মনোহরগঞ্জ উপজেলা
মনোহরগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলায় অবস্থিত একটি উপজেলা।
মনোহরগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() মনোহরগঞ্জ | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৯′ উত্তর ৯১°৪′ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | কুমিল্লা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ১৬৬ কিমি২ (৬৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২,৪২,৪৩২ |
• জনঘনত্ব | ১৫০০/কিমি২ (৩৮০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৬২৩ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১৯ ৭৪ |
অবস্থান
আয়তন: ১৬৬.৫০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৪´ থেকে ২৩°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লাকসাম উপজেলা, পূর্বে নাঙ্গলকোট উপজেলা, দক্ষিণ-পূর্বে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলা, দক্ষিণ-পশ্চিমে নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলা এবং পশ্চিমে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা অবস্থিত।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মনোহরগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ পাশে ডাকাতিয়া নদীর কিনারা ঘেষে খোদাই ভিটাতে অবস্তিত।
প্রশাসনিক এলাকা
মনোহরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম মনোহরগঞ্জ থানার আওতাধীন।
ইতিহাস
তৎকালীন মেল্লা শহর বর্তমান লাকসামস্থ ঘাগরিয়া খালের পাড়ে অবস্থিত মেল্লারের দিকে খরস্রোতা নদী পথে যেতে ডাকাতিয়া নদী ও ঘাগরিয়া নদীর মোহনায় ব্যবসায়ীদের মনোহরণকারী স্থান হিসেবে মনোহরগঞ্জের নামকরণ হয় মর্মে কথিত আছে। পাট ব্যবসায়ীক কেন্দ্রস্থল মনোহরগঞ্জ পরবর্তীকালে গঞ্জে রূপান্তরিত হয় মর্মে অনেকে মনে করেন। কারো-কারো মতে মনোহর নামে একজন মৃৎশিল্প/কুম্বকার এনে গড়ে তোলে ছিলেন হাড়ি-পাতিলের কারখানা। ব্যবসায়ীরা তার নামকে ঐতিহ্য হিসেবে স্থানের নামকরণ করেন মনোহরগঞ্জ। ঐতিহাসিক সত্যতা যাই হোক না কেন, মনোহরগঞ্জ একটি মনমুগ্ধকর প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ীক স্থান যাহা ০৩ (তিন)টি ইউনিয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। এই উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম-জলিপুর,পোমগাঁও,মান্দার গাঁও পিয়ারাতলি,ডাবুরিয়া, হাট বাজারের মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ বাজার হলো লক্ষণপুর বাজার,পোমগাঁও বাজার,নরহরি পুর বাজার ও খিলা বাজার । ঐতিহ্যবাহী খিলা রেল স্টেশন যা ১৯৫০সালে তৎকালীন ছাত্রদের উদ্দোগে প্রতিষ্ঠিত হয়।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিগত ২৬ আগষ্ট ২০০৪ তারিখ নিকার এর ৯০তম বৈঠকে ১১টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নামে একটি নতুন প্রশাসনিক উপজেলা গঠন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অতঃপর ০৫/০২/২০০৫ তারিখ হতে মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
১৯৭১ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর এ উপজেলায় হাসনাবাদ বাজারের উত্তরে চৌমুহনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
জনসংখ্যার উপাত্ত
জনসংখ্যা মোট :২৪২৪৩২জন; পুরুষ ১১৮৯১৮ জন, মহিলা ১২৩৫১৪ জন। জনসংখার ঘনত্ব: ১৪৬০ জন/বর্গ কি.মি.
শিক্ষা
শিক্ষার বিস্তারে এই উপজেলায় 2 টি সরকারী কলেজ সহ মোট ৪ টি কলেজ, 1 টি সরকারী হাইস্কুল সহ মোট ২৬ টি হাইস্কুল, ১৪ টি মাদ্রাসা এবং ১০০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
অর্থনীতি
মনোহরগন্জ এর অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর, তবে এখানকার বহু বিশিষ্ট ব্যাবসায়ীগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সফলতার সাথে ব্যাবসা পরিচালনা করছেন, অনেক শিল্পপতি আছে এই অঞ্চলে। এ উপজেলায় প্রাকৃতিক সম্পদের কোন ক্ষেত্র যেমন- তেল, গ্যাস বা কয়লা খনি পাওয়া যায়নি। এলাকার জনসাধারন কৃষিজাত পণ্য, শস্য উৎপাদন এবং মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে।
নদ-নদী
মনোহরগঞ্জ উপজেলার উল্লেখযোগ্য নদী হচ্ছে ডাকাতিয়া নদী। উপজেলাটি ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে অবস্থিত। উপজেলার কাছে নদীর একপ্রান্তে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাঁধ নির্মাণ করা আছে। এক সময় এ নদীই ছিল মনোহরগঞ্জ উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। বর্তমানেও সীমিত আকারে এ নদীর মাধ্যমে একস্থান থেকে অন্যস্থানে মালামাল পার করা হয়। বর্তমানে এই নদীর পানি দ্বারা কৃষিকাজ করা হয়। অধিকন্তু এই নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।
কৃতি ব্যক্তিত্ব
- জনাব এ কে এম জাহাঙ্গীর আলম, সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
- জনাব এহতেশাম হায়দার চৌধুরী
কবি,সাহিত্যিক,গীতিকার,সুরকার,কুমিল্লার গুনীজন দের মধ্যে অন্যতম,
- সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা চৌধুরী দৈনিক ইত্তেফাক,কচি কঁচার মেলার প্রধান উদ্যোক্তা,
ও তৎকালীন মুসলিম লীগের কুমিল্লা জেলার,প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক,
- আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, (বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব)।
- মাওলানা ছালেহ আহমদ, (দেশবরেন্য মুহাদ্দিস)।
- জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম (হেলাল), চেয়ারম্যান, এক্সিম ব্যাংক লিঃ।
- জনাব এ কে এম আবুল কালাম আজাদ
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবক (ডিরেক্টর সেন্ট্রাল হসপিটাল লিমিটেড)
- জনাব ডঃ মোঃ শাহজালাল ভূইয়া, সাবেক সিনেট সদস্য, ঢা.বি।
- জনাব কর্নেল আকবর মএী
- জনাব মোঃ তাজুল ইসলাম (এম পি)
- জনাব কর্ণেল (অবঃ) আনোয়ারুল আজিম(সাবেক সংসদ সদস্য)
- গোলাম সরওয়ার চৌধুরী,(এম বি বি এস,এফ আর সি এস লন্ডন)সারা বিশ্বে নামকরা ৬জন ডাক্তারের ওনি একজন
- জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী (হেলাল) চট্রগ্রাম জোন র্যব এর সাজেন্ট,১০ ট্রাক অস্র মামলায় যার অবদান ছিলো অপরিশীম,
- জনাব মোঃ খোরশেদ আলম, অতিঃ পুলিশ সুপার,(নারায়নগঞ্জ জোন) বাংলাদেশ পুলিশ।
- জনাব এ টি এম আলমগীর,(সাবেক সংসদ সদস্য) চেয়ারম্যান, কমার্স ব্যাংক লিঃ।
- জনাব মোঃ আবুল খায়ের, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, মনোহরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়।
- বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান।
- জনাব এ কে এম ওয়াহিদুল ইসলাম।
- জনাব মোঃ রফিকুল্লাহ আফসারী(ইসলামিক বক্তা)
- জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী
- জনাব হোসাইন হায়দার চৌধুরী লাতু(বীর মুক্তিযোদ্ধা)
- জনাব হারুনুর রশিদ চৌধুরী সেলিম,
- হারুন কিসিঞ্জার, বিশিষ্ট কৌতুক অভিনেতা।
- জনাব মতিন পাটওয়ারী, সাবেক ভিসি বুয়েট.
- জনাব মতিন মাস্টার ( বিশিষ্ট সমাজসেবক)
- ডাঃ অহিদুজ্জামান (বীর মুক্তিযুদ্ধা)
- এস এম আনোয়ার,হাটির পাড় (এম বি এ-কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা)
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা
- রাখাল রাজার জমিদার বাড়ি
- দিশাবন্দের ধিকচান্দা মঠ বাড়ীর মঠ,
- তাহেরপুর মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ
- মিয়া সাহেবের দরগাহ সংলগ্ন নরহরিপুর দিঘি,
- শরীফপুর মাজার সংলগ্ন নাগেশ্বর দিঘি,
- জলিপুর দিঘী,
- নবীশুরের জামে মসজিদ,
- জাহাজী আবুল খায়েরের বাড়ি (লক্ষণপুর),
- মড়হ চৌধুরী বাড়ী
- মড়হ দক্ষিণ পাড়া ঈদগাঁহ ময়দান(কথিত আছে এই স্থানটি গায়েবি)
- দিশাবন্ধের নবীসুর মসজিদ
- ভাউপুর পাটোয়ারী বাড়ি জামে মসজিদ ইত্যাদি
- মড়হ (চৌধুরী বাড়ী)
- তাহেরপুর (মিয়া বাড়ি)
- লৎসর (মিয়া বাড়ি)
- হাটিরপাড়
বিবিধ
নির্বাচনী এলাকা: ২৫৭, কুমিল্লা -৯। খানা: ৪১৮২৪ টি, মৌজা: ১৪৫ টি, সরকারি হাসপাতাল: ১ টি, স্বাস্থ্য কেন্দ্র: ৩ টি, ক্লিনিক : ৩ টি, পোষ্ট অফিস : ৩১ টি, হাট-বাজার: ২৪ টি, ব্যাংক :৪ টি, নদী :১ টি (ডাকাতিয়া), পাকা রাস্তা: ১০৮ কি.মি. কাঁচা রাস্তা: ৪২০ কি.মি.
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সড়ক পথ : পাকা রাস্তা-১০৮ কিঃমিঃ, কাঁচা রাস্তা - ৪২০ কিঃমিঃ মোটঃ ৫৪৪ কিঃমিঃ
জনপ্রতিনিধি
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[2] | সংসদ সদস্য[3][4][5][6][7] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৫৭ কুমিল্লা-৯ | লাকসাম উপজেলা এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলা | তাজুল ইসলাম | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মনোহরগঞ্জ উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৫।
- "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিভ্রমণে মনোহরগঞ্জ উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |