শমসের মবিন চৌধুরী

শমসের মবিন চৌধুরী (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1]

শমসের মবিন চৌধুরী
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

শমসের মবিন চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি সিলেট জেলায় তার বাবার নাম আবদুল মবিন চৌধুরী এবং মায়ের নাম তাহমেদুন নাহার। তার স্ত্রীর নাম শাহেদা ইয়াসমিন। তাঁদের দুই ছেলে রয়েছে।

কর্মজীবন

১৯৭১ সালে শমসের মবিন চৌধুরী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রতিরোধযুদ্ধকালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের যুদ্ধে তিনি আহত হন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে বন্দী করে। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে শমসের মবিন পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। দুই বছর সেই দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান। ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন এবং ২০০৯ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। পরবর্তিতে ২০১৮ সালের অক্টোবরে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়ে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হন।[2]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ শমসের মবিন চৌধুরীসহ সেনাসদস্যদের ব্যারিকেড পরিষ্কার করার দায়িত্ব দেয়া হয়। রাত ১২টায় চট্টগ্রাম ষোলশহর ক্যান্টনমেন্টের গেটে গিয়ে গুলির আওয়াজ শুনতে পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গাড়িতে উঠে ষোলশহরে এইট বেঙ্গলে যান। সেখানে গিয়ে শুনতে পান সকল পশ্চিম পাকিস্তানি অফিসারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৬ মার্চ ভোরে কালুরঘাটের একটু দূরে পৌঁছান তিনি এবং শপথ গ্রহণ করেন। ১১ এপ্রিল সকাল আটটার সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী কালুরঘাটে ভীষণ আর্টিলারি ফায়ার শুরু করে। এ সময়ে শমসের মবিন চৌধুরী এবং হারুন (বীর উত্তম) অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে নিজেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক ঘেরাও অবস্থায় পান। সঙ্গে থাকা অন্য সদস্যরা সবাই পুলের অপর পারে চলে যেতে সক্ষম হয়। শমসের মবিন চৌধুরী ট্রেঞ্চ থেকে বের হয়ে চারদিকে চাইনিজ স্টেনগান দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকেন। হঠাৎ একটা গুলি এসে লাগে তার কোমরে। তারপর শমসের মবিন চৌধুরীকে ঢাকায় পাঠানো হয়। নভেম্বর মাসে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট আনা হয় এবং বলা হয় কোর্ট মার্শাল করা হবে। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর তারিখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। তিনি মুক্ত হয়ে যান। শমসের মবিন চৌধুরী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেজর পদে কর্মরত থাকাকালে তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। পর্যায়ক্রমে পররাষ্ট্রসচিব পদে উন্নীত হন এবং পরে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসর নেন। তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১০-১১-২০১২
  2. "আবার রাজনীতিতে ফিরলেন শমসের মবিন"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২৬
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৪২। আইএসবিএন 9789849025375।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.