রফিকুল ইসলাম (বীর বিক্রম)
শহীদ রফিকুল ইসলাম (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1]
রফিকুল ইসলাম | |
---|---|
মৃত্যু | ১৯৭১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() |
পরিচিতির কারণ | বীর বিক্রম |
- একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন রফিকুল ইসলাম।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
রফিকুল ইসলামের জন্ম ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চর খলিফা গ্রামে। তার বাবার নাম সেকেন্দার আলী এবং মায়ের নাম মাসুমা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম মমতাজ বেগম।
কর্মজীবন
রফিকুল ইসলাম চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। এর অবস্থান ছিল জয়দেবপুরে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে প্রথমে ৩ নম্বর সেক্টরের পঞ্চবটী সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেন। পরে এস ফোর্সের অধীন নবগঠিত ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১২-১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আখাউড়ার পতনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চান্দুরায় অগ্রসর হন। দলে ছিলেন নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের অধীন মুক্তিযোদ্ধারা। 'এ' দলের অধিনায়ক ছিলেন এ এস এম নাসিম (বীর বিক্রম)। সামনে থাকা ‘সি’ (চার্লি) দলের সদস্য ছিলেন রফিকুল ইসলাম। চার্লি দলের অধিনায়ক ছিলেন মো. নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া (বীর প্রতীক)। চার্লি দলের দায়িত্ব ছিল কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শাহবাজপুর সেতু দ্রুত দখল করা। সবশেষে ছিল ‘ডি’ (ডেল্টা) দল। এই দলে ছিলেন এস ফোর্সের অধিনায়ক কে এম শফিউল্লাহ (বীর উত্তম) এবং ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক। [2] রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোদ্ধারা ধর্মনগর-হরষপুর-পাইকপাড়া হয়ে অগ্রসর হন সামনের দিকে। মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি দলের মধ্যে এ ও ডি দলের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব ছিল এবং এই দুই দল যখন চান্দুরার কাছে ইসলামপুরে পৌঁছালে তখন একদল পাকিস্তানি সেনা উপস্থিত হয় সেখানে। শুরু হয় যুদ্ধ। সে সময় রফিকুল ইসলামের দল ছিল বেশ সামনে। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে ছুটে আসেন এবং পাকিস্তানিদের আক্রমণের প্রচণ্ডতায় দলের মুক্তিযোদ্ধারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে একটি প্লাটুন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পাশের তিতাস নদীর অপর পারে অবস্থান নেয়। এতে করে বাকি দুই প্লাটুনের একটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অক্ষত থাকা প্লাটুনেই ছিলেন রফিকুল ইসলাম। তিনি ও তার অল্প কয়েকজন সহযোদ্ধা সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ করে প্রতিরোধ করেন। তাদের সাহসিকতায় বেঁচে যায় কে এম শফিউল্লাহর জীবন, কিন্তু যুদ্ধের একপর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন রফিকুল ইসলাম। সেদিন যুদ্ধে রফিকুল ইসলামসহ দুজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এবং এ এস এম নাসিমসহ ১১ জন আহত হন এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৫ জন নিহত ও ১৪ জন বন্দী হয়। শহীদ দুই মুক্তিযোদ্ধাকে চান্দুরায় সমাহিত করেন। তাদের সমাধি সংরক্ষিত রয়েছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
তথ্যসূত্র
- দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২৫-০৮-২০১২
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (দলিলপত্র: নবম খন্ড)। তথ্য মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৯৮৪। পৃষ্ঠা ৭৭।