নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া

শহীদ নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[1]

নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া
মৃত্যু১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

নূরুল ইসলাম ভূঁইয়ার জন্ম কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব তালতলা গ্রামে। তার বাবার নাম সেকান্দার আলী ভূঁইয়া এবং মায়ের নাম ফাতেমা বেগম। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে শহীদ নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া চতুর্থ। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। [2]

কর্মজীবন

পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া। ১৯৬৯ সালে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে ছুটি কাটিয়ে আবার যোগ দেন কর্মস্থলে। নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কয়েক দিন পরই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। এর পর থেকে তার আর খোঁজ ছিল না। পরিবারের লোকজন জানতেন না তিনি মুক্তিযুদ্ধে গেছেন নাকি যাননি। স্বাধীনতার পর বাবা-মা এবং ভাইবোনরা তার অপেক্ষায় থাকেন দীর্ঘসময়। খোঁজ নিতে থাকেন তারা। মা ও বড় ভাই যান কুমিল্লা সেনানিবাসে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন, ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন। সালদা নদীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক যুদ্ধে তিনি শহীদ হয়েছেন। ওই যুদ্ধে নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া অসীম সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শন করেন। সহযোদ্ধারা তাকে সেখানেই সমাহিত করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার অন্তর্গত সালদা নদী। সালদা নদীসহ কসবার বিভিন্ন স্থানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থান। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর কয়েকটি দল এক সঙ্গে সালদা নদী ও কসবায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানে এক যোগে আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন কে ফোর্স কমান্ডার খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম)। কয়েকদিন ধরে সেখানে যুদ্ধ চলে। এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা বাংকারগুলো ছিল খুবই মজবুত। আর্টিলারির গোলাবর্ষণ করেও সেগুলো ধ্বংস করা সম্ভব হচ্ছিল না। তখন মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকিস্তানিদের অবরোধ করে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকেন। পাকিস্তানি সেনাদের পালাবার পথ ছিল রুদ্ধ। কিন্তু তাদের প্রত্যেক বাংকারেই মজুদ ছিল বিপুল রসদ। সেগুলো নিয়ে অনেকদিন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। পাকিস্তানিরা সুরক্ষিত বাংকারে অবস্থান করে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকে। দুই পক্ষে তুমুল যুদ্ধ চলা অবস্থায় ২১ বা ২২ অক্টোবর খালেদ মোশাররফ গোলার স্প্রীন্টারে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হন। কয়েকদিনের যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর নুরুল ইসলাম ভূইয়াসহ আরও কয়েকজন শহীদ হন। তারা কেউ গুলিতে, কেউ গোলার স্প্রীন্টারের আঘাতে মারা যান। এই যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী; উভয়েরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৪-১০-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.