কীর্তন

কোন দেব-দেবীর নাম, গুণাবলী বা কীর্তিকাহিনী সম্বন্ধিত গান । প্রখ্যাত সংস্কৃত পন্ডিত জয়দেব রচিত গীতগবিন্দম, কীর্তন গানের প্রকৃত উৎস। এছাড়াও বাড়ু চন্ডিদাস, শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন, বিদ্যাপতি প্রভৃতি কবিগন প্রচুর কীর্তন গান রচনা করেন। ১৫০০ শতকে শ্রীচৈতন্য ভক্তি সংগিতের এই ধারার প্রভূত উন্নতি সাধন করেন। তার গান নারী, পুরুষ, শিক্ষিত, অশিক্ষিত নির্বিশেষে সকলের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি বিশ্বাস করতেন ভগবানের উপসনার জন্য গান ধর্মগ্রন্থ পাঠের চেয়ে সহজতর মাধ্যম।

চৈতন্যের মৃত্যুর পর লীলা কীর্তনের আরও পাঁচটি ধারার সৃষ্টির হয়। এই ধরার গুলোর নাম করন করা হয় তাদের উৎপত্তি স্থান অথবা কবিদের নাম অনুসারে, গাদানহাটি, মনোহর্ষী, রেনেটি, মান্দারনি এবং ঝাড়খান্ডি। ১৬০০ শতকে নরোত্তম দাস গাদানহাটি ধারাটির সূচনা করেন। তিনি ছিলেন রাজশাহী জেলার গাদানহাটি পরগনার বাসিন্দা। বীরভুম জেলার জানানদাস মনোহর মনোহর্ষী ধারাটির প্রবোক্তা। বর্ধমানের বিপ্রদাস ঘোষ সূচনা করেন রেনেটি ধারার। মান্দারান সরকার প্রচলন করেন মান্দারনি কীর্তনের। ঝাড়খন্ডি কীর্তনের উদ্ভব হয় ঝাড়খন্ড জেলায়।

কীর্তন সংগীত তিনটি তালে গাওয়া হয়, দ্রুত, মধ্য এবং বিলম্বিত। কোলকাতা শহরের পত্তনের আগে, কীর্তন ছিল সম্পূর্ণ রূপে গ্রামীন সংস্কৃতির অংশ। ১৮০০ শতকের গোড়ার দিকে কোলকাতার পত্তনের পর পাঁচালী ও কীর্তন শহুরে সংস্কৃতির অংশ হয়ে পরে। ১৯৪৭ সালের পূর্বে হিন্দু মুসলিম উভয়েই কীর্তন সংগিত শুনত। কাজী নজরুল ইসলাম বেশ কিছু কীর্তন সংগীত রচনা করেছেন।

প্রকার

দেব-দেবীর ক্ষেত্রে:

  • নাম সঙ্কীর্তন
  • লীলা সঙ্কীর্তন

রাজার মহিমা-কীর্তন করলে যশোগাথা বা জয়গান।

তথ্য উৎস

    বাংলাপিডিয়া

    বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.