রায়পুরা উপজেলা

রায়পুরা উপজেলা বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ২৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকা বিভাগের অধীন নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে একটি এবং নরসিংদী জেলার পূর্বে অবস্থিত।

রায়পুরা
উপজেলা
রায়পুরা
বাংলাদেশে রায়পুরা উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৮′২″ উত্তর ৯০°৫২′৩১″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলানরসিংদী জেলা
আয়তন
  মোট৩১২.৫০ কিমি (১২০.৬৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট৪,৫৪,৮৬০
  জনঘনত্ব১৫০০/কিমি (৩৮০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৩৭%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৬৮ ৬৪
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

রায়পুরা উপজেলার উত্তরে বেলাব উপজেলা, দক্ষিণে নরসিংদী সদর উপজেলা, পূর্বে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলাব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরবাঞ্ছারামপুর উপজেলা এবং পশ্চিমে শিবপুর উপজেলানরসিংদী সদর উপজেলা অবস্থিত।

রায়পুরার চতুর্দিকে মেঘনা, রহ্মপুত্র, আড়িয়াল খাঁকাঁকন নদী বয়ে গেছে। নদ-নদী বিধৌত এই উপজেলাটি রাজধানী ঢাকা ও নরসিংদী জেলা সদরের খুব সন্নিকটে অবস্থিত। এই উপজেলাটি রাজধানী ঢাকা থেকে ৭৯ কিলোমিটার এবং জেলা সদর নরসিংদী থেকে ৩২ কিলোমিটার পূর্বদিকে অবস্থিত। এর আয়তন ৩১২.৫০ বর্গ কিলোমিটার।

ইতিহাস

কথিত আছে যে, বৃটিশ শাসন আমলে লর্ড কর্নওয়ালিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু হওয়ার সময় এ অঞ্চল ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা জমিদারের আওতায় আসে। উক্ত জমিদারের কাছ থেকে সিকিমি পত্তন নেন এখানকার রায় উপাধিধারী কিছুসংখ্যক অমাত্য। এদের উল্লেখ্যযোগ্য হলো প্রকাশচন্দ্র রায়, পূর্ণচন্দ্র রায়, মহিমচন্দ্র রায়, ঈশ্বরচন্দ্র রায় এবং আরো অনেকে। এদের নাম‍ানুসারে প্রথমে এলাকার নাম হয় “রায়নন্দলালপুর”। পর্যায়ক্রমে এই ‍নাম থেকে রায়পুরা নামের উৎপত্তি হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, পূর্বে এই এলাকা “কালীদহসাগরেরচর” নামে পরিচিত ছিল। পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকেও এ অঞ্চল ময়মনসিংহ কালেকটরেটের আওতাভুক্ত ছিল। এ উপজেলাকে নিম্নবর্ণিত প্রধান তিন ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে:

(ক) মধুপুর গড় ভূমি যা ‍উপজেলার প্রায় ২ শতাংশ ভূমি (খ) ব্রক্ষপুত্র পলল ভূমি যা ‍উপজেলার প্রায় ৫৫ শতাংশ ভূমি এবং (গ) মেঘনা পলল ভূমি যা ‍উপজেলার প্রায় ৪৩ শতাংশ ভূমি।

প্রশাসনিক বিন্যাস

এই উপজেলাটি ২৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা, ১১৩টি মৌজা ও ১৫২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।

  • পৌরসভা - রায়পুরা পৌরসভা;
  • ইউনিয়ন - মরজাল ইউনিয়ন ,রায়পুরা ইউনিয়ন (রায়পুরার প্রাণকেন্দ্র) , চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন, অলিপুরা ইউনিয়ন, উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন, , মির্জাপুর ইউনিয়ন, রাধানগর ইউনিয়ন, মুছাপুর ইউনিয়ন, মহেশপুর ইউনিয়ন, বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন, আড়ালিয়া ইউনিয়ন, পলাশতলী ইউনিয়ন, পাড়াতলী ইউনিয়ন, আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন, আদিয়াবাদ ইউনিয়ন, চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন, হাইরমারা ইউনিয়ন, শ্রীনগর ইউনিয়ন, ডৌকারচর ইউনিয়ন, মির্জানগর ইউনিয়ন, চরমুধুয়া ইউনিয়ন, নিলক্ষা ইউনিয়ন, চাঁনপুর ইউনিয়ন এবং মির্জারচর ইউনিয়ন

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানকার মোট জনসংখ্যা ৪,১৩,৭৬৫ জন; যার মধ্যে পুরুষ ২,১৩,৪১৯ জন (৫১.৫৮%) এবং নারী ২,০০,৩৪৭ জন (৪৮.৪২%)। এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে মুসলমান ৩,৯৪,২০৮ জন (৯২%), হিন্দু ১৮,৯২৮ জন (৭%) এবং বৌদ্ধ ১০০ জন, খ্রিস্টান ১২০ জন, উপজাতি ৩৩৯ জন এবং অন্যান্য ধর্মানুসারী ৪১৫ জন (১%)।

শিক্ষা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানকার শিক্ষার হার ৩৭%। এখানে রয়েছে:

  • প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১৭৮টি;
  • মহাবিদ্যালয় - ৩টি;
  • টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ - ১টি;
  • উচ্চ বিদ্যালয় - ৩০টি;
  • জুনিয়র বিদ্যালয় - ৭টি;
  • মাদ্রাসা - ২১টি।

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য সেবাদানের জন্য রয়েছে:

  • উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র - ১টি;
  • জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র - ১টি;
  • ক্লিনিক - ১৪টি;
  • স্যাটেলাইট ক্লিনিক - ২টি;
  • পশু চিকিৎসা কেন্দ্র - ১টি;
  • দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র - ১টি;
  • কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র - ১টি।

কৃষি

এখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষক।

  • প্রধান ফসল: ধান, গম, আলু, সরিষা, চীনা বাদাম, বেগুন, বিভিন্ন ধরনের সব্জী।
  • লুপ্ত বা লুপ্ত প্রায় শষ্যাদি: মসিনা, কাউন, আউস ও আমন ধান, পাট ও আড়হর ডাল।
  • প্রধান ফল: কলা, কাঁঠাল, আম, জাম, পেঁপে, পেয়ারা, কুল, লটকন ও তরমুজ।

অর্থনীতি

  • কুটির শিল্প - তাঁত শিল্প এখনও এলাকার উল্লেখযোগ্য শিল্প। আরো রয়েছে বাঁশ দ্বারা তৈরি সামগ্রীর শিল্প, লৌহ শিল্প, মৃৎ শিল্প, সূচী-শিল্প।
  • রপ্তানী পণ্য - পাট, কলা, আলু ও শাক-সব্জী।
  • কোহিনূর জুট মিল

যোগাযোগ ব্যবস্থা

  • সড়ক পথ: ২৮১ কিলোমিটার (পাকা সড়ক - ২৯ কি.মি., আধ-পাকা সড়ক - ২৩ কি.মি., কাচা সড়ক - ২৩০ কি.মি.);
  • নৌ- পথ: ২২ নটিক্যাল মাইল;
  • রেল পথ: ২৭ কিলোমিটার।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা

  • আমিরগঞ্জ জমিদার বাড়ি
  • পান্থশালা
  • বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের জাদুঘর
  • রামনগর পার্ক
  • আটকান্দি [নীলকুটি মসজিদ]
  • ওয়ান্ডার পার্ক [মরজাল]
  • নীলকুঠী মাহমূদাবাদ
  • বালুয়াকান্দি কবরস্থান
  • কান্দাপাড়া নদীর পাড়

বিবিধ

এনজিও

ব্রাক, আশা, গ্রামীন ব্যাংক, মৌচাক ও পল্লী সঞ্চয় কর্মসূচী সক্রিয় এনজিওদের মধ্যে অন্যতম।

হাট-বাজার ও মেলা

হাট-বাজারের সংখ্যা: ৪০টি।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "এক নজরে রায়পুরা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৫

বহিঃসংযোগ

  • {{বাংলাপিডিয়া}} টেমপ্লেটে আইডি অনুপস্থিত ও উইকিউপাত্তেও তা উপস্থিত নেই।

|

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.