স্বাধীনতা পুরস্কার

স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার বা স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ এই পদক প্রদান করা হয়ে আসছে। এই পুরস্কার জাতীয় জীবনে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের নাগরিক এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যক্তির পাশাপাশি জাতীয় জীবনের নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অনন্য উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানসমূহকেও এই পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। [1][2]

স্বাধীনতা পুরস্কারের স্বর্ণপদক
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার
swadhinataPadak.jpg
দেশ বাংলাদেশ
পুরস্কারদাতা দেশ

বাংলাদেশ সরকার
ধরন বেসামরিক নাগরিক
পুরস্কৃত হওয়ার কারন
পরিসংখ্যান
প্রতিষ্ঠিত ১৯৭৬
প্রথম পুরস্কৃত ১৯৭৭
শেষ পুরস্কৃত ২০১৮
ফিতা
পূর্ববর্তী
পরবর্তী (উর্ধতন) নেই
পরবর্তী (অধীনস্থ) একুশে পদক

প্রত্যেক পদকপ্রাপ্তদের একটি ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ নির্মিত ৫০ গ্রাম ওজন বিশিষ্ট পদক, একটি সম্মাননাসূচক প্রত্যয়ন পত্র এবং সম্মাননা স্বরুপ নির্দিষ্ট অঙ্কের নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।[2][3] প্রাথমিকভাবে প্রদানকৃত অর্থের পরিমাণ কুড়ি হাজার ছিল, তবে ২০১৩ সালে থেকে দুই লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হয়ে আসছে।[3]

ইতিহাস

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পদকের প্রবর্তন করেন।[4] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ এই পদক প্রদান করা হয়ে আসছে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই পুরস্কারের প্রবক্তা।

পুরস্কারের ক্ষেত্র

স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দেয়া হয়:[3]

  1. স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ
  2. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  3. চিকিৎসাবিদ্যা
  4. শিক্ষা
  5. সাহিত্য
  6. সংস্কৃতি
  7. ক্রীড়া
  8. পল্লী উন্নয়ন
  9. সমাজসেবা/জনসেবা
  10. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন
  11. জনপ্রশাসন
  12. গবেষণা ও প্রশিক্ষণ
  13. সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোন ক্ষেত্র

প্রায় প্রতি বছর কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য জীবিতদের পাশাপাশি মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়ার রীতিও আছে।

বাছাই পদ্ধতি

বাংলাদেশ সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ, জেলা প্রশাসক, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে অধিদপ্তর/ দপ্তর/ সংস্থাকে পুরস্কার প্রদানের বিষয় উল্লেখ করে সংযুক্তি ছক অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এই পুরস্কার পাওয়ার উপযুক্ত ব্যক্তিদের নামের প্রস্তাব বা মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রী ও সচিবেরা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম পাঠানোর পর প্রাথমিক বাছাই করে একটি তালিকা করা হয়। এরপর পদক কমিটির বৈঠকে এই তালিকা উঠানো হয়। সেখান থেকে তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী এই তালিকায় সংযোজন বা বিয়োজন করতে পারবেন। এরপর মন্ত্রিসভার বৈঠকে তালিকাটি চূড়ান্ত করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংখ্যা কোনো বছর ১০ এর বেশি হবে না, তবে প্রধানমন্ত্রী চাইলে এই সংখ্যা বাড়াতে পারেন।[5]

কোনো ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান পদক গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে বা নির্দিষ্ট সময়ে তাদের মতামত না জানালে তা মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে জানাতে হয়। ফলে ঐ ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠানের নাম পদকপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় না এবং তাদের নাম পদকপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয় না।[5]

পদকটি সাধারণত স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যায়, বিভিন্ন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও অন্যান্য বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতিতে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।[2]

পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকা

তথ্যসূত্র

  1. "জাতীয় পুরস্কার/পদক সংক্রান্ত নির্দেশাবলি (১৫/০৫/২০১৭)" (PDF)বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৯
  2. সানজিদা খান (২০১২)। "জাতীয় পুরস্কার"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীরবাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901। ওসিএলসি 883871743
  3. "স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত নির্দেশাবলী" (PDF)। cabinet.gov.bd। সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৭, ২০১৫
  4. "স্বাধীনতা পদক"দৈনিক নয়া দিগন্ত। ২০১৮-০৮-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-১৭
  5. "স্বাধীনতা পদক প্রদানের বিস্তারিত প্রক্রিয়া"nhd.gov.bd। জুন ৪, ২০১৭। ২৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৮

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.