নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান
নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ৫১৭.৬১ হেক্টর বা ১২৭৮.৪৯ একর জমি নিয়ে এই জাতীয় উদ্যানটি গঠিত।[1] এই বনে শাল ছাড়াও সেগুন, গামার, কড়ই, বেত, বাঁশ, জামসহ প্রায় ২০ থেকে ৩০ প্রজাতির গাছগাছড়া রয়েছে। প্রানীদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের পাখি এবং ভয়ানক প্রানীর মধ্যে রয়েছে শিয়াল যা সন্ধ্যার পর ছাড়া দেখা যায় না। এই উদ্যানেই রয়েছে বাল্মিকী মনির থান এবং ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সীতার কোট বৌদ্ধবিহার যা নিয়ে সীতার বনবাস কিংবদন্তি রয়েছে।
নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
![]() ![]() বাংলাদেশে অবস্থান | |
অবস্থান | দিনাজপুর, রংপুর বিভাগ, বাংলাদেশ |
নিকটবর্তী শহর | নবাবগঞ্জ |
স্থানাঙ্ক | ২৫.৪৫১৭৫২৪° উত্তর ৮৯.০৫৩৪৯৪১° পূর্ব |
আয়তন | ৫১৭.৬১ হেক্টর |
স্থাপিত | ২০১০ |
অবস্থান
নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এই জাতীয় উদ্যানের অবস্থান।[2] তবে নবাবগঞ্জ সদরের জিরো পয়েন্ট থেকে এক কিলোমিটার দুরত্ব হলেও অনেকটা শহরের গা-ঘেষে অবস্থান করছে নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান।
জীববৈচিত্র্য
উদ্ভিদ
নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের প্রধান বৃক্ষ শাল ও সেগুন। এছাড়াও আছে গামার, ইউক্যালিপটাস, জাম, আকাশমনি ও নানান শ্রেণির অর্কিড।[2]
প্রাণী
এই উদ্যানের বাসিন্দা বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে বনবিড়াল, বাংলা খেঁকশিয়াল, মেছোবাঘ ও নানান রকম সাপ। নানান জাতের পাখিও আছে এ বনে।[2] তবে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশী দেখা যায় খেঁকশিয়াল।
আশুড়ার বিল
এ বিলে লাল খলসেসহ বিলুপ্তপ্রায় ৮ প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে। তাছাড়াও আইড়, শোল, গজাড়, টেংরা, বাইম, মাগুর, পুঁটি, চিংড়ি, কইসহ মৌসুমে আরো কিছু বিচিত্র প্রজাতির প্রায় ১২০ মেট্রিক টন মাছ পাওয়া যায়। তবে অত্যন্ত সুস্বাদের জন্য এ বিলে বোয়াল- পাবদা বিখ্যাত।
চিত্তাকর্ষন
নবাবগঞ্জ এলাকায় মুনির থান ঘাট থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে ১২ লাখ টাকা খরচ করে ভ্রমনপিপাসু পর্যটকদের সুবিধার্থে সম্পূর্ণ শাল কাঠ দিয়ে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ ৯০০ মিটার ইংরেজি বর্ণ জেড আকৃতির সেই দৃষ্টিনন্দন আঁকাবাঁকা কাঠের সেতুটি ২ মাস ধরে নির্মান করা হয় এবং নামকরণ করা হয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কাঠের সেতু এবং ১ জুন ২০১৯ সালে শুভ উদ্বোধন করেন এমপি শিবলী সাদিক ও জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম। এই কাঠের সেতুর পশ্চিমে খটখটিয়া কৃষ্ণপুর ও পূর্বে নবাবগঞ্জ এলাকা। সেতুটি পর্যটকদের যেমন আকর্ষণ করছে, তেমনি বিলের দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতে নতুন দিগন্তের দুয়ার খুলে দিয়েছে। এই সেতু পূর্বে হরিপুর বাজার ও পশ্চিমে রতনপুর বাজারকে সংযুক্ত করেছে।
এখানে ভ্রমনে আসলে দৃষ্টিনন্দন এই সেতুর মন্ত্রমুগ্ধ সৌন্দর্য যেকোন পর্যটককে আকর্ষন কাড়ে বহুগুণ।
পথ সংযোগ
বিরামপুর থেকে ইজিবাইক, ভ্যান-রিক্সা যোগে সহজেই যাওয়া যায় এই দর্শনীয় স্থানটিতে। বিরামপুর অংশের পীরদহ ঘাট, লালঘাট সহ বিলের আরো কিছু এলাকা দেখতে ঢাকামোড় থেকে জয়নগর অথবা চরকাই গ্রাম হয়ে রতনপুর তারপর ধানজুড়ি-নেটাশন ও দিঘলচাঁদের পূর্বপাশেই আশুড়ার বিল পৌছানো যাবে।
বিলে নবাবগঞ্জ সীমানায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আঁকাবাঁকা নান্দনিক কাঠের সেতু দেখতে সীতার কোট- ফতেপুর মাড়াষ হয়ে বনের ভেতর দিয়ে উত্তরদিকে অথবা শগুনখোলা গ্রামের আদর্শ ক্লাব হয়ে বনের ভেতর দিয়ে উত্তরদিকে মুনির থান ঘাট সংলগ্ন কাঠের সেতু পৌছানো যাবে।
তথ্যসূত্র
- "Protected Areas of Bangladesh"। Bangladesh Forest Department। ১৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৬, ২০১৩।
- মামুন, মুস্তাফিজ (২০১৫-০৪-১১)। "নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান"। বিডিনিউজ টুয়েন্টফোর ডট কম। ঢাকা: বিডিনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৮।