বিলাইছড়ি উপজেলা
বিলাইছড়ি বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
বিলাইছড়ি | |
---|---|
উপজেলা | |
সার্ভার স্টেশন বিলাইছড়ি | |
বিলাইছড়ি | |
স্থানাঙ্ক: ২২°২৭′৫৪″ উত্তর ৯২°২২′৪২″ পূর্ব | |
দেশ | |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | রাঙ্গামাটি জেলা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৭৬ |
সংসদীয় আসন | ২৯৯ পার্বত্য রাঙ্গামাটি |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | ঊষাতন তালুকদার (স্বতন্ত্র) |
আয়তন | |
• মোট | ৭৪৫.৯২ কিমি২ (২৮৮.০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২৮,৫২৫ |
• জনঘনত্ব | ৩৮/কিমি২ (৯৯/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ২৬.৭০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৫৫০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ৮৪ ২৯ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
আয়তন
বিলাইছড়ি উপজেলার মোট আয়তন ৭৪৫.৯২ বর্গ কিলোমিটার।[2] এটি রাঙ্গামাটি জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা।
অবস্থান ও সীমানা
রাঙ্গামাটি জেলার সর্ব-দক্ষিণে ২১°৫৪´ থেকে ২২°৩৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°১৭´ থেকে ৯২°৩৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে বিলাইছড়ি উপজেলার অবস্থান। রাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এ উপজেলার উত্তরে জুরাছড়ি উপজেলা ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা; পশ্চিমে কাপ্তাই উপজেলা ও রাজস্থলী উপজেলা; দক্ষিণ-পশ্চিমে বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলা, রুমা উপজেলা ও থানচি উপজেলা এবং পূর্বে মায়ানমারের চিন প্রদেশ ও ভারতের মিজোরাম প্রদেশ অবস্থিত।
নামকরণ
বিলাইছড়ি চাকমা শব্দ থেকে উৎপত্তি। চাকমা উপজাতীয় অর্থে বিলাই এর অর্থ বিড়াল আর ছড়ি এর অর্থ পাহাড় হতে প্রাবাহিত ঝর্ণা বা ছড়া। বিলাইছড়ি নামের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও এলাকার বয়ো বৃদ্ধদের মতে বহু বছর পূর্বে এ এলাকা অরণ্য ঘেরা ছিল। একদিন কিছু সংখ্যক পাহাড়ী লোক কাঠ কাটার উদ্দেশ্যে এ এলাকায় আসে এবং সে সময়ে এক বিরাট বন বিড়ালের মুখোমুখি হয়। বিড়ালের ভাবমূর্তি হিংস্র মনে করে তারা তাকে তাড়াবার চেষ্টা করলে বিড়ালটিও তাদেরকে আক্রমণ করে এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধিস্ত শুরু হয়। শেষ পর্যায়ে বিড়ালটিকে মেরে ফেলা হয়। পরে এই বিড়ালটিকে পাড়ায় নিয়ে আসা হয়। পাড়া প্রতিবেশীরা এতবড় বন বিড়াল দেখে আশ্চর্য হয় এবং বিরাট সামাজিক অনুষ্ঠান করা হয়। এরপর থেকেই এলাকাটি বিলাইছড়ি নামে আখ্যায়িত হয়।[3]
ইতিহাস
বিলাইছড়ি উপজেলায় এক সময় প্রায়ই উপজাতীয় বিদ্রোহ দেখা দিত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের পরাজয়ের পর প্রায় দু'হাজার পাহাড়ি রাজাকার বিদ্রোহী মিজোদের সঙ্গে যোগ দেয়। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা তাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং শান্তিবাহিনীর গোড়াপত্তন করেন। শান্তিবাহিনী দমনের জন্য সীমান্ত অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় ফারুয়া থানা। পরে শান্তিবাহিনী ও জনসংহতি সমিতি তাদের মূল ঘাঁটি ত্রিপুরায় স্থানান্তর করে। ফলে ফারুয়া থানার গুরুত্ব কমে যায় এবং থানাটি বিলাইছড়ির অন্তর্ভূক্ত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে শান্তি বাহিনীর সাথে যুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার লোক নিহত হয়েছে।[2]
প্রশাসনিক এলাকা
১৯৭৬ সালে বিলাইছড়ি থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে বিলাইছড়ি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।[2] এ উপজেলায় বর্তমানে ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ বিলাইছড়ি উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম বিলাইছড়ি থানার আওতাধীন।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিলাইছড়ি উপজেলার জনসংখ্যা ২৮,৫২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫,৬২৭ জন এবং মহিলা ১২,৮৯৮ জন।[1] মোট জনসংখ্যার ১৫.১৪% মুসলিম, ১.৮৮% হিন্দু, ৬৯.২৬% বৌদ্ধ এবং ১৩.৭২% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, মুরং, পাংখোয়া, চাক, রিয়াংখুমি, ম্রো প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।[2]
শিক্ষা
বিলাইছড়ি উপজেলার সাক্ষরতার হার ২৬.৭০%।[2] এ উপজেলায় ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[1]
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
যোগাযোগ ব্যবস্থা
রাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে সড়কপথে বিলাইছড়ি উপজেলায় যোগাযোগের জন্য কোন সড়ক নেই, রাঙ্গামাটি জেলা সদরের তবলছড়ি জেটিঘাট এবং কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে কাপ্তাই হ্রদ হয়ে রাইংখ্যং নদী দিয়ে ইঞ্জিন বোট যোগে এ উপজেলায় যোগাযোগ করা যায়। তবে জুরাছড়ি উপজেলা ও রাজস্থলী উপজেলা থেকে সড়ক পথে যোগাযোগ করা যায়।
ধর্মীয় উপাসনালয়
বিলাইছড়ি উপজেলায় ১৬টি মসজিদ, ২টি মন্দির, ৪২টি বিহার ও ৬টি গীর্জা রয়েছে।[1]
খাল ও নদী
বিলাইছড়ি উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে রাইংখ্যং নদী।[5]
হাট-বাজার
বিলাইছড়ি উপজেলার প্রধান ৩টি হাট-বাজার হল বিলাইছড়ি বাজার, কেংড়াছড়ি বাজার এবং ফারুয়া বাজার।[6]
দর্শনীয় স্থান
- মুপ্পোছড়া ঝর্ণা
- ধুপপানি ঝর্ণা
- দুমলং
- ন-কাবা ছড়া ঝর্ণা
- রাইংখ্যং পুকুর[5]
জনপ্রতিনিধি
- সংসদীয় আসন
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[7] | সংসদ সদস্য[8][9][10][11][12] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৯৯ পার্বত্য রাঙ্গামাটি | রাঙ্গামাটি জেলা | দীপংকর তালুকদার | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
- উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন
ক্রম নং | পদবী | নাম |
---|---|---|
০১ | উপজেলা চেয়ারম্যান[13] | শুভ মঙ্গল চাকমা |
০২ | ভাইস চেয়ারম্যান[14] | অমৃত সেন তঞ্চঙ্গ্যা |
০৩ | মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান[15] | শ্যামা চাকমা |
০৪ | উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা[16] | আসিফ ইকবাল |
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "এক নজরে বিলাইছড়ি - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "বিলাইছড়ি উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org।
- "উপজেলার পটভূমি - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "ইউনিয়ন সমূহ - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "নদ নদী - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "হাট বাজারের তালিকা - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd। ২ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৮।
- "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "শুভ মঙ্গল চাকমা - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "অমৃত সেন তঞ্চঙ্গ্যাঁ - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "শ্যামা চাকমা - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
- "আসিফ ইকবাল - বিলাইছড়ি উপজেলা - বিলাইছড়ি উপজেলা"। belaichari.rangamati.gov.bd।
বহিঃসংযোগ
উইকিভ্রমণে বিলাইছড়ি উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |