রাজবাড়ী এ নতুন মহকুমার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং রাজবাড়ীতে মহকুমা সদর দফতর স্থাপিত হয়। ১৮০৭ সালে ঢাকা জালালপুরের হেড কোয়ার্টার ফরিদপুরে স্থানান্তর করা হয় এবং পাংশা থানা ফরিদপুরের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৫০ সালে লর্ড ডালহৌসির সময় ঢাকা জালালপুর ভেঙ্গে ফরিদপুর জেলা গঠিত হলে গোয়ালন্দ তখন ফরিদপুরের অধীনে চলে যায়। তখন পাংশা, বালিয়াকান্দি পাবনা জেলাধীন ছিল। ১৯৮৩ সালে সরকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে প্রতিটি থানাকে মান উন্নীত থানায় রূপান্তরিত করলে রাজবাড়ীকে মান উন্নীত থানা ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৩ সালের ১৮ই জুলাই থেকে সরকার অধ্যাদেশ জারী করে সকল মান উন্নীত থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করার ফলে রাজবাড়ী উপজেলা হয়। গোয়ালন্দ মহকুমার প্রশাসনিক দপ্তর রাজবাড়ীতে থাকায় অবশেষে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ সকল মহকুমাকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সে থেকে রাজবাড়ী জেলায় রূপান্তরিত হয়।
অর্থনীতি
রাজবাড়ি জেলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর।জেলাটিতে ধান,পাট,গম,ইক্ষু,পিঁয়াজ,তামাক এবং ডাল জাতীয় কৃষিজাত পণ্য উৎপাদিত হয়।জেলাটি শিল্পে সমৃদ্ধ না হলেও অর্থনীতিতে অবদান রয়েছে।
চিত্তাকর্ষক স্থান
- রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের লাল ভবন - ১৮৭৮ সালে বাণিবহের জমিদার গিরিজা শংকর মজুমদার ও তার ভাই অভয় শংকর মজুমদার প্রতিষ্ঠা করেন; যা ইতোমধ্যে প্রত্নতত্ত অধিদপ্তর এই স্থাপনাকে সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে;[3]
- মেইন স্ট্রিটপ্রধান সড়ক, রাজবাড়ী
- রাজবাড়ি সরকারি কলেজ
- ধুঞ্চি গোদার বাজার (পদ্মানদী)

- শাহ পাহলোয়ানের মাজার;
- দাদ্শী মাজার শরীফ - রাজবাড়ী শহর থেকে ১ কিঃমিঃ পূর্বে;
- জামাই পাগলের মাজার - রাজবাড়ী শহরের ৬ কিঃমিঃ দক্ষিণ-পূর্বে আহলাদিপুর মোড়;
- নলিয়া জোড় বাংলা মন্দির - বালিয়াকান্দি থানার নলিয়া গ্রাম;
- সমাধিনগর মঠ - বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়ন;
- রথখোলা সানমঞ্চ - বেলগাছি;
- নীলকুঠি;
- মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র - পদমদী;
- দৌলতদিয়া ঘাট;
- চাঁদ সওদাগরের ঢিবি;
- কল্যাণদিঘি;
- গোয়ালন্দ ঘাট
- মুকুন্দিয়া জমিদার বাড়ি
বিশিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব
- কাজী মোতাহার হোসেন বাংলাদেশী পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ,
- মীর মোশাররফ হোসেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক,
- রশিদ চৌধুরী চিত্রশিল্পী এবং অধ্যাপক,
- রোকনুজ্জামান খান লেখক ও সংগঠক ছিলেন,
- রোজিনা (অভিনেত্রী),
- মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী।[4]
- সোহেলী আক্তার একজন বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার
- খবিরুজ্জামান- বীর বিক্রম
- কাজী আবদুল ওদুদ একজন বাংলাদেশী প্রাবন্ধিক, বিশিষ্ট সমালোচক, নাট্যকার
- কাঙালিনী সুফিয়া,বালিয়াকান্দি।
- মৌলভি তমিজউদ্দিন খান মৌলভি তমিজউদ্দিন খান (১৮৮৯-১৯৬৩) ছিলেন
ব্রিটিশ ভারতের একজন বহুল পরিচিত বাঙালি রাজনীতিবিদ। পাকিস্তানের গণপরিষদ (১৯৪৮-৫৪) ও জাতীয় পরিষদের (১৯৬২-৬৩) স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
- ডঃ মোঃ আব্দুল ওহাব -
,,,,,পরিচালক ,,,,,,
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিউটের
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে রাজবাড়ী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১২ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)। "রাজবাড়ী জেলার উপজেলাসমূহের ইউনিয়নগুলোর তালিকা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৬ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)। "রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যাড়য়ের লাল ভবনের ঐতিহ্য"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - টেমপ্লেট:ওয়েবcite উদ্ধৃতিweb