সিরাজুল হক (বীর বিক্রম)

শহীদ সিরাজুল হক (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[1]

সিরাজুল হক
মৃত্যু১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন সিরাজুল হক (দ্ব্যর্থতা নিরসন)

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সিরাজুল হকের জন্ম কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের কাপড়চতলী গ্রামে। তার বাবার নাম লাল মিয়া এবং মায়ের নাম হাজেরা খাতুন। [2]

কর্মজীবন

দরিদ্র কৃষকের সন্তান সিরাজুল হক কৃষিকাজ করতেন। তার অনিয়মিত মুজাহিদ বাহিনীর প্রশিক্ষণ নেওয়া ছিল। ১৯৭১ সালে সিরাজুল হকের বয়স ছিল ২৭-২৮। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। প্রথমে নিজ এলাকা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রতিরোধ যুদ্ধ করেন। প্রতিরোধ যুদ্ধকালে চৌদ্দগ্রামে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ১৪ মে ভোরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩৯ বালুচ রেজিমেন্টের একাংশ চৌদ্দগ্রাম বাজার আক্রমণ করে। তখন সেখানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। সিরাজুল হক এই যুদ্ধে অংশ নিয়ে সাহসী ভূমিকা রাখেন। যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩০-৩৫ জন নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর আটজন শহীদ হন। এরপর ২৬ মে, ২৯ মে এবং ৩০ মে সেখানে আবার যুদ্ধ হয়। চৌদ্দগ্রামের পতন হলে সিরাজুল হক প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতে যান। সেখানে তাকে নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর চতুর্থ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর তিনি যুদ্ধ করেন দুই নম্বর সেক্টরের মন্দভাগ সাব-সেক্টরে। এই সাব-সেক্টর এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মন্দভাগ রেলস্টেশন থেকে কুটি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বায়েক, জাইমপুর, কসবা থানার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত মন্দভাগ সাব-সেক্টরে অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেপ্টেম্বর মাসে একদিন মন্দভাগ এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক বড় যুদ্ধ হয়। সেদিন এক বাংকারে সিরাজুল হকসহ তার তিন সহযোদ্ধা অবস্থান নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ প্রতিহত করছিলেন। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি সেনারা ওই বাংকার চিহ্নিত করে সেখানে মর্টারের গোলাবর্ষণ করে। গোলার আঘাতে সিরাজুল হকসহ চারজনই শহীদ হন। পরে অন্য সহযোদ্ধারা তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ভারতে নিয়ে যান। মেলাঘরে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের পাশে তাদের সমাহিত করা হয়। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২৮-১১-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.