রাজস্থলী উপজেলা

রাজস্থলী উপজেলার মোট আয়তন ১৪৫.০৪ বর্গ কিলোমিটার।[2] এটি আয়তনের দিক থেকে রাঙ্গামাটি জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা।[3]

রাঙ্গামাটি জেলার দক্ষিণাংশে ২২°১৭´ থেকে ২২°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৬´ থেকে ৯২°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে রাজস্থলী উপজেলার অবস্থান। রাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। এ উপজেলার উত্তরে কাপ্তাই উপজেলা, পূর্বে বিলাইছড়ি উপজেলা, দক্ষিণে বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলা ও বান্দরবান সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অবস্থিত।

রাজস্থলী উপজেলার নামকরণ নিয়ে তেমন জটিল কোন ইতিহাস নাই, তবে এলাকার গুণীজনের ভাষ্যমতে রাখাইন প্রদেশের রাজা, বর্মী বারান্ডং সেনাপতির কাছে পরাজিত হয়ে বাংলাদেশে আসার পর এই বুধুঝিই (রাজস্থলীর পূর্ব নাম) এসেছিলেন তার নিজ রাজ্য গড়তে। তাঁর নিজের প্রথা অনুযায়ী রাজ্য গড়ার আগে কলাগাছ রোপন করে দেখা হয়। যত বেশী কলার কান্ধি তত রাজার রাজ্যভিষেক হবে ঐ রাজ্যে। এই নিয়ম মেনে কলা গাছটি রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের খাগড়াছড়ি পাড়ায় রোপন করা হয়। কিন্তু কলার ছড়ায় কান্ধি কম হওয়ায় তিনি এই স্থান ত্যাগ করে বান্দরবান উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। যাবার বেলায় ঐ কলা গাছে রাজার ছোট থলে রয়ে যায়। তখন থেকে রাজারথলে নামকরণ হয় এবং পরে তা রাজারথলে থেকে রাজারথলি ও বর্তমান রাজস্থলী নামকরণ করা হয়।[4]

১৯০৯ সালে রাজস্থলী থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে রাজস্থলী উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।[2] এ উপজেলায় বর্তমানে ৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ রাজস্থলী উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম রাজস্থলী থানার আওতাধীন।

ইউনিয়নসমূহ:

• ১নং ঘিলাছড়ি
• ২নং গাইন্দ্যা
• ৩নং বাঙ্গালহালিয়া

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজস্থলী উপজেলার জনসংখ্যা ২২,৬১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২,১৪২ জন এবং মহিলা ১০,৪৬৯ জন। মোট জনসংখ্যার ২২.৭৮% মুসলিম, ৭.১৮% হিন্দু, ৬২.৪১% বৌদ্ধ এবং ৭.৬৩% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, চাক, খুমি, লুসাই, পাংখোয়া প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।[2]

রাজস্থলী উপজেলার সাক্ষরতার হার ৩৪%।[2] এ উপজেলায় ২টি কলেজ, ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[5]

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

রাজস্থলী উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।

রাজস্থলী উপজেলায় ১৬টি মসজিদ, ৩টি মন্দির, ২৮টি বিহার এবং ২টি গীর্জা রয়েছে।[2]

রাজস্থলী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কাপ্তাই খাল।

রাজস্থলী উপজেলার প্রধান ২টি হাট-বাজার হল বাঙ্গালহালিয়া বাজার এবং রাজস্থলী বাজার।[6]

• রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতু

[7][8]

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকবাহিনী এ উপজেলায় ব্যাপক হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। মিজোরাম রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র মিজো গেরিলারা পাকবাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করে। গাইন্দ্যা ইউনিয়নে বান্দরবান জেলার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৫ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।[2]

সংসদীয় আসন

উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন

• রাঙ্গামাটি জেলা

• বাংলাপিডিয়ায় রাজস্থলী উপজেলা

উইকিভ্রমণে রাজস্থলী উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে।