আখাউড়া উপজেলা
আখাউড়া উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ উভয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক শহর।
আখাউড়া | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() আখাউড়া | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫২′৫৯″ উত্তর ৯১°১৩′১০″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৯৮.০৫ কিমি২ (৩৭.৮৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ১,৪৫,২১৫ |
• জনঘনত্ব | ১৫০০/কিমি২ (৩৮০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫২.৭% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৪৫০ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১২ ০২ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তন
আখাউড়া উপজেলার আয়তন ৯৮.০৫ বর্গ কিলোমিটার (২৪,২২৮ একর)।[1] এ উপজেলার উত্তরে বিজয়নগর উপজেলা, উত্তর-পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, পশ্চিমে ও দক্ষিণে কসবা উপজেলা এবং পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত।
ইতিহাস
নামকরণ
এই অঞ্চলটি হরিকেল নামক জনপদের অংশ ছিল। কালক্রমে এই অঞ্চলটি ত্রিপুরা রাজ্যের জমিদার মহারাজা বীর বিক্রম রাধা কিশোর মানিক্য বাহাদুরের জমিদারের অংশে পরিণত হয়। এই জমিদারের চাকলা রৌশনাবাদ এষ্টেটের মোগড়া রাজকাচারী ও আখাউড়াস্থ তহশীল কাচারীর ছিল বর্তমান আখাউড়া সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে। এই কাচারী দুটির মাধ্যমে এই অঞ্চলের জমিদারীর যাবতীয় খাজনাদি আদায়সহ জমিদারী ব্যবস্থা কার্যাদি পরিচালিত হত। মহারাজার জমিদারীর দ্বিতীয় রাজধানী ছিল কুমিল্লা। কুমিল্লার রাজবাড়ীতে যাতায়তের জন্য সে সময় আখাউড়া-আগরতলা সড়ক ব্যবহৃত হতো।এছাড়া আসাম বেঙ্গল রেলপথে চলাচলের জন্য জমিদার সপরিবারে আখাউড়া কাচারীতে অবস্থান করতেন। তিনি এ অঞ্চলের রাধানগরে রাধামাধবের আখড়া, দুর্গাপুরে দুর্গাদেবীর আখড়া, মোগড়া হাওড়া নদীর পাড়ের আখড়া, মনিয়ন্দের আখড়া ইত্যাদি নিজ খরচে নির্মাণ করেছিলেন। সে সময়ে এ অঞ্চলে আখড়ার আধিক্যের কারণে এঈ অঞ্চল কালক্রমে আখাউড়া নামে পরিচিতি লাভ করে। এছাড়া এটি সে সময়ের পূর্ববঙ্গের প্রবেশদ্বার বলে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমান আখাউড়া বাংলাদেশের সর্ব পূর্ব দিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা সীমান্তবর্তী স্থানে অবস্থিত। ব্রিটিশ আমলে আখাউড়া থেকে প্রচুর পাট সুদূর বিলেতের শিল্পনগরী ডাণ্ডিতে রপ্তানি হতো। ফলে ব্রিটিশ শাসনামলে এই রেলস্টেশনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশাসনিক ইতিহাস
ইংরেজ শাসনামলে আখাউড়া ৫টি কসবা থানার অন্তর্গত ছিল। এই সময় একটি পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হত। ১৯৭৬ সালের ২০ জুন মনিয়ন্দ, ধরখার, মোগড়া, আখাউড়া উত্তর ও আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে আখাউড়া থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এই থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।
প্রশাসনিক এলাকা
- আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ স্টেশন
- আখাউড়া উপজেলা পরিষদ
আখাউড়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম আখাউড়া থানার আওতাধীন।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আখাউড়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৪৫,২১৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭০,১১০ জন এবং মহিলা ৭৫,১০৫ জন। মোট পরিবার ২৭,৮৩১টি।[1] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১,৪৮১ জন।[2]
শিক্ষা ব্যবস্থা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আখাউড়া উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫২.৭%।[1] এখানে রয়েছে:
- প্রাথমিক বিদ্যালয় - টি;
- মহাবিদ্যালয় - টি;
- উচ্চ বিদ্যালয় - টি;
- জুনিয়র বিদ্যালয় - টি;
- মাদ্রাসা - টি।
স্বাস্থ্য
স্বাস্থ্য সেবাদানের জন্য রয়েছেঃ
- উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র - ১টি;
- জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র - টি;
- ক্লিনিক - টি;
- স্যাটেলাইট ক্লিনিক - টি;
- পশু চিকিৎসা কেন্দ্র - ১টি;
- দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র - টি;
- কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র - ১টি।
কৃষি
এখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষক।
- প্রধান ফসলঃ ধান, গম, বিভিন্ন ধরনের সবজি।
- লুপ্ত বা লুপ্ত প্রায় শস্যাদি: কাউন, আউস ও আমন ধান, পাট ও আড়হর ডাল।
- প্রধান ফলঃ কলা, কাঁঠাল, আম, জাম, পেঁপে, পেয়ারা, কুল ও তরমুজ।
অর্থনীতি
- কুটির শিল্প - মৃৎ শিল্প, সূচী-শিল্প।
- রপ্তানি পণ্য - শাক-সবজি।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
- আখাউড়া চেকপোস্ট সড়ক
- আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন
- সড়ক পথঃ ;
- নৌ- পথঃ নটিক্যাল মাইল;
- রেল পথঃ কিলোমিটার।
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা
- আখাউড়া স্থল বন্দর
- খড়মপুর মাজার শরীফ
- বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের কবর (আখাউড়া)
কৃতি ব্যক্তিত্ব
- আবদুর রহমান –– বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
- প্রবোধচন্দ্র সেন –– ছন্দবিশারদ।[3]
জনপ্রতিনিধি
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[4] | সংসদ সদস্য[5][6][7][8][9] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৪৬ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ | আখাউড়া উপজেলা এবং কসবা উপজেলা | আনিসুল হক | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
তথ্যসূত্র
- "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (PDF)। web.archive.org। Wayback Machine। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৯।
- "ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তথ্য উপাত্ত" (PDF)। web.archive.org। Wayback Machine। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৯।
- http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8,_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%A7%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0
- "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিভ্রমণে আখাউড়া উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |