এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমান

এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমান (জন্ম: অজানা, মৃত্যু: ১৯৮১ ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1]

এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমান
মৃত্যু১৯৮১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমানের জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলায়। তার বাবার নাম সাইদুর রহমান এবং মায়ের নাম রেহান আরা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম আনোয়ারা বেগম। তাদের এক মেয়ে, তিন ছেলে।

কর্মজীবন

এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমান চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। এর অবস্থান ছিল চট্টগ্রামের ষোলশহরে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধ যুদ্ধকালে চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।[2]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভৌগোলিক ও সামরিক দিক থেকে হেঁয়াকো ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কাছেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। সেখানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সুরক্ষিত একটি ঘাঁটি। মোতায়েন ছিল বিপুলসংখ্যক সেনা ও তাদের সহযোগী। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার অন্তর্গত রামগড়ের পাহাড়ি এলাকায় ২৭ জুলাই এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা হেঁয়াকোর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই ঘাঁটিতে অতর্কিতে আক্রমণ করে। পাকিস্তানি সেনারা কল্পনাও করেনি মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে আক্রমণ করবে। কারণ, হেঁয়াকো বেশ দুর্গম ও মিজো-অধ্যুষিত এলাকা। মিজোরা তাদের সহযোগী। মুক্তিযোদ্ধা ছিল মাত্র এক প্লাটুন। অন্যদিকে ওই ঘাঁটিতে পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী (প্রশিক্ষিত মিজো) মিলে ছিল তিন গুণেরও বেশি। প্রায় ১২ মাইল দূর থেকে এসে মুক্তিযোদ্ধরা সেখানে অতর্কিতে আক্রমণ চালান। তারা আক্রমণ করামাত্র পাকিস্তানি সেনারাও তৎপর হয়ে ওঠে। তখন সেখানে ২০ মিনিট তুমুল যুদ্ধ হয়। আক্রমণে চারজন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। সেখানে ছিল সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি। মুক্তিযোদ্ধাদের ছোড়া মর্টারের গোলার আঘাতে বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত এবং একটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। সেদিন যুদ্ধে এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমান দলনেতা হিসেবে যথেষ্ট সাহস ও দক্ষতা প্রদর্শন করেন। যুদ্ধ চলাবস্থায় পাকিস্তানি সেনা ও মিজোরা মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট দলটিকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। তখন তিনি সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। তার তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও বুদ্ধিমত্তায় সহযোদ্ধারা চরম বিপর্যয় থেকে রক্ষা পান। পাকিস্তানি ও মিজোদের মতলব বুঝতে পেরে এবং পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে এ ওয়াই এম মাহফুজুর রহমান সঙ্গে সঙ্গে সহযোদ্ধাদের নিয়ে দ্রুত পেছনে হটে যান। এর ফলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজেদের শিবিরে ফিরে যেতে সক্ষম হন। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০৮-০৭-২০১২
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৯৫। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৫৮। আইএসবিএন 9789849025375।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.