মেধা কচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান

মেধা কচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। এই বনটি তার সুবিশাল মাদার গর্জন গাছের জন্য সুপরিচিত। মেধা কচ্ছপিয়া একটি প্রাকৃতিক বন। ২০০৪সালে উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষিত হয়। এই জাতীয় উদ্যানের আয়তন প্রায় ৩৯৫.৯২ হেক্টর।[1][2]

জাতীয় উদ্যান

মেধা কচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান)
বাংলাদেশে অবস্থান
অবস্থানকক্সবাজার জেলা, বাংলাদেশ
নিকটবর্তী শহরকক্সবাজার
স্থানাঙ্ক২১°৪১′১৫.৫৬″ উত্তর ৯২°৯′২১.৬৬″ পূর্ব
আয়তন৩৯৫.৯২ হেক্টর
স্থাপিত২০০৮ খ্রিস্টাব্দ

পরিচিতি

এখানকার বনের প্রকৃতি হলো ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বন। এ উদ্যানটি কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন। পার্কটির ১ থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে আনুমানিক ১৮৩০৫ জন লোকের ৩৫২৩টি পরিবার বসবাস করে। এসব স্থানীয় গ্রাম কিংবা পাড়া গুলো মূলতঃ কৃষিকাজ, লবন চাষ ও মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল। রোহিঙ্গা শরনার্থীদের কারনে এ সকল জনগোষ্টিতে ক্রমান্বয়ে জন সংখ্যার চাপ বাড়ছে।

এখানে জাতীয় উদ্যান প্রতিষ্ঠার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হল শতবর্ষী গর্জন বনকে রক্ষা করা। এই উপমহাদেশে যে অল্প কিছু গর্জন বন আজও মাথা উঁচু করে আছে। এ বনটি তার মধ্যে অন্যতম। এই জাতীয় উদ্যানের প্রধান বৃক্ষরাজির মধ্যে বিশালাকৃতির গর্জন ছাড়াও রয়েছে ঢাকিজাম, ভাদি, তেলসুরচাপালিশ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-মহাসড়ক সংলগ্ন এ পার্কটিতে চট্টগ্রাম কিংবা কক্সবাজার হতে সড়ক পথে সহজেই আসা যায়।

ভ্রমণ

বনের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় কখনো মনে হয়না নিরবতা কিংভা একাকীত্ব চারদিকে সবুজ গাছালী আর মাথা উচু করে দাড়িয়ে থাকা গর্জনকে মনে হয় চলার পথের সাথি।  পায়ে হেঁটে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ ভ্রমনের সময় এই এলাকা পার হওয়ার সময় আমার অন্তত তাই মনে হয়েছিলো। একবারও নিজেকে একা মনে হয়নি। মনে হয়েছিলো গাছেরা যেন সঙ্গ দিচ্ছে, কথা বলছে, স্বাগত জানােচ্ছে আর সাহস জোগাচ্ছে। প্রকৃতিকে ভালোবাসতে পারলে আর কাছে যেতে পারলে প্রকৃতির অন্তরের ধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়। ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথেই পড়বে এই বন। চারদিকে সবুজে ভরা বনের ভেতর দিয়ে চলে  গেছে আঁকাবাঁকা মহাসড়ক। এখানে জাতীয় উদ্যান প্রতিষ্ঠার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হল শতবর্ষী গর্জন বনকে রক্ষা করা। এই জাতীয় উদ্যানের প্রধান বৃক্ষরাজির মধ্যে বিশালাকৃতির গর্জন ছাড়াও রয়েছে ঢাকিজাম, ভাদি, তেলসুর ও চাপালিশ।

বনযেন বলছে ‘‘ ওহে পথিক একটু খানি জিরিয়ে নাও, মম ছায়াতলে’’ কচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানটি ২০০৪ সালে সংরক্ষিত বন ঘোষণা পায়।  বন ছাড়াও এখানকার জনগোষ্ঠি কৃষিকাজ, লবন চাষ ও মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল। বিগত বছরে মায়ানমারে মুসলিম নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় শরনার্থীরা এখানে বসতি স্থাপন করছে।

এখানে আসার জন্য কক্সবাজারের পরিবহন ভরসা। কক্সবাজার যাওয়ার পথেই চোখে পড়বে মেধা কচ্ছপিয়ার নাম ফলক। এখানে থাকার আলাদা ব্যবস্থা নেই। কক্সবাজারে থেকেই এটা ভ্রমণ করা যাবে। অথবা যাওয়ার পথে দুদন্ড বিশ্রাম নিতে পারেন। এখানে বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে ভেতরে হাঁটা যাবে। পায়ে হাঁটার জন্য রয়েছে মসৃণ পথ। চাইলে তার একটা ম্যাপও পাওয়া যাবে। তাহলে পথ হারানোর ভয় থাকবেনা।  বনে বানর, হনুমান, হাতি, বেজি ও শেয়াল রয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. "Protected Areas of Bangladesh"। বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর। ১৫ ডিসেম্বর ২০১১। ১৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৩
  2. DeCosse, P.J., Thompson, P. M., Ahmed, I. U., Sharma, R.A. and Majumder, A. H. (২০১২)। "Protected Area Co-Management Where People and Poverty Intersect: Lessons fron NISHORGO in Bangladesh" (PDF)। নিসর্গ নেটওয়ার্ক, USAID। পৃষ্ঠা 8। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.