বাজিতপুর উপজেলা
বাজিতপুর উপজেলা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।এই উপজেলায় বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজ গুলোর মধ্যে অন্যতম জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অবস্থিত।
বাজিতপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() বাজিতপুর | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৩′১৬″ উত্তর ৯০°৫৭′১৬″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | কিশোরগঞ্জ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ১৯৩.৭৬ কিমি২ (৭৪.৮১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (1991) | |
• মোট | ১,৯৭,০৮১ |
• জনঘনত্ব | ১০০০/কিমি২ (২৬০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৪৮ ০৬ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
কিশোরগঞ্জ জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত বাজিতপুর উপজেলার উত্তরে কটিয়াদি উপজেলা, নিকলী উপজেলা এবং অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে কুলিয়ারচর উপজেলা এবং সরাইল উপজেলা, পূর্বে অষ্টগ্রাম উপজেলা এবং নাসিরনগর উপজেলা আর পশ্চিমে কটিয়াদি উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। বাজিতপুরকে ভাঁটি অঞ্চলের প্রবেশদ্বার বলা হয়।
ইতিহাস
বাজিতপুরের নামকরণ
বাজিতপুর নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে দু’টি জনশ্রুতি আছে । এর মধ্যে প্রথম টি হলো মুঘল আমলে বায়েজিদ খাঁ নামক জনৈক রাজ কর্মচারী তার অপর তিন ভ্রাতা ভাগল খাঁ, পৈলন খাঁ ও দেলোয়ার খাঁ সহ দিল্লী থেকে এসে এখানে অবস্থান করেন । কিছুদিন পর তারা বাজিতপুর এর আশে পাশে ৪টি স্থানে তাদের স্ব- স্ব বাসস্থান ঠিক করে নেওয়ার পর বায়েজিদ খাঁর বাসস্থানের নামে বায়েজিদপুর, পরে উচ্চারণ বিবর্তনে তা হয় বাজিতপুর । এইরূপে পৈলান খাঁর নামে পৈলানপুর এবং ভাগল খাঁর নামে ভাগলপুর ও দেলোয়ার খাঁর নামে দিলালপুর বলে পরিচিতি লাভ করে । দ্বিতীয় প্রকার জনশ্রুতিতে আছে বায়েজিদ খাঁ নামক মুঘল সেনাপতিকে নাকি প্রেরণ করা হয়েছিল হাওড় অঞ্চলে ঈশা খাঁর অগ্রগতিকে রোধ করার জন্য । ঈশা খাঁ তখন অবস্থান নেন হাওড় এলাকার নদী পরিবেষ্টিত ঘাগরা অঞ্চলে, তখন বায়েজিদ খাঁ অবস্থান নেন ঘোড়াউত্রা নদী হতে দুই মাইল পশ্চিমে বর্তমান বাজিতপুরে । তবে তিনি ঈশা খাঁর সাথে কখনও কোন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন কিনা কিংবা হলেও যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল সে সম্বন্ধে কোন বিস্তারিত ইতিহাস না থাকায় এটি তেমন বিম্বাস বা সমর্থনযোগ্য বলে মনে হয় না । আর তাছাড়া এখানে তার স্থায়ীভাবে বসবাসের কোন নিদর্শন পাওয়া যায়না । অস্থায়ী বাসস্থানকে প্রথমে বায়েজিদপুর, পরে বাজিতপুর নামে ডাকা শুরু হতে পারে । তবে প্রথম জনশ্রুতিটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয় ।
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা

- দেওয়ানবাড়ী মসজিদ
- পাগলা শংকরের আখড়া
- জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
- ডাক বাংলার মাঠ এবং দীঘি
- কৈলাগ ব্রিজ
- গোলক চন্দ্র সাহার বাসস্থান
- মাইজচর জামে মসজিদ
- দিলালপুর ঘাট
- ভাগলপুর
- সরারচর বিমান বন্দর
- ঘোড়াওত্রা নদী
- নাজিম ভূইঁয়া ঈদগাহ মাঠ
- বাহেরবালী দারুল উলুম নোমানিয়া মাদ্রাসা
আয়তন এবং প্রশাসনিক এলাকা

বাজিতপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৩৫সালে এবং উপজেলায় পরিনত হয় ১৯৮৩ সালে। উপজেলার আয়তন ১৯৩.৭৬ বর্গ কি.মি.।
এতে ১টি পৌরসভা, ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৯২টি মৌজা, ১৭৮টি গ্রাম আছে।
ইউনিয়ন:।
- বাজিতপুর পৌরসভা
- মাইজচর ইউনিয়ন
- দিলালপুর ইউনিয়ন
- গাজীরচর ইউনিয়ন
- হুমায়ুনপুর ইউনিয়ন
- দিঘীরপাড় ইউনিয়ন
- হালিমপুর ইউনিয়ন
- সরারচর ইউনিয়ন
- বলিয়ার্দী ইউনিয়ন
- হিলচিয়া ইউনিয়ন
- কৈলাগ ইউনিয়ন
- পিরিজপুর ইউনিয়ন
জনসংখ্যার উপাত্ত
মোট জনসংখ্যা-১৯৭,০৮১ পুরুষ-৫০.৪৯% নারী-৪৯.৫১% মুসলিম-৮৭.৪৯% হিন্দু-১২.৫১% অন্যান্য ধর্মালম্বী-০.০ %
শিক্ষা


কলেজ ২, মেডিকেল কলেজ(প্রাইভেট) ১, নার্সিং ইনিস্টউট ১, উচ্চ বিদ্যালয় ১৩, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩, মাদ্রাসা ১০, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮২, বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৪ ।
- সরকারি কলেজ
বাজিতপুর সরকারি কলেজ স্থাপিতঃ১৯৬৪ সালে সরকারি করন হয় ২০১৮ সালে।
অর্থনীতি
বাজিতপুরের অর্থনীতির অবস্থা নির্ভর করে এই অঞ্চলের কৃষি এবং ব্যবসার উপর। বাজিতপুরে প্রচুর পরিমানে আবাদি কৃষি জমি আছে। যার উপর বাজিতপুরের অর্থনীতির অনেকটা অংশ নির্ভর করে। তাছাড়া, বাজিতপুরবাসী ব্যবসার উপরও অনেকটা নির্ভরশীল।। তাছাড়াও, বাজিতপুরে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাস করে। সব মিলিয়ে বাজিতপুরের অর্থনীতি ভালোর কাতারেই গিয়ে দাঁড়ায়।
কৃতী ব্যক্তিত্ব
- মোহনকিশোর নমোদাস, (? - ২৬ মে, ১৯৩৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী।
- আবদুল মোনেম খান, (১৮৯৯ – ১৯৭১) ছিলেন সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) গভর্নর।
- জহুরুল ইসলাম, শিল্পপতি
- মজিবুর রহমান মঞ্জু [সাবেক সংসদ সদস্য] [সমাজসেবক]
- খান বাহাদুর আবদুল করিম, আইনজীবি, ব্রিটিশ সরকার ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে তাকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করেন । ১৯৪১ সালে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক তাকে দ্বিতীয় শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব দেন ।
- বীর মু্ক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফ (জন্ম: ১৯৫১, মৃত্যু বরণ করেন: ২৮শে জুলাই ২০১৮ইং, ১৪ই জিলক্বদ ১৪৩৯ হিজরী, ১৩ই শ্রাবণ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ), তিনি আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহণ করে থানা কমান্ডার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৭২-৭৩ সালে চাকসু’র সহ-সাহিত্য সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। শিক্ষকতার পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করার আগে তিনি কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রকাশিত গ্রন্থঃ ‘আমরা মরিনি’ (নাটক), ‘হৃদয়ে বৃষ্টি ঝরে’ (কাব্য)। তাছাড়া তার কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশের প্রতীক্ষায়।
বিবিধ
বাজার এবং মেলা
হাট-বাজার এর মোট সংখ্যা ২১ টি মেলা: কামের বাড়ীর মেলা
দেওয়ান বাড়ীর মেলা শিতলী মেলা বৈশাখী মেলা