কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর
কালীগঞ্জ বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
কালীগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
কালীগঞ্জ,গাজীপুর | |
ডাকনাম: কালীগঞ্জ | |
![]() ![]() কালীগঞ্জ | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৫′১৩″ উত্তর ৯০°৩৪′১৫″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | গাজীপুর জেলা |
সরকার | |
• এমপি এবং মা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। | মেহের আফরোজ চুমকি (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ২১৭.৫১ কিমি২ (৮৩.৯৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২,৩৯,৬৬০ |
• জনঘনত্ব | ১১০০/কিমি২ (২৯০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হারঅধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজে নিয়জিত। তবে ক্রমান্বয়ে এ অঞ্চলের মানুষ কৃষি কাজ ছাড়াও আন্যান্য কাজের দিকে ঝুকছে। গ্রামের সকল শিশুকে শিক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে। | |
• মোট | ৫৩.২০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ১৭২০ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৩৩ ৩৪ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
কালীগঞ্জে অবস্থান- পূর্বে ঘোড়াশাল শীতলক্ষ্যা নদী, পশ্চিমে-টঙ্গী,উত্তরে কাপাসিয়া , দক্ষিণে রূপগঞ্জ থানা ।
রাজধানী শহর সংলগ্ন টংগী শিল্প অঞ্চলের পূর্বে ২০ কিঃমিঃ দূরে ঐতিহ্যবাহী মসলিন কটন মিল ও তাঁত সমৃদ্ধ ছায়া-ঢাকা জনপদ কালীগঞ্জ উপজেলা। কালীগঞ্জ উপজেলার অবস্থান ২৩°৫২৩'হতে ২৪°২'উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৮'হতে ৯০°৩৯'পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। গাজীপুর জেলার মোট ভূমির শতকরা ১০.৫৩ ভাগ নিয়ে সর্ব ক্ষুদ্র উপজেলা কালীগঞ্জ। ২১৭.৩৪ বর্গ কিঃমিঃ আয়তন বিশিষ্ট এ উপজেলার উত্তরে কাপাসিয়া উপজেলা, দক্ষিণে রূপগঞ্জ উপজেলা ও পলাশ উপজেলা,পূর্বে পলাশ উপজেলা,পশ্চিমে রূপগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর সদর উপজেলা ও শ্রীপুর উপজেলা। পূর্ব-দক্ষিণে শীতলক্ষ্যা নদী আর পশ্চিমে বালু নদীর অবস্থান উপজেলার মনোরম আবহাওয়া ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রশাসনিক এলাকা
এ উপজেলায় ১ টি পৌরসভা ও ৮ টি ইউনিয়ন রয়েছে।
- কালীগঞ্জ পৌরসভা,
- তুমুলিয়া ইউনিয়ন,
- মোক্তারপুর ইউনিয়ন,
- নাগরী ইউনিয়ন,
- বক্তারপুর ইউনিয়ন,
- জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন,
- বাহাদুরশাদী ইউনিয়ন,
- জামালপুর ইউনিয়ন।
ইতিহাস
<ইউনিয়ন পরিচিতি>
বক্তারপুর ইউনিয়ন বক্তারপুরঃ ধারণা করা হয়, বরকত গাজীর নামানুসারে এই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছিল বরকতপুর। পরবর্তীকালে অপভ্রংশ হয়ে বক্তারপুর হয়েছে। আবার অনেকের ধারণা পূর্বে ঈশা খাঁ এখানে অনেক বজরা নিয়ে গোপনে বসবাস করতেন। তখন নাম হয় বজ্রাপুর, তা’ থেকে বক্তারপুর। স্থানটি গাজীদের সুরম্য স্থাপনায় ছিল পরিপূর্ণ । কালের করাল গ্রাসে আজ তা ভূগর্ভে প্রোথিত। জনশ্রুতি আছে ঈশা খাঁর মৃত্যুর পর তাকে এখানেই সমাহিত করা হয়। ঐতিহাসিক যোতিন্দ্র মোহন রায় উল্লেখ করেছেন ‘‘ বজ্রাপুরে পিতা ঈশা খাঁর মতই পুত্র মাসুম খাঁ নানা দুযোর্গময় সময়ে আশ্রয় নিয়েছেন এবং এখান থেকেই ছিল, পরে তার ছেলে মাসুম খাঁর আমলে মোঘলসেনা শাহবাজ খাঁ ১৫৮৩ সালে ধবংশ করেন।
- নাগরী ইউনিয়ন***
নাগরীঃ উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিম প্রামেত্ম বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত। খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত একটি ঐতিহাসিক জনগপদ যা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ খ্রীস্টান মিশনারীর মর্যাাদায় আসীন। নাগরীতে ষোড়শ শতকের শেষ দিকে পুর্তগীজ খ্রীস্টানরা আসত্মানা ফেলে এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের অনুমতিক্রমে ১৬৬৪ সনে তারা প্রথম গীর্জা স্থাপন করেন। পরে ১৬৮০ সনে পাকা ইমারত হয় নাগরীর সেন্ট নিকোলাস টলেন্টিনো চার্চ। এখান থেকে কালীগঞ্জের আঞ্চলিক বাংলা ভাষার প্রথম বাইবেল অনুদিত হয়। সর্বপ্রথম বাংলা ভাষার দ্বিভাষিক অভিধান ও প্রথম গদ্য ছাপার বইও প্রকাশিত হয়।
- কালীগঞ্জ সদর উপজেলা ***
কালীগঞ্জঃ উপজেলা সদর অবস্থিত। এখানে পূর্বে মসলিন উৎপাদিত হত। শত বছরের প্রাচীন স্কুল আর আর এন (রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ রায়) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মসলিন কটন মিল এখানে অবস্থিত। কালীগঞ্জ ছিল এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান নীল চাষের এলাকা। ইংরেজ কুঠিয়ালদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জের নীল চাষীগণ প্রতিবাদ মুখর হয়ে বিদ্রোহ করেছিল।
তুমুলিয়াঃ কালীগঞ্জ উপজেলাধীন শীতলক্ষ্যা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত। এখানে রয়েছে দেশের বিখ্যাত ১৮৪৪ খ্রীস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সাধু যোহনের চার্চ। চার্চ ভবনটি দেখতে খুবই সুন্দর।
- জামালপুর ইউনিয়ন***
জামালপুরঃ কালীগঞ্জের জামালপুর বাজারটি ছিল মসলিন সংগ্রহের কেন্দ্র। পূর্বের ধারা বহন করে হিন্দু যোগী বা নাথ এবং মুসলমান তাঁতীগণ উৎকৃষ্টি মানের তোয়ালে, লুঙ্গি, ধুতি, চাঁদর ইত্যাদি তৈরি করে।
জনসংখ্যার উপাত্ত
(ক) মোট জনসংখ্যাঃ ২,৩৯,৬৬০ জন, পুরুষ- ১,২২,৮৪০ জন, মহিলা- ১,১৬,৮২০ জন। (খ) ধর্ম ভিত্তিক জনসংখ্যাঃ মুসলিম -১,৯৫,৭৬৪, হিন্দু- ২৭,৯৭০ জন, খ্রিষ্টান- ১৫,৬৯১ জন, অন্যান্য- ১৩২ জন।(গ) মোট খানার সংখ্যা- ৪৭,৮৪১ জন্ম হারঃ ২.১৩% মোট ভোটার সংখ্যাঃ ১,৫৫,০৭০ জন, পুরুষ- ৭৮,৯৪১, মহিলা- ৭৬,১২৯ জন।
★★ এ উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করেছে প্রখ্যাত কিছু ব্যক্তিত্ব:
- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর অন্যতম আইনজীবী মইজউদ্দীন আহমেদের জন্ম এ উপজেলায়। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৪ সালে জনপ্রিয় এ ব্যক্তি শাহাদত বরন করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
- ডাকসুর সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামানের জন্মও এ উপজেলায়। তিনি আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
- ৯০' স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী তীব্র আন্দোলনের রাজপথের নেতা ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুল হক মিলনের জন্ম এখানে। তিনি সাবেক সংসদসদস্য, জেলা বিএনপির সভাপতি প্রভাবশালী নেতা।
- জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও ডাকসুর ভিপি আজম খান এখানকার সন্তান।
- সাংসদ ও সফল প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির জন্ম এ উপজেলায়। একটানা তিনবার তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন।
- সাহিত্যক আবু জাফর শামসুদ্দীনে জন্ম ও বেড়ে উঠা কালীগঞ্জ এর দক্ষিণবাগ গ্রামে। তার সমাধি এখানেই অবস্থিত।
- চলচ্চিত্র অভিনেতা ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান বা ফারুকের জন্ম এখানে।
- এশিয়ার নোবেল ম্যাগসেসে পুরস্কার(১৯৯৯) জয়ী এন্জেলা গোমেজের জন্ম কালীগঞ্জে।
(সংযোজন:আব্দুল্লাহ;জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)
আরও দেখুন
তহ্যসুত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "একনজরে কালীগঞ্জ উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১০ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই, ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)
http://www.bangladesh.gov.bd/ http://www.kaliganj.gazipur.gov.bd