পাকিস্তান সেনাবাহিনী
পাকিস্তান সেনাবাহিনী (উর্দু: پاک فوج পাক ফৌজ) পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অংশ। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাংশ হতে এই বাহিনী গঠিত হয়। International Institute for Strategic Studies (IISS) এর মতে ২০১০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কার্যকর সেনা সংখ্যা ৫৫০,০০০ জন এবং সংরক্ষিত ট্রুপসের সংখ্যা প্রায় ৫০০,০০০ জন। [1].পাকিস্তানের সংবিধানে সামরিক পরিকল্পনার একটি বাধ্যতামূলক সেনানিয়োগের কথা উল্লেখ থাকলেও তা কখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

এই বাহিনীর প্রাথমিক লক্ষ্যগুলি হল: বহিঃশত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা, আভ্যন্তরিন শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা।[2] । ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বাহিনী বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনী একত্রে তিনটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। যেগুলো প্রতিবেশী ভারত এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘটিত হয়।[3]
১৯৪৭ সাল হতে আজ পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী তিনটি পাক-ভারত যুদ্ধ, একটি অঘোষিত যুদ্ধ (কার্গিল যুদ্ধ), এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার স্থানীয় সহযোগী রাজাকার বাহিনী, আল বদর ও আল শামস এর হাতে ৩০ লাখ সাধারণ মানুষের প্রাণহানী ঘটে [4]। যুদ্ধ শেষে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে ঢাকার রেসকোর্সে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে। প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানী সেনার এই আত্মসমর্পন ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে সর্ববৃহৎ আত্মসমর্পনের ঘটনা।
ইতিহাস
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত বিভাজনের সিদ্ধান্ত যখন হয় তখন ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও দুই ভাগ করার (একটি পাকিস্তান, অপরটি ভারত) সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ১৯৪৬ সালের ১৯ অক্টোবর। ১৯৪৭ সালের ৩০ জুন ব্রিটিশ সরকার মাত্র দেড় লাখ সদস্যের একটি সেনাবাহিনী পাকিস্তানের হবে বলে ঘোষণা দেয়; যদিও পাকিস্তান সেনাবাহিনী সত্যিকার অর্থে পঞ্চাশ হাজারের বেশী সদস্য পায়নি। ১৪ই আগস্ট ১৯৪৭ তারিখে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্রিটিশ জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ওয়ালটার মেসার্ভি'র অধীনে আত্মপ্রকাশ করে।
পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই দেশটির সরকার সেনাবাহিনীর সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়নের ব্যাপারে মনোযোগী ছিলো। ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে নবগঠিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রতিবেশী ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইএ জড়িয়ে পড়তে হয়েছিলো কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তখন অনেক ছোটো ছিলো, এর না ছিলো কোনো কোর না কোনো বড় ডিভিশন; ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম এবং ১২তম ডিভিশন ছিলো ছোটো আকারে এবং ১৪তম ডিভিশন ছিলো পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) এ। সুতরাং মাত্র পাঁচটি ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীর বারোটি ডিভিশনের সঙ্গে সীমান্তে লড়াইরত ছিলো তখন। ১৯৫০ সালে আরো একটি ডিভিশন (১৫তম) যোগ হয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অংশে। ডিভিশনগুলো ছিলো সবই পদাতিক বাহিনীর এবং ১৯৫০ সালেই সাঁজোয়া বহরে ১৫তম ল্যান্সার্স রেজিমেন্ট শিয়ালকোট সেনানিবাসে যুক্ত হয়েছিলো। ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে আরো ছ'টি সাঁজোয়া রেজিমেন্ট যুক্ত হয়ঃ ৪র্থ ক্যাভালরি, ১২তম ক্যাভালরি, ১৪তম ল্যান্সার্স এবং ২০ ল্যান্সার্স।[5] পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৬০ সালের আগ পর্যন্ত ব্যাপক পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলো এবং সৈন্য সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছিলো, ১৯৫৭ সালেই তাদের প্রথম কোর (১ কোর) তৈরি করা হয়েছিলো।
তথ্যসূত্র
- IISS 2010, pp. 366
- ISPR। "A Journey from Scratch to Nuclear Power"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৩।
- "History of Pakistan Army"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৩।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- "History of Pakistan Army"। ১৪ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৩।
বহিঃসংযোগ
- Official websites
- Official website of Pakistan Army launched on 6 April 2009
- Official website of Inter Services Public Relations (ISPR)
- Official website of International Defence Exhibition and Seminar (IDEAS)
- Cloughley, Brian. A History of the Pakistan Army: Wars and Insurrections