ত্রিপুরা
ত্রিপুরা উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। এই রাজ্যের আয়তন ১০,৪৯১.৬৯ বর্গকিলোমিটার, এবং এটি ভারতের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য ।[6] ত্রিপুরা উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে বাংলাদেশ[7] কর্তৃক বেষ্টিত; রাজ্যের পূর্বভাগে ভারতের অপর দুই রাজ্য অসম ও মিজোরাম অবস্থিত। এই রাজ্যের রাজধানী আগরতলা। রাজ্যের সরকারি ভাষা বাংলা ও ককবরক। বাংলার সুলতানী আমলে ত্রিপুরা ছিল বাংলার একটি করদ রাজ্য, যা ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনতামুলক মিত্র রাজ্য হিসাবেই ছিল ।[8] ১৯৪৯ সালের ১৫ অক্টোবর ত্রিপুরা অন্তর্ভুক্তি চুক্তি অনুসারে এই রাজ্য সদ্যস্বাধীনতাপ্রাপ্ত ভারতীয় অধিরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনকালে এই রাজ্য পার্বত্য ত্রিপুরা (Hill Tippera) নামে পরিচিতি ছিল।[9][10] সাক্ষরতায় এই রাজ্য দেশে তৃতীয় স্থান অধিকারী।
ত্রিপুরা | ||
---|---|---|
State | ||
ত্রিপুরা সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট | ||
![]() Ujjayanta Palace, which houses the Tripura Rajbari, is located in Agartala, Tripura's capital and most populous city. | ||
| ||
![]() | ||
স্থানাঙ্ক (Agartala): ২৩.৮৪° উত্তর ৯১.২৮° পূর্ব | ||
দেশ | ![]() | |
প্রতিষ্ঠা | ২১শে জানুয়ারি, ১৯৭২† | |
Capital | Agartala | |
Most populous city | Agartala | |
Districts | 8 | |
সরকার | ||
• রাজ্যপাল | Kaptan Singh Solanki[1] | |
• মুখ্যমন্ত্রী | Biplab Kumar Deb (বিজেপি)[2] | |
• উপ-মুখ্যমন্ত্রী | Jishnu Deb Burman (BJP)[3] | |
• আইনসভা | Unicameral (60 seats) | |
• Parliamentary representation | 2 (Lok Sabha) 1 (Rajya Sabha) | |
আয়তন | ||
• মোট | ১০৪৯১.৬৯ কিমি২ (৪০৫০.৮৬ বর্গমাইল) | |
এলাকার ক্রম | 27th (2014) | |
জনসংখ্যা (2011) | ||
• মোট | ৩৬,৭১,০৩২ | |
• ক্রম | 22nd (2014) | |
• জনঘনত্ব | ৩৫০/কিমি২ (৯১০/বর্গমাইল) | |
সময় অঞ্চল | IST (ইউটিসি+৫.৩০) | |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-TR | |
যানবাহন নিবন্ধন | TR- | |
HDI | ![]() | |
HDI rank | 6th (2014) | |
Literacy | 87.75 % (2011)[4] | |
Official languages[5] |
| |
ওয়েবসাইট | tripura | |
†It was elevated from the status of Union-Territories by the North-Eastern Areas (Reorganisation) Act 1971 |
নামের ব্যুৎপত্তি
- ত্রিপুরা নামটির উদ্ভব হয় ত্রিপুরার পৌরাণিক মহারাজা ত্রিপুরের নামানুসারে। ত্রিপুর ছিলেন যযাতির বংশধর দ্রুহ্যের ৩৯ তম উত্তরপুরুষ।
- অপর এক ব্যাখ্যা অনুসারে ত্রিপুরা নামটির উৎস হল হিন্দু পুরাণে উল্লিখিত দশমহাবিদ্যার একতম ত্রিপুরাসুন্দরী।
তাছাড়া ত্রিপুরা শব্দটির উৎপত্তি রাজ্যের আদিবাসীদের অন্যতম ভাষা ককবরক থেকেও এসেছ বলে অনেকে মনে করেন। ককবরক ভাষায় 'তৈ' হল জল। 'প্রা' হল নিকটে। জলের নিকটবর্তী স্থান তৈ-প্রা থেকে ধীরে ধীরে তেপ্রা, তিপ্রা এবং শেষে বাঙালি উচ্চারণে ত্রিপুরা হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
ইতিহাস
সুপ্রাচীন মহাকাব্য মহাভারতে এবং পুরাণে ত্রিপুরা নামটির উল্লেখ পাওয়া যায়। এরপর ১৪শ শতকে রচিত রাজমালাতেও ত্রিপুরার উল্লেখ পাওয়া গেছে। এটি ছিল ত্রিপুরার মাণিক্য রাজবংশের কাহিনী। মাণিক্য রাজবংশ ১৯৪৭ সালে ত্রিপুরা ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পূর্বাবধি অঞ্চলটি ধারাবাহিকভাবে শাসন করে। কথিত আছে প্রায় ২৫০০ বছর ধরে ১৮৬জন রাজা এই অঞ্চলটি শাসন করেছেন। [6] ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে ত্রিপুরা ছিল একটি স্বাধীন করদ রাজ্য। দক্ষিণ ত্রিপুরায় অবস্থিত উদয়পুর ছিল ভূতপূর্ব স্বাধীন রাজতান্ত্রিক ত্রিপুরার রাজধানী। খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতকে মহারাজ কৃষ্ণ মাণিক্য পুরাতন আগরতলায় রাজধানী স্থানান্তরিত করেন এবং পরবর্তীকালে খ্রিস্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে রাজধানী অধুনা আগরতলায় স্থানান্তরিত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীকে ত্রিপুরার আধুনিক যুগের সূচনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে কারণ এই সময় মহারাজ বীরচন্দ্র মাণিক্য বাহাদুর দেববর্মা ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার অনুকরণে তাঁর প্রশাসনকে পুনর্গঠিত করেন এবং বিভিন্ন সংস্কার সাধন করেন।
১৯৪৯ সালে গণমুক্তি আন্দোলনের ফলে ত্রিপুরা অসম রাজ্যের অংশ হিসেবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের ফলে ত্রিপুরার জনপরিসংখ্যান ভীষণভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত বাঙালি শরণার্থীরাই ত্রিপুরার জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশ হয়ে ওঠে। ১ জানুয়ারি ১৯৬৩ সালে ত্রিপুরা একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত হয় এবং ২১ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য হিসেবে স্বীকৃত হয়।
ভূগোল ও জলবায়ু
ত্রিপুরা হল উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি ভূ-বেষ্টিত পার্বত্য রাজ্য এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১৫ থেকে ৯৪০ মিটার। এতৎসত্ত্বেও ত্রিপুরার অধিকাংশ মানুষ সমতলে বসবাস করেন। এটি একটি ভূ-বেষ্টিত রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও এটি মানু নদীর মত বিভিন্ন নদীর উৎসভূমি।[11] ত্রিপুরা উত্তরে, দক্ষিণে ও পশ্চিমে বাংলাদেশ দ্বারা বেষ্টিত এবং অসমের করিমগঞ্জ জেলা ও মিজোরামের আইজল জেলার দ্বারা এটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত।[12] ত্রিপুরা রাজ্যটি অক্ষাংশ ২২°৫৬'উঃ থেকে ২৪°৩২'উঃ এবং দ্রাঘিমাংশ ৯০°০৯'পূঃ থেকে ৯২°১০'পূঃ পর্যন্ত বিস্তৃত।[13]:৩ রাজ্যটির মোট আয়তন হল ১০৪৯১.৬৯ বর্গ কিমি এবং এটি ভারতের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য।
জলবায়ু
মৌসুমের সময় দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় যা অনেক সময় বন্যার কারণ হয়ে দাড়ায়[14]:৪[15]:৭৩ T১৯৯৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমান ১,৯৭৯.৬ থেকে ২,৭৪৫.৯ মিমি (৭৭.৯৪ থেকে ১০৮.১১ ইঞ্চি).[16] শীতকালে তাপমাত্রা ১৩ থেকে ২৭ °সে (৫৫ থেকে ৮১ °ফা) উঠানামা করে, যা গরমকালে ২৪ এবং ৩৬ °সে (৭৫ এবং ৯৭ °ফা) তে পৌছে।[17] UNDP এ অঞ্চল সাইক্লোন প্রবণ।[18]
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) গড় | ২৫٫৬ (৭৮) |
২৮٫৩ (৮৩) |
৩২٫৫ (৯১) |
৩৩٫৭ (৯৩) |
৩২٫৮ (৯১) |
৩১٫৮ (৮৯) |
৩১٫৪ (৮৯) |
৩১٫৭ (৮৯) |
৩১٫৭ (৮৯) |
৩১٫১ (৮৮) |
২৯٫২ (৮৫) |
২৬٫৪ (৮০) |
৩০٫৫২ (৮৭٫১) |
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) গড় | ১০ (৫০) |
১৩٫২ (৫৬) |
১৮٫৭ (৬৬) |
২২٫২ (৭২) |
২৩٫৫ (৭৪) |
২৪٫৬ (৭৬) |
২৪٫৮ (৭৭) |
২৪٫৭ (৭৬) |
২৪٫৩ (৭৬) |
২২ (৭২) |
১৬٫৬ (৬২) |
১১٫৩ (৫২) |
১৯٫৬৬ (৬৭٫৪) |
গড় অধঃক্ষেপণ মিমি (ইঞ্চি) | ২৭٫৫ (১٫০৮) |
২১٫৫ (০٫৮৫) |
৬০٫৭ (২٫৩৯) |
১৯৯٫৭ (৭٫৮৬) |
৩২৯٫৯ (১২٫৯৯) |
৩৯৩٫৪ (১৫٫৪৯) |
৩৬৩٫১ (১৪٫৩) |
২৯৮٫৭ (১১٫৭৬) |
২৩২٫৪ (৯٫১৫) |
১৬২٫৫ (৬٫৪) |
৪৬ (১٫৮১) |
১০٫৬ (০٫৪২) |
২,১৪৬ (৮৪٫৫) |
উৎস: [19] |
অর্থনীতি
মোট রাজ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, বর্তমান মূল্যে (১৯৯৯-২০০০ ভিত্তি)[20] ভারতীয় টাকায় মিলিয়নের অঙ্কে | |
বছর | মোট রাজ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন |
---|---|
১৯৮০ | ২,৮৬০ |
১৯৮৫ | ৫,২৪০ |
১৯৯০ | ১০,৩১০ |
১৯৯৫ | ২২,৯৬০ |
২০০০ | ৫২,৭০০ |
২০০৪ সালে ত্রিপুরার মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন নির্ধারিত হয়েছে বর্তমান মূল্যে ২১০ কোটি মার্কিন ডলার। ত্রিপুরার অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী এবং ত্রিপুরার জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশই কৃষির সাথে যুক্ত। পণ্যফসলের তুলনায় ত্রিপুরায় খাদ্যফসল উৎপাদনের পরিমাণই অধিক। ত্রিপুরায় উৎপন্ন প্রধান খাদ্যফসলগুলি হল ধান, তৈলবীজ, ডাল, আলু এবং আখ। চা ও রাবার হল রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পণ্যফসল। ত্রিপুরা হল "ভারতীয় রাবার বোর্ড" দ্বারা ঘোষিত দেশের দ্বিতীয় রাবার রাজধানী এবং এর স্থান কেরলের পরেই। ত্রিপুরার হস্তশিল্পও অত্যন্ত বিখ্যাত। ২০০০-২০০১ আর্থিক বছরে এ রাজ্যের মাথাপিছু আয় বর্তমান মূল্যে হল ১০,৯৩১ টাকা এবং স্থায়ী মূল্যে হল ৬,৮১৩ টাকা।
শাল, গর্জন এবং টিক সহ কিছু উৎকৃষ্ট মানের কাঠ ত্রিপুরার বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। এছাড়া ত্রিপুরা খনিজ সম্পদে বিশেষ সমৃদ্ধ না হলেও এখানে ভাল প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপন্ন হয়। তবে শিল্পক্ষেত্রে ত্রিপুরা এখনও অনগ্রসর।
সরকার ও রাজনীতি
ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতই ত্রিপুরাতেও সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিচালিত হয়। সরকার ব্যবস্থা তিনটি শাখায় বিভক্ত যথা, আইনসভা, বিচারবিভাগ এবং প্রশাসন। ত্রিপুরার আইনসভা হল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ত্রিপুরা বিধানসভা। বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে উপাধ্যক্ষ সভার কার্যাবলিতে পৌরোহিত্য করে থাকেন। ত্রিপুরার বিচারবিভাগের প্রধান হল গুয়াহাটি উচ্চন্যায়ালয় (আগরতলা বেঞ্চ)। এছাড়াও বিভিন্ন নিম্ন আদালতের দ্বারা বিচারব্যবস্থা পরিচালিত হয়। ত্রিপুরা রাজ্যে প্রশাসনের সাংবিধানিক প্রধান হলেন রাষ্ট্রপতি দ্বারা মনোনীত রাজ্যপাল। কিন্তু মূল প্রশাসনিক ভার মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভার উপরে ন্যস্ত। বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্ত রাজনৈতিক দল অথবা রাজনৈতিক জোটের নেতা অথবা নেত্রীকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য আহ্বান জানান। এরপর রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে মন্ত্রিসভার সদস্যদের মনোনীত করেন। মন্ত্রিসভার সদস্যারা তাঁদের কার্যাবলির বিবরণ বিধানসভায় পেশ করে থাকেন। ত্রিপুরা বিধানসভা হল ৬০ সদস্য বিশিষ্ট একটি এককক্ষীয় আইনসভা।[21] একটি নির্বাচিত বিধানসভার পূর্ণ মেয়াদ হল পাঁচ বছর কিন্তু সরকার নির্ধারিত মেয়াদের আগেই বিধানসভা ভেঙে দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারেন। ত্রিপুরা থেকে লোকসভায় দু'জন সদস্য এবং রাজ্যসভায় একজন সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও গ্রামীণ পরিচালন সংস্থা পঞ্চায়েতে নিয়মিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
ত্রিপুরার প্রধান রাজনৈতিক জোট ও দলগুলি হল ভারতীয় জনতা পার্টি, বামফ্রন্ট এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। বর্তমানে ত্রিপুরা সরকারে ক্ষমতাসীন রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নেতৃত্বাধীন বিজেপি। ১৯৭৭ সালের পূর্বাবধি ত্রিপুরায় ক্ষমতাসীন ছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ ত্রিপুরা সরকার পরিচালিত হয় বামফ্রন্টের নেতৃত্বাধীনে এবং ১৯৯৩ সাল থেকে আবার তারা ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এবং ত্রিপুরা উপজাতি যুব সমিতির জোট সরকার পরিচালনা করে। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনের ৪৪টি তে জয়লাভ করে ভারতীয় জনতা পার্টি অধীন এন.ডি.এ. জোট ক্ষমতাসীন হয় অপরদিকে সিপিআই(এম) পায় মাত্র ১৬টি আসন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এর ৫৫টি আসনে জামানত জব্দ হয়।
প্রশাসনিক বিভাগসমূহ
প্রশাসনিক স্বার্থে ত্রিপুরাকে ৮টি জেলা ২৩টি মহকুমা (উপবিভাগ) এবং ৫৮টি উন্নয়ন ব্লকে বিভক্ত করা হয়েছে।
জেলা | জেলাসদর | জনসংখ্যা | আয়তন (বর্গ কিমি) |
---|---|---|---|
ধলাই জেলা | আমবাসা | ৩০৭৪১৭ | ২৩১২ |
উত্তর ত্রিপুরা জেলা | ধর্মনগর | ৫৯০৬৫৫ | ২৪৭০ |
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা | বিলোনিয়া | ৭৬২৫৬৫ | ২৬২৪ |
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা | আগরতলা | ১৫৩০৫৩১ | ৩৫৪৪ |
- ঊনকোটি-কৈলাশহর
- খোয়াই জেলা-খোয়াই
- গোমতী জেলা-উদয়পুর
- সিপাহীজলা জেলা-বিশ্রামগঞ্জ
রাজ্যের প্রধান শহরগুলি হল আগরতলা, বিশালগড়, যোগেন্দ্রনগর, ধর্মনগর, সোনামুড়া, অমরপুর, প্রতাপগড়, উদয়পুর, কৈলাশহর, তেলিয়ামুড়া, ইন্দ্রনগর, খোয়াই, বিলোনিয়া, কুমারঘাট, মেলাঘর, রাণীরবাজার, শান্তিরবাজার, কমলপুর ও সাব্রুম। বাঁধারঘাট, যোগেন্দ্রনগর এবং ইন্দ্রনগর বর্তমানে আগরতলা পুরসভার অন্তর্গত।
পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা

ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে ত্রিপুরা সংযুক্ত হয়েছে অসমের মধ্যে দিয়ে লামডিং এবং শিলচর পর্যন্ত বিস্তৃত ব্রডগেজ রেলওয়ে লাইন দ্বারা। ত্রিপুরার প্রধান রেল স্টেশনগুলি হল আগরতলা, ধর্মনগর এবং কুমারঘাট। এছাড়া ৪৪ জাতীয় সড়কও ত্রিপুরাকে অসম সহ সমগ্র ভারতের সাথে যুক্ত হতে সাহায্য করেছে।
আগরতলা বিমানবন্দর হল এ রাজ্যের প্রধান বিমানবন্দর এবং এখান থেকে কলকাতা, গুয়াহাটি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি এবং শিলচরের উদ্দেশে নিয়মিত উড়ান রওনা দেয়।
ভারতের প্রধান টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলির অধিকাংশই ত্রিপুরা রাজ্যে উপস্থিত এবং এগুলি রাজধানী সহ রাজ্যের অন্যান্য অংশে দূরভাষ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করে।
জনপরিসংখ্যান
জনসংখ্যা বৃদ্ধি | |||
---|---|---|---|
আদমশুমারি | জনসংখ্যা | %± | |
১৯৫১ | ৬,৩৯,০০০ | — | |
১৯৬১ | ১১,৪২,০০০ | ৭৮.৭% | |
১৯৭১ | ১৫,৫৬,০০০ | ৩৬.৩% | |
১৯৮১ | ২০,৫৩,০০০ | ৩১.৯% | |
১৯৯১ | ২৭,৫৭,০০০ | ৩৪.৩% | |
২০০১ | ৩১,৯৯,২০৩ | ১৬�0% | |
২০১১ | ৩৬,৭১,০৩২ | ১৪.৭% | |
Source:Census of India[22] |
ত্রিপুরা হল অসমের পরেই উত্তর-পূর্ব ভারতের দ্বিতীয় জনবহুল রাজ্য। ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে রাজ্যের মোট জনসংখ্যা হল ৩,১৯৯,২০৩ এবং জনঘনত্ব হল প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩০৫ জন। সারা দেশে জনসংখ্যার বিচারে ত্রিপুরার স্থান ২২ তম। সমগ্র ভারতের জনসংখ্যার ০.৩১% এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জনসংখ্যার ৮.১৮% ত্রিপুরায় বসবাস করে। ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে ত্রিপুরার জনসংখ্যার ৭০% বাঙালি এবং বাকি ৩০% বিভিন্ন উপজাতি ও জনজাতীয় সম্প্রদায় নিয়ে গঠিত। জনজাতীয় সম্প্রদায়গুলির মধ্যে বিভিন্ন ভাষাভাষী উপজাতি রয়েছে এবং এদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ হল ককবরকভাষী ত্রিপুরি সম্প্রদায়। এছাড়াও রয়েছে জামাতিয়া, রিয়াং, নোয়াতিয়া অন্যান্য সম্প্রদায়। আদিবাসী অঞ্চল গুলিতে বাঙালি ও আদিবাসীদের মধ্যে কিছু উত্তেজনা বিরাজমান।
১৯৯১ সালের সূত্র অনুযায়ী মানব উন্নয়ন সূচকে সারা দেশে ত্রিপুরার স্থান ২২তম এবং দারিদ্র সূচকে ২৪তম। ত্রিপুরায় স্বাক্ষরতার হার ৭৩.২%, যা স্বাক্ষরতার জাতীয় হার ৬৫.২০%-এর অধিক।
ত্রিপুরার সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায় হল হিন্দু (মোট জনসংখ্যার ৮৫.৬%)।[23] সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মুসলিম (৮.০%), খ্রিস্টান (৩.২%) এবং বৌদ্ধ (৩.১%)।[23]
সম্প্রদায় | ভাষা | ভাষাগোষ্ঠী |
---|---|---|
বাঙালি | বাংলা | ইন্দো-ইউরোপীয় |
ত্রিপুরি | ককবরক | চীনা-তিব্বতি |
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি | বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি | ইন্দো-ইউরোপীয় |
মণিপুরী | মৈতৈ | চীনা-তিব্বতি |
চাকমা | চাকমা | ইন্দো-ইউরোপীয় |
কুকি | কুকি | চীনা-তিব্বতি |
মিজো | মিজো | চীনা-তিব্বতি |
আরাকানিজ় | আরাকানিজ় | তিব্বতি-বর্মী |
এই পরিসংখ্যান সময়ের সাথে সাথে ত্রিপুরার বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে অনুপাতের একটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত করে। ১৯৪১ সালে ত্রিপুরার জনসংখ্যায় হিন্দু ছিল ৭০%, মুসলিম ছিল ২৩% এবং ৬% ছিল বিভিন্ন উপজাতি ধর্মাবলম্বী।[24] এটিও বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে ১৯৫১ সালে ত্রিপুরার জনসংখ্যা ছিল ৬৪৯৯৩০, যা ১৯৪১ সালে ছিল আরও স্বল্প কারণ তখনও পূর্ববঙ্গ থেকে শতাধিক শরণার্থীর আগমন ঘটেনি। যদিও এই শরণার্থীর আগমনও ত্রিপুরার জনপরিসংখ্যানে ১৯৭০-এর দশকের আগে বিশেষ প্রভাব ফেলেনি।
হিন্দুধর্ম
বাঙালি এবং উপজাতি মিলিয়ে ত্রিপুরার অধিকাংশ হিন্দুধর্মাবলম্বীই শাক্ত সম্প্রদায়ভুক্ত। রাজতান্ত্রিক আমলে হিন্দুধর্মই ছিল ত্রিপুরার রাজধর্ম। সমাজে পূজারী ব্রাহ্মণদের স্থান ছিল অত্যন্ত উঁচুতে। ত্রিপুরার হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উপাস্য প্রধান দেবদেবীগণ হলেন শিব এবং দেবী শক্তির অপর রূপ দেবী ত্রিপুরেশ্বরী।
ত্রিপুরায় হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবগুলি হল দুর্গাপূজা, নবরাত্রি, কালীপূজা, ইত্যাদি। এছাড়াও ত্রিপুরায় পালিত হয় গঙ্গা উৎসব, যাতে ত্রিপুরার উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ দেবী গঙ্গার উপাসনা করে থাকে।[25]
ইসলাম
ভারতের অন্যান্য অংশের মতই ত্রিপুরাতেও দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায় হল মুসলিম সম্প্রদায়।[23] ত্রিপুরার অধিকাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষই সিলটিভাষী এবং ইসলামের সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত।
খ্রিস্টধর্ম
২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে ত্রিপুরায় খ্রিস্টধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ১০২৪৮৯। রাজ্যের অধিকাংশ খ্রিস্টধর্মাবলম্বীই ত্রিপুরি এবং অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত।
ত্রিপুরার খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রধান উল্লেখযোগ্য শাখা হল ত্রিপুরা ব্যাপ্টিস্ট খ্রিস্টান ইউনিয়ন নামক সংগঠনের অধীনস্থ ব্যাপ্টিস্ট সম্প্রদায়। সারা রাজ্যে এই সংগঠনের ৮০০০০ সদস্য এবং প্রায় ৫০০ গির্জা রয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম খ্রিস্টীয় সম্প্রদায় হল রোমান ক্যাথলিক গির্জা এবং এই সম্প্রদায়ের ২৫০০০ সদস্য রয়েছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
রাজ্যের আগরতলা-এ একটি ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সাধারণ জ্ঞাতব্য বিষয়
ত্রিপুরার উত্তরাংশে অরণ্যাবৃত পাহাড় ও উপত্যকা, আর দক্ষিণে গহন জঙ্গল। প্রতি বছর এখানে ৪,০০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এখানে প্রায় ৩৬ লক্ষ লোকের বাস। প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩৫০ জন বসবাস করেন। এখানকার প্রায় ৯০% লোক হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তবে স্বল্প সংখ্যক মুসলমান ও খ্রিস্টানও বাস করেন। বাংলা ভাষা, ইংরেজি ও ককবরক ভাষা এখানকার সরকারি ভাষা। মণিপুরী বা মৈতৈ ভাষাও প্রচলিত।
আগরতলাতে ১৯৮৭ সালে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। কৃষিকাজ এখানকার মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস। এদের মধ্যে চা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এছাড়াও এখানে পাট, তুলা, ফলমূল, গম, আলু এবং আখের চাষ হয়। কৃষিকাজের কারণে বনাঞ্চলের কিয়দংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রিপুরা থেকে ভারতের জাতীয় আইনসভাতে তিনজন সদস্য প্রতিনিধিত্ব করেন। একজন উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এবং বাকী দুইজন নিম্নকক্ষ লোকসভায় যান। ত্রিপুরাতে আটটি জেলা আছে। ১৯৯৩ সালে বিচ্ছিন্নতাবাদী উগ্র কার্যকলাপ এর প্রেক্ষিতে এখানে রাষ্ট্রপতির শাসন প্রযুক্ত হয়। পরে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচিত রাজ্য সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রাত্যহার করা হল। বর্তমানে ত্রিপুরা ভারতবর্ষের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। জাতি উপজাতির মধ্যে ভ্রাতৃভাব ও বন্ধুত্বমূলক সম্পর্কের ফলে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেড়ে উঠার আগেই পরাস্ত আর খতম হয়ে গেছে।
১৪শ শতকে রচিত রাজমালাতে ত্রিপুরার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। এটি ছিল ত্রিপুরার মাণিক্য রাজবংশের কাহিনী। মাণিক্য রাজবংশ ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত, ত্রিপুরা ভারতের অংশ হবার আগ পর্যন্ত অঞ্চলটি ধারাবাহিকভাবে শাসন করে। কথিত আছে প্রায় ২৫০০ বছর ধরে ১৮৬জন রাজা এই অঞ্চলটি শাসন করেছেন। [6] ১৯৫৬ সালে ত্রিপুরা একটি ইউনিয়ন টেরিটরি এবং ১৯৭২ সালে একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়।
ত্রিপুরার প্রায় ৩০% লোক বাংলা ভাষী। বাকী ৭০% বিভিন্ন আদিবাসী জাতির লোক। এদের মধ্যে ককবরক ভাষায় কথা বলা ত্রিপুরি জাতি, জামাতিয়া জাতি, রেয়াং জাতি এবং নোয়াতিয়া জাতির লোক বৃহত্তম সম্প্রদায়। আদিবাসী এলাকাগুলিতে ত্রিপুরী ও আদিবাসীদের মধ্যে অনুকরণীয় সম্প্রীতি ও সদ্ভাব বিরাজমান ।
ত্রিপুরায় সাক্ষরতার হার প্রায় ৫৩%, যা ভারতের গড় সাক্ষরতার হারের চেয়ে বেশি।
ত্রিপুরার দর্শনীয় স্থানসমূহ
নীরমহল

নীরমহল ত্রিপুরার একটি দর্শনীয় স্থান। নীর অর্থাৎ জলের মাঝে মহলটি স্থাপিত বলে এর নামকরণ করা হয় নীরমহল। মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক বাহাদুরের আমলে নীরমহল তৈরি করা হয়। উল্লেখ্য, ভারতেরই আরেক প্রদেশ রাজস্থানের উদয়পুরে ঠিক একই রকম একটি প্রাসাদ রয়েছে। ইংল্যান্ডের মার্টিন অ্যান্ড বার্ন কোম্পানি ১৯৩০ সালে এর কাজ শুরু করে এবং ১৯৩৮ সালে ভবনটির উদ্বোধন করা হয়।
ত্রিপুরার একটি ছোট এলাকা মেলাঘরে নীরমহল অবস্থিত। রাজধানী আগরতলা থেকে এর দূরত্ব ৫৩ কিলোমিটার।
নীরমহল বাজারের পাশে রুদ্রসাগর নামে বিশাল একটি জলাশয় আছে। এর আয়তন প্রায় পাঁচ দশমিক তিন বর্গকিলোমিটার। রুদ্রসাগরের ঠিক মাঝখানে ত্রিপুরার রাজার গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন অবকাশ যাপনের জন্য এই মহলটি নির্মাণ করা হয়। ভবনটি একাধারে যেমন রাজার সৌন্দর্যপ্রিয়তার প্রমাণ দেয়, তেমনি হিন্দু ও মোঘল সংস্কৃতি মিশিয়ে তিনি একটি দর্শনীয় কিছু করতে চেয়েছিলেন, সেই ধারণারও প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রাসাদের দুটি অংশ। মূল অংশ রয়েছে পশ্চিম পাশে এবং পূর্ব পাশে রয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য দুর্গ। মূল অংশকে আবার দুটি ভাগে ভাগ করা যায়- বাইরের কক্ষ এবং অন্দরমহল। বাইরের কক্ষগুলোর মধ্যে বিশ্রামঘর, খাজাঞ্চিখানা ও নাচঘর উল্লেখযোগ্য। এ ধরনের পাঁচটি কক্ষ সেখানে রয়েছে। এছাড়া দাবা খেলার জন্যও একটি আলাদা কক্ষ রয়েছে। রাণী ও অন্যদের জন্য অন্দরমহলে রয়েছে বিশাল ছয়টি কক্ষ। এছাড়া রান্না ঘর, রাজার সভাঘর, আড্ডাঘর ইত্যাদি তো রয়েছেই। বর্তমানে মহলের ভিতর একটি জাদুঘরও রয়েছে।
অন্দরমহলটি এমনভাবে সাজানো ছিলো যাতে রাজা-রাণী নৌকাভ্রমণ সেরে অন্দরমহলের সিঁড়িতে সরাসরি প্রবেশ করতে পারেন। এছাড়া প্রাসাদের ভেতরের অংশে একটি বিরাট বাগানও রয়েছে। রাজা-রাণীর বেড়ানোর জন্য ঘাটে সবসময় মোটরচালিত নৌকা থাকত।
বাইরের দিকে দুটি ঘাট রয়েছে। সেখানে কর্মচারীরা গোসল করতো এবং ঘাটগুলো তাদের যাতায়াতের জন্যও ব্যবহার করা হতো।
তবে মহারাজা অনেক অর্থ খরচ করে এই প্রাসাদ নির্মাণ করলেও খুব বেশি দিন তিনি ভোগ করতে পারেননি। মাত্র সাত বছর তিনি এই প্রাসাদ ব্যবহার করেছে। কারণ মাত্র ৩৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
মহারাজা মারা যাওয়ার পর বহুদিন এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো। এ সময় আস্তে আস্তে এটি ঔজ্জ্বল্য হারাতে থাকে। অবশেষে ১৯৭৮ সালে ত্রিপুরার তথ্য, সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এর দায়িত্ব নেয় এবং ভবনটি রক্ষায় সচেষ্ট হয়। ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ভবনটিতে বড় ধরনের সংস্কার করা হয়। বর্তমানে এটিকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতি শীতের সময়ে লাইট অ্যান্ড লেজার শোর মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি এই প্রাসাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। এছাড়া প্রতিবছর সেপ্টেম্বরে রুদ্রসাগর লেকে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
নীরমহলে থাকা-খাওয়া-যাওয়া
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে বাসে সরাসরি মেলাঘর যাওয়া যায়। এছাড়া জিপ ও অন্যান্য গাড়ি ভাড়া করে সেখানে যাওয়া যাবে। বাস ভাড়া ৪০ টাকা। সময় লাগে দুই ঘণ্টা। মেলাঘর বাসস্ট্যান্ডে সাগরমহল ট্যুরিস্ট লজে রিকশা দিয়ে যেতে হবে। ভাড়া ১০ টাকা।
সাগরমহল ট্যুরিস্ট লজটি ত্রিপুরার তথ্য, সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এতে আধুনিক সুযোগসুবিধাসহ মোট ৪৪টি সিট রয়েছে। এসি ও নন-এসি দু'ধরনের সুবিধাই রয়েছে রুমগুলোতে।
গ্যালারি
- নীরমহল
- উদয়পুর মন্দির
- উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ, আগরতলা
- উদয়পুরের হিন্দু মন্দির
- অমরপুরের প্রাচীন মন্দির
- ত্রিপুরার ধানক্ষেত
- ঊনকোটি
তথ্যসূত্র
- "Satya Pal Malik appointed as J&K Governor"। The Hindu। ২১ আগস্ট ২০১৮। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৯।
- "Biplab Deb takes oath as Tripura chief minister"। Livemint। ৯ মার্চ ২০১৮। ৯ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৮।
- "BJP picks Biplab Deb as new Tripura CM, Jishnu Debbarma to be his deputy"। Hindustan Times। ৯ মার্চ ২০১৮।
- State of Literacy (PDF), censusindia.gov.in, ৬ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা (PDF), সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৫
- "Report of the Commissioner for linguistic minorities: 52nd report (July 2014 to June 2015)" (PDF)। Commissioner for Linguistic Minorities, Ministry of Minority Affairs, Government of India। পৃষ্ঠা 79–84। ১৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- Tripura History
- "Rohingya crisis: Security tightened along India-Myanmar border"। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- "Govt. of Tripura"। ১০ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১০।
- Hill Tippera - History The Imperial Gazetteer of India, 1909, v. 13, p. 118.
- Hill Tippera ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ মে ২০১১ তারিখে, from Encyclopædia Britannica Eleventh Edition.
- "Manu River"। banglapedia। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-০৭।
- "National highways and their length" (PDF)। National Highways Authority of India। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১২।
- "The state of human development"। Tripura human development report 2007 (PDF)। Government of Tripura। ২০০৭। ২ মে ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১২।
- "Monthly and yearly quinquennial average rainfall in Tripura" (PDF)। Statistical abstract of Tripura – 2007। Directorate of Economics & Statistics, Planning (Statistics) Department, Government of Tripura। পৃষ্ঠা 13। ২৭ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১২।
- "Annual plan 2011–12" (PDF)। Department of Agriculture, Government of Tripura। ১৫ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১২।
- "Hazard profiles of Indian districts" (PDF)। National capacity building project in disaster management। UNDP। ১৯ মে ২০০৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০০৬।
- "Monthly mean maximum & minimum temperature and total rainfall based upon 1901–2000 data" (PDF)। India Meteorology Department। পৃষ্ঠা 6। ১৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৩।
- "Gross State Domestic Product at Current Prices (1999–2000 Bae"। National Accounts Division: Press release & Statements। Ministry of Statistics and Programme Implementation, Government of India। ২০০৬-০৪-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-০৭।
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - "Tripura Legislative Assembly"। Legislative Bodies in India। National Informatics Centre। ২০০৭-০৫-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-২১।
- "Census Population" (PDF)। Census of India। Ministry of Finance India। ২০০৮-১২-১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-১৮।
- Indian Census
- Columbia-Lippincott Gazeteer. p. 1947
- "Tribals of Tripura celebrate Ganga festival"
বহিঃসংযোগ
- ত্রিপুরা সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- Tripura from the 1911 Encyclopedia Britannica
- Introduction to Tripura by Indira Gandhi National Centre for Arts (IGNCA)
- ত্রিপুরা সোসাইটির ওয়েবসাইট
- Profile of Twipra (Tripura)
- Tripuri Peoples' Website
- A Cyber Joint for Tripura University Alumni
- ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভারতীয় রেলওয়ের ইতিহাস
- Biggest News and Information Portal of Tripura