শিবচর উপজেলা

শিবচর বাংলাদেশের মাদারিপুর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

শিবচর
উপজেলা
শিবচর
বাংলাদেশে শিবচর উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°২০′৪৫″ উত্তর ৯০°৯′৫১″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলামাদারীপুর জেলা
আয়তন
  মোট২৩৯.১৪ কিমি (৯২.৩৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট৪,২৭,৯১৩
  জনঘনত্ব১৮০০/কিমি (৪৬০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৬৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৫৪ ৮৭
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান

উত্তরে মাদারীপুর সদর উপজেলা, পশ্চিমে ভাঙ্গা উপজেলা, উত্তরে সদরপুর উপজেলা, এবং দক্ষিণে শরিয়তপুর জেলা অবস্থিত।

প্রশাসনিক এলাকা

শিবচর উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ১৯ টি ইউনিয়ন রয়েছে।

  1. শিবচর পৌরসভা
  2. দত্তপাড়া ইউনিয়ন
  3. দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়ন
  4. শিবচর ইউনিয়ন
  5. নিলখি ইউনিয়ন
  6. বন্দরখোলা ইউনিয়ন
  7. চরজানাজাত ইউনিয়ন
  8. মাদবরেরচর ইউনিয়ন
  9. পাঁচচর ইউনিয়ন
  10. সন্যাসিরচর ইউনিয়ন
  11. কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন
  12. কুতুবপুর ইউনিয়ন
  13. কাদিরপুর ইউনিয়ন
  14. ভান্ডারীকান্দি ইউনিয়ন
  15. বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন
  16. বহেরাতলা উত্তর ইউনিয়ন
  17. বাঁশকান্দি ইউনিয়ন
  18. উমেদপুর ইউনিয়ন
  19. ভদ্রাসন ইউনিয়ন
  20. শিরুয়াইল ইউনিয়ন

ইতিহাস

শিক্ষা

শিক্ষা ক্ষেত্রে শিবচর মাদারীপুর জেলায় বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এখানে ২টি সরকারি এবং ১ টি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। এছাড়া এখানে অনেকগুলো উচ্চ বিদ্যালয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। অনেকগুলা মাদরাসা ও রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বাহাদুরপুর শরীয়াতিয়া মাদরাসা ও জামিয়াতুস সুন্নাহ। এগুলা খুব পরিচিত প্রতিষ্ঠান।

  • উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ সমূহের তালিকা:
  1. সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজ
  2. শিবচর মহিলা কলেজ
  3. নুরুল আমিন কলেজ
  4. ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ডিগ্রী কলেজ
  5. শিবচর নন্দকুমার ইন্সটিটিউশন
  6. ভদ্রাসন উচ্চ বিদ্যালয়
  7. ভান্ডারী কান্দি উচ্চ বিদ্যালয়
  8. কাদির পুর হাইস্কুল
  9. বাজিত পুর হাইস্কুল
  10. শেখ ফজিলাতুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  11. দত্তপাড়া টি. এন. একাডেমী
  12. পাচ্চর উচ্চ বিদ্যালয়
  13. মাদবরের চর আর. এম. উচ্চ বিদ্যালয়
  14. পাচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  15. উৎরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়।
  16. সরকারের চর এইচ.এ.ইউ.পি উচ্চ বিদ্যালয় ইত্যাদি
  17. কাঁঠালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়
  18. উমেদপুর অজিফা রবিউল্লাহ লাইসিয়াম।
  19. আল-বাইতুল সনিয়িরম মাদ্ররাসা এন্ড বিজনেস ম্যানেজম্যন্ড কলেজ
  20. মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়

এই উপজেলার মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধানতম মাধ্যম হল কৃষি।

দর্শনীয় স্থানসমূহ

হযরত শাহ মাদারের দরগাহঃ আড়িয়াল খাঁ নদীর তীর ঘেঁষে মাদারীপুর শহরের একপ্রান্তে হযরত শাহ মাদারের দরগাহ অবস্থিত। কে এই দরগাহ নির্মাণ করেছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। দরগাহের সাথে বর্তমানে একটি মসজিদ ও একটি মাদরাসা রয়েছে।

আলগী কাজি বাড়ি মসজিদঃ মাদারীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন মসজিদ আলগী কাজি বাড়ি মসজিদ। মাদারীপুর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে আলগী গ্রামে এর অবস্থান। আজ থেকে প্রায় তিনশত বছর পূর্বে আলগী দিঘির পাড়ে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়। অনেকের ধারণা আরব দেশ থেকে আগত কোন এক দ্বীন প্রচারক দরবেশ বা আওলিয়া এটি নির্মাণ করেন।

রাজা রাম মন্দিরঃ রাজারাম মন্দির মাদারীপুর জেলার প্রাচীনতম মন্দির। এ মন্দিরটি জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়া গ্রামে অবস্থিত। খালিয়ার বিশিষ্ট হিন্দু জমিদার রাজারাম রায় সপ্তদশ শতাব্দিতে এটি নির্মাণ করেন। এ মন্দিরের সম্মুখভাগ টেরা কোটা কারুকার্য মন্ডিত এবং রামায়ণ-মহাভারতের দৃশ্যাবলী খচিত।

ঝাউদি গিরিঃ মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদিতে অবস্থিত এ গিরিকে এ জেলার সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্নসম্পদ বলে ধারণা করা হয় । ব্রিটিশ যুগের বহু পূর্বে এটি নির্মিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে মঘ বংশের লোকেরা ইহা নির্মাণ করে। বিশ ইঞ্চি ইট-সুড়কি গাথুনির ওপর একশত ফুটের অধিক উঁচু এ গিরিটির উল্লেখ আর এস ও সি.এস ম্যাপে এর অবস্থান থাকায় জরীপ কাজে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীন মঘ বংশীয় লোকেরা কি কারণে এটি নির্মাণ করেন তা জানা যায়নি।

আউলিয়াপুর নীলকুঠিঃ আউলিয়াপুর নীলকুঠি এ জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। মাদারীপুর সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের আওলিয়াপুর গ্রামে এ নীলকুঠি অবস্থিত। অত্যাচারী ইংরেজ নীলকর ডানলপ ছিলেন এ কুঠির অধিকর্তা। এ কুঠির অদূরে ফরায়েজী আন্দোলনে নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর অনুসারীদের সাথে নীলকর ডানলপ বাহিনীর যুদ্ধ বাধে। সে যুদ্ধে ডানলপের বাহিনী চরম পরাজয় বরণ করে। ঐ স্থানটি রণখোলা নামে পরিচিত।

মিঠাপুর জমিদার বাড়িঃ মাদারীপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী মিঠাপুর জমিদার বাড়ি । মুসলমান জমিদার গোলাম মাওলা চৌধুরী ও গোলাম ছত্তার চৌধুরী এবং তাদের বংশধর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর জি.ডাব্লু চৌধুরীর বাড়ি হচ্ছে এ জমিদার বাড়ী । হিন্দু জমিদার লক্ষ্মী নারায়ন সিকারের বাসস্থানও মিঠাপুরে। তাদের নির্মিত দালান-কোঠা এখানে এখনও বিদ্যমান। এগুলো এ জেলার অন্যতম প্রত্নসম্পদ।

প্রণব মঠ, বাজিতপুরঃ রাজৈর উপজেলার বাজিতপুরে ঢাকা- বরিশাল মহাসড়কের পাশে প্রণবমঠ অবস্থিত । প্রণবস্বামী প্রণবানন্দ মহারাজের নাম অনুসারে এ প্রণব মঠ। এখানে তার প্রতিষ্ঠিত একটি আশ্রম আছে। স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজ ছিলেন অগ্নিযুগের একজন বিশিষ্ট বিপ্লবী এবং বীর সাধক। মঠটি বেশ প্রাচীন। মঠের বাজার মঠ, খোয়াজপুরঃ অন্যতম একটি প্রাচীন মঠ। মঠ এলাকায় বাজার গড়ে ওঠায় এর নাম হয়েছে মঠের বাজার। ধনীরাম মাঝির পুত্র ডেংকর মাঝি এটি নির্মাণ করেন।

খালিয়া শান্তিকেন্দ্রঃ ঢাকা থেকে ২৫০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে মাদারীপুর জেলার অন্তর্গত রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নে শান্তিকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত। এই ক্যাম্পাসে ৩ টি পুকুর, ফলের বাগান এবং একটি পুরানো মন্দির রয়েছে। শান্তিকেন্দ্র গ্রামীণ জনগোষ্ঠির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।

পর্বতের বাগানঃ মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নে কুমার নদীর দক্ষিণ তীর ঘেঁষে পর্বতের বাগান অবস্থিত। পর্বতের বাগান এ জেলার অন্যতম পিকনিক স্পট। ষাট বছর আগে ২৬ একর জমিতে রাস বিহারী পর্বত এ বাগানটি গড়ে তোলেন। শত শত প্রজাতির গাছপালা, পুকুর-দিঘি ও অতিথি পাখির কলকাকলিতে একসময় প্রাণবন্ত ছিল এ বাগান।

শকুনীলেকঃ মাদারীপুর শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত শকুনীলেক এ জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় জলাধার। ১৯৪৩ সালে এ লেক খনন করা হয়। এ লেকের আয়তন প্রায় ২০ একর। লেকের উত্তর পাড় ঘিরে রয়েছে পুরাতন কালেক্টরেট ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, শহীদ স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার এবং দক্ষিণ পাড়ে সার্কিট হাউস ও মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তন। লেকের পূর্বপাড়ে রয়েছে জেলা কারাগার ও মাদারীপুর সদর হাসপাতাল এবং পশ্চিম পাড়ে ডিসি একাডেমী ও জেলা সদর জামে মসজিদ।

সেনাপতির দিঘিঃ কালকিনি উপজেলার আমড়াতলা ও খাতিয়াল গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে এ দিঘি অবস্থিত। এ দিঘির আয়তন ২৫ একর। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসন আমলে সুবাদার ইসলাম খাঁর নেতৃত্বে সৈন্যের বিশাল এক বাহিনী ঢাকা যাওয়ার সময় এখানে কিছুদিন অবস্থান করেন। তারা তাদের পানিয় জলের অভাব মেটানোর জন্য এ দিঘি খনন করে।

চরমুগরিয়া (প্রাচীন বন্দর ও বানরের রাজ্য) ঃ এক সময় বিখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল সদর উপজেলার চরমুগরিয়া । ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও খেলাধুলা, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র ছিল এ বন্দর। চরমুগরিয়ার সেই ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে। অতীতের নীরব সাক্ষী দাঁড়িয়ে আছে এ বন্দর। চরমুগুরিয়ার বিশেষত্ব হলো এখানকার বানর । মানুষের বসতির পুর্বেই এখানে তাদের বসবাস । পুরো চরমুগুরিয়া জুড়ে মানুষের সাথে এদের সমাজ, এদের বসবাস ।

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে শিবচর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.