চকরিয়া উপজেলা

চকরিয়া বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

চকরিয়া
উপজেলা
চকরিয়ার বানিয়ারছড়া বনের মধ্য দিয়ে যাওয়া রাস্তা
চকরিয়া
বাংলাদেশে চকরিয়া উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২১°৪৭′১০″ উত্তর ৯২°৪′৪২″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাকক্সবাজার জেলা
প্রতিষ্ঠাকাল১৭৯৩
সংসদীয় আসন২৯৪ কক্সবাজার-১
সরকার
  সংসদ সদস্যজাফর আলম (আওয়ামী লীগ)
আয়তন
  মোট৫০৩.৭৮ কিমি (১৯৪.৫১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট৪,৭৮,৪৬৫
  জনঘনত্ব৯৫০/কিমি (২৫০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৬৭%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৪৭৪০
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
২০ ২২ ১৬
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

আয়তন

চকরিয়া উপজেলার আয়তন ৫০৩.৭৮ বর্গ কিলোমিটার।[2] এটি আয়তনের দিক থেকে কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।[3]

অবস্থান ও সীমানা

কক্সবাজার জেলার সর্ব-উত্তরে ২১°৩৪´ থেকে ২১°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে এ উপজেলার অবস্থান। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। এ উপজেলার দক্ষিণে রামু উপজেলাকক্সবাজার সদর উপজেলা; পশ্চিমে মহেশখালী উপজেলাপেকুয়া উপজেলা; উত্তরে বাঁশখালী উপজেলা, লোহাগাড়া উপজেলাবান্দরবান জেলার লামা উপজেলা এবং পূর্বে বান্দরবান জেলার লামা উপজেলানাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা অবস্থিত।[4]

নামকরণ

চকরিয়া উপজেলার নামকরণ নিয়ে একাধিক জনশ্রুতি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মাতামুহুরী নদীর চারটি বাক থেকে বাকচতুষ্টয় বা চক্রবাক, কারো মতে আকাশে প্রচুর চকুরী পাখির আনাগোনা থেকে চকরিয়া নামকরণ হয়েছে। ঐতিহাসিক ত্রিপুরা রাজাদের রাজমালা গ্রন্থে চাকরোয়া নামের একটি গ্রামের উল্লেখ আছে। এই চাকরোয়া থেকেই চকরিয়া নামের উৎপত্তির প্রমাণ বেশী মিলে। যেমন, সুলতানদের রাজত্বকালে শাসনকর্তা খোদাবক্স চাকরোয়া গ্রামে (বর্তমান কাকারা) প্রথম পদার্পণ করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ অব্দে এ নামের উৎপত্তি হয়েছে। ধারণা করা হয় যে, বর্তমান কাকারা ইউনিয়নে এক কালে চাক নামের একটি আদিবাসীর বসবাস ছিল যাদের সামান্য অস্তিত্ব একমাত্র বান্দারবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বিদ্যমান। উপজাতিরা গ্রামকে রোয়া বলে। সেই অনুসারে চাক জনগোষ্টির বসবাসকৃত গ্রামটির নাম চাকরোয়া। কাজেই যেহেতু চাক উপজাতিরা বর্তমান চকরিয়াস্থ কাকারা ইউনিয়নে বসবাস করতো সেহেতু কাকারাকে চাকরোয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই চাকরোয়া থেকেই চকরিয়া নামকরণ করা হয়। এ বিষয়ে ইতিহাস ভিত্তিক ব্যাপক প্রমাণ পাওয়া যায়।[5]

প্রশাসনিক এলাকা

১৭৯৩ সালে চকরিয়া থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। এ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে রয়েছে ৫৪টি মৌজা ও ২২১টি গ্রাম নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। সম্পূর্ণ চকরিয়া উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম চকরিয়া থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:

[6]

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চকরিয়া উপজেলার জনসংখ্যা ৪,৭৮,৪৬৫ জন, এর মধ্যে পুরুষ ২,৩৯,১৯৮ জন এবং মহিলা ২,৩৫,২৬৭ জন।[2] মোট জনসংখ্যার ৯৩.৪% মুসলিম, ৫.৪% হিন্দু, ১.০২% বৌদ্ধ ও ০.১৮%, খ্রিষ্টান। এছাড়া এ উপজেলায় মগ, রাখাইন, মারমা, মুরং, চাকমা প্রভৃতি উপজাতি বসবাস করে, এদের সবাই বৌদ্ধ ধর্মানুসারী।

শিক্ষা

চকরিয়া উপজেলার সাক্ষরতার হার ৬৭%। এ উপজেলায় ১টি ডিগ্রী কলেজ, ৫টি ফাজিল মাদ্রাসা, ৬টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ১টি আলিম মাদ্রাসা, ১টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ৩৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৭টি দাখিল মাদ্রাসা, ১০টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

যোগাযোগ ব্যবস্থা

চকরিয়া উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। যে কোন ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।

ধর্মীয় উপাসনালয়

চকরিয়া উপজেলায় ৪৫৫টি মসজিদ, ১৬০টি ঈদগাহ, ৫২টি মন্দির, ১৬টি বিহার ও ৩টি গীর্জা রয়েছে।[2]

স্বাস্থ্য

চকরিয়া উপজেলায় ১টি সরকারি হাসপাতাল, ৭টি বেসরকারি হাসপাতাল, ২টি দাতব্য চিকিৎসালয়, ৪৩টি স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ও ১৫টি পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র রয়েছে।[2]

অর্থনীতি

চকরিয়া উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য, সেবা, পরিবহন, প্রবাসী, চাকুরিজীবী সহ বিভিন্ন পেশার লোক রয়েছে।

প্রধান রপ্তানীজাত পণ্য

চিংড়ি মাছ, লবণ, তামাক, বাদাম, সরিষা, ময়দা, তরমুজ, কাঠ, উপকূলীয় মৎস্য[4]

নদ-নদী

চকরিয়া উপজেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হল মাতামুহুরী নদী, বড় মাতামুহুরী নদী এবং মহেশখালী চ্যানেল[4]

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী

  • দৈনিক: চকোরী
  • পাক্ষিক: মেহেদী

দর্শনীয় স্থান

[4]

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী গুলি করে ১৩ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে এবং শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়।[4]

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
  • শহীদ আবদুল হামিদ স্মৃতিস্তম্ভ[4]

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

চকরিয়া উপজেলা প্রায় সময় বন্যা, সাইক্লোন প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয়। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ধ্বংসাত্মক সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে এই  উপজেলার মারাত্মক ক্ষতি সাধন হয় এবং মোট ১৬,৭০৫ জন মানুষ প্রাণ হারায়।[4]

জনপ্রতিনিধি

সংসদীয় আসন
সংসদীয় আসন জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[7] সংসদ সদস্য[8][9][10][11][12] রাজনৈতিক দল
২৯৪ কক্সবাজার-১ চকরিয়া উপজেলা এবং পেকুয়া উপজেলা জাফর আলম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন
ক্রম নং পদবী নাম
০১ উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী
০২ ভাইস চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আজাদ
০৩ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়া বেগম শম্পা
০৪ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. http://chakaria.coxsbazar.gov.bd/node/717351-এক-নজরে-চকরিয়া%5B%5D
  2. http://chakaria.coxsbazar.gov.bd/site/page/8ff9ff5e-2144-11e7-8f57-286ed488c766
  3. https://web.archive.org/web/20151208044832/http://www.bbs.gov.bd/WebTestApplication/userfiles/Image/National%20Reports/Union%20Statistics.pdf
  4. "চকোরিয়া উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org
  5. "চকরিয়া উপজেলার পটভূমি - চকরিয়া উপজেলা - চকরিয়া উপজেলা"chakaria.coxsbazar.gov.bd
  6. "ইউনিয়নসমূহ - চকরিয়া উপজেলা - চকরিয়া উপজেলা"chakaria.coxsbazar.gov.bd
  7. "Election Commission Bangladesh - Home page"www.ecs.org.bd
  8. "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯
  9. "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  10. "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  11. "জয় পেলেন যারা"দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  12. "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.