একুশে পদক
একুশে পদক বাংলাদেশের একটি জাতীয় এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সালে এই পদকের প্রচলন করা হয়। ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৬১ জন গুণী ব্যক্তি ও ২টি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। [1][2]
একুশে পদক | |
---|---|
একুশে পদক | |
পুরষ্কারের কারণ | বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে এ পুরস্কার দেয়া হয়। |
অবস্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ |
দেশ | |
পুরস্কারদাতা | বাংলাদেশ |
স্বাগতিক | বাংলাদেশ সরকার |
প্রথম পুরস্কৃত | ১৯৭৬ |
সর্বশেষ পুরস্কৃত | ২০১৯ |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালে একুশে পদক প্রবর্তন করেন। বঙ্গভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে প্রথমবারের মতো একুশে পদক প্রদান করা হয়। পরে কবি জসীম উদ্দীন ও বেগম সুফিয়া কামাল একুশে পদকে ভূষিত হন।[3]
পদক
প্রত্যেক পদকপ্রাপ্তকে একটি পদক, একটি সম্মাননা সনদ, একটি রেপ্লিকা এবং পুরস্কারের অর্থমূল্য প্রদান করা হয়ে থাকে।[4] একুশে পদকে ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়ে তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি পদক প্রদান করা হয়;[4] যার নকশা করেছেন নিতুন কুণ্ডু।[5] প্রাথমিকভাবে পুরস্কারের অর্থমূল্য ২৫,০০০ টাকা দেয়া হতো; বর্তমানে এটি ২ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।[4]
পুরস্কার প্রদান পদ্ধতি
একুশে পদক প্রদানের ক্ষেত্রে নিচে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরন করা হয়।[6]
- সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ, জেলা প্রশাসক, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থা এবং সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে পুরস্কার প্রদানের বিষয় উল্লেখ করে সংযুক্তি ছক অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এই পুরস্কার পাওয়ার উপযুক্ত ব্যক্তিদের নামের প্রস্তাব বা মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মাধ্যমে প্রেস রিলিজ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
- পূর্বে যারা একুশে পদক বা স্বাধীনতা পদক লাভ করেছেন তারাও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বা প্রতিষ্ঠানের মনোনয়ন প্রস্তাব পাঠাতে পারে।
- প্রস্তাবকদের তাদের প্রস্তাবিত ব্যক্তি সম্পর্কে ৩৫০ শব্দের মধ্যে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি সংযুক্তি ছকে উল্লেখ করতে হয় (প্রমাণপঞ্জিসহ)।
- জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একুশে পদক মনোনয়ন বাছাই সংক্রান্ত সাব-কমিটি প্রাথমিক তালিকা বাছাই করে অথবা মন্ত্রিসভা কমিটির বিবেচনায় উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরন করে।
- প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে নির্বাচিত ব্যক্তি (বর্গ)/ প্রতিষ্ঠান (সমূহ)-এর নাম প্রকাশ করে। তার আগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের (মরণোত্তর পদকের ক্ষেত্রে নির্বাচিত ব্যক্তির স্বামি/স্ত্রী/উপযুক্ত উত্তরাধিকারী) সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে পদক গ্রহণের সম্মতিপত্র নেয়।
- কোনো ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান পদক গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে বা নির্দিষ্ট সময়ে তাদের মতামত না জানালে তা মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে জানানো হয়। ঐ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নাম পদকপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় না এবং তাদের নাম পদকপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয় না
- যে বছর পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হবে সেই বছর মাননীয় রাষ্ট্রপতি/প্রধানমন্ত্রী তাদের হাতে পদক তুলে দেন।
পুরস্কারের ক্ষেত্রসমূহ
পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকা
তথ্যসূত্র
- "জাতীয় পুরস্কার/পদক সংক্রান্ত নির্দেশাবলি (১৫/০৫/২০১৭)" (PDF)। বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৯।
- "বিডিনিউজ২৪"। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- "আমাকে স্বাধীনতা পদক দেননি কেন, শেখ হাসিনাকে নির্মলেন্দু গুণের প্রশ্ন"। www.sylhettoday24.news। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১৭।
- "১৬ কৃতী ব্যক্তি পাচ্ছেন একুশে পদক"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- "নিতুন কুন্ডুর প্রয়াণবার্ষিকী আজ"। দৈনিক সমকাল। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৮।
- "একুশে পদক প্রদানের পদ্ধতি"। তথ্য মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।