মোহাম্মদ আবদুস শুকুর

মো. আবদুস শুকুর (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1]

মোহাম্মদ আবদুস শুকুর
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মো. আবদুস শুকুরের জন্ম ভারতে১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। তার বাবার নাম শেখ আনোয়ার আলী এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম রবেদা খাতুন। তাদের দুই মেয়ে, তিন ছেলে।[2]

কর্মজীবন

মো. আবদুস শুকুর চাকরি করতেন ইপিআরে১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন দিনাজপুর ইপিআর সেক্টরের অধীন ৮ নম্বর উইংয়ে। এই উইংয়ের একটি কোম্পানির অবস্থান ছিল বাসুদেবপুরে। তিনি ওই কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মো. আবদুস শুকুর প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে যান। পরে তিনি নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন। তাকে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের চার্লি (সি) কোম্পানিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জামালপুর জেলার বাহাদুরাবাদ, দেওয়ানগঞ্জ, সিলেট জেলার ছাতক, সালুটিকর, টেংরাটিলাসহ আরও কয়েক স্থানে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সিলেট জেলার গোবিন্দগঞ্জে মো. আবদুস শুকুরসহ একদল মুক্তিযোদ্ধা নিঃশব্দে অবস্থান নিলেন শত্রু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানের কাছে। বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধার পিঠে ও মাথায় কেমোফ্লেজ হিসেবে বাঁধা ধানের খড় ও পাতাসহ ছোট ছোট ডাল। তারা কয়েকটি দল। মো. আবদুস শুকুর একটি ছোট দলের নেতৃত্বে। তাদের কাছে আছে মর্টার। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি প্রতিরক্ষার তিন দিক ঘিরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। মো. আবদুস শুকুরের দল অগ্রবর্তী দল। তারা মর্টার ছোড়ার পর পেছনে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়বেন পাকিস্তানি সেনাদের ওপর। সময় গড়াতে থাকল। আক্রমণের নির্ধারিত সময় ঘনিয়ে আসতে থাকল। নির্ধারিত সময়েই সেই সংকেত এল। যুদ্ধক্ষেত্রের অধিনায়কের সংকেত পাওয়ামাত্র মো. আবদুস শুকুরের দলের মর্টারগুলো গর্জে উঠল। তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে একের পর এক মর্টারের গোলা ছুড়লেন। নিখুঁত নিশানায় সেগুলো পাকিস্তানি অবস্থানে পড়ল। বেশির ভাগই আঘাত হানল সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে। একই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের মেশিনগান থেকে গুলি শুরু হয়েছে। মর্টার, মেশিনগান ও অন্যান্য অস্ত্রের গোলাগুলিতে সেখানকার আকাশ আলোকিত। পাকিস্তানিদের দিক থেকে তেমন প্রতিউত্তর এল না। মুক্তিযোদ্ধাদের বুঝতে অসুবিধা হলো না, মর্টারের আঘাতে ওদের প্রতিরক্ষা ভেঙে পড়েছে। এরপর তারা জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলেন। পাকিস্তানিরা অবস্থা বেগতিক দেখে পেছনে হটতে থাকল।[3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১৯-০৬-২০১২
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৭৭। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ৩১৭। আইএসবিএন 9789843338884।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.