পাকুন্দিয়া উপজেলা
পাকুন্দিয়া বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগ এর কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
পাকুন্দিয়া | |
---|---|
উপজেলা | |
pakundia | |
পাকুন্দিয়া | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৯′৫৫″ উত্তর ৯০°৪০′৫৯″ পূর্ব | |
দেশ | |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | কিশোরগঞ্জ জেলা |
প্রতিষ্ঠা | 2013 |
N/A | kisoregang -02 |
আয়তন | |
• মোট | ১৮০.৫২ কিমি২ (৬৯.৭০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১ [1]) | |
• মোট | ২,৩৭,২১৮ |
• ক্রম | 46% |
• জনঘনত্ব | ১৩০০/কিমি২ (৩৪০০/বর্গমাইল) |
99% | |
সাক্ষরতার হার80% | |
• মোট | 60% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ২৩২৬ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৪৮ ৭৯ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান
পাকুন্দিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। এর আয়তন ১৮০.৫২ বর্গ-কিলোমিটার। পাকুন্দিয়াকে ঘিরে, পশ্চিমে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী দ্বারা ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলা, দক্ষিণ পশ্চিমে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলা, দক্ষিণে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা, পূর্ব-দক্ষিণে কটিয়াদি উপজেলা, উত্তর দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, উত্তর-পশ্চিমে হোসেনপুর উপজেলা। প্রধান নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী। উপজেলার অভ্যন্তরে সিংগুয়া নামে আর একটি নদী বিল মইসবের থেকে কালিয়াচাপড়া হয়ে জেলার ভাটি এলাকা নিকলীর সাথে ঘোড়াউত্রা নদীতে মিশেছে।
প্রশাসনিক এলাকা
৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলা কিশোরগঞ্জ শহর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। একটি পৌরসভা হচ্ছে
- ১.পাকুন্দিয়া
ইউনিয়নগুলো হচ্ছে ঃ-
- ১.জাংগালিয়া ইউনিয়ন
- ২. চন্ডিপাশা
- ৩. চরফরাদি
- ৪. এগারসিন্দুর
- ৫. হোসেন্দী
- ৬. বুরুদিয়া
- ৭. নারান্দী
- ৮ পাটুয়াভাঙ্গা
- ৯.সুখিয়া
- [2]
যোগাযোগ
সড়কপথই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এ উপজেলায় কোন রেল যোগাযোগ নেই।
ইতিহাস
পাকুন্দিয়া উপজেলায় অনেক কৃতি পুরুষের জন্মেছেন। এদের মধ্যে প্রয়াত মেজর মতিউর রহমান সাহেবের নাম সর্বাগ্রে চলে আসে। ১৯৮৯ সালে ১১/১২/১৩ ডিসেম্বর যার সাথে পুলিশি যুদ্ব হয় ৫০ ঘন্টা। মুক্তিযুদ্বকালে যিনি কিশোরগঞ্জ নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ মহকুমা এরিয়ায় কমান্ডিং নেতৃত্ব দেন এবং কৃতিত্ব দেখান। ঐ এলাকাজুড়ে তিনি পাক হানাদারদের কে পরাস্থ করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। মেজর মতিউর রহমান পরে ধর্মীয় দিকে ফিরে যান' তার অনুসারী দের নিয়ে তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলার শিমুলিয়ায় নিজ গ্রামে ফর্জে আইন নামক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। নিয়মিত ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে একাটি ব্যতিক্রম ধর্মী সিস্টেম চালু করেন। তিনি গুরত্ব দেন ৪০ প্রকার ফর্জে আইনের ঈমানী আক্বিদা। তার সাথে সারাদেশ থেকে যুক্ত হয় মুক্তিযোদ্ধা গন। কোন এক পুলিশের ঘুষ চাওয়াকে কেন্দ্র করে" ঐ পুলিশ সদস্য কে আটকে রাখলেই যুদ্ব বেধে যায়। অনেক আহত ও ৯ জন নিহত হোন। পরে বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার সমাপ্তি ঘটে। এতে মেজর খালাস পান। এগারসিন্দুর দুর্গ প্রাচীন ঐতিহ্য ও ইতিহাসের কাল সাক্ষী। বারভুইয়াদের অন্যতম ঈসাখাঁর দুর্গ পাকুন্দিয়ার এগারসিন্দুর গ্রামে। এখনও কালের সাক্ষী হিসাবে পর্যটক দের মন কাড়ে। পাকুন্দিয়ার ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব দের মাঝে মাওলানা আব্দুল হেলিম সাহেবকে সবাই স্বরন করেন। শুনা যায় একটি সীমানা সংক্রান্ত ঝগড়াকে তিনি মিটিয়ে দেন' গাছকে সড়ে যেতে বলে। তিনি নাকি বলেছিলেন এই গাছ তুমি যার আসল সেদিকে যাও। এবং ঐ গাছ যথা স্থানে ফেরত যায়। মৌলভী আব্দুল হাই এর নাম ও এ উপজেলার ইতিহাসজ্ঞ দের স্বরণে" যিনি কয়েকজন রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব এর ও শিক্ষক ছিলেন। সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী এবি এম জাহিদুল হক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমান সাহেবদের শিক্ষক ছিলেন। তিনি এই উপজেলার জড়িরপাড় গ্রামের বাসিন্দা। এ উপজেলাতেই জন্মেছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি চুন্নু মিয়া। আহুতিয়া গ্রামে যিনি একটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র প্রতিষ্টা করেছেন। কালিয়াচাপড়া বাজার এ উপজেলার প্রধান আকর্ষণ " প্রতি মঙ্গল বার দিন এখানে হাট বসে" তিন টি উপজেলার প্রাণকেন্দ্র এ বাজার ঐতিহাসিক পুলেরঘাট নামে পরিচিত। এছাড়াও মির্জাপুর মটখোলা দরগাহ বাজার এ এলাকার বিখ্যাত হাটবাজার। পাকুন্দিয়া সদর শাকশব্জির পাইকারি বাজার বসে সপ্তাহে ৩ দিন। যেখান থেকে সারাদেশব্যপী পাইকারি শব্জি চালান হয়। এখানকার উৎপাদিত আলু হিমায়িত করার একটি হিমাগারো প্রতিষ্টিত আছে।
বাজার
কলাদিয়া গরুর হাট এ উপজেলার বিশালত্ব নিয়ে প্রতি সোমবারে বাজার বসে। রাজধানী ও প্রতিবেশী জেলা সমূহ থেকে এ বাজারের ক্রেতা সমাগম হয়। কোরবানি মৌসুমে এ বাজার প্রতিদিন খোলা থাকে। এটি শিমুলিয়া কলাদিয়ায় অবস্থিত। স্থানীয়ভাবে মির্জাপুর বাজারের রসগোল্লার রয়েছে আলাদা খ্যাতি।এই মিষ্টান্ন আস্বাদনের পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহ থেকেও অসংখ্য ভোক্তার আগমন ঘটে থাকে।
জনসংখ্যার উপাত্ত
পাকুন্দিয়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,১০৩,৫৫(প্রায়)। এর মধ্যে পুরুষ ৫১.২৬ শতাংশ এবং মহিলা ৪৮.৭৪ শতাংশ(ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ৯৫.৭৫ শতাংশ মুসলমান ও ৪.২৫ শতাংশ হিন্দু)।
শিক্ষা
পাকুন্দিয়া উপজেলায় মোট কলেজের সংখ্যা ৮ টি।
১। পাকুন্দিয়া ডিগ্রী কলেজ, পাকুন্দিয়া।
২। পাকুন্দিয়া মহিলা ডিগ্রী কলেজ, পাকুন্দিয়া।
৩। হোসেন্দী আদর্শ কলেজ, হোসেন্দী, পাকুন্দিয়া।
৪। হাজী জাফর আলী কলেজ, মঠখোলা, পাকুন্দিয়া।
৫। শিমুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, শিমুলিয়া, পাকুন্দিয়া।
৬। জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, জাঙ্গালিয়া, পাকুন্দিয়া।
৭। চর আদর্শ কলেজ ,চরকাওনা,পাকুন্দিয়া।
৮।চরটেকী গার্লস কলেজ,পাকুন্দিয়া ।
পাকুন্দিয়া উপজেলায় মোট স্কুল সংখ্যা ১২ টি।
১।কালিয়া চাপড়া চিনি কল উচ্চ বিদ্যালয়।
২। শহীদ আলাউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়, মির্জাপুর, পাকুন্দিয়া।
৩। বুরুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বুরুদিয়া, পাকুন্দিয়া ।
৪। চরকাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পাকুন্দিয়া।
শিল্প প্রতিষ্টান
কালিয়া চাপড়া চিনিকল (বিলুপ্ত) বর্তমানে নিটল-নিলয় চিনিকল হিসেবে বেসরকারী পর্যায়ে এখনো চালু আছে । পাকুন্দিয়ায় একটি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্টান আছে নাম ডেল্টা ফার্মাসিটিক্যাল। একটা কোল্ড স্টোরেজ আছে যার নাম এগারসিন্দুর কোল্ডস্টোরেজ, আজলদী,পাকুন্দিয়া, হিমাগার আছে, ছিরামদী, পাকুন্দিয়া, B A D C স্টোরেজ সরকারি যা পাকুন্দিয়া পৌরসভা, একটা ময়দা ফ্যাক্টরি soft atta জাংগালিয়া, পাকুন্দিয়া, অটোরাইসমিল, পাকুন্দিয়া পৌরসভা, এখনও সব চালু আছে
অর্থনীতি
এ উপজেলা সবজির জন্য বিখ্যাত।প্রতি বছর এখানে অনেক সবজি ও ফল উৎপাদিত হয়।এখানের সবজি /ফল বিশেষ করে সিলেট,ঢাকা সহ সারা দেশে সারা বছর সরবরাহ করা হয়। মংগলবাড়িয়ার লিচুর ঐতিহাসিক খ্যাতি এ উপজেলাতেই।তাছাড়া এখানে প্রচুর ধানও উৎপাদিত হয়,যা এখানের খাবারের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
বিখ্যাত ব্যক্তি
- পাকুন্দিয়ার কৃতি ব্যক্তিত্বের মাঝে যাঁর নাম আগে আসে তিনি পীরে কামেল আব্দুল হালীম হুসাইনী রহ.।
- মোহাম্মদ মতিউর রহমান (১০ মার্চ, ১৮৯২ - ১৮ অক্টোবর, ১৯৬৫) ছিলেন বাংলাদেশের একজন শিক্ষক, গবেষক ও লেখক। জন্ম হোসেন্দিতে।<href name="সংসদ">সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, দ্বিতীয় মুদ্রণ, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫৩৬, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬</ref>
- আবুল কাসেম ফজলুল হক (জন্মঃ ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৪) বাংলাদেশের প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ।
- মেজর মতিউর রহমান শিমুলিয়া মুক্তিযুদ্বা বীরবিক্রম
- ড: আলাউদ্দিন আহমেদ ভিসি (সাবেক)জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নদ নদী
পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪টি নদী রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, বানার লোয়ার নদী এবং নরসুন্দা নদী[3][4] ঘোড়াাউত্র্রা
দর্শনীয় স্থান
- বারভূইয়াঁদের অন্যতম সোনার গাঁর শাসক ঈসা খাঁর দুর্গ হিসাবে পরিচিত এগারসিন্দুর পাকুন্দিয়ার ঐতিহাসিক স্থান।
- পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ,মির্জাপুর।
- মির্জাপুর জমিদার বাড়ী,পাকুন্দিয়া
- রয়েছে হরশী শাহী মসজিদ,সুখিয়া।
- সৈয়দ মলং শাহ্ এর মাজার পাকুন্দিয়া বাজার সংলগ্ন।
- বাহাদিয়া পাঁচ পীরের মাজার।
- মঙ্গলবাড়িয়া কামিল মাদ্রাসা ও সালংকা মসজিদ।
- ঈঁসা খাঁর দুর্গ ছাড়াও এগারসিন্দুরে দুটি ঐতিহাসিক পুরনো মসজিদ রয়েছে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- বাংলাপিডিয়া (৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "পাকুন্দিয়া উপজেলা"। http://bn.banglapedia.org/। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৬।
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৭।
- ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০১, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৮। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
আল মামুন, কাজিহাটী, পাকুন্দিয়া, কিছু অজানা তথ্য ২০১৮