কেরানীগঞ্জ উপজেলা

কেরানীগঞ্জ বাংলাদেশের ঢাকা জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। কেরানীগঞ্জের সাবেক আয়তন বর্তমান কেরানীগঞ্জ থেকে শুরু করে ঢাকা মহানগর সহ গাজীপুরের একাংশ- এই বৃহত্তর এলাকাটি কেরানীগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছিলো।

কেরানীগঞ্জ
উপজেলা
ডাকনাম: পারজোয়ার
কেরানীগঞ্জ
বাংলাদেশে কেরানীগঞ্জ উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪১′২৪.০০০″ উত্তর ৯০°২০′২৪.০০০″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাঢাকা জেলা
প্রশাসনিক এলাকাঢাকা-২ ঢাকা-৩
আয়তন
  মোট১৬৬.৮৭ কিমি (৬৪.৪৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট৬,০৩,১১৪
  জনঘনত্ব৩৬০০/কিমি (৯৪০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৮৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ২৬ ৩৮
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

আয়তন ও অবস্থান

কেরানীগঞ্জ ২৩.৬৮৩৩° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৯০.৩১২৫° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। ঢাকা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা নদীর উপকন্ঠে কেরানীগঞ্জ অবস্থিত। ১৬৬.৮৭ বর্গ কিলোমিটার এলকা নিয়ে গঠিত কেরানিগঞ্জ উপজেলার উত্তরে মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গির চর, লালবাগ, কতোয়ালি ও সূত্রাপুর থানা এবং সাভার উপজেলা, পূর্বে শ্যামপুর থানা এবং নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে সিরাজদীখান উপজেলা এবং পশ্চিমে নবাবগঞ্জ উপজেলাসিঙ্গাইর উপজেলা অবস্থিত। প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা এবং ধলেশ্বরী । তিনটি আধুনিক সেতু (বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু যা বুড়িগঙ্গা সেতু-১ নামেও পরিচিত, বাবুবাজার ব্রিজ যা বুড়িগঙ্গা সেতু-২ নামে পরিচিত ও শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, যা বুড়িগঙ্গা সেতু-৩ নামেও পরিচিত) দ্বারা রাজধানী ঢাকার সাথে কেরানীগঞ্জ সংযুক্ত।

তবে কেরানীগঞ্জের সাবেক আয়তন বর্তমান কেরানীগঞ্জ থেকে শুরু করে ঢাকা মহানগর সহ গাজীপুরের একাংশ- এই বৃহত্তর এলাকাটি কেরানীগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছিলো।

প্রশাসনিক এলাকা

পুলিশ প্রসাশনের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ এখন দু’টি থানায় বিভক্ত যথাঃ কেরানীগঞ্জ দক্ষিণকেরানীগঞ্জ মডেল থানা এবং ইউনিয়নগুলো হল - হযরতপুর, কলাতিয়া, তারানগর, শাক্তা,জিনজিরা, রোহিতপুর, বাস্তা, কালিন্দী, শুভাঢ্যা, তেঘরিয়া, কোন্ডা এবং আগানগর ইউনিয়ন। অদূর ভবিষ্যতে রাজধানী ঢাকাকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ সরকাররের।

ইতিহাস

কেরানীগঞ্জ নামকরণের পেছনে যে দুটি সম্ভাব্য ঐতিহাসিক ঘটনাকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয় তার পেছনে ইতিহাস ভিত্তিক কোন শক্ত সমর্থন পাওয়া যায় না। নবাব শায়েস্তা খানের শাসনামলে নবাবের পাইক-পেয়াদা এবং কেরানীরা বুড়িগঙ্গার ওপারে থাকতেন। এজন্য ধারণা করা হয় এই কেরানীদের নামানুসারে কেরানীগঞ্জের নামকরণ হয়েছে। এছাড়া ভিন্ন একটি মত অনুসারে, মোগল আমলে ঢাকার তৃতীয় গভর্নর ইব্রাহীম খাঁনের দুজন কর্মচারী বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে বসবাস করতেন। সে থেকে এ এলাকার নাম কেরানিগঞ্জ নামকরণ করা হয়। কেরানীগঞ্জ দ্বীপাকার বলে মোঘল আমলের এক পর্যায়ে এই স্থানের নাম হয় পারজোয়ার। কেরানীগঞ্জের উত্তর ও পূর্ব সীমান্তে রয়েছে বুড়িগঙ্গা, পশ্চিম- দক্ষিণ সীমান্তে রয়েছে ধলেশ্বরী । মোঘল আমলে ধলেশ্বরী নদীর নাম ছিল ঢল সওয়ার। জোয়ার শব্দের অর্থ অঞ্চল এবং পার শব্দের অর্থ তট। সম্ভবত এই জন্যই মোঘল আমলে এই এলাকার নাম রাখা হয়েছিল পারজোয়ার যা আজও কেরানীগঞ্জের ছোট একটি এলাকার নাম হিসেবে বিদ্যমান।

ঐতিহাসিকভাবে, ১৭৫৭ সালে শাসক পরিবর্তনের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রী এবং তার এক খালা কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরাতে কারাবন্দী ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কৌশলগতভাবে বিশেষত গেরিলা যুদ্ধের ক্ষেত্রে কেরানীগঞ্জ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঢাকা শহরে পরিচালিত অধিকাংশ গেরিলা যুদ্ধ পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা হয় কেরানীগঞ্জ থেকে এবং এজন্য অনেক মূল্যও দিতে হয়েছে। পাকিস্থানী সেনারা কোনাখোলা,বাস্তা, ব্রাক্ষ্মণকৃর্থ, ঘাটারচর, মনোহরিয়া, জয়নগর, গোয়ালখালি, খাগাইল ও খোলামোড়ার বহু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। গেরিলারা পরবর্তীতে এখান হতে পাকিস্থানী সেনাদের ওপরে ব্যাপক গেরিলা আক্রমণ চালায়।

জনসংখ্যার উপাত্ত

১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কেরানীগঞ্জের জনসংখ্যা ছিল ৫,৩০,১৭৪ জন। এর মধ্যে ৫৪.৬ শতাংশ পুরষ এবং ৪৫.৪ শতাংশ নারী। ১৮ উর্দ্ধ জনসংখ্যা ছিল ২,৮৩,৯৯৭ জন। সেসময় এই উপজেলায় ৭-উর্দ্ধ বয়সী জনসংখ্যার ৩৭.৭% স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ছিল যা জাতীয় গড় সাক্ষরতার ৩২.৪ শতাংশ।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে কেরানীগঞ্জ উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.