বুড়িচং উপজেলা
বুড়িচং বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
বুড়িচং | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() বুড়িচং | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৩′ উত্তর ৯১°৭.৬′ পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ![]() |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | কুমিল্লা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ১৬৩.৭৬ কিমি২ (৬৩.২৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (১৯৯১) | |
• মোট | ২,২৮,৪৭৯ |
• জনঘনত্ব | ১৩৯৫/কিমি২ (৩৬১০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ওয়েবসাইট | বুড়িচং-এর প্রাতিষ্ঠানিক মানচিত্র |
অবস্থান ও আয়তন
বুড়িচং উপজেলার উত্তরে ও উত্তর-পশ্চিমে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে দেবিদ্বার উপজেলা, দক্ষিণ-পশ্চিমে চান্দিনা উপজেলা, দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পূর্বে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা, পূর্বে ও উত্তর-পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত। এর আয়তন ১৬৩.৭৬ বর্গকিলোমিটার।[1]
ইতিহাস
বুড়িচং উপজেলার পূর্বনাম ছিল উত্তর বিজয়পুর। কিংবদন্তী অনুসারে খৃষ্টীয় একাদশ শতকের গোড়ার দিকে এই উত্তর বিজয়পুর গ্রামে বহু জ্ঞানী-গুণীর আবাসস্থল ছিল। একাদশ শতকের দিকে চৈনিক পরিব্রাজক ‘ইয়েন সাং’ উত্তর বিজয়পুর পরিদর্শণ করতে আসেন এবং এলাকার জ্ঞানী-গুণীদের সাহচর্যে মুগ্ধ হন। ঐ সময় তিনি এই এলাকাকে ‘বুড্ডি চিয়াং’ নামে অভিহিত করেন। চৈনিক ভাষায় বুড্ডি চিয়াং এর বাংলা অনুবাদ করলে দেখা যায়, বুড্ডি অর্থ বুদ্ধি বা জ্ঞানী বা শিক্ষা এবং চিয়াং অর্থ আবাসস্থল বা আস্তান ইত্যাদি বুঝায় । তাই বুড্ডি চিয়াং এর আভিধানিক অর্থ দাড়ায় জ্ঞানী ও গুণীর আবাসস্থল। উক্ত বুড্ডি চিয়াং নাম হতে কালক্রমে মানুষের মুখের ভাষায় সহজ বলার তাগিদে বুড্ডিচং এবং পরে বুড়িচং নামের উৎপত্তি হয়। কুমিল্লা সদর (কোতয়ালী) এর কিছু অংশ ও বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার জেলার কিছু অংশ নিয়ে ১৯১৬ সালে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের মাধ্যমে বুড়িচং থানার গোড়াপত্তন হয়।
১৯৬৩ সালে ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে বুড়িচং থানা একটি উন্নয়ন সার্কেল-এ রূপান্তরিত হয়। ১৯৭০ সালে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বতন্ত্র থানা হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯৭৮ সালে এই থানার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া নামে অপর একটি থানার সৃষ্টি হয়। অবশিষ্ট ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে ১৫/০৪/১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে বুড়িচং থানা উপজেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
প্রশাসনিক এলাকা
বুড়িচং উপজেলায় বর্তমানে ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম বুড়িচং থানার আওতাধীন।
জনসংখ্যা উপাত্ত
এর মোট জনসংখ্যা ২,৬৩,৬৫১ জন; ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৬০৯.৯৮ জন।
শিক্ষা
এই উপজেলায় কলেজ আছে ৯ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮১ টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬৯ টি, মাদ্রাসা ৪০ টি।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ
- সোনার বাংলা কলেজ
- শংকুচাইল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬)
- কুসুমপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫)
- শংকুচাইল ডিগ্রী কলেজ
- উত্তরগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- এদবারপুর ডি এস ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা
- সাদকপুর ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা
- সাদকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- মোরশেদা বেগম মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৭২)
- কালিকাপুর আব্দুল মতিন খসরু সরকরি কলেজ (১৯৯৭)
- বুড়িচং আনন্দ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০)
- আরাগ আনন্দপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যায়ল (১৯৮৮)
- বুড়িচং কালী নারায়ণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়(1982)
- বুড়িচং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- পূর্ণমতি মনসুর আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়(1964)
- বুড়িচং মডেল একাডেমী
- ফকির বাজার উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১)
- মিথিলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৮)
- শ্রীপুর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩২)
- কুসুমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- পীর যাত্রাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮)
- ভারেল্লা শাহ নুরুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়
- ভারেল্লা শাহ ইসরাঈল কামিল মাদ্রাসা
- বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজ
- পারুয়ারা আব্দুল মতিন খসরু কলেজ
- ময়নামতি উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজ
- ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলোজি (২০০২)
- আজ্ঞাপুর দক্ষিণ পাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা (২০১৪)
- আবিদপুর হাইস্কুল এন্ড কলেজ (১৯৬১)
- উত্তর বুড়িচং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৭৩)
- বুড়িচং হাজী ফজর আলি উচ্চ বিদ্যালয়
- বুড়িচং হাজী ফজর আলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
অর্থনীতি
বুড়িচং উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। কিন্তু সম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতির ক্ষেত্রগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। কৃষি জমি কমে যাওয়ার ফলে এবং কৃষিতে বিনিয়োগের তুলনায় উৎপাদন না বাড়ার কারণে কৃষক কৃষি কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাই কৃষি কাজ ছেড়ে এখন এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
দর্শনীয় স্থান
- গোমতী নদী
- ময়নামতি কালী মন্দির
- উপজেলা পরিষদ মসজিদ
- সাদকপুর জামে মসজিদ
- ময়নামতি ওয়ার সেমিট্রি
- ময়নামতি বৌদ্ধবিহার
- আয়রন টিলা (অবস্থান লৌহাইমুড়ি, পাহাড়পুর এবং করুনা পুরের মাঝে)
- শাহ হযরত ফুলকুমারি মাজার শরীফ।
- বুড়বুড়িয়া হযরত আপ্তাব উদ্দিন শাহ(রা:) এর মাজার শরীফ
- বুড়িচং শাহী পাক দরবার শরীফ
- বুড়িচং মনোহর আলী শাহ(রা:) এর দরবার শরীফ
- ফজলুর রহমান মেমোরিয়্যাল কলেজ অব টেকনোলেজি,বুড়িচং কুমিল্লা কারিগর শাখা
- বুড়িচং ভূঁইয়া বাড়ি
কৃতি ব্যক্তি
- বীর উত্তম শহীদ মঈনুল হোসেন
- বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন, আপিল বিভাগ
- অধ্যক্ষ মোঃ ইউনুস, সাবেক এমপি
- গাজীউল হাসান খান,সাবেক রাষ্ট্রদূত
- প্রফেসর মফিজুল ইসলাম,সাবেক এমপি
- মেজর জেনারেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান,মহাপরিচালক বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ।
- এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, সাবেক মাননীয় মন্ত্রী আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
- ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, উপাচার্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
- প্রফেসর আবুল বাশার খান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
জনপ্রতিনিধি
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[2] | সংসদ সদস্য[3][4][5][6][7] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৫৩ কুমিল্লা-৫ | ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা এবং বুড়িচং উপজেলা | আব্দুল মতিন খসরু | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
তথ্যসূত্র
- "বুড়িচং উপজেলা"। বাংলাপিডিয়া।
- "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (PDF)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিভ্রমণে বুড়িচং উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |