ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক রেজিমেন্ট। প্রতিষ্ঠা করেন মেজর এম এ গনি

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট
রেজিমেন্টাল মনোগ্রাম
সক্রিয়১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮-বর্তমান
দেশবাংলাদেশ
শাখাসেনাবাহিনী
ধরনপদাতিক
ভূমিকাআমরা নিকটে গিয়ে শত্রুকে ধ্বংস করি
আকার৫০ ব্যাটালিয়ন
অংশীদাররেজিমেন্ট
গ্যারিসন/সদরদপ্তরচট্টগ্রাম
ডাকনামদি টাইগার্স
নীতিবাক্যGrace, Strength, Speed
Coloursজমাটবাধা রক্তের রং (বিসিসি ৩৭)
মার্চচল চল চল
বার্ষিকীসমূহ১৫ই ফেব্রুয়ারি
যুদ্ধসমূহ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ  :

লাহোর প্রতিরক্ষা যুদ্ধ ,

চাওিন্ডার যুদ্ধ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
কমান্ডার
বর্তমান
কমান্ডার
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওবায়দুল হক
কর্নেল কমান্ড্যান্টজেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া (সেনাপ্রধান)
উল্লেখযোগ্য
কমান্ডার
মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী (প্রতিষ্ঠাতাকালীন অফিসার কম্যান্ডিং)

জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ,

লেফটেনেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান

ইতিহাস

ব্রিটেন-এর নিকট থেকে ভারতের স্বাধীন হওয়ার ফলশ্রুতিতে ১৯৪৮ সালের ১৫ই ফেব্রুযারী এই বাহিনী গঠিত হয়। স্বাধীনতার চুক্তি মোতাবেক, মুসলিম জনগণকে আলাদা রাষ্ট্র পাকিস্তান দেওয়া হয়, যা পূর্ব পাকিস্তানপশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে গঠিত হয়। নতুন পাকিস্তান সেনাবাহিনী গঠিত হয়েছিল প্রধানত দেশের পশ্চিমাংসের মানুষের সমন্বয়ে। পরবর্তীতে পূর্বাংশেও একটি রেজিমেন্ট গঠন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, বিহার রেজিমেন্ট-এর বাঙালি সৈনিকদের দুটি কোম্পানির সমন্বয়ে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট-এর ১ম ব্যাটেলিয়ন গঠন করা হয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশরা বাঙ্গালীদের " নন -মার্শালরেস " বা বাঙ্গালীরা যোদ্ধা জাতী না বলে চিহ্নিত করে এ কারনে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বাঙ্গালীদের অংশগ্রহণ বন্ধ করা হয় ফলে বাংলা যে নিগ্রহের ও অবিচারের শিকার হচ্ছিল ১৯৪৮ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনের মাধ্যমে বাঙালী জাতি পুনরায় তাদের হুত গৌরবের পুনরুদ্ধার এর সুযোগ লাভ করে । ১৯৪৭ সালে রূপান্তরকালীন পাকিস্তান ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডারস হেডকোয়ার্টার পাকিস্তান সেল দিল্লী ও পরে পাকিস্তান সেনাসদর রাওয়ালপিন্ডিতে কর্মরত লেফটেনেন্ট কর্নেল এম ,এ ,জি ,ওসমানী এবং মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী পূর্ববাংলায় একটি বাঙালি প্রধান রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার জোর প্রয়াস চালান। লেফটেনেন্ট কর্নেল এম ,এ ,জি ,ওসমানী এবং মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী পূর্বনির্ধারিত প্রস্তাবে পূর্ববাংলায় পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ড (পি,এন,জি) গঠনকে স্তগিত করে তার পরিবর্তে পূর্ববাংলায় একটি পূর্ণাঙ্গ বাঙালী প্রধান রেজিমেন্ট গঠনের প্রয়োজনীয়তা রূপান্তরকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল ক্লাউদে অচিনলেওক এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রথম সেনাপ্রধান জেনারাল ফ্রাংক ওয়াল্টার মেসারভীর মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাকিস্তান সরকারের নিকট পেশ করেন । সেনাপ্রধান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবটির সামরিক গুরুত্ব মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তথা পাকিস্তান সরকারের নিকট উত্থপন করলে পাকিস্তান সরকার একরকম বাধ্য হয়ে অনুমোদন প্রদান করেন । লেফটেনেন্ট কর্নেল ভি,জে,ই, পেটারসন ছিলেন প্রথম কম্যান্ডিং অফিসার এবং প্রথম অফিসার কম্যান্ডিং ও.সি. ছিলেন দ্বিত্বীয় বিশ্বযুদ্ধ ফেরত ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ বাঙালি সেনা কর্মকর্তা মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী । প্রতিষ্ঠাতাকালীন অধিনায়ক অফিসার কম্যান্ডিং মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ রেজিমেন্ট গঠন করার দায়িত্ব লাভ করেন । বিরুপ পরিস্তিতী অপর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিনিয়র টাইগারস কে গঠন ও প্রশিক্ষন প্রদান করেন। তাঁর হাতে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিনিয়র টাইগারসদের হাতেখড়ি , তাঁর প্রশিক্ষিত বাঙ্গালি যোদ্ধারা রণাঙ্গনে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রমাণ করে তাদের বীরত্ত ও শ্রেষ্ঠত্ব , সূচনা হয় বাঙ্গালি সেনাদের গৌরবের ইতিহাস । এর কিছুকাল পরেই ২য় ব্যাটেলিয়ন গঠন করা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মোট ৮টি ব্যাটেলিয়ন গঠন করা হয়, যার মধ্যে ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম ব্যাটেলিয়ন পশ্চিম পাকিস্তানে গঠন করা হয়।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর সামরিক হামলার প্রতিক্রিয়া সরূপ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঁচটি ব্যাটেলিয়ন বিদ্রোহ করে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা করে। প্রথমে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিয়েই স্বাধীনতা যোদ্ধাদের বাহিনী গঠিত হয়, যা মুক্তিবাহিনী নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানে রয়ে যাওয়া অংশকে প্রতিস্থাপন করতে অন্যান্য ইউনিট গড়ে তোলা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এদের নিয়েই নতুন সেনা বাহিনী গঠন করা হয়। অবশ্য ৭ম ব্যাটেলিয়ন ৪৪তম ব্যাটেলিয়ন হিসাবে পাকিস্তান সেনা বাহিনীর ফ্রন্টিয়ার্স ফোর্স রেজিমেন্টে একত্রীভূত হয়, যারা ১৯৭১ সালে ১০ম ব্যাটেলিয়ন গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিল।

ভূমিকা

ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় সৈন্য বিন্যাস । ১৫টি পদাতিক ব্রিগেডেই এই রেজিমেন্টের ব্যাটেলিয়ন আছে। এই রেজিমেন্ট বিদেশে শান্তি-রক্ষায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারও বাস্তবায়ন করছে, যা বাংলাদেশকে জাতিসঙ্ঘ[1] শান্তি মিশনের সবচেয়ে বড় অবদানকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

  • UNOCI
    • ৩৬ ব্যাটেলিয়ন, ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট
    • ৩৮ ব্যাটেলিয়ন, ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট
  • UNMIL
    • ৪০ ব্যাটেলিয়ন, ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট

তথ্যসূত্র

  1. As of Dec 2008, Bangladesh was ranked second behind Pakistan and ahead of India in terms of numbers of troops deployed on UNPKOs. See official UN figures, available at: http://www.un.org/Depts/dpko/dpko/contributors/2008/dec08_2.pdf

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.