মাদারীপুর সদর উপজেলা

মাদারিপুর সদর উপজেলা বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার অন্তর্গত একটি একটি উপজেলা যা ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকা বিভাগের অধীন মাদারীপুর জেলার ৪টি উপজেলার মধ্যে একটি[2] এবং মাদারীপুর জেলার কেন্দ্রে অবস্থিত। মাদারিপুর সদর উপজেলার উত্তরে শিবচর ও শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলা, দক্ষিণে কালকিনীগোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা, পূর্বে শরিয়তপুর সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে রাজৈর উপজেলা অবস্থিত। মাদারিপুর সদর উপজেলার উপর দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদী প্রবাহিত হয়েছে।

মাদারিপুর সদর
উপজেলা
মাদারিপুর সদর
বাংলাদেশে মাদারীপুর সদর উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°১০′২″ উত্তর ৯০°১২′২৩″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলামাদারীপুর জেলা
মহকুমা১৮৫৪
আয়তন
  উপজেলা২৮৩.১৪ কিমি (১০৯.৩২ বর্গমাইল)
  মহানগর১৪.২২ কিমি (৫.৪৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  উপজেলা৩,৪৫,৭৬৪
  জনঘনত্ব১২০০/কিমি (৩২০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৫১.৮০%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৭৯০০
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৫৪ ৫৪
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

মাদারিপুর পদ্মা বিধৌত নিম্ম পলল ভূমি এলাকা। এর ভু-ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি দ্বারা গঠিত। এটি একটি কৃষিপ্রধান অঞ্চল। মাদারিপুর খেজুর গুড়ের জন্য বাংলাদেশে বিখ্যাত।[3]

ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৭০ সালে মাদারিপুর থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়।[4] বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৮৪ সালে মাদারিপুর থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারিপুর সদর উপজেলার সংসদীয় আসন মাদারীপুর-২মাদারীপুর-৩ এ বিভক্ত। রাজৈর উপজেলা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-২ আসনটি জাতীয় সংসদে ২১৯ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত এবং কালকিনী উপজেলা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ আসনটি জাতীয় সংসদে ২২০ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত।

পটভূমি

আরও দেখুন: মাদারীপুর জেলা

পঞ্চদশ শতাব্দীর সুফি সাধক হযরত বদিউদ্দীন আহমেদ জিন্দা শাহ মাদার (রঃ) এর নামানুসারে এই মাদারিপুর নামকরণ করা হয়। ঐতিহাসিকদের মতে অতি প্রাচীনকালে মাদারিপুরের পূর্বাংশ ইদিলপুর এবং পশ্চিম অংশ কোটালীপাড়া নামে পরিচিত ছিল। একসময় এ অঞ্চলের প্রশাসনিক নাম ছিল নাব্যমন্ডল। খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে ইদিলপুর ও কোটালীপাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত ছিল। গ্রিকবীর আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের সময় ৩২৭ খ্রিস্টপূর্বে কোটালীপাড়া অঞ্চলে গঙ্গারিডাই জাতি স্বাধীনভাবে রাজত্ব করত। তারপর এ অঞ্চল (৩২০-৪৯৬ খ্রিঃ) গুপ্ত সম্রাটদের অধীনে ছিল। ৫০৭-৮ খ্রীষ্টাব্দের কিছু আগে রাজত্ব করেছেন দ্বাদশাদিত্য - মহারাজাধিরাজ বৈন্যগুপ্ত নামক এক রাজা। ৫৪০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করছেন গোপচন্দ্র, ধর্মাদিত্য এবং নরেন্দ্রাদিত্য সমাচারদেব।[5] বাংলার স্বাধীন শাসক শশাঙ্কের মৃত্যুর পর খড়গ বংশ ও দেব রাজবংশ এ অঞ্চল শাসন করে। পাল রাজবংশের (৭৫০-১১৬২খ্রিঃ) রাজা দ্বিতীয় বিগ্রহপালের রাজত্বকালে (৯৬৯–৯৯৫খ্রিঃ) হরিকেলের (পূর্ব ও দক্ষিণ বাংলা) কান্তিদেব ‘মহারাধিরাজ’ উপাধি গ্রহণ করে একটি পৃথক রাজ্য স্থাপন করেন এবং এই অঞ্চল শাসন করে। পরবর্তীকালে চন্দ্র রাজবংশ দশম ও এগার শতকে স্বাধীনভাবে এই অঞ্চল শাসন করে।[6] সেন রাজবংশের (১০৯৮-১২৩০খ্রিঃ) পতনের পর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়, মাদারিপুর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের অধীনে ছিল।

সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহ শাহ (১৪৮১-১৪৮৫ খ্রিঃ) ফরিদপুর ও চন্দ্রদ্বীপের একাংশ দখল করে ফতেহাবাদ পরগনা গঠন করেন। সুলতান হুসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯ খ্রিঃ) ফতেহাবাদের জনপ্রিয় শাসক ছিলেন। ১৫৩৮ হতে ১৫৬৩ সাল পর্যন্ত শেরশাহ ও তার বংশধরগণ বাংলা শাসন করেন। ১৫৬৪ হতে ১৫৭৬ সালে পর্যন্ত কররানি বংশ বাংলার রাজত্ব করে, তারপর ১৫৭৬ হতে ১৬১১ সাল পর্যন্ত বারোভূঁইয়ার অন্যতম বিক্রমপুরের চাঁদ রায়, কেদার রায় এবং বাকলার কন্দর্প রায়, রামচন্দ্র রায়ের অধীনে ছিল এ অঞ্চল। মুঘল সাম্রাজ্যনবাবী শাসন চলে ১৭৬৫ সাল পর্যন্ত।[7] মুঘল আমলে সম্রাজ্যকে ১২টি সুবায় বিভক্ত করা হয়। সুবা বাংলাকে ১৬টি সরকারে ভাগ করা হয়। ফতেহাবাদ সরকার ছিল সুবা বাংলার তৃতীয় সারকার। ফতেহাবাদ সরকারের অধীনে ৩১টি মহাল বা পরগনার মধ্যে ১৯তম মহাল বা পরগনার নাম ছিল জালালপুর, যা বর্তমান মাদারিপুর সদর উপজেলা।[8]

ব্রিটিশ শাসনামলে এ অঞ্চল ১৭৯৭ সালে সৃষ্ট বাকেরগঞ্জ জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়। ব্রিটিশদের অধীন ১৮৫৪ সালের ২রা নভেম্বর মাদারিপুর মহকুমা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৮৫৯ সালে ফরিদপুর জেলা সৃষ্টি হলে মাদারিপুর মহকুমাকে বাকেরগঞ্জ জেলা থকে আলাদা করে ১৮৭৫ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ১৮৭৫ সালে মাদারিপুর মিউনিসিপ্যাল কমিটি স্থাপিত হয়।[9]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মাদারিপুরের প্রাথমিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৬৫ ছাত্র-যুবককে সঙ্গে নিয়ে স্টুয়ার্ড মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন।[7] ৮-১০ ডিসেম্বর খলিল বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১ জন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেনসহ মোট ৪০ সেনাকে আটক করে। ১০ ডিসেম্বর মাদারিপুরে সরাসরি সম্মুখযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে মুক্ত হয়। তবে হানাদারমুক্ত হবার আগ মুহুর্তে শত্রুর বাংকারে গ্রেনেড হামলা করতে গিয়ে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা ১৪ বছর বয়সী সরোয়ার হোসেন বাচ্চু। মুক্তিযুদ্ধে এ উপজেলার ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।[4] বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ মাদারিপুর থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।

ভূগোল

মাদারিপুর সদর উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৩°০৬´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০১´ থেকে ৯০°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এর মোট আয়তন ২৮৩.১৪ বর্গ কিলোমিটার।[10] মাদারিপুর সদর উপজেলার কেন্দ্র থেকে দক্ষিণে গোপালগঞ্জ, পূর্বে শরিয়তপুর জেলা সদর অবস্থিত। এর উত্তরে শিবচর ও শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলা, দক্ষিণে কালকিনীগোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা, পূর্বে শরিয়তপুর সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে রাজৈর উপজেলা অবস্থিত।[11]

মাদারিপুর সদর উপজেলার উপর দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদী প্রবাহিত হয়েছে। পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ ঘাট থেকে প্রায় ৫১.৫ কিমি দক্ষিণ-পূর্বের পদ্মা থেকে এটি প্রবাহিত হয়ে ফরিদপুরমাদারিপুর জেলার মধ্য দিয়ে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পূর্বভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তেঁতুলিয়া চ্যানেলে পতিত হয়েছে। নদটির মোট দৈর্ঘ্য ১৬৩ কিমি। এছাড়া এ উপজেলায় ঘাঘর ও কুমার নদী উল্লেখযোগ্য।[11]

প্রশাসন

১৮৫৪ সালে মহকুমা সৃষ্টি হলে 'মাদারিপুর' নাম প্রশাসনিক স্বীকৃতি লাভ করে এবং ১৮৭০ সালে মাদারিপুর থানা গঠন করা হয়। দীর্ঘদিন পর ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং তখন থেকেই এই উপজেলার সৃষ্টি। মাদারিপুর সদর উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ৯টি ওয়ার্ড, ৩৪টি মহল্লা, ১৫টি ইউনিয়ন, ১৫৯টি মৌজা ও ২৩৫টি গ্রাম রয়েছে।[12] ইউনিয়নগুলো হলো শিরখাড়া ইউনিয়ন, বাহাদুরপুর ইউনিয়ন, কুনিয়া ইউনিয়ন, পেয়ারপুর ইউনিয়ন, ধুরাইল ইউনিয়ন, রাস্তি ইউনিয়ন, পাচখোলা ইউনিয়ন, খোয়াজপুর ইউনিয়ন, ঝাউদি ইউনিয়ন, ঘটমাঝি ইউনিয়ন, কেন্দুয়া ইউনিয়ন, মস্তফাপুর ইউনিয়ন, কালিকাপুর ইউনিয়ন, ছিলারচর ইউনিয়ন, দুধখালী ইউনিয়ন[12]

১৮৭৫ সালে কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির অধীনে মাদারিপুর মিউনিসিপ্যালিটি গঠন করা হয়।[9] ১৮৭৫ সালে ২৬ জুন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জে.বি. স্টুয়ার্ড এর সভাপতিত্বে মাদারিপুর মিউনিসিপ্যালিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।[5] ১৯৬০ সালে মাদারিপুর মিউনিসিপ্যালিটি মাদারিপুর মিউনিসিপ্যাল কমিটি নামে পুন‌ঃগঠিত হয় এবং ১৯৭২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী মাদারিপুর মিউনিসিপ্যাল কমিটি মাদারিপুর পৌরসভায় রুপান্তরিত হয়।[3] পৌরসভাটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথম শ্রেণীর (ক-শ্রেণী) পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমানে খালিদ হোসেন ইয়াদ পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারিপুর সদর উপজেলার সংসদীয় আসন মাদারীপুর-২মাদারীপুর-৩ এ বিভক্ত। রাজৈর উপজেলা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়ন, বাহাদুরপুর ইউনিয়ন, কুনিয়া ইউনিয়ন, পেয়ারপুর ইউনিয়ন, ধুরাইল ইউনিয়ন, রাস্তি ইউনিয়ন, পাচখোলা ইউনিয়ন, কালিকাপুর ইউনিয়ন, ছিলারচর ইউনিয়ন, দুধখালী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-২ আসনটি জাতীয় সংসদে ২১৯ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত এবং কালকিনী উপজেলা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়ন, ঝাউদি ইউনিয়ন, ঘটমাঝি ইউনিয়ন, মোস্তফাপুর ইউনিয়ন ও কেন্দুয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ আসনটি জাতীয় সংসদে ২২০ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত।[13] বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর অনুষ্ঠিত ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই মাদারিপুরের সংসদীয় আসনগুলি তৈরি করা হয়।

প্রথম নির্বাচনে মাদারীপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মৌলভী আচমত আলী খান১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কাজী মাহবুব আহমেদ, ১৯৮৬ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী শাজাহান খান, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, ফেব্রু ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের আব্দুর রাজ্জাক তবে ১৯৯১ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাজাহান খান, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ তারিখে বিএনপির কাজী মাহবুব আহমেদ মিলন, জুন ১৯৯৬ তারিখে আওয়ামী লীগের শাজাহান খান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাজাহান খান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[14] তিনি ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ আসন থেকে নির্বাচিত হন।

প্রথম নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফনী ভূষণ মজুমদার১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের ফনী ভূষণ মজুমদার, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির শেখ শহীদুল ইসলাম, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির শেখ শহীদুল ইসলাম, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আবুল হোসেন, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের গনেশ চন্দ্র হালদার, জুন ১৯৯৬ তারিখে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আবুল হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০০১, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধীদলগুলি তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলে আওয়ামী লীগের আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সোবহান গোলাপ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[14]

অর্থনীতি

মাদারিপুরের জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি যা মোট আয়ের ৫২.২৬%, এছাড়া অকৃষি শ্রমিক ৩.০৩%, শিল্প ০.৯৪%, ব্যবসা ১৮.০১%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.২৬%, চাকরি ৯.৯৯%, নির্মাণ ১.৭৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৮৬% এবং অন্যান্য ৯.৭১%। এ অঞ্চল মূলত খেজুর রস ও খেজুর গুড়ের জন্য বাংলাদেশে বিখ্যাত। এছাড়াও এখানে নারিকেল, সুপারি, পাট, সরিষা, ডাল এবং গম বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। রবি ও খরিফ ফসল হিসেবে চীনাবাদাম চাষ হয়।[15] ২০০১ সালের ভূমি জরিপ অনুসারে মাদারিপুর সদরের ৬৬.৭৭ শতাংশ বসবাসকারীর কৃষিভূমির মালিকানা রয়েছে। মাদারিপুর সদরের প্রধান কৃষিজ ফসল ধান, পাট, সরিষা, ডাল, গম, পিঁয়াজ, মিষ্টি আলু ও শাকসবজি। ফলের মধ্যে কাঁঠাল, আম, পেঁপে, নারিকেল, সুপারি, কলা সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়।[11] উপজেলার অনেক ইউনিয়নে গবাদি পশু পালন, মৎস খামার ও নার্সারি রয়েছে।

মাদারিপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন শিল্প ও কলকারখানা, কুটিরশিল্প অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এ উপজেলায় শিল্প ও কলকারখানা তেমনভাবে গড়ে উঠেনি। যে কয়টি শিল্প ও কলকারখানা রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- (১) মাদারিপুর স্পীনিং মিলস, (২) আলহাজ্জ আমিনউদ্দিন জুট মিলস, (৩) চরমুগরিয়া জুট মিলস, (৪) এ.আর. হাওলাদার জুট মিলস (পরিত্যাক্ত)। ১৯৭০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে এ.আর. হাওলাদার জুট মিলস্ তৎকালীন ই.পি.আই.ডি.সি. এর সহায়তায় উৎপাদন শুরু করে। মাদারিপুরের এ মিলটি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার ভিতর প্রথম ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। ১৯৯১ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়।[3] এগুলোর মধ্যে শিল্পখাতে মাদারিপুর স্পিনিং মিলস এর অবদান সবচেয়ে বেশি। এ মিলটি ১৯৮৬ সালে ২৯.১৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এর জনবল ২০০০ জন। এ মিলে বার্ষিক ৫০০০ মে. টন সূতা উৎপাদিত হয় যার আর্থিক মূল্য ৬০ কোটি টাকা। এ ছাড়া এ জেলায় ৬০০০ মে. টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কোল্ড স্টোরেজ সহ বেশ কিছু সংখ্যক কাপড়ের কল, ধানকল, তেলকল, বরফকল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি ও করাতকল রয়েছে। এছাড়া ১৯৮১ সালে ১৬.১৭ একর জমির উপর বিসিক শিল্প নগরী নির্মাণ করা হয় এবং ছোটবড় মিলিয়ে ১১৩টি হাট বাজার রয়েছে। কুটিরশিল্পের মধ্যে রয়েছে মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, দারুশিল্প, নকশীকাঁথা ও সেলাই কাজ। প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পাট ও পাটজাত দ্রব্য, সুপারি, সুতা ও খেজুরের গুর।[11]

পল্লী অঞ্চলে আনুষ্ঠানিক উৎস থেকে ঋণ সংগ্রহ বা অর্থসংস্থানের পদ্ধতি ব্রিটিশ শাসনামলে উদ্ভূত হয়। ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি ঋণ অফিস কার্যরত ছিল। মাদারীপুর (১৮৮৭) ঋণ অফিস প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে তাদের ঋণ প্রদান কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছিল এবং এরা স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করত।[16] ১৯০৪ সাল থেকে সমবায়ের কার্যক্রম পাক-ভারত উপমহাদেশে পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯০৭ সালে মাদারিপুর মহকুমায় একটি আরব্যান ব্যাংক (মাদারিপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংক) ও ৩৭টি রুরাল সোসাইটি কাজ শুরু করে। পঞ্চাশের দশকে মাদারিপুর কমার্সিয়াল ব্যাংক লি‌ঃ ও মাদারিপুর পপুলার ব্যাংকিং এন্ড লোন কোং লি‌ঃ নামে দুটি অ-তপসিলী ব্যাংক মাদারিপুর শহরে কর্মকান্ড শুরু করে। ১৯৫৪ সালে ১লা ফেব্রুয়ারি চরমুগরিয়ায় সোনালী ব্যা‌ংকের (ভূতপূর্ব ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান) শাখা খোলা হয়, যা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার প্রথম তফসিলী ব্যাংক। ১৯৬৪ সালে ৭ই মে মাদারিপুর শহরে এ ব্যাংকের আরও একটি শাখা চালু হয়। ১৯৬১ সালে ১৮ই ফেব্রয়ারি কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক একই সাথে মাদারিপুর ও ফরিদপুর শহরে শাখা খোলা হয়। ১৯৬২ সালে ১১ই ডিসেম্বর বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার মধ্যে মাদারিপুর শহরে অগ্রণী ব্যাংকের (ভূতপূর্ব  হাবিব ব্যাংক লি‌ঃ) প্রথম শাখা খোলা হয়।[3][5]

সংস্কৃতি ও খেলাধুলা

মাদারিপুরে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায় তাদের নিজ নিজ রীতি-নীতি মনে চলে। বাংলাদেশের অন্য অনেক অঞ্চলের মত বিয়ের অনুষ্ঠানে ডুলি এবং পালকির প্রচলন ছিল। মাদারিপুরে মূলত গাজীর গান, কীর্তন, পাঁচালি, ধুয়াগান, বাউল গান, প্রবাদ-প্রবচন, ছড়া, ছিলকা, হেয়ালি, ধাঁধা, জারিগান উল্লেখযোগ্যভাবে পরিচিত। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন: পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।[11]

মাদারিপুরে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলা বেশি জনপ্রিয়। এছাড়াও ব্যাডমিন্টন, এ্যাথলেটিকস্, ভলিবল, সাঁতার, কাবাডি স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই এ অঞ্চলে প্রচলিত এবং স্বাধীনতাত্তর টেনিস ও হ্যান্ডবল খেলা প্রচলন হয়েছে। বিভিন্ন খেলার আয়োজনের জন্য শহরে ১৯৬৯ সালে মাদারিপুর স্টেডিয়াম নির্মীত হয়।[3] আঞ্চলিকভাবে হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, বউ ছি, লুকোচুরি খেলা হয়।

শিক্ষা

আরও দেখুন: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা
ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এ উপজেলার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী মাদারিপুরের গড় সাক্ষরতার হার শতকরা ৫১.১%; (পুরুষ ৫৩.৯%, নারী ৪৮.৪%)।[17] ১৮৮৫ সালে মাদারিপুর হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামিয়া হাই স্কুল। ১৯৫০ সালে ঐ দুটি স্কুলের সমন্বয়ে গঠিত হয় দি ইউনাইটেড ইসলামিয়া মাদারিপুর হাই স্কুল, ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণ করা হয় যার বর্তমান নাম ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। একসময় মি. ডনোভান মাদারিপুরে মহকুমা প্রশাসক ছিলেন, তার নামেই ১৯১৪ সালে ডনোভান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণ করা হয়।[18] ১৯৪৮ সালে নাজিমউদ্দিন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৯ সালের ৭ই মে কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৪৯ সালে মাদারিপুর শহরে আহমদীয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।[3] এ উপজেলায় ১৯১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৪ টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২২ টি দাখিল মাদ্রাসা, ০৭ টি আলিম মাদ্রাসা, ০১ টি কামিল মাদ্রাসা, ০৯ টি কলেজ, ০২ টি কারিগরি কলেজ রয়েছে।[12]

সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত কলেজ।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ (১৯৪৮), চরমুগুরিয়া কলেজ (১৯৭৮), সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজ (১৯৮৪), সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ (১৯৮৯), ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), ডনোভান সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৪), মাদারীপুর পাবলিক ইনস্টিটিউশন (১৯৫৩), মিঠাপুর এলএস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), চরমুগুরিয়া মার্চেন্টস হাইস্কুল (১৯৩১), তাঁতীবাড়ি ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৪), এসি নর্থ কলাগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), আলহাজ্ব আমিনউদ্দীন হাই স্কুল (১৯৭০), আল-জাবির উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৮১), চরনাচনা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১২) প্রভৃতি।

মাদারিপুর সাদর উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের অন্য সব শহরের মতই। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধানত পাঁচটি ধাপ রয়েছে: প্রাথমিক (১ থেকে ৫), নিম্ন মাধ্যমিক (৬ থেকে ৮), মাধ্যমিক (৯ থেকে ১০), উচ্চ মাধ্যমিক (১১ থেকে ১২) এবং উচ্চ শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা সাধারণত ৫ বছর মেয়াদী হয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়, ৩ বছর মেয়াদী নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), ২ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক শিক্ষা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়।

মূলত বাংলা ভাষায় পাঠদান করা হয় তবে ইংরেজি ব্যাপকভাবে পাঠদান ও ব্যবহৃত হয়। অনেক মুসলমান পরিবার তাদের সন্তানদের বিশেষায়িত ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন মাদ্রাসাতে প্রেরণ করেন। মাদ্রাসাগুলোতেও প্রায় একই ধরনের ধাপ উত্তীর্ণ হতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোন শিক্ষার্থী সাধারণত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। মাদারিপুরে উচ্চ মাধ্যমিকের পর উচ্চ শিক্ষার জন্য কয়েকটি কলেজ রয়েছে যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিএ ও এমএ ডিগ্রি প্রদান করে।

স্বাস্থ্য

আরও দেখুন: বাংলাদেশে স্বাস্থ্য

১৮৬৯ সালে মাদারিপুর ডিসপেনসারি প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেই সময় মাদারিপুর মহকুমা বাকেরগঞ্জ জেলাধীন ছিল। তখন জনগনের চাঁদায় এ ডিসপেনসারি চালানো হোত। ১৯২১ সালে মাদারিপুর ডিসপেনসারি কে ৮ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রুপান্তরিত করা হয়। ১৯৪৪ সালে ২২ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটিকে সরকারিকরণ করা হয়।[3] বর্তমনে এ হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট। সরকারি হাসপাতালের সাথে সাথে ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল, ১৪টি উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।[12] যক্ষায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্যে মাদারিপুর শহরে ১৯৬৫ সালে মাদারিপুর টিবি (বক্ষব্যাধি) ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়।[5]

যোগাযোগ ব্যবস্থা

বাংলাদেশের জাতীয় মহাসড়ক এন৮ (ঢাকা - মাওয়া ফেরীঘাট (R812) - ফেরী - ভাঙ্গা (N804, N805) - বরিশাল (N809) - পটুয়াখালী) মাদারিপুরকে ঢাকা থেকে মাদারিপুর হয়ে বরিশাল-পটুয়াখালীর সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। এই মহাসড়ক থেকে আঞ্চলিক মহাসড়ক আর৮৬০ (মোস্তফাপুর- মাদারিপুর- শরিয়তপুর (মনোহর বাজার)- চাঁদপুর (ভাটিয়ালপুর) সড়ক) মাদারিপুর শহর হয়ে চাঁদপুরের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। এছাড়া জেলা সড়ক জেড৮০১১ (পাঁচ্চর-শিবচর-মাদারিপুর সড়ক), জেলা সড়ক জেড৮৬০৩ (মাদারিপুর (ইটেরপুল)-পাথরিয়ারপাড়-ঘোষেরহাট-ডাসার-আগৈলঝাড়া সড়ক), জেলা সড়ক জেড৮৬০৪ (মাদারিপুর-কালকিনি-ভুরঘাটা সড়ক) সড়কগুলি সদর উপজেলার সাথে শিবচর উপজেলা ও কালকিনি উপজেলার সংযোগ স্থাপন করেছে।

মাদারিপুর থেকে ঢাকাগামী অধিকাংশ বাস সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও কদমতলী বাস টার্মিনাল এসে থামে। মাদারিপুর জিরো পয়েন্ট থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৮৯ কিলোমিটার।

১৯৬৫ সালে ৩৫.২৫ মাইল ভাঙ্গা-মাদারিপুর রাস্তা সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যামে সড়ক পথে প্রথম যোগাযোগ শুরু হয়। ১৯৬৯ সালে টেকেরহাট-মস্তফাপুর-মাদারিপুর রুট ও মাদারিপুর-ভুরঘাটা রুটে প্রথম বাস সার্ভিস চালু হয়।[3]

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী এ উপজেলায় ১৭৪ কিলোমিটার পাকারাস্তা, ৬৪৫ কিলোমিটার কাঁচারাস্তা ও ১৩৩ নটিক্যাল মাইল নৌপথ রয়েছে।[12] মাদারিপুর বাস টার্মিনাল থেকেই মূলত বিভিন্ন গন্তব্যে বাস ছেড়ে যায়। এ উপজেলায় কোন রেললাইন বা ট্রেন যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হতে মাদারিপুর লঞ্চ টার্মিনালে নৌপথ নিয়োমিত নৌযাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া এক ইউনিয়ন হতে অন্য ইউনিয়নে চলাচল বা অভ্যন্তরীন নৌযাতায়াতের এর জন্য স্থানীয় নৌযান রয়েছে।

মাদারিপুর শকুনি দীঘি

উল্লেখযোগ্য স্থান

কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থান এখানে উল্লেখ করা হয়েছে:[4][12][3]

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য মাদারিপুর সদর উপজেলায় যারা স্মরনীয় হয়ে রয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন এখানে উল্লেখ করা হয়েছে:[4][12][3]

তথ্যসূত্র

  1. "Madaripur Sadar"City Poulation। Thomas Brinkhoff। ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
  2. "ঢাকা বিভাগ"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৫
  3. মিয়া, আবদুল জাব্বার (১৯৯৪)। মাদারীপুর জেলা পরিচিতি। মাদারিপুর: মিসেস লীনা জাব্বার।
  4. মাদারীপুর জেলা ব্রান্ড বুক। মাদারীপুর: জেলা প্রশাসক, মাদারীপুর। সেপ্টেম্বর ২০১৮। পৃষ্ঠা ১১৭। আইএসবিএন 978-984-516-072-8।
  5. মাহমুদ, লিখন (২০১৭)। মাদারিপুর ইতিবৃত্ত। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মাদারিপুর।
  6. Sailendra Nath Sen (১৯৯৯)। Ancient Indian History and Civilization। New Age International। পৃষ্ঠা 277–287। আইএসবিএন 978-81-224-1198-0।
  7. "মাদারীপুর জেলা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৪
  8. খান, শামসুজ্জামান (জুন ২০১৬)। বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা : মাদারীপুর। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ২৩। আইএসবিএন 984-07-5532-3।
  9. বাশার মাহমুদ (২১ জুলাই ২০১৯)। "যাঁর নামে মাদারিপুর"। দৈনিক সুবর্ণগ্রাম (প্রকাশিত হয় ৭ ডিসেম্বর ২০১৭)।
  10. "পপুলেশন এন্ড হাউজিং সেন্সাস ২০১১" (PDF)বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
  11. "মাদারীপুর সদর উপজেলা"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৫
  12. "মাদারীপুর সদর উপজেলা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২০
  13. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৩
  14. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯
  15. "চীনাবাদাম"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৮
  16. "পল্লী অর্থসংস্থান"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৭
  17. "জেলা পরিসংখান ২০১১" (PDF)বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২২
  18. "ডনোভান সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় মাদারীপুরে শ্রেষ্ঠ | সারাদেশ | The Daily Ittefaq"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২২

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.