বাংলা ও মুর্শিদাবাদের নবাবগণ

বাংলার নবাবগণ ছিলেন সম্পূর্ণ রূপ বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নওয়াবে নিজাম। মুঘল আমলে যারা সুবাহ বাংলার প্রাদেশিক শাসক ছিলেন। ১৭১৭ থেকে ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত তারা সার্বভৌম বাংলার প্রধান হিসেবে এই অঞ্চল শাসন করেছেন। পদটি মুঘল আমলে পুরুষানুক্রমিকভাবে নাজিম ও সুবেদার থেকে সৃষ্টি হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তারা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলসমূহে স্বাধীনভাবে শাসন করেছিলেন।[2] বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলা পলাশীর যুদ্ধে মীরজাফর কর্তৃক বিশ্বাসঘাতকতার স্বীকার হন। যুদ্ধে তিনি ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হন যারা ১৭৫৭ সালে বাংলা অধিগ্রহণ করে মীর জাফরকে ক্ষমতায় বসান এবং একটি রাজনৈতিক ধারা প্রবর্তন করেন।[3]

বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব নাজিম (১৭১৭–১৮৮০)a
মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর (১৮৮২–১৯৫০)b
বাংলা এবং মুর্শিদাবাদের নবাব
১৭১৭–১৭৬৫
 

চিত্র:Coat of Arms of the Nawab of Bengal (top) and that of the Nawab of Murshidabad (bottom).png
প্রতীক

নীতিবাক্য
Nil Desparandum
"There is no cause for despair, never despair"
বাংলা ও মুর্শিদাবাদের নবাবের অবস্থান
The Nawab Nizams of Bengal, Bihar and Orissa ruled over the Bengal Subah and were subordinate to the Mughal empire, however after the Battle of Plassey in 1757, and acquisition of the administration of the subah from the then Mughal Emperor, Shah Alam II, by the British East India Company, the Bengal Presidency was established, which included the Bengal subah and surther, the system of dual government was established in 1772. Thus, the Nawabs became "puppet rulers" of the British, with very little real power and authority to exercise and lost even that little power when the Nizamat (power to exercise military power and criminal justice) of the Nawab was also taken away from them; the Nawabs remained as the mere pensioners of the British East India Company. After the Revolt of 1857, the regions under the Company rule came under the British Crown, and by now, the post/office of the Nawabs was just titular. They had no real power and authority. Further, after Indian independence, in 1947, the region first came under the rule of the Dominion of Pakistan for two days, and then the Dominion of India, followed by the Republic of India in 1950, and since then has remained under the rule of the republic. Shown here is a 1776 map of the Bengal Presidency, after it came under Company rule and prior to its takeover by the British Crown and the partition of Bengal.
রাজধানী Murshidabadc
ভাষাসমূহ English

Persian
Bengali
Hindi
Urdu
Arabic

সরকার অনির্দিষ্ট
ঐতিহাসিক যুগ মুঘল যুগ
ব্রিটিশ যুগ
স্বাধীন ভারতীয় যুগ
 - বাংলা সুবা ১৫৭৬
 - সংস্থাপিত ১৭১৭
 - পলাশীর যুদ্ধ ২৩ জুন ১৭৫৭
 - বখসারের যুদ্ধ ২২ অক্টোবর ১৭৬৪
 - নবাবির সমাপ্তি
 - ভাঙ্গিয়া দেত্তয়া হয়েছে ১৭৬৫
জনসংখ্যা
   1901 আনুমানিক ৭৫[1] 
উত্তরসূরী
Company rule in India
British Raj
বর্তমানে অংশ  India
 Bangladesh
a.Title abolished in 1880
b.
After Indian independence in 1947, followed by the promulgation of the Indian Constitution on 26 January 1950, which marked the transformation of the Dominion of India into the Republic of India, the Article 18 of the Indian Constitution abolished all titles, except those given by the Government of India to those who have made their mark in military and academic fields. Thus the title of the "Nawab Bahadur of Murshidabad" was officially, constitutionally and legally abolished.
c.
Murshidabad was the capital for both the Nawabs of Bengal and the Nawabs of Murshidabad.
সতর্কীকরণ: "মহাদেশের" জন্য উল্লিখিত মান সম্মত নয়

১৭৬৫ সালে দ্বৈত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় যেখানে নবাবগণ ব্রিটিশদের অধীণে শাসন করতেন এবং তারা ব্রিটিশদের হাতের পুতুল ছিলেন। ১৭৭২ সালে ধারাটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে শাসন ব্যবস্থা সরাসরি ব্রিটিশদের অধীনে নেওয়া হয়। ১৭৯৩ সালে নবাবদের কাছ থেকে নিজামত (গভর্নর) অধিকারও প্রত্যাহার করা হয়, তখন তাদের ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে শুধু সামান্য অবসরকালীন ভাতা দেওয়া হত।[4][5] বাংলার শেষ নবাব মনসুর আলী খান ১৮৮০ সালের ১লা নভেম্বর তার জ্যেষ্ঠ পুত্রের জন্য ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করেন।[6]

মনসুর আলী খানের পদত্যাগের পর মুর্শিদাবাদের নবাব ও বাংলার নবাব, মুর্শিদাবাদের নবাব বাহাদুর হিসেবে পরিচিতি পান[2][6][7] যেহেতু ১৮৮০ সালে বাংলার নবাব উপাধিটি বিলুপ্ত হয়েছিল।[2] সেসময় রাজস্ব আদায়ে তাদের খুবই কম বা অনেক ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব ছিল না বললেই চলে এবং তারা বল প্রয়োগ থেকেও বিরত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর রাজ্যসমূহের ভারত বা পাকিস্তানের অঙ্গীভূত হওয়ার বাধ্যবাধাকতা ছিল।[8] এটা উল্লেখ করা যেতে পারে যে মর্শিদাবাদ (রাজধানী শহর) দুদিনের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের অঙ্গীভূত হয়েছিল, কারণ এখানে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। ১৯৪৭ সালের ১৭ই আগস্ট এটি ভারতের অঙ্গীভূত হয়।[9] হাজারদুয়ারী প্রাসাদ থেকে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে তেরঙা ভারতের পতাকা উত্তোলন করা হয়।[9] ভারতের সাথে একত্রীত হওয়ার পর এসব রাজ্যসমূহের ক্ষমতা খর্ব হয়ে যায় কারণ ভারত সরকার সকল রাজ্যসমূহের কর্তৃত নিয়েছিল।[8] ১৯৬৯ সালে শেষ নবাব ওয়ারিস আলী মির্জার সাথে সাথে নাবাব উপাধিটিও ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়।[10] যদিও তিনি তিনজন ছেলে ও তিনজন মেয়ে রেখে গিয়েছিলেন কিন্তু তার মৃত্যুর পূর্বে কোন উত্তরাধীকারী ঘোষণা না করে যাওয়ার দরুন নবাব উপাধিটিও এখানেই সমাপ্তি ঘটে।[10]

বাংলার নবাবদের তালিকা

নিম্নের তালিকাটি বাংলার নবাবদের একটি তালিকা। সরফরাজ খান ও মীর মুহাম্মদ জাফর আলী খান বাহাদুর দুইবার করে বাংলার নবাব ছিলেন।[11] ধারাটি ১৭১৭ সালে মুর্শিদ কুলি খানের আমলে শুরু হয়েছিল এবং ১৮৮১ সালে মনসুর আলী খানের সাথে সাথে ধারাটি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।[2][6][11]

প্রতিকৃতি উপাধি ব্যক্তিগত নাম জন্ম রাজত্ব মৃত্যু
নাসিরি রাজবংশ
জাফর খান বাহাদুর নাসিরি মুর্শিদ কুলি খান ১৬৬৫ ১৭১৭– ১৭২৭ জুন ৩০, ১৭২৭
আলা-উদ-দীন হায়দার জং সরফরাজ খান বাহাদুর ? ১৭২৭-১৭২৭ এপ্রিল ২৯, ১৭৪০
সুজা উদ-দৌলা সুজা উদ্দিন মুহাম্মদ খান ১৬৭০-এর সময়কাল (তারিখ পাওয়া যায়নি) জুলাই, ১৭২৭ – আগস্ট ২৬, ১৭৩৯ আগস্ট ২৬, ১৭৩৯
আলা-উদ-দীন হায়দার জং সরফরাজ খান বাহাদুর ? মার্চ ১৩, ১৭৩৯ – এপ্রিল ১৭৪০ এপ্রিল ২৯, ১৭৪০
আফসার রাজবংশ
হাশিম উদ-দৌলা মুহাম্মদ আলীবর্দী খাঁন বাহাদুর ১০ই মে-এর পূর্বে, ১৬৭১ এপ্রিল ২৯, ১৭৪০ – এপ্রিল ৯, ১৭৫৬ এপ্রিল ৯, ১৭৫৬
চিত্র:Siraj ud-Daulah.JPG সিরাজদ্দৌলা মুহাদ্মদ সিরাজদ্দৌলা ১৭৩৩ এপ্রিল ১৭৫৬ – জুন ২, ১৭৫৭ জুলাই ২, ১৭৫৭
নাজাফি রাজবংশ
জাফর আলী খান বাহাদুর মীর মুহাম্মদ জাফর আলী খান বাহাদুর ১৬৯১ জুন ১৭৫৭ – আক্টোবর ১৭৬০ জানুয়ারি ১৭, ১৭৬৫
ইতিমাদ উদ-দৌলা মীর কাশিম আলী খান বাহাদুর ? অক্টোবর ২০, ১৭৬০ – ১৭৬৩ মে ৮, ১৭৭৭
জাফর আলী খান বাহাদুর মীর মুহাম্মদ জাফর আলী খান বাহাদুর ১৬৯১ জুলাই ২৫, ১৭৬৩ – জানুয়ারি ১৭, ১৭৬৫ জানুয়ারি ১৭, ১৭৬৫
নজম উদ-দৌলা নাজিম উদ্দিন আলী খান বাহাদুর ১৭৫০ ফেব্রুয়ারি ৫, ১৭৬৫ – মে ৮, ১৭৬৬ মে ৮, ১৭৬৬
সাইফ উদ-দৌলা নাজাবুত আলী খান বাহাদুর ১৭৪৯ মে ২২, ১৭৬৬ – মার্চ ১০, ১৭৭০ মার্চ ১০, ১৭৭০
মুবারক উদ-দৌলা আশরাফ আলী খান বাহাদুর ১৭৫৯ মার্চ, ১৭৭০ – সেপ্টেম্বর ৬, ১৭৯৩ সেপ্টেম্বর ৬, ১৭৯৩
আজাদ উদ-দৌলা বাবর আলী খান বাহাদুর ? ১৭৯৩ – এপ্রিল ২৮, ১৮১০ এপ্রিল ২৮, ১৮১০
আলী জা জাইন উদ্দিন আলী খান বাহাদুর ? জুন ৫, ১৮১০ – আগস্ট ৬, ১৮২১ আগস্ট ৬, ১৮২১
ওয়াল্লা জা আহমেদ আলী খান বাহাদুর ? ১৮১০ – আক্টোবর ৩০, ১৮২৪ আক্টোবর ৩০, ১৮২৪
হুমায়ুন জা মুবারক আলী খান বাহাদুর সেপ্টেম্বর ২৯, ১৮১০ ১৮২৪ – অক্টোবর ৩, ১৮৩৮ অক্টোবর ৩, ১৮৩৮
ফেরাদুন জা মনসুর আলী খান বাহাদুর অক্টোবর ২৯, ১৮৩০ অক্টোবর ২৯, ১৮৩৮ – নভেম্বর ১, ১৮৮০ (পদত্যাগ) নভেম্বর ৫, ১৮৮৪

মুর্শিদাবাদের নবাবদের তালিকা

১৮৮০ সালে বাংলার নবাব উপাধিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর, ১৮৮১ সালে বাংলার নবাব পদটিও বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরবর্তিতে মুর্শিদাবাদের নবাব উপাধিটি চালু হয়।[2][6] মুর্শিদাবাদের তিনজন নবাব ছিলেন, নিম্নে তাদের তালিকা দেওয়া হল:

প্রতিকৃতি উপাধি ব্যক্তিগত নাম জন্ম রাজত্ব মৃত্যু
নাজাফি রাজবংশ
আলী কাদির হাসান আলী মির্জা খান বাহাদুর আগস্ট ২৫, ১৮৪৬ ফেব্রুয়ারি ১৭, ১৮৮২ – ডিসেম্বর ২৫, ১৯০৬ ডিসেম্বর ২৫, ১৯০৬
আমীর উল-উমরা ওয়াসিফ আলী মির্জা খান বাহাদুর জানুয়ারি ৭, ১৮৭৫ ডিসেম্বর ১৯০৬–২৩শে অক্টোবর ১৯৫৯ ২৩শে অক্টোবর ১৯৫৯
রেইস উদ-দৌল্লা ওয়ারিস আলী মির্জা খান বাহাদুর নম্বের ১৪, ১৯০১ ১৯৫৯ – নভেম্বর ২০, ১৯৬৯ ( কোনো সুস্পষ্ট উত্তরাধিকারী ছিল না/শিরোনাম বিতর্কিত) নভেম্বর ২০, ১৯৬৯
যে সিরিজের অংশ সেটি হল
বাংলার ইতিহাস
প্রাচীন বাংলা
 বৈদিক যুগ 
বাংলার প্রাচীন জনপদসমূহ
গঙ্গারিডাই, বঙ্গ,
পুণ্ড্র, সুহ্ম,
অঙ্গ, হরিকেল

মৌর্যযুগ
ধ্রুপদী বাংলা
ধ্রুপদী যুগ
শশাঙ্ক
সাম্রাজ্যের যুগ
পাল সাম্রাজ্য, সেন সাম্রাজ্য
মধ্যযুগীয় বাংলা
ইসলামের আগমন
বাংলা সুলতানী, দেব রাজ্য
বখতিয়ার খিলজি, রাজা গণেশ, জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ, হুসেন শাহী রাজবংশ

মুঘল যুগ
কন্দর্প রায়, প্রতাপাদিত্য, রাজা সীতারাম রায়
বাংলার নবাব, বারো ভুঁইয়া, রাণী ভবাণী

আধুনিক বাংলা
কোম্পানি রাজ
পলাশীর যুদ্ধ, জমিদারী ব্যবস্থা, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর
ব্রিটিশ ভারত
বাংলার নবজাগরণ
ব্রাহ্মসমাজ
স্বামী বিবেকানন্দ, জগদীশচন্দ্র বসু,
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু

উত্তর-সাম্রাজ্য যুগ
বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭), বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ
শেখ মুজিবুর রহমান, জ্যোতি বসু, বিধানচন্দ্র রায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা

এছাড়াও দেখুন
বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ

টীকা

  1. Imperial Gazetteer of India vol. IV 1907, পৃ. 46
  2. Chaudhury, S; Mohsin, KM। "Sirajuddaula"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। ৫ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১২
  3. Singh, Vipul (১ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। Longman History & Civics (Dual Government in Bengal)। Pearson Education India।
  4. Madhya Pradesh National Means-Cum-Merit Scholarship Exam (Warren Hasting's system of Dual Government)। Upkar Prakashan। ১ জানুয়ারি ২০০৯।
  5. Murshidabad.net (মে ৮, ২০১২)। "Decline of the Nawabs of Bengal"। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১২
  6. Murshidabad.net (৮ মে ২০১২)। "Hassan Ali Mirza's succession"। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১২
  7. Lumby 1954, পৃ. 232
  8. "Murshidabad was a part of East Pakistan (now Bangladesh) for two days after which it became a part of India"। 30-days.net। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১২
  9. "The last Nawab of Murshidabad, Waris Ali Mirza Khan Bahadur"। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১২
  10. "The Nawabs of Bengal (chronologically)"। ৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৮, ২০১২

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.