দেলোয়ার হোসেন (বীর বিক্রম)

শহীদ দেলোয়ার হোসেন (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৭ জুলাই, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[1]

দেলোয়ার হোসেন
জন্ম১৭ জুলাই, ১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন দেলোয়ার হোসেন

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

শহীদ দেলোয়ার হোসেনের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দড়িভেলানগর গ্রামে। তার বাবার নাম জায়েদ আলী মুন্সি এবং মায়ের নাম মাছুমা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম আনোয়ারা বেগম। তার কোনো ছেলেমেয়ে নেই। [2]

কর্মজীবন

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে চাকরি করতেন দেলোয়ার হোসেন। কর্মরত ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানে। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ছুটিতে বাড়িতে ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেলোয়ার হোসেন যুদ্ধে যোগ দেন। আগে থেকেই তার অস্ত্র চালনার এবং যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়া ছিলো। ভারতে গিয়ে দেলোয়ার হোসেন দেখা করেন নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কয়েক দিন থাকেন। পরে ১৮ জনের একটি দল গঠন করে সেই দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় তার ওপর। তাদের দেশের ভেতরে পাঠানো হয় হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতিতে গেরিলাযুদ্ধ করার জন্য। দেলোয়ার হোসেন তার দল নিয়ে প্রথমে কিছুদিন কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো কয়েকটি গেরিলা অপারেশন করেন। এরপর কুমিল্লা অঞ্চলে অবস্থান করা তাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে পড়লে তারা চলে যান নোয়াখালীর মুক্ত এলাকায়। মুক্ত এলাকায় অবস্থান করে তারা মাঝেমধ্যেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর ঝটিকা আক্রমণ চালাতে থাকেন। আক্রমণ চালিয়েই তারা নিরাপদ স্থানে সরে যেতেন। পাকিস্তানি সেনারা তাদের খুঁজে পেত না। তাদের এসব আক্রমণে পাকিস্তানিদের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে সেক্টর হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে জুলাই মাসে দেলোয়ার হোসেন তার দল নিয়ে চলে আসেন চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলায় । সেখানে অবস্থানকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের গতিবিধি টের পেয়ে যায়। ১৯৭১ সালের ১৭ জুলাই পাকিস্তানি সেনাদের একটি বড় দল তাদের আক্রমণ করে। দেলোয়ার হোসেন সহযোদ্ধাদের নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে আক্রমণ মোকাবিলা করছিলেন। অনেকক্ষণ ধরে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের একপর্যায়ে তার বুকে গুলি লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তার জীবনপ্রদীপ নিভে যায়। সহযোদ্ধারা পরে তার মরদেহ নৌকাযোগে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাকে সমাহিত করা হয়। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৯-০২-২০১২
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭৫। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃ ১১০। আইএসবিএন 9789849025375।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.