খবিরুজ্জামান

শহীদ খবিরুজ্জামান (জন্ম: ১৯৫১ - মৃত্যু: ১২ অক্টোবর, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1]

খবিরুজ্জামান
জন্ম১৯৫১
মৃত্যু১২ অক্টোবর, ১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

শহীদ খবিরুজ্জামানের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল জব্বার মৃধা এবং মায়ের নাম সুফিয়া খাতুন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। [2]

কর্মজীবন

খবিরুজ্জামান ১৯৭১ সালে নৌকমান্ডোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর চট্টগ্রামে প্রথম অপারেশনে অংশ নেন। পরবর্তীতে খুলনার চালনা বন্দরে যুদ্ধে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে খবিরুজ্জামানসহ তিনজন নৌ কমান্ডো ভারত থেকে রওনা হলেন মাদারীপুরের উদ্দেশে। এ দলের লক্ষ্য টেকেরহাট ফেরিঘাটে আক্রমণ। নিরাপত্তার কারণে তাদের রাতে চলাচল করতে হয় আর যাত্রাপথও তাদের অচেনা। নানা বাধা অতিক্রম করে কষ্টে যুদ্ধাস্ত্র, মাইনসহ তারা সাত দিনে পৌঁছালেন মাদারীপুরের রাজৈরে গোপন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে। সেখানে অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর তারা সিদ্ধান্ত নিলেন অক্টোবরের শেষ দিকে টেকেরহাট ফেরিঘাট আক্রমণের। তাদের নিরাপত্তা দেবে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল। নির্ধারিত দিন রাত একটায় খবিরুজ্জামান ও অন্য দুই নৌ কমান্ডো মাইন বুকে বেঁধে এগিয়ে যেতে থাকলেন। কিন্তু রেকিতে ভুল থাকায় খবিরুজ্জামান তার টার্গেট খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এ জন্য তিনি পানি থেকে মাথা উঁচু করে তা খুঁজতে থাকলে পাকিস্তানি সেনারা তাকে দেখে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের ছোড়া এক ঝাঁক গুলিতে খবিরুজ্জামানের মাথা ও দেহ ঝাঁঝরা হয়ে যায়। নৌকমান্ডো খবিরুজ্জামান সেদিন এখানে শহীদ হন। অন্য দুজন কমান্ডো সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের লাগানো মাইনে ফেরিঘাট সম্পূর্ণ ডুবে যায়। ঘটনার তিন দিন পর খবিরুজ্জামানের সহযোদ্ধারা জানতে পারেন টেকেরহাট থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরবর্তী এক স্থানে নদীতে ডুবুরির পোশাক পরিহিত খবিরুজ্জামানের লাশ ভেসে আছে। তখন তারা সেখানে গিয়ে খবিরের লাশ শনাক্ত করেন। কিন্তু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভয়ে তারা শহীদ খবিরের লাশ দাফন করতে না পেরে ডুবুরির পোশাক খুলে কুমার নদেই লাশটি ভাসিয়ে দেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা প্রদর্শনের জন্য শহীদ খবিরুজ্জামানকে মরণোত্তর বীর বিক্রম খেতাব দেওয়া হয়েছে। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না", দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ: ৩০-০৪-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ২৩৮। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭৬। আইএসবিএন 9789843338884।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.