পশ্চিম পাকিস্তান

পশ্চিম পাকিস্তান (উর্দু: مغربی پاکستان, Mag̱ẖribī Pākistān আ-ধ্ব-ব: [məɣrɪbiː pɑːkɪst̪ɑːn]; বাংলা: পশ্চিম পাকিস্তান, Pôścim Pākistān) ছিল ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের মাধ্যমে পাকিস্তান গঠনের পর রাষ্ট্রের দুটি অংশের অন্যতম অংশ।

পশ্চিম পাকিস্তান
مغربى پاکستان
পশ্চিম পাকিস্তান
পাকিস্তান অধিরাজ্যের প্রাক্তন পশ্চিম অংশ

১৯৪৭–১৯৭০
পতাকা প্রতীক
নীতিবাক্য
"ঐক্য, শৃঙ্খলা, বিশ্বাস"
সঙ্গীত
কওমী তারানা
জাতীয় সঙ্গীত
পশ্চিম পাকিস্তানের অবস্থান
গাঢ় সবুজ অংশ দ্বারা পশ্চিম পাকিস্তানের অংশ চিহ্নিত; দাবিকৃত তবে অনিয়ন্ত্রিত অঞ্চল হালকা সবুজ দ্বারা চিহ্নিত।
রাজধানী করাচি (১৯৪৭–১৯৫৫)
লাহোর (ঘোষিত)
ইসলামাবাদ (১৯৬৫–১৯৭০)
ভাষাসমূহ উর্দু (দাপ্তরিক)
ইংরেজি (দাপ্তরিক)
বালুচি · পশতু · পাঞ্জাবি
সারাইকি · সিন্ধি · কাশ্মিরি
ধর্ম ইসলাম
হিন্দু ধর্ম
খ্রিষ্ট ধর্ম
সরকার সংসদীয় ডমিনিয়ন (১৯৪৭-১৯৫৮)
রাষ্ট্রপতিশাসিত প্রজাতন্ত্র (১৯৬০-১৯৬৯)
সামরিক সরকার (১৯৬৯-১৯৭০)
মুখ্যমন্ত্রী
 -  ১৯৫৫-১৯৫৭ খান আবদুল জব্বার খান
 - ১৯৫৭-১৯৫৮ সর্দার আবদুর রশিদ খান
 - ১৯৫৮ মুজাফফর আলি খান কিজিলবাশ
গভর্নর
 - ১৯৫৫-১৯৫৭মুশতাক আহমেদ গুরমানি
 - ১৯৫৭-১৯৬০ আখতার হুসাইন
প্রশাসকa
 - ১৯৬০-১৯৬৬ আমির মুহাম্মদ খান
 - ১৯৬৬-১৯৬৯ মুহাম্মদ মুসা
 - ১৯৬৯-১৯৭০ নুর খান
আইন-সভা আইন পরিষদ
উচ্চ আদালত
ঐতিহাসিক যুগ স্নায়ুযুদ্ধ
 - প্রতিষ্ঠা ১৪ আগস্ট ১৯৪৭
 - চূড়ান্ত প্রতিষ্ঠা ২২ নভেম্বর ১৯৫৪
 - বিলুপ্তি[1] ১ জুলাই ১৯৭০
মুদ্রা পাকিস্তানি রুপি (M)
কলিং কোড +৯২
বর্তমানে অংশ  পাকিস্তান
a.সামরিক আইনের অধীন.
সতর্কীকরণ: "মহাদেশের" জন্য উল্লিখিত মান সম্মত নয়

১৯৪৭ সালে ব্রিটেন ভারতের স্বাধীনতা প্রদান করে। এসময় ভারত বিভাগের মাধ্যমে ভারতপাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের দুই অংশ ভারতের দুই পাশে অবস্থিত ছিল। পাকিস্তানের পশ্চিম অংশে ছিল তিনটি গভর্নর প্রদেশ (উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পশ্চিম পাঞ্জাবসিন্ধু প্রদেশ), একটি চীফ কমিশনার প্রদেশ (বালুচিস্তান প্রদেশ) এবং বালুচিস্তান স্টেটস ইউনিয়ন। এর সাথে ছিল কিছু স্বাধীন দেশীয় রাজ্য (বাহাওয়ালপুর, চিত্রাল, দির, হুনজা, খায়েরপুরসোয়াত), করাচির চারপাশের ফেডারেল রাজধানী অঞ্চল ও গোত্রীয় এলাকা।[1] রাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে ছিল পূর্ব পাকিস্তান। এই অংশ একটিমাত্র প্রদেশ পূর্ব বাংলা নিয়ে গঠিত হয়েছিল। এছাড়া পূর্বে আসামের অংশ সিলেট জেলা পূর্ব বাংলার অংশ হয়।

পশ্চিম পাকিস্তানই প্রকৃত পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান একটি প্রাদেশিক অংশ এমন নীতি তৎকালীন সময়ে দেখা যায়। জাতিসত্ত্বার দিক থেকে পূর্ব পাকিস্তান অর্ধেক জনসংখ্যার অধিকারী হলেও অধিকাংশ রাজনৈতিক কর্তৃত্ব পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হত। রাষ্ট্রের দুই অংশের মধ্যে ভৌগলিক দূরত্বের কারণে নতুন সংবিধান প্রণয়নে দেরী হয়েছিল বলে মনে করা হয়। দুই অঞ্চলের মধ্যে পার্থক্য দূর করার জন্য সরকার দুইটি পৃথক প্রদেশকে এক ইউনিট হিসেবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী মুহাম্মদ আলি ১৯৫৪ সালের ২২ নভেম্বর তা ঘোষণা করেন।

স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। সাউথইস্ট এশিয়া ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিয়াটো) ও সেন্ট্রাল ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সেনটো) এই দুটিতে পাকিস্তান প্রভাবশালী সদস্য ছিল। পশ্চিম পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিতে পরিণত হয়। পাকিস্তানের অধিকাংশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি পশ্চিম অংশে সীমাবদ্ধ ছিল এবং পূর্ব পাকিস্তানে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্পন্ন হয়নি।

১৯৭০ সালে রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান বেশ কিছু ধারাবাহিক আঞ্চলিক, সাংবিধানিক ও সামরিক সংস্কারে হাত দেন। এর মাধ্যমে প্রাদেশিক আইনপরিষদ, রাষ্ট্রীয় আইনসভা ও বর্তমানে পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের প্রাদেশিক সীমানা চিহ্নিত হয়। ১৯৭০ সালে লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার, ১৯৭০ অনুযায়ী “এক ইউনিট” বাতিল করা হয় এবং “পশ্চিম” শব্দ বাদ দিয়ে শুধু পাকিস্তান নামে রাষ্ট্রের নামকরণ করা হয়।[1] এই আদেশ পূর্ব পাকিস্তানে কোনো প্রভাব ফেলেনি।[1] পরের বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে পৃথক হয়ে যায়। এরপর থেকে পাকিস্তানের পশ্চিম অংশ পাকিস্তান হিসেবে কার্যকর রয়েছে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Story of Pakistan। "West Pakistan Established as One Unit [1955]"Story of Pakistan (Note: One Unit continued until General Yahya Khan dissolved it on July 1, 1970)। Story of Pakistan, West Pakistan। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২

বহিঃসংযোগ

উইকিমিডিয়া কমন্সে পশ্চিম পাকিস্তান সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.