কলকাতা

কলকাতা বা কোলকাতা /kɒlˈkʌtə/[15] ([kolkata] (শুনুন) ইংরেজি: Kolkata; আদি নাম: কলিকাতা; পুরনো ইংরেজি নাম: Calcutta) হল ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক) ৬০ থেকে ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বইনতুন দিল্লির ঠিক পরেই।[11][12][13]

কলকাতা
কলিকাতা
মহানগরী
ডাকনাম: আনন্দনগরী
ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী[1][2][3]
কলকাতা
কলকাতা
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে কলকাতার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৪′ উত্তর ৮৮°২২′ পূর্ব
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
বিভাগপ্রেসিডেন্সি
জেলাকলকাতা[upper-alpha 1]
সরকার
  ধরনপৌরসংস্থা
  শাসককলকাতা পৌরসংস্থা
  মহানাগরিকফিরহাদ হাকিম[4]
  শেরিফমণিশংকর মুখোপাধ্যায়[5]
  পুলিশ কমিশনাররাজীব কুমার[6]
আয়তন[7]
  মহানগরী১৮৫.০০ কিমি (৭১.৪৩ বর্গমাইল)
  মহানগর১৮৮৬.৬৭ কিমি (৭২৮.৪৫ বর্গমাইল)
উচ্চতা মিটার (৩০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)[7][8]
  মহানগরী৪৪,৯৬,৬৯৪
  ক্রম৭ম
  জনঘনত্ব২৪০০০/কিমি (৬৩০০০/বর্গমাইল)
  মহানগর[9][10]১,৪১,১২,৫৩৬
  ক্রম (পরিবর্ধিত শহরাঞ্চল)
বিশেষণকলকাতাবাসী
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০)
জিপ কোড৭০০ ০০১ থেকে ৭০০ ১৬২
এলাকা কোড+৯১-৩৩
যানবাহন নিবন্ধনডব্লিউবি ০১ থেকে ডব্লিউবি ১০, ডব্লিউবি ১৯ থেকে ডব্লিউবি ২২
উইএন/এলওসিওডিইIN CCU
মহানগরীয় জিডিপি$ ৬০ থেকে ১৫০ বিলিয়ন (পিপিপি)[11][12][13]
সরকারি ভাষাবাংলা[14]
ওয়েবসাইটwww.kmcgov.in
  1. বৃহত্তর কলকাতার কিছু অংশ উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, নদিয়া ও হুগলি জেলার অন্তর্গত। দেখুন: শহরাঞ্চলের গঠন

সুতানুটি, ডিহি কলকাতাগোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে।[16] এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।

১৯শ শতাব্দী ও ২০শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাংলার নবজাগরণের কেন্দ্রস্থল ছিল কলকাতা। এই শহর বাংলা তথা ভারতের ধর্মীয় ও জাতিগত বৈচিত্র্যপূর্ণ এক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও বটে। সাহিত্য, থিয়েটার, শিল্পকলা ও চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই শহর এক স্বতন্ত্র ঐতিহ্য বহন করে আসছে। কলকাতার অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি সাহিত্য, সংগীত, নাটক, চলচ্চিত্র, শিল্পকলা, বিজ্ঞান ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। এঁদের মধ্যে কয়েকজন নোবেল পুরস্কার ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিতও হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের কেন্দ্রও কলকাতা শহর। এখানে জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন বেশ কয়েকটি খ্যাতনামা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলির মধ্যে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, এশিয়াটিক সোসাইটি, ভারতীয় সংগ্রহালয় ও জাতীয় গ্রন্থাগারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ভারতীয় উদ্ভিদ সর্বেক্ষণ, ক্যালকাটা ম্যাথেমেটিক্যাল সোসাইটি, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস সংস্থা, জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের মতো কয়েকটি পেশাদার বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান কলকাতাতেই অবস্থিত। এই শহরে একাধিক ক্রিকেট মাঠ ও ফ্র্যাঞ্জাইজি আছে। কিন্তু ভারতের অন্যান্য শহরে ক্রিকেট বেশি গুরুত্ব পেলেও, কলকাতার অধিবাসীরা ফুটবল ও অন্যান্য খেলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।বলা হয়ে থাকে, ভারতবর্ষের ফুটবলের রাজধানী কলকাতা।

নাম-ব্যুৎপত্তি

কালীঘাট মন্দির, ১৮৮৭ খ্রি.; একটি মতে, "কালীক্ষেত্র" শব্দটি থেকে "কলিকাতা" নামটির উৎপত্তি

১৭শ শতাব্দীর শেষভাগে সুতানুটি, ডিহি কলিকাতাগোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। এর মধ্যে ডিহি কলিকাতা নামটি থেকে কলকাতা নামটির উৎপত্তি।[17]

"কলিকাতা" বা "কলকাতা" নামটির উৎপত্তি সম্পর্কে গবেষকদের মধ্যে মতান্তর রয়েছে:

  • একটি মতে, "কালীক্ষেত্র" (হিন্দু দেবী কালীর ক্ষেত্র) নামটি থেকে "কলিকাতা" বা "কলকাতা" নামটির উৎপত্তি।
  • মতান্তরে, বাংলা "কিলকিলা" (অর্থাৎ,"চ্যাপ্টা এলাকা") কথাটি থেকে "কলিকাতা" নামটির উৎপত্তি হয়।[18]
  • অন্য এক মতে বাংলা খালকাটা শব্দ দু’টির বিকৃতির ফলে কলকাতা নামটির উৎপত্তি ঘটে।[19]
  • অপর মতে, এই অঞ্চলটি কলিচুনকাতা (নারকেল ছোবড়ার আঁশ) উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিল। সেই থেকেই কলিকাতা নামটির উৎপত্তি ঘটে।[18]

বাংলায় কলিকাতা বা কলকাতা নামটি প্রচলিত হলেও ইংরেজি ভাষায় এই শহর আগে ক্যালকাটা (ইংরেজি: Calcutta) নামে পরিচিত ছিল। ২০০১ সালে নামের বাংলা উচ্চারণের সঙ্গে সমতা রেখে ইংরেজিতেও শহরের নাম কলকাতা (ইংরেজি: Kolkata) রাখা হয়।[20]

ইতিহাস

প্রাক-ব্রিটিশ যুগ

ফোর্ট উইলিয়াম, কলকাতা, উইলিয়াম উড অঙ্কিত, ১৮২৮ খ্রি.

কলকাতার নিকটবর্তী চন্দ্রকেতুগড়ে[21] প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য চালিয়ে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে এই অঞ্চলটি বিগত দুই হাজার বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে জনবসতিপূর্ণ।[22] মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একাধিক গ্রন্থে হুগলি নদীর তীরবর্তী কলিকাতা গ্রামের উল্লেখ পাওয়া যায়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিপ্রদাস পিপলাইয়ের মনসাবিজয় কাব্য (১৪৯৫ খ্রি.), মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কবিকঙ্কণ চণ্ডী (১৫৯৪-১৬০৬ খ্রি.), সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী (১৬৪৫–৫২ খ্রি.), কৃষ্ণরাম দাসের কালিকামঙ্গল (১৬৭৬–৭৭ খ্রি.), সনাতন ঘোষালের ভাষা-ভাগবত (১৬৭৯–৮০ খ্রি.) ও কৃষ্ণদাসের নারদপুরাণ (১৬৯২ খ্রি.)।[23][24] ১৫৮২ সালে রাজা টোডরমলের নির্দেশে সমগ্র বাংলা সুবা (প্রদেশ) জরিপ করে ওয়ালিশ-ই-জমা তুমার নামে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি (১৫৯০ খ্রি.) গ্রন্থে উদ্ধৃত এই তালিকাটিতে "কলিকাতা" গ্রামটির উল্লেখ রয়েছে।[23][24] এছাড়াও গোলাম হোসেন সেলিম রচিত রিয়াজ-উস-সালাতিন (১৭৮৬ খ্রি.) নামক একটি ফার্সি গ্রন্থেও "কলিকাতা" গ্রামের উল্লেখ রয়েছে।[23] ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় বাণিজ্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে পদার্পণ করে। এই সময় থেকেই শহর কলকাতার লিখিত ইতিহাসের সূচনা। জব চার্নক নামে কোম্পানির এক প্রশাসককে সাম্রাজ্যবাদী ঐতিহাসিকগণ কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা মনে করতেন।[25] যদিও আধুনিক গবেষকগণ এই মত খণ্ডন করেছেন। ২০০৩ সালে একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেন যে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা অভিধায় অভিহিত করা যাবে না।[26]

সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী

ফোর্ট উইলিয়াম, কলকাতা, ১৭৩৫
সেকালের কলকাতা বন্দরে জাহাজ থেকে হাতি নামানোর দৃশ্য, হারপারস উইকলি থেকে, ১৮৫৮ খ্রি.
চিৎপুর রোডের (অধুনা রবীন্দ্র সরণি) দৃশ্য; উইলিয়াম সিম্পসনের ইন্ডিয়া এনসিয়েন্ট অ্যান্ড মর্ডার্ন বইতে প্রকাশিত হয়, ১৮৬৭।

সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে বর্তমান কলকাতা অঞ্চলটি সুতানুটি, গোবিন্দপুরডিহি কলিকাতা নামে তিনটি গ্রামে বিভক্ত ছিল। গ্রাম তিনটি ছিল বাংলার নবাবের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে। এই সময় প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ওলন্দাজ, পর্তুগিজফরাসি শক্তিগুলিকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে ইংরেজ কর্তৃপক্ষ গোবিন্দপুরে একটি দুর্গনির্মাণের পরিকল্পনা করেন। ১৭০২ সালে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের নির্মাণকার্য সমাপ্ত হয়।[27] এই দুর্গটি ছিল একাধারে একটি সেনানিবাস ও আঞ্চলিক সেনা কার্যালয়। কলকাতা "প্রেসিডেন্সি সিটি" ঘোষিত হয় এবং পরে বাংলা প্রেসিডেন্সির সদরে পরিণত হয়।[28] এই সময় ফরাসি বাহিনীর সঙ্গে কোম্পানির ছোটোখাটো সংঘর্ষ লেগেই থাকত। ফরাসিদের ঠেকাতে ১৭৫৬ সালে কোম্পানি ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের সংস্কার শুরু করে। বাংলার তদনীন্তন নবাব সিরাজদ্দৌলা এই সামরিক আয়োজনের প্রতিবাদ জানালেও ইংরেজ কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি। ক্ষুব্ধ সিরাজ এরপর কলকাতা আক্রমণ করে দুর্গ দখল করে নেন এবং ইংরেজদের কলকাতা থেকে বিতাড়িত করেন। এরপরই ইংরেজরা কুখ্যাত অন্ধকূপ হত্যার গল্প রটনা করে।[29] অবশ্য এক বছর পরে রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে কোম্পানির বাহিনী কলকাতা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল।[29] ১৭৭২ সালে কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষিত হয়। পরবর্তীকালে ১৮৬৪ সাল থেকে ভারতের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী অধুনা উত্তরাখণ্ড রাজ্যের শৈলশহর সিমলায় সাময়িকভাবে স্থানান্তরিত করার রেওয়াজ শুরু হয়।[30] ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে কলকাতার চারপাশের জলাভূমিগুলি বুজিয়ে ফেলা হয়। হুগলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠে গভর্নমেন্ট প্লেস বা অফিসপাড়া। লর্ড ওয়েলেসলির (গভর্নর-জেনারেল ১৭৯৭-১৮০৫) শাসনকালে শহরের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছিল। তার আমলেই কলকাতার অধিকাংশ সরকারি ভবনের নির্মাণকার্য শুরু হয়। এই ভবনগুলির বিশালতা ও স্থাপত্যসৌকর্যই কলকাতাকে "প্রাসাদ নগরী" বা "সিটি অফ প্যালেসেস" সম্মান প্রদান করেছিল।[31] অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আফিম ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্রও ছিল কলকাতা। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আফিম কলকাতায় নিলামে উঠত এবং তারপর জাহাজবন্দী করে তা চীনে পাঠানো হত।[32]

বাংলার নবজাগরণ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিমান থেকে তোলা কলকাতা বন্দরের দৃশ্য, ১৯৪৫ খ্রি.

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কলকাতা শহর দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। শহরের দক্ষিণে যে অংশে ব্রিটিশরা বাস করতেন সেটিকে বলা হত হোয়াইট টাউন এবং উত্তরে যে অংশে ভারতীয়েরা বাস করত সেটিকে বলা হত ব্ল্যাক টাউন।[33] ১৮৫০-এর দশক থেকে কলকাতা শহর বস্ত্রবয়ন ও পাটশিল্পে বিশেষ সমৃদ্ধি অর্জন করতে শুরু করে। এর ফলে ব্রিটিশ সরকার এখানে রেলপথ ও টেলিগ্রাফ প্রকল্পের মতো পরিকাঠামো উন্নয়নমূলক প্রকল্পে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেন। ব্রিটিশ ও ভারতীয় সংস্কৃতির মিশ্রণে শহুরে বাঙালিদের মধ্যে এক নব্য বাবু শ্রেণির উদ্ভব ঘটেছিল। এই বাবুরা ছিলেন সাধারণত উচ্চবর্ণীয় হিন্দু, ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত ও সংবাদপত্রের পাঠক। পেশাগতভাবে এঁরা ছিলেন জমিদার, সরকারি কর্মচারী বা শিক্ষক।[34] ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণ নামে পরিচিত যে যুগান্তকারী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কার আন্দোলন বাঙালি সমাজের চিন্তাধারা ও রুচির আমূল পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল তার পটভূমিও ছিল এই কলকাতা শহর। বাংলার নবজাগরণ শুধু বাংলা নয়, সমগ্র ভারতের পথপ্রদর্শক হয়েছিল। এই আন্দোলনের পুরোধাপুরুষেরা ছিলেন রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩), হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও (১৮০৯–১৮৩১), রামতনু লাহিড়ী (১৮১৩–১৮৯৮), মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭–১৯০৫), ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০–১৮৯১), বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮–১৮৯৪), রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬), কেশবচন্দ্র সেন (১৮৩৮–১৮৮৪), স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩–১৯০২) প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।

শহিদ মিনার থেকে কলকাতার বিস্তৃত দৃশ্য, ১৮৩২, জ্যাকব জনসন

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন

কলকাতার রাস্তায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের দাঙ্গায় নিহতদের মৃতদেহ, ১৯৪৬ খ্রি.

১৮৮৩ সালে রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেন। এটিই ছিল ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সম্মেলন।[25] এরপর ধীরে ধীরে কলকাতা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়। বিশেষত বিপ্লবী সংগঠনগুলির অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয় কলকাতা শহর। ১৯০৫ সালে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে কলকাতায় ব্যাপক গণবিক্ষোভ ও ব্রিটিশ দ্রব্য বয়কট (স্বদেশী আন্দোলন) শুরু হয়।[35] এই সব গণআন্দোলনের তীব্রতা এবং দেশের পূর্বভাগে অবস্থিত কলকাতা থেকে দেশ শাসনের প্রশাসনিক অসুবিধার কারণে ১৯১১ সালে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হয়।[36] ১৯২৩ সালে ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্টের অধীনে কলকাতার স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন কর্তৃপক্ষ কলকাতা পৌরসংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৪ সালে এই পৌরসংস্থার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। পরবর্তীকালে সুভাষচন্দ্র বসু, বিধানচন্দ্র রায়, আবুল কাশেম ফজলুল হক প্রমুখ বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই পদ অলংকৃত করেছিলেন।[37] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপানি সেনাবাহিনী একাধিকবার কলকাতা শহর ও বন্দরে বোমা নিক্ষেপ করেছিল।[38] কলকাতায় জাপানি বোমাবর্ষণের প্রথম ও শেষ ঘটনাটি ঘটে যথাক্রমে ১৯৪২ সালের ২০ ডিসেম্বর[39] এবং ১৯৪৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর।[40] যুদ্ধের সময় কলকাতায় পঞ্চাশের মন্বন্তরে লক্ষাধিক মানুষ অনাহারে মারা যান। এই মন্বন্তরের কারণ ছিল সামরিক তাণ্ডব, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ।[41] ১৯৪৬ সালে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের দাবিতে এক ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কলকাতায় চার হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।[42][43][44] ভারত বিভাগের সময়ও বহু মানুষ সাম্প্রদায়িকতার শিকার হন। দেশভাগের পর বহুসংখ্যক মুসলমান পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান এবং সেই দেশের লক্ষ লক্ষ হিন্দু কলকাতায় চলে আসেন। এর ফলে শহরের জনপরিসংখ্যানে একটি বিরাট পরিবর্তন সূচিত হয়।[45]

স্বাধীনোত্তর যুগ

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলে ব্রিটিশ বাংলা প্রেসিডেন্সির হিন্দুপ্রধান পশ্চিমাঞ্চল পশ্চিমবঙ্গ নামে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়। কলকাতা এই রাজ্যের রাজধানীর মর্যাদা পায়। এই সময় দেশভাগ-জনিত তীব্র অর্থনৈতিক সংকট ও পূর্ব পাকিস্তান থেকে হিন্দু শরণার্থীদের ব্যাপক হারে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ রাজ্যের তথা শহরের অর্থনীতির উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে। এই সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় একাধিক কার্যকরী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেন। কলকাতার জনসংখ্যার চাপ কমাতে শহরের উপকণ্ঠে চব্বিশ পরগনায় (অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা) লবনহ্রদ (অধুনা বিধাননগর) ও নদিয়া জেলায় কল্যাণী নামে দুটি পরিকল্পিত উপনগরী গড়ে তোলা হয়। কলকাতা বন্দরের সাহায্যার্থে সহযোগী হলদিয়া বন্দর নির্মিত হয়। হুগলি নদীর নাব্যতা রক্ষার জন্য ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনাও গৃহীত হয়।[46] তা সত্ত্বেও বিধানচন্দ্রের মৃত্যুর পর ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ধর্মঘট ও জঙ্গী নকশাল আন্দোলনের ফলে শহরের পরিকাঠামো ব্যবস্থা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে শহরের অর্থনৈতিক অবক্ষয়ের সূত্রপাত ঘটে।[47] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের বহুসংখ্যক মানুষ শরণার্থী হিসাবে কলকাতায় আশ্রয় নিলে শহরের অর্থনীতির উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়।[48]

বামফ্রন্টের একটি জনসভা

স্বাধীনতার পর ১৯৫১ ও ১৯৫৬ সালে কর্পোরেশন আইন সংশোধন করা হয়। ১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শেষবার এই আইন সংশোধন করেন। সংশোধিত নতুন আইন কার্যকর হয় ১৯৮৪ সালে। ১৯৯২ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৭৪তম সংশোধনী বিল পাস হলে কলকাতা পৌরসংস্থা সামাজিক ন্যায় ও আর্থিক উন্নয়নের স্বার্থে পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষমতা পায়। ২০০১ সালে কলকাতার ইংরেজি নাম ‘ক্যালকাটা’ বদলে ‘কলকাতা’ করা হলে ‘কলিকাতা পৌরসংস্থা’ নামের পরিবর্তে ‘কলকাতা পৌরসংস্থা’ নামটি চালু হয়।[49]

১৯৮০-এর দশকের মধ্যভাগে কলকাতাকে ছাপিয়ে মুম্বই (তৎকালীন নাম বোম্বাই) ভারতের সর্বাধিক জনবহুল শহরের শিরোপা অর্জন করে। ১৯৯০-এর দশকে ভারত সরকারের অর্থনৈতিক উদারীকরণের নীতি শহরের অর্থনৈতিক হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারে অনেকাংশে সহায়ক হয়। ২০০০ সাল থেকে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কলকাতার অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করেছে। শহরের উৎপাদন ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।[50] বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে কলকাতা শহর ছিল ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের সিপিআই(এম)-নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট শাসন বিশ্বের দীর্ঘতম মেয়াদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকারের একটি উদাহরণ।[51][52]

ভূগোল

পূর্ব কলকাতা জলাভূমি
রবীন্দ্র সরবার হ্রদ।
স্পট স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে কলকাতা

কলকাতা শহর ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পূর্বদিকে ২২°৩৩′ উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮°২০′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শহরের গড় উচ্চতা ১.৫ মিটার (৫ ফুট) থেকে ৯ মিটারের (৩০ ফুট) মধ্যে।[53] উত্তর-দক্ষিণে শহরের বিস্তার হুগলি নদীর পাড় বরাবর। শহরের বেশিরভাগ এলাকাই আদতে ছিল জলাজমি। শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সব জলাজমি ভরাট করে বসতযোগ্য করে তোলা হয়।[54] অবশিষ্ট জলাভূমি এখন 'পূর্ব কলকাতা জলাভূমি' নামে পরিচিত। এই জলাভূমিটি রামসার কনভেনশন অনুযায়ী একটি "আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন জলাভূমি"।[55]

সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমির বেশিরভাগ এলাকার মতো, কলকাতার মাটি ও জল মূলত পলিজ (alluvial) প্রকৃতির। শহরের মাটির তলায় কাদা, পলি, বিভিন্ন ক্রমের বালি ও নুড়ি নিয়ে গঠিত কোয়্যাটারনারি যুগের পললস্তর দেখা যায়। পললস্তরগুলি দুটির কাদার স্তরের মধ্যে বদ্ধ রয়েছে। নিচের কাদার স্তরটির গভীরতা ২৫০ মিটার (৮২০ ফুট) থেকে ৬৫০ মিটার (২,১৩৩ ফুট) এবং উপরের কাদার স্তরটির গভীরতা ১০ মিটার (৩৩ ফুট) থেকে ৪০ মিটার (১৩১ ফুট)।[56] ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা শহর তৃতীয় ভূ-কম্পী ক্ষেত্রের অন্তর্গত, যার মাত্রা ১ (I) থেকে ৫ (V) (ভূমিকম্পের বৃদ্ধিপ্রবণতা অনুসারে)।[57] আবার রাষ্ট্রসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির রিপোর্ট অনুযায়ী বায়ুপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড় ক্ষেত্র হিসেবে কলকাতা “অতি উচ্চ ক্ষয়ক্ষতি-প্রবণ” এলাকা।

নগরাঞ্চলের গঠন

গঙ্গার পশ্চিম কূল থেকে দৃশ্যমান রবীন্দ্র সেতু (হাওড়া ব্রিজ)

বৃহত্তর কলকাতার আয়তন ১,৮৮৬.৬৭ কিমি (৭২৮.৪৫ মা)[58]: ২০০৬ সালের হিসেব অনুযায়ী, মোট ৭২টি বড়ো শহর এবং ৫২৭টি ছোটো শহর ও গ্রাম এই এলাকার অন্তর্ভুক্ত ছিল।[59] ২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা পৌরসংস্থা সহ তিনটি পৌরসংস্থা, ৩৯টি পুরসভা ও ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত বৃহত্তর কলকাতার অন্তর্ভুক্ত।[58]: বৃহত্তর কলকাতার শহরতলি এলাকাগুলি উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়া জেলার অন্তর্গত।[60]:১৫ কলকাতা পৌরসংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার আয়তন ১৮৫ কিমি (৭১ মা)[59] পৌর এলাকার প্রস্থ পূর্ব-পশ্চিমে তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ। পশ্চিম সীমায় হুগলি নদী থেকে পূর্ব সীমায় ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস পর্যন্ত শহরের প্রস্থ মোটামুটি ৯–১০ কিমি (৫.৬–৬.২ মা)[61] অন্যদিকে শহরের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের মধ্যবর্তী দূরত্বটি অনেকটাই বেশি। এই দূরত্বের নিরিখেই মূলত সমগ্র শহরটিকে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতা নামে তিনটি অংশে ভাগ করা হয়ে থাকে। এছাড়া পরবর্তীকালে শহরে গড়ে ওঠা পূর্ব দিকের অংশটিকে পূর্ব কলকাতা নামে চিহ্নিত করা হয়।

চৌরঙ্গি থেকে দৃশ্যমান কলকাতার দিগন্তরেখা
রাতে আলোকোজ্জ্বল কলকাতার নদীতীর।
সন্ধ্যার প্রাক্কালে হুগলি নদীর উপর বিদ্যাসাগর সেতু

উত্তর কলকাতা

উত্তর কলকাতা হল কলকাতার প্রাচীনতম অংশ। ১৯শ শতাব্দীর স্থাপত্যশৈলী, জীর্ণ প্রাসাদোপম বাড়িঘর, ঘিঞ্জি বস্তি, জনাকীর্ণ বাজার ও অজস্র সরু সরু গলিপথ শহরের এই অংশের বৈশিষ্ট্য শ্যামবাজার, হাতিবাগান, মানিকতলা, কাঁকুড়গাছি, রাজাবাজার, শোভাবাজার, শ্যামপুকুর, সোনাগাছি, কুমারটুলি, বাগবাজার, জোড়াসাঁকো, চিৎপুর, পাথুরিয়াঘাটা, কাশীপুর, কেষ্টপুর, সিঁথি, বেলগাছিয়া, জোড়াবাগানদমদম এলাকাগুলি উত্তর কলকাতার অন্তর্ভুক্ত।[62]:৬৫–৬৬ বৃহত্তর কলকাতার অন্তর্গত বরানগর, নোয়াপাড়া, ডানলপ, দক্ষিণেশ্বর, নাগেরবাজার, বেলঘড়িয়া, আগরপাড়া, সোদপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসাত, বিরাটি, খড়দহ থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত এলাকা কলকাতার উত্তর শহরতলি এলাকা হিসেবে পরিচিত।

মধ্য কলকাতা

মধ্য কলকাতা হল শহরের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র। বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (বিবাদীবাগ; পূর্বতন নাম ডালহৌসি স্কোয়ার), এসপ্ল্যানেড, স্ট্র্যান্ড রোড, চৌরঙ্গি, বড়বাজার, কলেজ স্ট্রিট (বইয়ের বাজারের জন্য ‘বইপাড়া’ নামেও পরিচিত), শিয়ালদহ, তালতলা, জানবাজার, বউবাজার, এন্টালি, চাঁদনি চক, ধর্মতলা, টেরিটি বাজার, বো ব্যারাকস, মল্লিকবাজার , পার্কসার্কাস , বাবুঘাট প্রভৃতি এলাকা মধ্য কলকাতার অন্তর্ভুক্ত।[63] পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সচীবালয়, জেনারেল পোস্ট অফিস, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক, উচ্চ আদালত, লালবাজার পুলিশ সদর দফতর সহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি কার্যালয় এখানেই অবস্থিত। এই এলাকার কিছুদূরে মাদার টেরিজা সরণির (পূর্বতন নাম পার্ক স্ট্রিট) দক্ষিণে আরেকটি বাণিজ্য কেন্দ্র রয়েছে। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সরণি (পূর্বতন নাম ক্যামাক মার্গ), ড. মার্টিন লুথার কিং সরণি (পূর্বতন নাম উড মার্গ ), ড. উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী সরণি (পূর্বতন নাম লডন মার্গ ), শেকসপিয়র সরণি (পূর্বতন নাম থিয়েটার রোড), আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু মার্গ সন্নিহিত এলাকাগুলি এই বাণিজ্য কেন্দ্রের অন্তর্গত।[64] মধ্য কলকাতায় শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ময়দান হল একটি বিশাল মাঠ। এই মাঠটি "কলকাতার ফুসফুস" নামে পরিচিত।[65] এখানে বিভিন্ন ক্রীড়ানুষ্ঠান ও জনসভার আয়োজন করা হয়।[66] ময়দানের দক্ষিণ প্রান্তে ভিক্টোরিয়া স্মৃতি সৌধকলকাতা দৌড় পরিধি অবস্থিত। হুগলি নদীর তীরে স্ট্র্যান্ড রোডের ধারে অবস্থিত মিলেনিয়াম পার্ক কলকাতার একটি বিখ্যাত উদ্যান। ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ফোর্ট উইলিয়াম ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্ব সচীবের সদর দফতর।[67] এই দুর্গটি এবং সন্নিহিত এলাকা সেনাবাহিনীর অধিকাররভুক্ত।

দক্ষিণ কলকাতা

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দক্ষিণ কলকাতার বৃহত্তর অংশের বিস্তার ঘটে। বালিগঞ্জ, আলিপুর, নিউ আলিপুর, শরৎ বসু রোড, ভবানীপুর, কালীঘাট, ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ, নাকতলা, যোধপুর পার্ক, লেক গার্ডেনস, গলফ গ্রিন, যাদবপুর, গড়ফা, কালিকাপুর, হালতু, নন্দীবাগান, সন্তোষপুর, বাঘাযতীন, গাঙ্গুলিবাগান, গড়িয়া, রামগড়, রায়পুর, কানুনগো পার্ক, রানিকুঠি, বিক্রমগড়, বিজয়গড়, বাঁশদ্রোণী ও কুঁদঘাট নিয়েই দক্ষিণ কলকাতা।[17] অন্যদিকে গার্ডেনরিচ, খিদিরপুর, মেটিয়াবুরুজ, তারাতলা, মাঝেরহাট, বজবজ, বেহালা, সরসুনা, বড়িশা, পর্ণশ্রী পল্লি, ঠাকুরপুকুর, মহেশতলাজোকা দক্ষিণ কলকাতার সীমান্তবর্তী এলাকা। দক্ষিণ শহরতলির মধ্যে বৃহত্তর কলকাতার অন্তর্গত অঞ্চলগুলি হল মহামায়াতলা, প্রতাপগড়, কামালগাজি, নরেন্দ্রপুর, সোনারপুর, সুভাষগ্রাম ও বারুইপুর

পূর্ব কলকাতা

বিধাননগর, রাজারহাট, ট্যাংরা, তোপসিয়া, কসবা, আনন্দপুর, মুকুন্দপুর, পিকনিক গার্ডেন, বেলেঘাটা, উল্টোডাঙা, ফুলবাগান, কৈখালি, লেকটাউন প্রভৃতি এলাকা পূর্ব কলকাতার অন্তর্গত। এই এলাকাগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকা সাম্প্রতিক নগরায়নের উদাহরণ। বৃহত্তর কলকাতার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যান বনবিতান (পূর্বতন নাম: সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক) বিধাননগরে অবস্থিত।

বৃহত্তর কলকাতা অঞ্চলের দু’টি পরিকল্পিত টাউনশিপ হল শহরের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বিধাননগর বা সল্টলেক এবং বিধাননগরের পূর্বে অবস্থিত রাজারহাট নিউটাউন[17][68] ২০০০-এর দশকে বিধাননগরের সেক্টর ফাইভ তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলির কেন্দ্র হিসেবে বিকাশ লাভ করে।[69][70] বিধাননগর ও রাজারহাট নিউটাউন দু’টি এলাকাই কলকাতা পৌরএলাকার বাইরে নিজস্ব পৌরসংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত।[68]

জলবায়ু

কলকাতার আকাশে শরতের মেঘ।

কলকাতার জলবায়ু "ক্রান্তীয় সাভানা" প্রকৃতির ("কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ" অনুসারে Aw)। বার্ষিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.৮° সেন্টিগ্রেড এবং মাসিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯°-৩০° সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে।[71] এখানে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র। এই সময় সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ৩০° সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি থাকলেও মে-জুন মাসে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা প্রায়শই ৪০° সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে যায়।[71] শীতকাল সাধারণত মাত্র আড়াই মাস স্থায়ী হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ৯°-১১° সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি থাকে। শহরের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড যথাক্রমে ৪৩.৯° সেন্টিগ্রেড ও ৩.২° সেন্টিগ্রেড।[71] সাধারণভাবে মে মাস শহরের উষ্ণতম মাস। এই সময় শহরের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা থাকে যথাক্রমে ৩৭° সেন্টিগ্রেড ও ২৭° সেন্টিগ্রেড। অন্যদিকে জানুয়ারি শীতলতম মাস। জানুয়ারির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা যথাক্রমে ২৩° সেন্টিগ্রেড ও ১২° সেন্টিগ্রেড। গ্রীষ্মের শুরুতে প্রায়শই শিলাবৃষ্টি, ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এই ধরনের ঝড়বৃষ্টি প্রকৃতিগতভাবে পরিচলন। এর স্থানীয় নাম কালবৈশাখী।[72]

দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি শহরে বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য দায়ী।[73] বর্ষাকাল সাধারণত স্থায়ী হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। শহরের বার্ষিক ১৫৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের অধিকাংশই এই সময়ে ঘটে থাকে। অগস্ট মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বোচ্চ থাকে। এই সময় গড়ে ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কলকাতা বার্ষিক ২,৫২৮ ঘণ্টার সূর্যালোক পেয়ে থাকে। অধিকাংশ সূর্যালোক প্রাপ্তির সময় মার্চ মাস।[74] দূষণ কলকাতার অন্যতম প্রধান সমস্যা। ভারতের অন্যান্য প্রধান শহরের তুলনায় কলকাতার সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার] বা এসপিএম-এর হার এতটাই বেশি যে এর ফলে প্রায়শই ধোঁয়া ও কুয়াশা সৃষ্টি হয়।[75][76] মারাত্মক বায়ুদূষণের ফলে শহরে ফুসফুসের ক্যান্সার সহ দূষণসৃষ্ট অসুখবিসুখ বৃদ্ধি পেয়েছে।[77]

কলকাতা (আলিপুর) ১৯৭১-১৯৯০-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) রেকর্ড ৩২٫৮
(৯১)
৩৮٫৪
(১০১)
৪১٫১
(১০৬)
৪৩٫৩
(১১০)
৪৩٫৭
(১১১)
৪৩٫৯
(১১১)
৩৯٫৯
(১০৪)
৩৮٫৪
(১০১)
৩৮٫৯
(১০২)
৩৯٫০
(১০২)
৩৪٫৯
(৯৫)
৩২٫৫
(৯১)
৪৩٫৯
(১১১)
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) গড় ২৬٫৪
(৮০)
২৯٫১
(৮৪)
৩৩٫৫
(৯২)
৩৫٫৩
(৯৬)
৩৫٫৪
(৯৬)
৩৪٫০
(৯৩)
৩২٫৩
(৯০)
৩২٫১
(৯০)
৩২٫৪
(৯০)
৩২٫৩
(৯০)
৩০٫৩
(৮৭)
২৭٫০
(৮১)
৩১٫৭
(৮৯)
দৈনিক গড় °সে (°ফা) ২০٫১
(৬৮)
২৩٫০
(৭৩)
২৭٫৬
(৮২)
৩০٫২
(৮৬)
৩০٫৭
(৮৭)
৩০٫৩
(৮৭)
২৯٫২
(৮৫)
২৯٫১
(৮৪)
২৯٫১
(৮৪)
২৮٫২
(৮৩)
২৪٫৯
(৭৭)
২০٫৮
(৬৯)
২৬٫৯
(৮০)
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) গড় ১৩٫৮
(৫৭)
১৬٫৯
(৬২)
২১٫৭
(৭১)
২৫٫১
(৭৭)
২৬٫০
(৭৯)
২৬٫৫
(৮০)
২৬٫১
(৭৯)
২৬٫১
(৭৯)
২৫٫৮
(৭৮)
২৩٫৯
(৭৫)
১৯٫৬
(৬৭)
১৪٫৫
(৫৮)
২২٫২
(৭২)
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) রেকর্ড ৬٫৭
(৪৪)
৭٫২
(৪৫)
১০٫০
(৫০)
১৬٫১
(৬১)
১৭٫৯
(৬৪)
২০٫৪
(৬৯)
২০٫৬
(৬৯)
২২٫৬
(৭৩)
২০٫৬
(৬৯)
১৭٫২
(৬৩)
১০٫৬
(৫১)
৭٫২
(৪৫)
৬٫৭
(৪৪)
গড় বৃষ্টিপাত মিমি (ইঞ্চি) ১১
(০٫৪৩)
৩০
(১٫১৮)
৩৫
(১٫৩৮)
৬০
(২٫৩৬)
১৪২
(৫٫৫৯)
২৮৮
(১১٫৩৪)
৪১১
(১৬٫১৮)
৩৪৯
(১৩٫৭৪)
২৮৮
(১১٫৩৪)
১৪৩
(৫٫৬৩)
২৬
(১٫০২)
১৭
(০٫৬৭)
১,৮০০
(৭০٫৮৭)
বৃষ্টিবহুল দিনের গড় (≥ ১.০ mm) ১٫২ ২٫২ ৩٫০ ৪٫৮ ৮٫৭ ১৪٫৭ ২০٫৩৫ ২০٫২ ১৫٫৭ ৮٫১ ১٫৫ ০٫৯ ১০১٫৫
গড় আর্দ্রতা (%) ৬৬ ৫৮ ৫৮ ৬৬ ৭০ ৭৭ ৮৩ ৮৩ ৮১ ৭৩ ৬৭ ৬৮ ৭১
মাসিক গড় সূর্যালোকের ঘণ্টা ২০৩٫৯ ২০১٫২ ২২৫٫৮ ২৩৪٫৪ ২২৭٫১ ১২৩٫১ ৯৩٫১ ১০৪٫৯ ১১৬٫২ ১৮২٫৬ ১৯০٫৮ ২০৩٫৪ ২,১০৭٫৫
উৎস #১: NOAA[78]
উৎস #২: India Meteorological Department (record high and low up to 2010)[79]

অর্থনীতি

কগনিজেন্ট টেকনোলজি সলিউশনস ভবন, বিধাননগর, সেক্টর ফাইভ ইলেকট্রনিকস কমপ্লেক্স
ডিএলএফ আইটি পার্ক, রাজারহাট নিউটাউন

কলকাতা পূর্ব ভারতউত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যবসাবাণিজ্য ও অর্থনীতির প্রধান কেন্দ্র। কলকাতায় অবস্থিত কলকাতা শেয়ার বাজার ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেয়ার বাজার।[80] এটি একটি প্রধান বাণিজ্যিক ও সামরিক বন্দরও বটে। পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি কলকাতাতেই অবস্থিত। একদা ভারতের রাজধানী ও অগ্রণী শিল্পনগরী কলকাতা স্বাধীনোত্তর কালে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জঙ্গি ট্রেড-ইউনিয়ন আন্দোলনের শিকার হয়ে দ্রুত আর্থিক অবনতির পথে এগিয়ে যায়।[81] ১৯৬০-এর দশক থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত একদিকে যেমন মূলধন বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে, তেমনি অন্যদিকে বন্ধ হয়ে যেতে থাকে বৃহৎ কলকারখানাগুলি। অধিকাংশ কলকারখানাগুলির উৎপাদন কমে আসে। অনেকেই ব্যবসা অন্যত্র সরিয়ে নেন।[81] মূলধন ও সম্পদের এই হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত হয় বিশ্ববাজারে এই অঞ্চলে উৎপাদিত ঐতিহ্যবাহী দ্রব্যগুলির (যেমন পাট ইত্যাদি) চাহিদা হ্রাস। ফলে শহরের আর্থিক অবস্থায় গুরুতর সংকট দেখা দেয়।[82]

১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় অর্থনীতির উদারীকরণ কলকাতার ভাগ্যোন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হয়। আজও নমনীয় উৎপাদন কলকাতার অর্থব্যবস্থার একটি বৈশিষ্ট্য। ঘরোয়া সেক্টরগুলি তাই এখানে মোট শ্রমশক্তির ৪০% অধিকার করে আছে।[83] উদাহরণস্বরূপ, ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী ফুটপাথের হকারদের মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮,৭৭২ কোটি ভারতীয় টাকা (প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।[84] শহরের অন্যতম বৃহৎ কর্মশক্তি হল রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীগণ। এছাড়াও বিভিন্ন কায়িক ও বৌদ্ধিক শ্রমিকসহ শহরে একটি বৃহৎ সংখ্যক অদক্ষ ও অর্ধদক্ষ শ্রমিক জনসংখ্যাও পরিলক্ষিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কলকাতার অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করেছে। এই শহরে আইটি সেক্টরের বৃদ্ধির হার বছরে ৭০%, যা জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ।[50] বিগত কয়েক বছরে আবাসন পরিকাঠামো সেক্টরে উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে গৃহীত হয়েছে বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্পও।[85]

কলকাতার বিধাননগর অঞ্চলের শিল্পাঞ্চলের বিস্তৃত দৃশ্য

বড় বড় ভারতীয় কর্পোরেশনগুলি দ্বারা পরিচালিত অনেকগুলি শিল্প ইউনিট কলকাতায় অবস্থিত। আইটিসি লিমিটেড, ভারত সরকার টাঁকশাল, এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিজ, হিন্দুস্তান মোটরস, ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ, বাটা ইন্ডিয়া, বিড়লা কর্পোরেশন, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন, ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইণ্ডিয়া, ইউকো ব্যাংক ও এলাহাবাদ ব্যাংক ইত্যাদি বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য সংস্থার প্রধান কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত। সাম্প্রতিককালে, কেন্দ্রীয় সরকারের "পুবে তাকাও" ("লুক ইস্ট") নীতির মতো বিভিন্ন কর্মসূচি সিক্কিমের নাথুলা গিরিপথ খুলে দেওয়ায় চীনের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছে। তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলি ভারতীয় বাজারে প্রবেশে ইচ্ছুক হওয়ায় কলকাতার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই সুবিধাজনক।[86][87]

প্রশাসন

কলকাতার বর্তমান নগর-প্রশাসক
মহানাগরিক
ফিরহাদ হাকিম[4]
নগরপাল
অনুজ শর্মা [88]
কলকাতা পৌরসংস্থার ওয়ার্ড মানচিত্র

কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা, রাজ্য সচিবালয় মহাকরণমুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়, কলকাতা হাইকোর্ট সহ একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার প্রধান কার্যালয় বা আঞ্চলিক কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত।

কলকাতার নগর প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক পরিষেবাগুলির দায়িত্ব একাধিক সরকারি সংস্থার হাতে ন্যস্ত। এই সকল সংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা অনেক ক্ষেত্রেই পরস্পরের সঙ্গে প্রাবৃত। কলকাতা এই জাতীয় অন্তত চারটি এক্তিয়ার এলাকার অন্তর্গত। এগুলি হল:

১. কলকাতা জেলা,
২. কলকাতা পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা,
৩. কলকাতা পৌরসংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা,
৪. বৃহত্তর কলকাতা বা কেএমডিএ এলাকা।

পৌরসংস্থা

কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়

কলকাতার স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসন কর্তৃপক্ষ হল কলকাতা পৌরসংস্থা। ১৯২৩ সালে আধুনিক স্বায়ত্বশাসনমূলক সংস্থা হিসেবে এই পৌরসংস্থা গঠিত হয়।[89] ১৯৮০ সালে কলকাতা পৌরসংস্থা আইন সংশোধনের মাধ্যমে এই পৌরসংস্থা তার বর্তমান চেহারাটি লাভ করে।[90] বর্তমানে কলকাতার সমগ্র এলাকাটি ১৫টি বরো[91] ও মোট ১৪১টি ওয়ার্ডে[92] বিভক্ত। ১৯৮০ সালের পৌর আইনের ভিত্তিতে কলকাতা পৌরসংস্থায় প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। এই নির্বাচনে বামফ্রন্ট জয়লাভ করেছিল। এরপর ১৯৯০ ও ১৯৯৫ সালের নির্বাচনেওবামফ্রন্টই ক্ষমতা দখল করে। ২০০০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০০৫ সালে পুনরায় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে। ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিকতম নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পুনরায় জয়লাভ করেছে।[93] কলকাতা পৌরসংস্থায় বর্তমানে তিনটি কর্তৃপক্ষ রয়েছে: পৌরনিগম, মহানাগরিক (মেয়র) ও সপরিষদ-মহানাগরিক। পৌরসংস্থার ১৪১ জন পৌরপিতা/পৌরমাতা (কাউন্সিলর) শহরের এক একটি ওয়ার্ড থেকে নাগরিকদের ভোটে প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন।[90] নির্বাচিত পৌরপিতা/পৌরমাতাগণ নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে মহানাগরিক নির্বাচিত করেন। মহানাগরিক, উপমহানাগরিক ও ১০ জন পৌরপিতা/পৌরমাতাকে নিয়ে গঠিত হয় সপরিষদ-মহানাগরিক।[90] পৌরসংস্থার প্রধান কাজ হল জল সরবরাহ, শহরের রাস্তাঘাট ও প্রকাশ্য স্থানসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, রাস্তার আলোকদান, বাড়িনির্মাণ নিবন্ধীকরণ ও নিয়ন্ত্রণ, পয়ঃপ্রণালী রক্ষণাবেক্ষণ ও কঠিন বর্জ্য পদার্থের অপসারণ ইত্যাদি।[94]

জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা

কলকাতার অন্যান্য শাসনবিভাগীয় ও আরক্ষা-সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষগুলি হল: কলকাতা জেলার সমাহর্তা (কালেকটর), কলকাতা পুলিশ, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সমাহর্তা তথা জেলাশাসক এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পুলিশ সুপার (এসপি)।[95] কলকাতায় শেরিফ নামে একটি নামসর্বস্ব সাম্মানিক পদও রয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের মামলা নিষ্পত্তির জন্য কলকাতায় একাধিক নিম্ন আদালত, দেওয়ানি মামলার জন্য ছোটো আদালত ও ফৌজদারি মামলার জন্য দায়রা আদালত অবস্থিত। নগরপালের (পুলিশ কমিশনার) নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশ সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র বিভাগের অন্তর্গত।

সংসদীয় ক্ষেত্র

কলকাতা শহরের অধিকাংশ অঞ্চল ভারতীয় সংসদের কলকাতা উত্তরকলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রদুটির অন্তর্গত। দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতার কয়েকটি অঞ্চল যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুব্রত বক্সী[96] এবং যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুগত বসু। তিনটি আসনই বর্তমানে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। কলকাতা মোট ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে বিভক্ত। এগুলি হল:

জনপরিসংখ্যান

কলকাতার এক পুতুলওয়ালি।

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতার পৌর এলাকার জনসংখ্যা ৪৪৮৬৬৭৯ এবং কলকাতা মহানগরীয় অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ১,৪১,১২,৫৩৬। লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষে ৯১৯ জন নারী।[99] এই হার জাতীয় লিঙ্গানুপাত হারের তুলনায় কম; তার কারণ, অনেক উপার্জনশীল পুরুষ তাদের পরিবারের মহিলা সদস্যদের গ্রামে রেখে শহরে কাজ করতে আসেন। কলকাতার সাক্ষরতার হার ৮৮.৩৩ শতাংশ[7]; যা জাতীয় সাক্ষরতার হার ৭৪.০৪ শতাংশের তুলনায় বেশি।[100] নথিভুক্ত হিসেব অনুযায়ী কলকাতা পৌরসংস্থা অধিভুক্ত এলাকার বৃদ্ধির হার ৪.১ শতাংশ; যা ভারতের দশ লক্ষাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট মহানগরগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন।[101]

ভাষা

বাঙালিরা কলকাতার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী; মারোয়াড়িবিহারি সম্প্রদায় শহরের উল্লেখযোগ্য জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (২০ শতাংশ)।[102] এছাড়াও কলকাতা প্রবাসী চীনা, তামিল, নেপালি, ওড়িয়া, তেলুগু, অসমীয়া, গুজরাটি, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান, আর্মেনিয়ান, তিব্বতি, মহারাষ্ট্রীয়, পাঞ্জাবি, পারসি প্রভৃতি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসভূমি। কলকাতার প্রধান ভাষা হল বাংলা ও ইংরেজি; এছাড়াও হিন্দি, উর্দু, ওড়িয়া ও ভোজপুরি ভাষাও শহরের একাংশের বাসিন্দাদের দ্বারা কথিত হয়ে থাকে।

কলকাতার ভাষাগোষ্ঠী (২০১১)

  বাংলা (৬১.৪৫%)
  হিন্দী (২২.৮৪%)
  উর্দু (১৩.০৪%)
  অন্যান্য (২.৬৭%)

ধর্ম

কলকাতার ধর্মবিশ্বাস[103]
ধর্ম শতাংশ
হিন্দুধর্ম
 
৭৭.৬৮%
ইসলাম
 
২০.২৭%
খ্রিষ্টধর্ম
 
০.৮৮%
জৈনধর্ম
 
০.৪৬%
অন্যান্য
 
০.৭১%

জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যার ৭৭.৬৮ শতাংশ হিন্দু, ২০.২৭ শতাংশ মুসলিম, ০.৮৮ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং ০.৪৬ শতাংশ জৈন; অবশিষ্ট শিখ, বৌদ্ধ, ইহুদিজরথুস্ট্রীয় সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা অত্যন্ত অল্প।[104] শহরের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ ২,০১১টি নথিভুক্ত এবং ৩,৫০০টি অনথিভুক্ত (মূলত দখলদার) বস্তিতে বাস করেন।[105]

অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা

২০০৪ সালে দেশের ৩৫টি মহানগরের মধ্যে কলকাতায় সংঘটিত বিশেষ ও স্থানীয় আইনের আওতাভুক্ত অপরাধের হার ৬৭.৬ শতাংশ।[106] ২০০৪ সালে কলকাতা পুলিশ ১০,৭৫৭টি ভারতীয় দণ্ডবিধির আওয়াভুক্ত মামলা নথিভুক্ত করে; যা সারা দেশে দশম স্থানের অধিকারী।[107] ২০০৬ সালে জাতীয় স্তরে যখন অপরাধ হার ছিল প্রতি এক লক্ষে ১৬৭.৭, তখন কলকাতায় এই হার ছিল ৭১; যা ভারতীয় মহানগরগুলির মধ্যে ছিল সর্বনিম্ন হার।[108] কলকাতার সোনাগাছি অঞ্চল এশিয়ার বৃহত্তম নিষিদ্ধ পল্লিগুলির অন্যতম; এখানে প্রায় ১০,০০০ যৌনকর্মী কাজ করেন।[109]

সংস্কৃতি

কলকাতা মহানগরী তার সাহিত্যিক, শৈল্পিক ও বৈপ্লবিক ঐতিহ্যগুলির জন্য বিশ্ববিদিত। এই শহর কেবলমাত্র ভারতের পূর্বতন রাজধানীই ছিল না, বরং আধুনিক ভারতের শিল্প ও সাহিত্য চেতনার জন্মস্থানও ছিল। শিল্প ও সাহিত্যের প্রতি কলকাতাবাসীদের বিশেষ আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে; নতুন প্রতিভাকে গ্রহণ করার ঐতিহ্য কলকাতাকে তাই পরিণত করেছে "প্রচণ্ড সৃজনীশক্তিধর এক শহরে"।[110] এই সকল কারণে কলকাতাকে অনেক সময় "ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী" বলে উল্লেখ করা হয়।

কলকাতার অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল শহরের ছোটো ছোটো অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পাড়া সংস্কৃতি। সাধারণত প্রত্যেক পাড়ায় একটি করে ক্লাবঘর সহ নিজস্ব সংঘ বা ক্লাব থাকে। অনেক সময় ক্লাবগুলির নিজস্ব খেলার মাঠও থাকে। পাড়ার বাসিন্দারা অভ্যাসগতভাবে এখানে এই সব ক্লাবঘরে আড্ডা দিতে আসেন; মাঝেমধ্যে এই সব আড্ডা হয়ে ওঠে মুক্তছন্দের বৌদ্ধিক আলাপআলোচনা।[111] এই শহরে রাজনৈতিক দেওয়াললিখনেরও এক ঐতিহ্য লক্ষিত হয়; এই সব দেওয়াললিখনে কুরুচিপূর্ণ কেচ্ছাকেলেংকারির বর্ণনা থেকে শ্লেষাত্মক রঙ্গব্যঙ্গ, লিমেরিক, কার্টুন, ইস্তাহার – সবই বিধৃত হয়।

সাহিত্য

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - এশিয়ার প্রথম[112] সাহিত্যে নোবেল বিজেতা[113] এবং ভারতের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা। বাংলা তথা ভারতীয় সাহিত্যের এই দিকপালের জন্ম ও মৃত্যু কলকাতায়।

ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে কলকাতাকেন্দ্রিক সাহিত্যিকদের হাত ধরে বাংলা সাহিত্যের আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয়। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮–১৮৯৪), মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১), কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৮–১৯৭৬) ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৬–১৯৩৮) প্রমুখ। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করে চলেন শহরের পরবর্তী প্রজন্মের খ্যাতিমান সাহিত্যিকেরা। এঁদের মধ্যে উল্লেখনীয় হলেন জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯–১৯৫৪), বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৪–১৯৫০), তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮–১৯৭১), মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮–১৯৫৬), বুদ্ধদেব বসু (১৯০৮-১৯৭৪), আশাপূর্ণা দেবী (১৯০৯–১৯৯৫) প্রমুখ। বর্তমান প্রজন্মের সাহিত্যিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৫), বুদ্ধদেব গুহ (জন্ম ১৯৩৬), মহাশ্বেতা দেবী (জন্ম ১৯২৬), সমরেশ মজুমদার (জন্ম ১৯৪৪), সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৬), সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৪) এবং জয় গোস্বামী (জন্ম ১৯৫৪) প্রমুখ।

সংগীত

কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত একটি নৃত্যানুষ্ঠান।

কলকাতা শহরের সাংগীতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধ থেকেই বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বহির্বঙ্গ থেকেও বহু বিশিষ্ট সংগীতস্রষ্টা ও গায়ক কলকাতায় এসে বসতি স্থাপন করেন। এর ফলে অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলা গানে একটি বিশেষ কলকাতা-কেন্দ্রিক ধারার সৃষ্টি হয়, যা অধুনা "পুরাতনী" নামে পরিচিত।[114] এই সময়কার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উল্লেখযোগ্য সংগীতস্রষ্টা-গায়ক হলেন বাংলা টপ্পাসংগীতের জনক রামনিধি গুপ্ত (নিধুবাবু); তার রচিত টপ্পাগান আজও জনপ্রিয়। নিধুবাবুই বাংলায় প্রথম দেশাত্মবোধক গান "নানান দেশে নানান ভাষা, বিনে স্বদেশীয় ভাষা মিটে কি আশা"-র রচয়িতা।[115] সেযুগের অন্যান্য বিশিষ্ট সংগীতস্রষ্টা-গায়কেরা হলেন রাম বসু, হরু ঠাকুর, গোপাল উড়ে, রূপচাঁদ পক্ষী, শ্রীধর কথক প্রমুখ।[114] ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলা গানে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িব্রহ্মসংগীতের অবদানও অনস্বীকার্য।[114] কলকাতার জনসমাজে কবিগান, তরজা, আখড়াই-হাফ আখড়াই, টপ্পা প্রভৃতি গানের বিশেষ জনপ্রিয়তা ছিল।[114]

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, বাংলা সাহিত্যে ও গানে এই বাড়ির সদস্যদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেনকাজী নজরুল ইসলাম রচিত গানের চর্চা শুরু হয়। রবীন্দ্রসংগীত চর্চা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে কলকাতা এক বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। এই শহরের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং "গীতবিতান", "রবিতীর্থ", "দক্ষিণী" প্রভৃতি রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষায়তন বিশেষ খ্যাতিসম্পন্ন। কলকাতা-কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীরা হলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক, কুন্দনলাল সায়গল, দেবব্রত বিশ্বাস, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, সাগর সেন, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, সুমিত্রা সেন প্রমুখ; এবং একালের বিশিষ্ট শিল্পীদের মধ্যে প্রমিতা মল্লিক, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শ্রাবণী সেন, ইন্দ্রাণী সেন, শ্রীকান্ত আচার্যের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নজরুলগীতির ক্ষেত্রে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ধীরেন বসু, অঞ্জলি মুখোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পীরা। দ্বিজেন্দ্রগীতি-অতুলপ্রসাদী-রজনীকান্তের গানে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, মঞ্জু গুপ্ত, শর্বাণী সেন, নূপুরছন্দা ঘোষ প্রমুখ।বিংশ শতাব্দীর শেষ পর্বে কলকাতা-কেন্দ্রিক গীতিকার-সুরকার ও গায়ক-গায়িকারা বাংলা আধুনিক গানে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন।[116] এই সময়কার বিশিষ্ট গীতিকার-সুরকারেরা হলেন সলিল চৌধুরী, হিমাংশু দত্ত, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, নচিকেতা ঘোষ, মোহিনী চৌধুরী, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, কমল দাশগুপ্ত প্রমুখ।[116] জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কৃষ্ণচন্দ্র দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শচীন দেববর্মণ, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, মান্না দে, কিশোরকুমার, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।[116]

বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর অনুষ্ঠান।

১৯৯০-এর দশকের প্রথম ভাগ থেকে বাংলা সঙ্গীতের জগতে এক নতুন ধারার সূচনা ঘটে। এই ধারার বৈশিষ্ট্য লক্ষিত হয় বিভিন্ন বাংলা ব্যান্ডের গানে। কোনো কোনো ব্যান্ড আবার বাংলা লোকসঙ্গীতের সঙ্গে জ্যাজ ও অন্যান্য পাশ্চাত্য সঙ্গীতের ফিউশনও ঘটায়। তবে এই ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কবীর সুমন, নচিকেতা, অঞ্জন দত্ত এবং বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দু ও ক্যাকটাসের "জীবনমুখী গান"। এছাড়া কলকাতায় হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত ও বাউল-ভাটিয়ালি ইত্যাদি বাংলা লোকসংগীতও বিশেষ জনপ্রিয়। কলকাতার দুটি প্রধান সংগীত-উৎসব হল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত "বাংলা সংগীত মেলা" ও ডোভার লেন সংগীত সম্মেলন

নাটক

কলকাতার যাত্রাপালা, নাটক ও গ্রুপ থিয়েটারের ঐতিহ্য সুবিদিত। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩), দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০–১৮৭৩), গিরিশচন্দ্র ঘোষ (১৮৪৪–১৯১২), দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩–১৯১৩), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১), ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ (১৮৬৩–১৯২৭) প্রমুখ কলকাতাকেন্দ্রিক নট ও নাট্যকারগণের হাত ধরে বাংলা নাট্যসাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পশ্চিমবঙ্গের বাংলা নাটকে যা বাস্তবমুখী গণনাট্য ও নবনাট্য ধারার সূচনা হয় তার পুরোধা ব্যক্তিত্বরা ছিলেন তুলসী লাহিড়ী (১৮৯৭–১৯৫৯), বিজন ভট্টাচার্য (১৯১৫–১৯৭৮), উৎপল দত্ত (১৯২৯–১৯৯৩), শম্ভু মিত্র (১৯১৫–১৯৯৭), তৃপ্তি মিত্র (১৯২৪–১৯৮৯) প্রমুখ নাট্যব্যক্তিত্বেরা। বাংলা নাটকের এই ঐতিহ্য বর্তমানে বহন করছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৫), মনোজ মিত্র (জন্ম ১৯৩৮), শাঁওলি মিত্র, ব্রাত্য বসু প্রমুখেরা। নাট্য গবেষণার উন্নতিকল্পে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি স্থাপন করেছে। কলকাতার উল্লেখযোগ্য নাট্যমঞ্চগুলি হল স্টার থিয়েটার, মিনার্ভা থিয়েটার, মহাজাতি সদন, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চগিরিশ মঞ্চ

১৯৮৪ সালে নান্দীকার জাতীয় নাট্যোৎসব শুরু হয়। এটি একটি বার্ষিক নাট্যোৎসব। নান্দীকার নাট্যদল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের মঞ্চে এই উৎসব আয়োজন করে।

চলচ্চিত্র

বাংলা চলচ্চিত্রমূলধারার হিন্দি চলচ্চিত্র কলকাতায় সমান জনপ্রিয়। শহরের ফিল্ম স্টুডিও টালিগঞ্জে অবস্থিত; এই কারণে বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকে "টলিউড" নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। সত্যজিৎ রায় (১৯২১–১৯৯২) কলকাতার একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৯১ সালে তিনি তার সারা জীবনের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ অস্কার পুরস্কার পেয়েছিলেন। tতার জন্ম ও কর্মস্থল ছিল কলকাতা। সেই জন্য তার বহু ছবিতে কলকাতার জীবনযাত্রার ছবি ধরা পড়েছে। ১৯৭০-এর দশকে সত্যজিৎ রায় সমকালীন কলকাতাকে আর্থ-সামাজিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে নির্মিত তিনটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন। এগুলি হল প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৭০), সীমাবদ্ধ (১৯৭১) ও জন অরণ্য (১৯৭৫)। এই তিনটি ছবি "কলকাতা ট্রিলজি" নামে পরিচিত। সত্যজিৎ রায় ছাড়াও একাধিক কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালকের কর্মজীবন গড়ে উঠেছে এই শহরকে কেন্দ্র করেই। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৃণাল সেন (জন্ম ১৯২৩), তপন সিংহ (১৯২৪-২০০৯), ঋত্বিক ঘটক (১৯২৫–১৯৭৬) এবং আধুনিক চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (জন্ম ১৯৪৪), অপর্ণা সেন (জন্ম ১৯৪৫) , গৌতম ঘোষ (জন্ম ১৯৫০) ও ঋতুপর্ণ ঘোষ (৩১ শে আগস্ট, ১৯৬৩-৩০ শে মে, ২০১৩)। কলকাতার বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তম কুমার (১৯২৬–১৯৮০), সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৫), সুচিত্রা সেন (১৯২৯-২০১৪), ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯২০–১৯৮৩), অপর্ণা সেন (জন্ম ১৯৪৫) , প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৬২) প্রমুখ।

কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি ভারতের দ্বিতীয় ফিল্ম সোসাইটি। ১৯৪৭ সালে সত্যজিৎ রায় ও চলচ্চিত্র জগতের অন্যান্য ব্যক্তিত্বেরা এই সোসাইটি স্থাপন করেন।[117] ১৯৮৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নন্দনে "পশ্চিমবঙ্গ চলচ্চিত্র কেন্দ্র" স্থাপন করে। এরপর ১৯৯৫ সালে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়।

স্থাপত্য

সায়েন্স সিটি, আধুনিক স্থাপত্যের একটি নিদর্শন।

কলকাতার অনেক ভবন ও স্থাপনা গথিক, ব্যারোক, রোমান, প্রাচ্য, ও মুঘল স্থাপত্য সহ অন্যান্য ইন্দো-ইসলামীয় শৈলীর মোটিফ দ্বারা সজ্জিত। ঔপনিবেশিক যুগের অনেক উল্লেখযোগ্য ভবনই সুসংরক্ষিত এবং "ঐতিহ্যবাহী ভবন" হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। আবার অনেক ভবনই আজ কালের গহ্বরে বিলীয়মান।

গোর্খা যুদ্ধের (১৮১৪-১৬) স্মৃতিতে নির্মিত অক্টারলোনি মনুমেন্ট (১৮৪৮) মিশরীয়, সিরীয় ও তুর্কি স্থাপত্যরীতির সংমিশ্রণ দেখা যায়।[118] ১৯৬৯ সালে এই স্মৃতিস্তম্ভটি স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত হয়। তাই এখন এটি "শহীদ মিনার" নামে পরিচিত।[119] পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় মহাকরণ গ্রিকো-রোমান স্থাপত্যের একটি নিদর্শন।[22] কলকাতায় অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের রাজভবন ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ারের কেডলস্টন হলের আদলে নির্মিত।[120] কলকাতা হাইকোর্টের মূল ভবনটি বেলজিয়ামের ইপ্রেসের ক্লথ হলের আদলে নির্মিত।[121]

কলকাতায় অবস্থিত ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগার দেশের অগ্রণী পাবলিক লাইব্রেরি। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস ও অন্যান্য শিল্প প্রদর্শশালায় নিয়মিত শিল্প প্রদর্শনী আয়োজিত হয়ে থাকে।

জাদুঘর

এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো জাদুঘর ভারতীয় সংগ্রহালয়

কলকাতার ভারতীয় সংগ্রহালয় হল এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো জাদুঘর। ১৮১৪ সালে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে ভারতের প্রাকৃতিক ইতিহাস ও ভারতীয় শিল্পকলার এক বিরাট সংগ্রহ সংরক্ষিত আছে।[122] কলকাতার আর একটি উল্লেখযোগ্য দ্রষ্টব্য স্থল হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। এটি ১৯২১ সালে যুক্তরাজ্যের সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিসৌধ হিসেবে স্থাপিত হয়েছিল। সৌধটি বেলফাস্ট সিটি হলের আদলে নির্মিত। এর মধ্যে ইতালীয় রেনেসাঁ, ইন্দো-সারাসেনীয় ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণ দেখা যায়। বর্তমানে এটি একটি জাদুঘর ও প্রদর্শশালা।[123] কলকাতার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘরগুলি হল রাজ্য পুরাতত্ত্ব সংগ্রহালয় বেহালা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আশুতোষ সংগ্রহশালা, স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক বাসভবন, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, নেতাজি ভবন ইত্যাদি।

শিল্পকলা

কালীঘাটের পট কলকাতার নিজস্ব এক চিত্রশৈলী।

কলকাতার কালীঘাটের পট চিত্রকলা ভারতীয় শিল্পের একটি স্বতন্ত্র ঘরানা। কালীঘাট মন্দিরের কাছে উনিশ শতকে এই চিত্রশিল্প বিকাশ লাভ করেছিল। সেই সময় তীর্থযাত্রীরা স্মারক হিসেবে এই ছবিগুলি কিনে নিয়ে যেত। হিন্দু দেবদেবী, পৌরাণিক ঘটনাবলি ও সমসাময়িক নানা ঘটনাকে এক বিশেষ ধরনের ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলাই ছিল এই ঘরানার বৈশিষ্ট্য।

বিশ শতকের গোড়ার দিকে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে "বেঙ্গল স্কুল অফ আর্ট" চিত্রশিল্পের বিশেষ এক ঘরানার জন্ম হয়। এই শিল্পকলার পুরোধাপুরুষ ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ক্যালকাটা স্কুল অফ আর্টের প্রভাবে মুঘল চিত্রকলা ও পাশ্চাত্য শিল্পীরীতির মিশ্রণ ঘটিয়ে বাংলা চিত্রকলার এই নিজস্ব ঘরানাটির জন্ম দেন।[124][125] পরবর্তীকালে গণেশ পাইন, বিকাশ ভট্টাচার্য প্রমুখ শিল্পীরা এই ঘরানার দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হন।

উৎসব

কলকাতার প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা

কলকাতার উৎসবগুলি প্রকৃতিগতভাবে দুই প্রকার। যথা: ধর্মীয় উৎসব ও ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। কলকাতার জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় হিন্দু উৎসবগুলি এই শহরে সর্বাধিক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে থাকে। দুর্গাপূজা কলকাতার বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব।[126] প্রতিবছর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে আশ্বিন-কার্তিক মাসে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতার দুর্গাপূজা শহরের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণও বটে। হিন্দুদের অন্যান্য উৎসবগুলির মধ্যে লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা, পৌষ সংক্রান্তি, সরস্বতী পূজা, শিবরাত্রি, দোলযাত্রা, পয়লা বৈশাখ, রথযাত্রা, জন্মাষ্টমী ও বিশ্বকর্মা পূজা;এবং অবাঙালি হিন্দুদের উৎসবগুলির মধ্যে দীপাবলি, ধনতেরস ও ছটপূজা সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামি উৎসবগুলির মধ্যে ঈদুল ফিতর, ঈদুজ্জোহা, মহরম, শবেবরাত ইত্যাদি; খ্রিষ্টান উৎসবগুলির মধ্যে বড়দিনগুড ফ্রাইডে; বৌদ্ধ উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা; জৈন উৎসব মহাবীর জয়ন্তী এবং শিখ উৎসব গুরু নানক জয়ন্তীও মহাসমারোহে পালিত হয়।

কলকাতায় রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠান।

কলকাতার ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবগুলির মধ্যে সর্বপ্রধান হল আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী পঁচিশে বৈশাখ। এছাড়া কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব, নান্দীকারের জাতীয় নাট্যমেলা, বিভিন্ন আঞ্চলিক ও ছোটো বইমেলা ইত্যাদিও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়। কলকাতার চায়নাটাউনে প্রবাসী চীনাদের চৈনিক নববর্ষ উৎসবও কলকাতার অন্যতম দ্রষ্টব্য উৎসব। প্রতি বছর জুন মাসে কলকাতায় সমকামীদের গৌরব পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়; কলকাতার এই পদযাত্রা ভারতের প্রথম গৌরব পদযাত্রা।[127]

খাদ্যাভ্যাস

কলকাতার বাঙালিদের প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ[128] এর সঙ্গে রসগোল্লাসন্দেশ নামে দুই ধরনের মিষ্টি ও মিষ্টি দই বাঙালিরা বিশেষ পছন্দ করে। চিংড়ি ও সামুদ্রিক মাছ ইলিশ দিয়ে রান্না করা বিভিন্ন রকম পদও বাঙালিদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়। পথখাদ্যের মধ্যে বেগুনি, রোল (চিকেন, মাটন, এগ বা সবজি), ফুচকা বিশেষ জনপ্রিয়। চায়নাটাউনের চীনা খাবারও বেশ জনপ্রিয়।[129][130][131][132] কলকাতার অধিবাসীদের মধ্যে মিষ্টি খাবার চল বেশি। বিশেষত সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে মিষ্টির বিশেষ চাহিদা দেখা যায়।[133]

পোশাক-পরিচ্ছদ

কলকাতার পুরুষদের মধ্যে পাশ্চাত্য পোশাক পরার চল থাকলেও মহিলাদের মধ্যে সাধারণত ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। পুরুষেরা শার্ট, টি-শার্ট, ট্রাউজার্স, জিনস প্রভৃতি পরতে অভ্যস্ত। তবে উৎসবে অনুষ্ঠানে ধুতি-পাঞ্জাবি অথবা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরার চলই বেশি। অন্যদিকে মহিলারা শাড়ি অথবা সালোয়ার-কামিজ পরেন। ধর্মপ্রাণ মুসলিম মহিলাদের বোরকা পরতেও দেখা যায়। অবশ্য তরুণীদের মধ্যে পাশ্চাত্য পোশাকও সমান জনপ্রিয়।

শিক্ষাব্যবস্থা

কলকাতার একটি বিদ্যালয়ের ছাত্রদল
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। (ছবিতে দেখা যাচ্ছে কলেজ স্ট্রিটের আশুতোষ শিক্ষাপ্রাঙ্গনের আশুতোষ সংগ্রহশালা ভবন ও শতবার্ষিকী ভবন)।

কলকাতার বিদ্যালয়গুলি রাজ্য সরকার অথবা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত। এই সংস্থাগুলির মধ্যে বেশ অনেকগুলিই ধর্মীয় সংগঠন। কলকাতায় শিক্ষাদানের প্রাথমিক ভাষা হল বাংলাইংরেজি। তবে মধ্য কলকাতার কয়েকটি বিদ্যালয়ে হিন্দিউর্দুতেও শিক্ষাদান করা হয়।[134][135] কলকাতার বিদ্যালয়গুলি "১০+২+৩" পরিকল্পনা অনুসরণ করে। মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করার পর ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বা ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইসিএসই) অথবা কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (সিবিএসই) কর্তৃক অনুমোদিত এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার উপযুক্ত পরিকাঠামোযুক্ত বিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হয়।[134] উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে তারা মূলত মানবীয় বিদ্যা, বাণিজ্য বা বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নেন। বৃত্তিমূলক কর্মসূচিগুলিও এখানে সুলভ।[134] কলকাতার কয়েকটি বিদ্যালয় সারা দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম। এগুলির মধ্যে লা মার্টিনিয়ার ক্যালকাটা, ক্যালকাটা বয়েজ’ স্কুল, সেন্ট জেমস’ স্কুল, সেন্ট জেভিয়ার'স কলেজিয়েট স্কুললোরেটো হাউজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।[136]

২০১০ সালের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা মহানগর অঞ্চলে রাজ্য সরকার পরিচালিত মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ১৪টি।[137] কলকাতার প্রত্যেকটি কলেজ কলকাতায় অথবা ভারতের অন্যত্র অবস্থিত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমোদিত। ১৭৮০ সালে মোহামেডান কলেজ অফ ক্যালকাটা নামে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ছিল শহরের সবচেয়ে পুরনো উত্তর-মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এটি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত।[138] ১৮৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়।[139] ১৮১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হিন্দু কলেজ ভারতের সবচেয়ে পুরনো সুবিখ্যাত কলেজগুলির অন্যতম। ১৮৫৫ সালে এই কলেজটির নাম বদলে প্রেসিডেন্সি কলেজ রাখা হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত কলেজটি ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত। ওই বছরই কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে উন্নীত হয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নামে চিহ্নিত হয়। হাওড়ার ভারতীয় প্রকৌশল বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[140] এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ভারতের প্রথম ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা আইআইইএসটি স্তরে উন্নীত হয় এবং জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘোষিত হয়।[141] ১৯৬১ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম শহরতলির জোকায় প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট ক্যালকাটা দেশের ম্যানেজমেন্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সর্বাগ্রে স্থাপিত। ২০০৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[142] কলকাতায় স্থাপিত পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় আইনবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় হল ভারতের অন্যতম স্বশাসিত আইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান[143][144] এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট হল একটি সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান তথা বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পূর্বতন নাম পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়]] হল ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির সংখ্যার নিরিখে ভারতের বৃহত্তম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ইউইএম) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

যে সকল স্বনামধন্য বিদ্বজ্জন কলকাতায় জন্মগ্রহণ, পড়াশোনা বা কাজ করেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদার্থবিদ সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা,[145] ও জগদীশচন্দ্র বসু;[146] রসায়নবিদ প্রফুল্লচন্দ্র রায়;[145] পরিসংখ্যানবিদ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশঅনিল কুমার গাঁই;[145] চিকিৎসক উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী;[145] শিক্ষাবিদ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়;[147] এবং নোবেল পুরস্কারজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,[148] চন্দ্রশেখর বেঙ্কট রমন,[146]অমর্ত্য সেন.[149]

ভারতের বিভিন্ন অগ্রণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান কলকাতায় অবস্থিত। এগুলির মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স (আইএসিএস)[150][151][152], ভারতীয় রাসায়নিক জীববিজ্ঞান সংস্থা (আইআইসিবি)[153][154][155] , ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থান (আইআইএসইআর)[156], বসু বিজ্ঞান মন্দির, সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স (এসআইএনপি), অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ (এআইআইএইচপিএইচ), সেন্ট্রাল গ্লাস অ্যান্ড সেরামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিজিসিআরআই), সত্যেন্দ্রনাথ বসু জাতীয় মৌলিক বিজ্ঞান কেন্দ্র (এসএনবিএনসিবিএস), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (আইআইএসডব্লিউবিএম), ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাকিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এনআইপিইআর), ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার (ভিইসিসি) ও ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স (আইসিএসপি)। নোবেল পুরস্কারজয়ী পদার্থবিদ চন্দ্রশেখর বেঙ্কট রমন রমন এফেক্টের উপর তার প্রসিদ্ধ কাজটি করেছিলেন আইএসিএস-এ।

গণমাধ্যম

আকাশবাণী ভবন, অল ইন্ডিয়া রেডিও, কলকাতার প্রধান কার্যালয়।

সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র

ভারতের প্রথম সংবাদপত্র হিকির গেজেট ১৭৮০ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।[157] কলকাতার জনপ্রিয় বাংলা সংবাদপত্রগুলি হল আনন্দবাজার পত্রিকা, বর্তমান, সংবাদ প্রতিদিন, আজকাল, দৈনিক স্টেটসম্যানগণশক্তি[158] দ্য স্টেটসম্যানদ্য টেলিগ্রাফ হল দুটি ইংরেজি সংবাদপত্র যা কলকাতা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। এছাড়া দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য হিন্দু, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসএশিয়ান এজ কলকাতার অপর কয়েকটি জনপ্রিয় ইংরেজি সংবাদপত্র।[158] পূর্ব ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যকেন্দ্র কলকাতা থেকে বেশ কয়েকটি ব্যবসা-বিষয়ক দৈনিকও প্রকাশিত হয়। এগুলির মধ্যে দি ইকোনমিক টাইমস, দ্য ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, বিজনেস লাইনবিজনেস স্ট্যান্ডার্ড[158][159] হিন্দি, উর্দু, গুজরাতি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবিচীনা প্রভৃতি ভাষাতেও সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।[158][160] সাময়িকপত্রগুলির মধ্যে দেশ, সানন্দা, সাপ্তাহিক বর্তমান, উনিশ কুড়ি, আনন্দলোকআনন্দমেলা জনপ্রিয়।[158] দীর্ঘকাল ধরে কলকাতা বাংলা লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের একটি কেন্দ্র।.[161][162]

কলকাতা দূরদর্শন কেন্দ্র ও টাওয়ার

বেতার ও টেলিভিশন

কলকাতার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বেতার সম্প্রচার সংস্থাটি হল আকাশবাণী। শহরে আকাশবাণীর বেশ কয়েকটি এএম রেডিও স্টেশন আছে।[163] কলকাতায় ১২টি স্থানীয় রেডিও স্টেশন আছে, যেগুলি এফএম-এ বেতার সম্প্রচার করে থাকে। এগুলির মধ্যে দুটি আকাশবাণীর স্টেশন।[164] ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিভিশন সম্প্রচার সংস্থা হল দূরদর্শন। দূরদর্শন দুটি ফ্রি-টু-এয়ার টেরেস্ট্রিয়াল চ্যানেল চালায়।[165] এছাড়া কেবল টেলিভিশন, ডাইরেক্ট-ব্রডকাস্ট স্যাটেলাইট সার্ভিস বা ইন্টারনেট-ভিত্তিক টেলিভিশনের মাধ্যমে একাধিক বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি ও অন্যান্য আঞ্চলিক চ্যানেল দেখা যায়।[166][167][168] বাংলা ২৪ ঘণ্টার টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলগুলির মধ্যে এবিপি আনন্দ, তারা নিউজ, কলকাতা টিভি, ২৪ ঘণ্টা, এনই বাংলা, নিউজ টাইমচ্যানেল ১০ উল্লেখযোগ্য।[169]

পরিবহণ

বিদ্যাসাগর সেতু (দ্বিতীয় হুগলি সেতু) কলকাতা ও হাওড়া শহরকে যুক্ত করেছে

কলকাতায় গণ-পরিবহন পরিষেবা দেয় কলকাতা শহরতলি রেল, কলকাতা মেট্রো, ট্রাম ও বাস। শহরতলি রেল কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির শহরগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। হুগলি নদীর উপর অবস্থিত রবীন্দ্র সেতু (হাওড়া সেতু) ও বিদ্যাসাগর সেতু (দ্বিতীয় হুগলি সেতু) কলকাতার সঙ্গে হাওড়া শহরের যোগাযোগ রক্ষা করছে।

কলকাতা মেট্রো

কলকাতা মেট্রোর ৩০০০ সিরিজের কোচ
দক্ষিণ প্রান্তিক স্টেশন কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া)।

ভারতীয় রেলের সপ্তদশ ক্ষেত্র কলকাতা মেট্রো ভারতের প্রথম মেট্রো রেল পরিষেবা।[170] হুগলি নদীর সমান্তরাল ২৮.১৪ কিলোমিটার পথে শহরের উত্তরে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু আছে। এই লাইনটির (কলকাতা মেট্রো লাইন ১) পাশাপাশি হাওড়ার রামরাজাতলা থেকে বিধাননগর সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো লাইনের কাজ চলছে। এই লাইনটি হুগলি নদীর তলায় সুড়ঙ্গ পথে হাওড়া ও কলকাতা শহরদুটির মধ্যে রেল-যোগাযোগ স্থাপন করবে। ২০১০ সালে ভারত সরকারের রেল মন্ত্রক আরও কয়েকটি নতুন মেট্রো লাইন স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। এগুলি হল:

  1. জোকা-বিবাদীবাগ লাইন
  2. নোয়াপাড়া-বারাসাত লাইন
  3. কবি সুভাষ-নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাইন
  4. বরানগর-দক্ষিণেশ্বর-ব্যারাকপুর লাইন

এছাড়া যাত্রীসাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার জন্য লাইন ১-এও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেক চালু করা হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় সিগনালিং ব্যবস্থা, স্বচালিত সিঁড়ি, আধুনিক টোকেন ও ফ্লিপগেট পদ্ধতিতে ভাড়া নেওয়াও শুরু হয়েছে। কলকাতা মেট্রোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল: কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া), মহানায়ক উত্তমকুমার (টালিগঞ্জ), কালীঘাট, রবীন্দ্র সদন, এসপ্ল্যানেড, সেন্ট্রাল, মহাত্মা গান্ধী রোড, শ্যামবাজার, দমদমনোয়াপাড়া

সড়ক পরিবহণ

কলকাতার পুরনো বাস।
কলকাতার টানা-রিকশা।

কলকাতায় বাস পরিষেবা সরকারি ও বেসরকারে উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে থাকে। কলকাতার সরকারি বাস পরিবহন সংস্থাগুলি হল কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা, পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহন নিগম, ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি ইত্যাদি। কলকাতার) ট্রাম পরিষেবার দায়িত্ব ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানির উপর ন্যস্ত রয়েছে। উল্লেখ্য, কলকাতা ভারতের একমাত্র শহর যেখানে ট্রাম পরিষেবা অদ্যাবধি বিদ্যমান।[171] তবে শহরের কয়েকটি অঞ্চলে শ্লথগতির ট্রাম চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হয়েছে। বর্ষাকালে অত্যধিক বৃষ্টিতে জল জমে মাঝে মাঝেই শহরের পরিবহন ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে থাকে।[172][173]

কলকাতার পরিবহন ব্যবস্থার অপর এক বিশিষ্ট মাধ্যম হল ট্যাক্সি। কলকাতার ট্যাক্সিগুলি হলুদ রঙের হয়ে থাকে। অন্যান্য শহরে যখন টাটা ইন্ডিকা বা ফিয়েট গাড়ি ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে কলকাতার অধিকাংশ ট্যাক্সিই হিন্দুস্তান অ্যাম্বাস্যাডার মডেলের। কোনো কোনো নির্দিষ্ট রুটে অটোরিকশাও চলাচল করে। স্বল্পদুরত্বের যাত্রীরা অনেক সময় সাইকেল রিকশা ও হস্তচালিত রিকশাও ব্যবহার করে থাকেন। কলকাতায় বিভিন্ন রকমের গণ পরিবহন মাধ্যম সুলভ বলে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য শহরের তুলনায় অল্পই।[174] যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে শহরে নথিভুক্ত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে; ২০০২ সালের একটি তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ববর্তী সাত বছরে এই বৃদ্ধির হার ছিল ৪৪ শতাংশ।[175] জনঘনত্বের তুলনায় শহরে রাস্তার পরিমাণ মাত্র ৬ শতাংশ। এর ফলে তীব্র যানজট শহরে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। উল্লেখ্য, এই হার দিল্লিতে ২৩ শতাংশ ও মুম্বইতে ১৭ শতাংশ।[176] কলকাতা মেট্রোরেল এবং একাধিক নতুন রাস্তা ও উড়ালপুল শহরের যানজট সমস্যার সমাধানে অনেকটাই সাহায্য করছে।

রেলপথ

শিয়ালদহ স্টেশন

কলকাতা শহরকে রেল পরিষেবা দেয় ভারতীয় রেলের চারটি টার্মিনাল স্টেশন হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন, শালিমার স্টেশনকলকাতা স্টেশন[177] এর মধ্যে শিয়ালদহ ও কলকাতা স্টেশন কলকাতা শহরে ও হাওড়া ও শালিমার স্টেশন হাওড়া শহরে অবস্থিত। এগুলি ছাড়াও কলকাতায় আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রেল স্টেশন আছে। এগুলি হল: বিধাননগর রোড, দমদম, গড়িয়াইডেন গার্ডেনস ইত্যাদি। ভারতীয় রেলের দুটি অঞ্চলের সদর কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত। এগুলি হল: পূর্ব রেলদক্ষিণ পূর্ব রেল[178]

বিমান

কলকাতা মহানগরীয় অঞ্চলে মোট চারটি বিমানবন্দর রয়েছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এই শহরের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ১৭ কিলোমিটার উত্তরে উত্তর চব্বিশ পরগনার দমদমে অবস্থিত। এই বিমানবন্দর থেকে আভ্যন্তরিণ ও আন্তর্জাতিক দুই ধরনের উড়ানই চালু আছে। বেহালা বিমানবন্দর ও ফ্লাইং ক্লাব কলকাতার একটি আভ্যন্তরিণ বিমানবন্দর। এটি কলকাতার বেহালা অঞ্চলে অবস্থিত। ব্যারাকপুর এয়ার ফোর্স স্টেশন কলকাতা মহানগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি সামরিক ঘাঁটি। কাঁচড়াপাড়া এয়ারফিল্ড ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি প্রাক্তন সামরিক ঘাঁটি। এই বিমানবন্দরটি বর্তমানে বন্ধ।

জলপথ

কলকাতার জলপথ পরিবহন দপ্তরের যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জলপথ।

কলকাতা পূর্ব ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর। কলকাতা ও কলকাতার সহকারী হলদিয়া বন্দরের দায়িত্ব কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত।[179] এই বন্দর থেকে শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারে যাত্রী পরিষেবা এবং ভারতের অন্যান্য বন্দর ও বিদেশে পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়া কলকাতা ও হাওড়া শহরের মধ্যে একটি ফেরি পরিষেবাও চালু আছে।

নাগরিক পরিষেবা

টাটা কমিউনিকেশনসের বিদেশ সঞ্চার নিগম লিমিটেড ভবন, এটি শহরের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী

কলকাতা পৌরসংস্থা শহরের পানীয় জলের প্রধান সরবরাহকারী। হুগলি নদী থেকে সংগৃহীত জল উত্তর চব্বিশ পরগনার পলতার পাম্পিং স্টেশনে পরিশোধিত করে সমগ্র শহরে পানীয় জল হিসেবে সরবরাহ করে হয়। প্রতিদিন প্রায় ২৫০০ টন কঠিন বর্জ্য কলকাতার পূর্ব দিকে অবস্থিত ধাপায় ফেলা হয়ে থাকে। এই বর্জ্যভূমিতে বর্জ্য পদার্থ ও নোংরা জলের প্রাকৃতিক পুনর্নবীকরণের জন্য চাষাবাদও করা হয়ে থাকে।[180] শহরের অনেক অঞ্চলেই অনুন্নত পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থার কারণে অস্বাস্থ্যকর উপায়ে বর্জ্য নিঃসরণ করা হয়ে থাকে।[74] শহরাঞ্চলে ও শহরতলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে যথাক্রমে ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনপশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ নামে দুই সরকারি সংস্থা। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত কলকাতাবাসীদের উপর্যুপরি লোডশেডিং-এর যন্ত্রণা ভোগ করতে হত। যদিও বর্তমানে অবস্থার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, তবে এখনও মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে থাকে। পশ্চিমবঙ্গ দমকল পরিষেবার অধীনে কলকাতায় ২০টি দমকল কেন্দ্র রয়েছে। এগুলি বছরে গড়ে ৭,৫০০টি অগ্নিসংযোগ ও উদ্ধারকার্যের জন্য ডাক পায়।[181]

কলকাতার প্রধান টেলিফোন ও মোবাইল ফোন পরিষেবা সরবরাহকারী হল সরকারি সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) এবং ভোদাফোন, ভারতী এয়ারটেল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস, আইডিয়া সেলুলার, এয়ারসেল, টাটা ডোকোমো, টাটা ইন্ডিকম, ইউনিনর,ভার্জিন মোবাইল ও এমটিএস ইন্ডিয়া সহ একাধিক বেসরকারি সংস্থা। শহরে জিএসএমসিডিএমএ সহ সুপ্রসারিত সেলুলার কভারেজ সুলভ। বিএসএনএল, টাটা ইন্ডিকম, সাইফি, এয়ারটেল, রিলায়েন্স ও এলিয়ান্স প্রভৃতি সংস্থা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহ করে থাকে।

স্বাস্থ্য পরিষেবা

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, এশিয়ার প্রথম আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

২০১১ সালের হিসেব অনুসারে, কলকাতায় ৪৮টি সরকারি হাসপাতাল ও ৩৬৬টি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র আছে।[182] এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনস্থ। কলকাতার হাসপাতালগুলির মোট শয্যাসংখ্যা ২৭,৬৮৭।[182] প্রতি ১০,০০০ মানুষে কলকাতায় হাসপাতাল শয্যাসংখ্যার অনুপাত ৬১.৭।[183] জাতীয় স্তরে এই অনুপাত প্রতি ১০,০০০ নাগরিকে ৯ জন। সেই হিসেবে এটি জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।[184] কলকাতায় দশটি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ আছে। এগুলি কলকাতা মহানগরীয় এলাকার মধ্যে রাজ্যের টার্টিয়ারি রেফারাল হাসপাতাল হিসেবে কাজ করে।[185][186] কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছিল ১৮৩৫ সালে। এটিই এশিয়ার প্রথম আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[187] তবে কলকাতার স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থাকে যথেষ্ট মনে করা হয় না।[188][189][190] কলকাতার অধিবাসীদের ৭৫% বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিকে বেশি পছন্দ করেন।[191]:১০৯জন্য সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার নিম্নমান, অপ্রতুলতা ও দীর্ঘসূত্রিতাকে দায়ী করা হয়।[191]:৬১

২০০৫ সালের জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুসারে, কলকাতার অধিবাসীদের একটি ছোটো অংশই কোনোরকম স্বাস্থ্য স্কিম বা স্বাস্থ্য বিমা পরিষেবার আওতাভুক্ত।[191]:৪১ কলকাতার শিশু জন্ম হার ১.৪। এই হার সমীক্ষার অন্তর্গত আটটি মহানগরের মধ্যে সর্বনিম্ন।[191]:৪৫ কলকাতার ৭৭% বিবাহিত মহিলা জন্মনিরোধক ব্যবহার করেন। এই হার সমীক্ষার অন্তর্গত শহরগুলির মধ্যে সর্বাধিক। তবে কলকাতায় আধুনিক জন্মনিরোধকের ব্যবহারের হার সর্বনিম্ন (৪৬%)।[191]:৪৭ কলকাতায় প্রসবকালীন শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০-এ ৪১। পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০-এ ৪৯।[191]:৪৮

২০০৫ সালের একটি সমীক্ষার অন্তর্গত শহরগুলির মধ্যে শিশুদের বিশ্বজনীন টীকাকরণ কর্মসূচির অধীনে টীকা না পাওয়া শিশুদের হারে কলকাতার স্থান দ্বিতীয় (৫%)।[191]:৪৮ সুসংহত শিশু উন্নয়ন পরিষেবা কর্মসূচিতে "অঙ্গনওয়াড়ি" কেন্দ্রে যোগাযোগের ব্যাপারে কলকাতার স্থান দ্বিতীয়। কলকাতা ০ থেকে ৭১ মাস বয়সী শিশুদের ৫৭% অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যুক্ত হয়।[191]:৫১ অপুষ্টি, অ্যানিমিয়া ও কম ওজনজনিত সমস্যায় ভোগা শিশুদের অনুপাত কলকাতায় সমীক্ষার অন্যান্য শহরের তুলনায় কম।[191]:৫৪–৫৫

কলকাতার প্রায় ৩০% নারী ও ১৮% পুরুষ অতিরিক্ত মেদজনিত সমস্যায় ভোগেন। এদের একটি বড় অংশ সমাজের সচ্ছল অংশের মানুষ।[191]:১০৫ ২০০৫ সালের হিসেব অনুসারে, সমীক্ষাকৃত শহরগুলির মধ্যে কলকাতায় অ্যানিমিয়াগ্রস্থ নারীর শতাংশ হার সর্বাধিক (৫৫%)। পুরুষদের মধ্যে এই হার ২০%।[191]:৫৬–৫৭ ডায়াবেটিস, হাঁপানি, বাত ও অন্যান্য থাইরয়েড-সংক্রান্ত অসুখে ভোগা মানুষও অনেক আছেন।[191]:৫৭–৫৯ কলকাতায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, চিকনগুনিয়া ইত্যাদি অসুখ বেশি দেখা যায়। তবে এই জাতীয় অসুখে অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে।[192][193] কলকাতা ভারতের সেই জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম যেখানে এইডস-আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সর্বাধিক। কলকাতা জেলাকে এইডস রোগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বিপজ্জনক অঞ্চল মনে করা হয়।[194][195]

খেলাধুলা

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন; ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তম ও বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম
কলকাতার পাড়া-ফুটবল।
ইডেন গার্ডেনস ক্রিকেট স্টেডিয়াম; বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিকেট মাঠে একটি ক্রিকেট ম্যাচ।

ফুটবল, ক্রিকেটফিল্ড হকি কলকাতার জনপ্রিয় খেলা। কলকাতা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম প্রধান কর্মকেন্দ্র।[196] ভারতের অন্যান্য শহরের তুলনায় এখানে মানুষদের মধ্যে ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা খুব বেশি বরাবরই।[197] এই শহর "ভারতীয় ফুটবলের মক্কা" নামেও পরিচিত। ১৮৯৮ সালে চালু হওয়া কলকাতা ফুটবল লিগ এশিয়ার প্রাচীনতম ফুটবল লিগ। ভারতের অন্যতম প্রধান তিন জাতীয় দল মোহনবাগান, মহমেডানইস্টবেঙ্গল কলকাতারই তিন ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব। এছাড়াও ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব এই শহরেরই আই-লিগে অংশগ্রহণকারী স্বনামধন্য ফুটবল ক্লাব। মোহনবাগান শুধুমাত্র এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ফুটবল ক্লাবই নয়, এটি "ভারতের জাতীয় ক্লাব" আখ্যাপ্রাপ্ত একমাত্র ক্লাব।[198][199] মোহনবাগান ও ইষ্টবেঙ্গলের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ কলকাতায় কলকাতা ডার্বি নামে পরিচিত। ম্যাচগুলোতে দর্শকদের উৎসাহ উত্তেজনা দেখবার মতন থাকে।[200]

শাহরুখ খানের মালিকানাধীন "ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ" (আইপিএল) ক্রিকেট দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের কেন্দ্রও কলকাতায় অবস্থিত।

ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের মতো কলকাতাতে ক্রিকেট অত্যন্ত জনপ্রিয়। শহরের মাঠেঘাটে ও রাস্তায় ক্রিকেট খেলার রেওয়াজ রয়েছে।[201][202] ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন প্রভৃতি বহির্দ্বার এবং ক্যারাম প্রভৃতি অন্তর্দ্বার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কলকাতায় নিয়মিত আন্তঃঅঞ্চল ও আন্তঃক্লাব পর্যায়ে আয়োজিত হয়ে থাকে।[203] কলকাতা ময়দানে একাধিক ছোটোখাটো ফুটবল ও ক্রিকেট ক্লাব এবং প্রশিক্ষণ সংস্থা অবস্থিত।[204] কলকাতার উল্লেখযোগ্য ক্রীড়া ব্যক্তিত্বগণ হলেন প্রাক্তন ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়পঙ্কজ রায় এবং অলিম্পিক টেনিস ব্রোঞ্জ পদকজয়ী লিয়েন্ডার পেজ। কলকাতার ফুটবল তারকাদের মধ্যে উল্লেখনীয় হলেন প্রাক্তন অলিম্পিক পদকজয়ী শৈলেন মান্না, চুনী গোস্বামী, পি. কে. বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ এবং বর্তমান কালের ভারতীয় জাতীয় ফুটবল তারকা বাইচুং ভুটিয়াশাহরুখ খানের মালিকানাধীন "ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ" (আইপিএল) ক্রিকেট দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের কেন্দ্রও কলকাতায় অবস্থিত।

কলকাতা একাধিক বৃহদাকার স্টেডিয়ামের জন্য সুবিখ্যাত। ইডেন গার্ডেনস বহুকাল পর্যন্ত বিশ্বের দুটিমাত্র ১০০,০০০-আসনবিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একটি বলে গন্য হত। ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য সংস্কারের পর বর্তমানে আসনসংখ্যা ১,০০,০০০ র থেকে কমে গেছে। বর্তমানে এটি ভারতের বৃহত্তম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম | [205] বহুমুখী-ব্যবহারোপযোগী স্টেডিয়াম যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন (বা সল্টলেক স্টেডিয়াম) বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম।[206][207] ক্যালকাটা ক্রিকেট অ্যান্ড ফুটবল ক্লাব বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ক্রিকেট ক্লাব।[208] রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব, টালিগঞ্জ ক্লাবফোর্ট উইলিয়ামে কলকাতার তিনটি ১৮-হোলবিশিষ্ট গলফ কোর্স অবস্থিত। রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব ব্রিটেনের বাইরে বিশ্বের প্রথম গলফ ক্লাব।[209] রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব শহরে নিয়মিত ঘোড়দৌড় ও পোলো ম্যাচ আয়োজন করে থাকে।[210] ক্যালকাটা পোলো ক্লাব বর্তমানে বিশ্বের প্রাচীনতম পোলো ক্লাব হিসেবে পরিগণিত হয়।[211][212][213] অন্যদিকে ক্যালকাটা সাউথ ক্লাব কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক টেনিস প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানস্থল। এখানে ১৯৪৬ সালে প্রথম গ্লাস-কোর্ট ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচ খেলা হয়েছিল।[214][215] ২০০৫-২০০৭ সাল নাগাদ উইমেনস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন ট্যুরের টায়ার-থ্রি টুর্নামেন্ট সানফিস্ট ওপেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল। তার পর থেকে সেটি আর চালু হয়নি।[216][217]

ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব নিয়মিত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। রাগবি কলকাতার একটি অপ্রধান খেলা হলেও এই শহরকে ভারতের রাগবি ইউনিয়নের "রাজধানী" আখ্যা দেওয়া হয়, যা ক্যালকাটা কাপ নামে পরিচিত। রাগবি ইউনিয়নের প্রাচীনতম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ক্যালকাটা কাপের নাম এই শহরের নামানুসারেই উদ্ভূত।[218][219][220] কাপটি ভারতে নির্মিত হয়ে থাকে। কলকাতার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্টেডিয়ামগুলি হল রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম এবং বেহালার প্রস্তাবিত সত্যজিৎ রায় ইন্ডোর ও আউটডোর স্টেডিয়াম। পূর্ব ভারতের অটোমোবাইল অ্যাশোসিয়েশন, যে ১৯০৪ সালে তৈরি হয়েছিল,[221][222] এবং বেঙ্গল মোটর স্পোর্টস ক্লাব কলকাতায় মোটর স্পোর্টস এবং র‍্যালি করায় কলকাতায় তাদের প্রোমোশনের জন্য।[223][224] বেইটন কাপ, আরেকটি ইভেন্ট যা বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনের দ্বারা পরিচালনা করা হয় এবং যা প্রথম খেলা হয়েছিল ১৮৯৫ সালে, হল ভারতের সবথেকে প্রাচীন ফিল্ড হকি প্রতিযোগিতা, যা প্রধানত ময়দানের মোহনবাগান মাঠ-এ পরিচালনা করা হয়।[225][226]

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব

[228]

ভগিনী নগরী

পাদটীকা

  1. "India: Calcutta, the capital of culture-Telegraph"telegraph.co.uk। ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৬
  2. "Kolkata remains cultural capital of India: Amitabh Bachchan - Latest News & Updates at Daily News & Analysis"। ১০ নভেম্বর ২০১২। ২৫ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬
  3. India, Press Trust of। "Foundation of Kolkata Museum of Modern Art laid"business-standard.com। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬
  4. "Sovan Chatterjee to be new Kolkata mayor"Hindustan Times। New Delhi। ৬ জুন ২০১০। ১৯ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১১
  5. "Ranjit the sheriff"The Telegraph। ১ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৪
  6. "New CP reaches slain cop's house with job letter"Times of India। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। ১১ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
  7. "District Census Handbook - Kolkata" (PDF)Census of India। The Registrar General & Census Commissioner। পৃষ্ঠা 43। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬
  8. "Kolkata Municipal Corporation Demographics"। Census of India। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৬
  9. http://censusindia.gov.in (২০১২)। "Urban Agglomerations/Cities having population 1 million and above (PDF)" (PDF)Provisional population totals, census of India 2011. Registrar General & Census Commissioner, India. 2011.। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-০৪
  10. "INDIA STATS : Million plus cities in India as per Census 2011"Press Information Bureau, Mumbai। National Informatics Centre। ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৫
  11. "Global city GDP 2014"Brookings Institution। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৫
  12. John Hawksworth; Thomas Hoehn; Anmol Tiwari (নভেম্বর ২০০৯)। "Which are the largest city economies in the world and how might this change by 2025?" (PDF)PricewaterhouseCoopers। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৫
  13. "India's top 15 cities with the highest GDP Photos Yahoo! India Finance"Yahoo! Finance। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২। ৯ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০১৭
  14. "Report of the Commissioner for linguistic minorities: 47th report (July 2008 to June 2010)" (PDF)। Commissioner for Linguistic Minorities, Ministry of Minority Affairs, Government of India। পৃষ্ঠা 122–126। ১৩ মে ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  15. Wells, John (৩ এপ্রিল ২০০৮)। Longman Pronunciation Dictionary (3rd সংস্করণ)। Pearson Longman। আইএসবিএন 978-1-4058-8118-0।
  16. Dutta, K.; Desai, A. (এপ্রিল ২০০৮)। Calcutta: a cultural history। Northampton, Massachusetts, US: Interlink Books। পৃষ্ঠা 9–10। আইএসবিএন 978-1-56656-721-3।
  17. Chakravorty, Sanjoy (২০০০)। "From colonial city to global city? The far-from-complete spatial transformation of Calcutta"। Marcuse, Peter; Kempen, Ronald van। Globalizing cities: a new spatial order?। Oxford, UK: Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 56–77। আইএসবিএন 0-631-21290-6।
  18. Chatterjee, S.N. (২০০৮)। Water resources, conservation and management। New Delhi: Atlantic Publishers and Distributors। পৃষ্ঠা 85। আইএসবিএন 978-81-269-0868-4। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২
  19. Nair, P. Thankappan (১৯৮৬)। Calcutta in the 17th century। Kolkata: Firma KLM। পৃষ্ঠা 54–58।
  20. Easwaran, Kenny। "The politics of name changes in India"। Open Computing Facility, University of California at Berkeley। ১৯ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১২
  21. "History"। Yahoo! Pte Ltd। ২০০৬-০৫-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৫-০৮
  22. Das S (২০০৩-০১-১৫)। "Pre-Raj crown on Clive House- Abode of historical riches to be museum"। The Telegraph, Kolkata, India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  23. কলকাতা বিচিত্রা, রাধারমণ রায়, দেব সাহিত্য কুটির প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ২০০৬, পৃ. ২-৫
  24. কলকাতা: এক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস, অতুল সুর, জেনারেল প্রিন্টার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ১৯৮১, পৃ. ১২-১৩
  25. Gupta, Subhrangshu (১৮ মে ২০০৩)। "Job Charnock not Kolkata founder: HC Says city has no foundation day"Nation। The Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৭
  26. "William, Fort"Encyclopædia Britannica। ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০১
  27. "Calcutta"Encyclopædia Britannica। ১৯১১। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-১৮
  28. "History of Kolkata"। Kolkathub.com। ২০০৭-০৮-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০৪
  29. Chuahan, Baldev (৭ আগস্ট ২০০৭)। "Shimla - more than just Raj nostalgia"। The Indian Star। IANS। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-০৮
  30. Dutta, Krishna। "Calcutta; A Cultural and Literary History"। Interlink Books। ২০০৬-০৫-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-১১
  31. Pati, Biswamoy (২০০৬)। "Narcotics and empire"Frontline। The Hindu। 23 (10)। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০৪
  32. Hardgrave, Jr, Robert L. (১৯৯০)। "A Portrait of Black Town: Balthazard Solvyns in Calcutta, 1791–1804"। Pratapaditya Pal। Changing Visions, Lasting Images: Calcutta Through 300 Years। Bombay: Marg Publications। পৃষ্ঠা 31–46। আইএসবিএন 8185026114। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-২৯
  33. Jack I. (2001). "Introduction to (Chaudhuri 2001, পৃ. v-xi) URL accessed on 2006-04-26.
  34. Roy, Ranjit। "Swadeshi Movement"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। ২০০৭-০৯-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-১৪
  35. Hall, P (২০০২)। Cities of Tomorrow। Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 198–206। আইএসবিএন 0631232524।
  36. Bhattacharya, Amalendu (ed.), Mayors of Kolkata: A Brief Chronology, Kolkata Municipal Corporation, Kolkata, Jan. 2009, pp. 7-8 & 63
  37. Randhawa K। "The bombing of Calcutta by the Japanese"। BBC। ২০১২-০২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  38. "World War 2 timelines 1939–1945 - Asian mainland 1942"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-১৩
  39. "Pacific War Timeline - New Zealanders in the Pacific War"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-১৩
  40. (Sen 1973)
  41. Burrows, Frederick (১৯৪৬)। Report to Viceroy Lord WavellThe British Library IOR: L/P&J/8/655 f.f. 95, 96-107 |প্রকাশক= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  42. Das, Suranjan (২০০০)। "The 1992 Calcutta Riot in Historical Continuum: A Relapse into 'Communal Fury'?"Modern Asian Studies। Cambridge University Press। 34 (2): 281–306। doi:10.1017/S0026749X0000336X অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  43. Suhrawardy HS (১৯৮৭)। "Direct Action Day"। Talukdar, MHR. (ed.)। Memoirs of Huseyn Shaheed Suhrawardy। University Press of Bangladesh। পৃষ্ঠা 55–56। আইএসবিএন ৯৮৪-০৫-১০৮৭-৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৪
  44. (Gandhi 1992, পৃ. 497)
  45. ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়, অশোক কুমার কুণ্ডু, ন্যাশানাল বুক ট্রাস্ট ইন্ডিয়া, নতুন দিল্লি, ২০০৯, পৃ. ৩৩-৩৪
  46. "Calcutta"Encyclopedia Britannica Online। Encyclopædia Britannica। ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১৫ and Judith Vidal-Hall, "Naxalites", in Index on Censorship, Volume 35, Number 4 (2006). p. 73.
  47. (Bennett ও Hindle 1996, পৃ. 63–70)
  48. কলকাতা পৌরসংস্থা
  49. Datta T (২০০৬-০৩-২২)। "Rising Kolkata's winners and losers"। BBC Radio 4's Crossing Continents। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  50. Biswas S। "Calcutta's colorless campaign"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  51. (Roy ও Alsayyad 2004)
  52. NASA image.
  53. "An Introduction"History of Kolkata। Catchcal.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৯
  54. Roy Chadhuri, S.; Thakur, A. R. (২০০৬-০৭-২৫)। "Microbial genetic resource mapping of East Calcutta wetlands" (PDF)Current Science। Indian Academy of Sciences। 91 (2): 212–217। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০২
  55. Bunting SW, Kundu N, Mukherjee M। "Situation Analysis. Production Systems and Natural Resources Use in PU Kolkata" (PDF)। Institute of Aquaculture, University of Stirling, Stirling, UK। পৃষ্ঠা 3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  56. "Hazard profiles of Indian districts" (PDF)National Capacity Building Project in Disaster Management। UNDP। ২০০৬-০৫-১৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৩
  57. "Introducing KMA" (PDF)Annual Report 2011। Kolkata Metropolitan Development Authority। ২০১১। ২০১৩-০৬-০৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-০৬
  58. "007 Kolkata (India)" (PDF)। World Association of the Major Metropolises। ৮ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০০৭
  59. Sahdev, Shashi; Verma, Nilima, সম্পাদকগণ (২০০৮)। "Urban Land price Scenario- Kolkata − 2008" (DOC)Kolkata—an outline। Industry and Economic Planning। Town and Country Planning Organisation, Ministry of Urban Development, Government of India।
  60. Calcutta, West Bengal, India (মানচিত্র)। Mission to planet earth program। NASA। ২০ জুন ১৯৯৬। ৪ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  61. Sahdev, Shashi; Verma, Nilima, সম্পাদকগণ (২০০৮)। "Urban Land price Scenario- Kolkata − 2008" (DOC)Trends in land prices in Kolkata। Industry and Economic Planning। Town and Country Planning Organisation, Ministry of Urban Development, Government of India.
  62. "Kolkata heritage"। Government of West Bengal। ১৪ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১১
  63. "BSNL may take two weeks to be back online"Times of India। New Delhi। Times News Network (TNN)। ৯ জুলাই ২০০৯। ১ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১১With the Camac Street-Park Street-Shakespeare Sarani commercial hub located smack in the middle of the affected zone ...
  64. Yardley, Jim (২৭ জানুয়ারি ২০১১)। "In city's teeming heart, a place to gaze and graze"The New York Times। New York। ৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১১To Kolkata, it is the 'lungs of the city,' a recharge zone for the soul.
  65. Das, Soumitra (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Maidan marauders"The Telegraph। Kolkata। ১৮ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১১
  66. "Eastern Command"। Indian Army। ২ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১২
  67. Chakraborti, Suman (২ নভেম্বর ২০১১)। "Beautification project for Salt Lake, Sec V and New Town"Times of India। New Delhi। ৩ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১১
  68. "History of Sector V"। Nabadiganta Industrial Township Authority। ৩ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১১
  69. "Kolkata! India's new IT hub"Rediff.com। ১৩ জুলাই ২০০৫। ২৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১১
  70. "Weatherbase entry for Kolkata"। Canty and Associates LLC। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  71. "kal Baisakhi"Glossary of Meteorology। American Meteorological Society। ২০০৬-০৮-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৫
  72. Khichar, M.L. (১৪ জুলাই ২০০৩)। "Know your monsoon"Agriculture Tribune, The Tribune। The Tribune Trust। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-০৯ অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  73. "Calcutta: Not 'The City of Joy'"। Gaia: Environmental Information System। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  74. Central Pollution Control Board। "Ambient Air Quality in Seven Major Cities During 2002"। Ministry of Environment & Forests, Govt of India। ২০০৬-০৮-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  75. http://www.telegraphindia.com/1081030/jsp/calcutta/story_10035984.jsp
  76. Bhaumik, Subir (১৭ মে ২০০৭)। "Oxygen supplies for India police"South Asia। BBC। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-২৩
  77. "Calcutta/Alipore Climate Normals 1971-1990"National Oceanic and Atmospheric Administration। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৪, ২০১২
  78. "Ever recorded Maximum and minimum temperatures upto 2010" (PDF)। India Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ মে ১৬, ২০১৪
  79. "Genesis and Growth of the [[Calcutta Stock Exchange]]"। Calcutta Stock Exchange Association Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬ ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  80. "Kolkata"Microsoft® Encarta® Online Encyclopedia। ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-১৩
  81. Follath E (২০০৫-১১-৩০)। "The Indian Offensive: From Poorhouse ro Powerhouse"। Spiegel Online। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  82. Chakravorty S (2000). "From Colonial City to Global City? The Far-From-Complete Spatial Transformation of Calcutta" in (Marcuse ও van Kempen 2000, পৃ. 56–77)
  83. Ganguly, Deepankar। "Hawkers stay as Rs. 265 crore talks"The Telegraph, 30 November 2006। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-১৬
  84. Mukherjee Shankar (২০০৫-০৩-২৮)। "Demand spurs New Town III- Never-before response to Rajarhat sale"। The Telegraph-Kolkata। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৭-২৫
  85. Sambit Saha (২০০৩-০৯-০৯)। "Nathula trade may spur business in NE"। rediff.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-১৮
  86. C. Raja Mohan (২০০৭-০৭-১৬)। "A foreign policy for the East"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-১৮
  87. timesofindia.indiatimes.com
  88. কলকাতা কর্পোরেশন, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, মিত্রম্‌, কলকাতা, ২০১০, পৃ. ২১
  89. কলকাতা কর্পোরেশন, পৃ. ২৭
  90. কলকাতা কর্পোরেশন, পৃ. ৫০
  91. কলকাতা কর্পোরেশন, পৃ. ২৯
  92. কলকাতা কর্পোরেশন, পৃ. ১০৭
  93. Source: The Kolkata Municipal Corporation Axt, 1980.
  94. "About Kolkata Municipal Corporation"। Kolkata Municipal Corporation। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  95. "General Election 2009 Kolkata Dakshin"West Bengal Election Results। Ibnlive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২০
  96. "Delimitation Commission Order No. 18" (PDF)Table B – Extent of Parliamentary Constituencies। Government of West Bengal। ২০১১-০৮-১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২৭
  97. "Press Note, Delimitation Commission" (PDF)Assembly Constituencies in West Bengal। Delimitation Commission। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২৯
  98. http://censusindia.gov.in (২০১২)। "Provisional Population Totals, Census of India 2011" (PDF)Census of India 2011: Provisional Population Totals, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-০৪
  99. http://www.censusindia.gov.in। "Number of Literates & Literacy Rate"India at a Glance। www.censusindia.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-০৪
  100. "Highlights: Cities with more than one Million Population"Census of India 2001 (Provisional)। Office of the Registrar General, India। ২০০১-০৯-১৩। ২০০৭-০১-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-১৮
  101. "Basic Statistics of Kolkata"। KolkataMyCity.com। ২০০৮-০৫-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০২
  102. "Census of India – Socio-cultural aspects"। Government of India, Ministry of Home Affairs। ২০ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১১
  103. "Census GIS Household"। Office of the Registrar General and Census Commissioner, India। ২০১০-০৭-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  104. Kundu N। "Understanding slums: Case Studies for the Global Report on Human Settlements 2003. The Case of Kolkata, India" (PDF)। Development Planning Unit. University College, London। পৃষ্ঠা 6। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  105. National Crime Records Bureau (২০০৪)। "General Crime Statistics Snapshots 2004" (PDF)Crime in India-2004 (PDF)। Ministry of Home Affairs। পৃষ্ঠা 1। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  106. National Crime Records Bureau (২০০৪)। "Executive Summary" (PDF)Crime in India-2004 (PDF)। Ministry of Home Affairs। পৃষ্ঠা 34। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  107. National Crime Records Bureau (২০০৬)। "Crimes in Mega Cities" (PDF)Crime in India-2006 (PDF)। Ministry of Home Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৯
  108. Grant M (২০০৪-১১-৩০)। "Girl-trafficking hampers Aids fight"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  109. Sinha P (১৯৯০)। "Kolkata and the Currents of History"। Chaudhuri S. (ed.)। Kolkata — The Living City. Volume 1: The PastOxford University Press, Oxford.।
    Cited by: Heierstad G (২০০৩)। "Nandikar: Staging Globalisation in Kolkata and Abroad" (PDF)। University of Oslo, Norway। পৃষ্ঠা 102। ২০০৬-০৫-১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  110. Trachtenberg P (২০০৫-০৫-১৫)। "The Chattering Masses"। The New York Times। ২০১৩-১২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  111. "Rabindanath Tagore: Asia's First Nobel laureate..."। Time Asia। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০০৭
  112. "The Nobel Prize in Literature 1913"Nobel Prize Winners। Nobel Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০০৭
  113. "গানের কলকাতা", সুধীর চক্রবর্তী, দেশ: বিনোদন ১৯৮৯ (কলকাতা শহরের ৩০০ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত বিশেষ সংখ্যা), পৃ. ৮৯-৯৭
  114. নিধুবাবু ও তাঁর টপ্পা, রমাকান্ত চক্রবর্তী, পুনশ্চ, কলকাতা, ২০০১ পুনশ্চ সং, পৃ. ১৭৪
  115. "পুজোর গান: সেকাল একাল", স্বপন সোম, শারদীয়া নবপত্রিকা, ১৪১৭, পৃ. ৮৫-৯০
  116. Calcutta Film Society ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে Satyajit Ray website.
  117. Heritage Tour: Shaheed Minar
  118. Kolkata.org: Shaheed Minar
  119. Roy, Nishitranjan,Swasato Kolkata Ingrej Amaler Sthapathya, (বাংলা), pp. 48, 1st edition, 1988, Prtikhan Press Pvt. Ltd.
  120. "Court's official website"। ৬ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২
  121. "History of Indian museum"। The Indian Museum of Kolkata। ২০০৬-১১-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৩
  122. Victoria Memorial Hall
  123. Mitter, Partha (২০০১)। Indian art। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 177। আইএসবিএন 0192842218।
  124. Cotter, Holland (আগস্ট ১৯, ২০০৮)। "Art Review: Indian Modernism via an Eclectic and Elusive Artist"New York Times
  125. "Durga Puja"Festivals of Bengal। West Bengal Tourism, Government of West Bengal। ২০০৬-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৮
  126. Gay pride march debuts in Delhi, BBC news date June 30, 2008
  127. de Graaf, G.J.; Latif, Abdul (২০০২)। "Development of freshwater fish farming and poverty alleviation: a case study from Bangladesh" (PDF)Aquaculture Asia7 (2): 5–7। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১২ অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  128. Sen, Elora; Sen, Sarbani (২ জানুয়ারি ২০০৯)। "Some images are synonymous with Kolkata"India Today। Noida, India। ৪ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০০৯
  129. Saha, Subhro (১৮ জানুয়ারি ২০০৬)। "Resurrected, the kathi roll: face-off resolved, Nizam's set to open with food court"The Telegraph। Kolkata। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০০৬
  130. Niyogi, Subhro (৭ মে ২০১১)। "Kolkata's mind-boggling variety of street food"Times of India। New Delhi। ২০১২-০৭-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  131. Roy, Anirban (৭ ডিসেম্বর ২০১০)। "Street food as yummy and cheap as it gets"India Today। Noida, India। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  132. Mitra, Ipshita (৭ জানুয়ারি ২০১২)। "Soft, melt-in-mouth Sandesh recipes"Times of India। New Delhi। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১২
  133. "Annual Report 2007––2008" (PDF)। Department of School Education, Government of West Bengal। পৃষ্ঠা 69। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা (PDF)। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১১
  134. "List of schools in Kolkata"। West Bengal Board of Secondary Education। ২৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১১
  135. "India's Best Schools, 2014"Rediff.com। ২২ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  136. "Annual report of the Department of Higher Education 2009–2010" (PDF)। Department of Higher Education, Government of West Bengal। ২০১০। পৃষ্ঠা 124–27। ১৩ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা (PDF)। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১১
  137. "ALIAH UNIVERSITY"। ১৪ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  138. "Annual report of the Department of Higher Education 2009–2010" (PDF)। Department of Higher Education, Government of West Bengal। ২০১০। পৃষ্ঠা 129। ১৩ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা (PDF)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১২
  139. Singh, Shiv Sahay (৬ আগস্ট ২০১০)। "BESU's bid for upgrade gets catalyst in Didi"Indian Express। New Delhi। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৩
  140. "Universities with potential for excellence"। University Grants Commission, Government of India। ৩ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১০
  141. Garg, Swati (১২ মে ২০১১)। "Q&A: Shekhar Chaudhury, Director, IIM Calcutta"Business Standard। Kolkata। ১২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১১
  142. "NLUs, a preferred recruitment destination"The Hindu। Chennai। ১২ মার্চ ২০০৭। ১০ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১২
  143. Ghosh, Shuvobroto (১৮ জানুয়ারি ২০০৭)। "An eye on law"The Telegraph। Kolkata। ৫ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১২
  144. "Some of the distinguished alumni of the University of Calcutta"। University of Calcutta। ২১ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২
  145. "Some of our distinguished teachers"। University of Calcutta। ২১ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২
  146. Petitjean, Patrick; Jami, Cathérine; Moulin, Anne Marie (১৯৯২)। Science and empires: historical studies about scientific development and European expansion। Dordrecht, The Netherlands: Kluwer Academic Publishers। পৃষ্ঠা 62। আইএসবিএন 978-0-7923-1518-6।
  147. Frenz, Horst, সম্পাদক (১৯৯৯)। Nobel Lectures, Literature 1901–1967। Amsterdam: World Scientific। পৃষ্ঠা 134। আইএসবিএন 978-981-02-3413-3। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  148. "Professor Amartya Sen"। President and Fellows of Harvard College, Harvard University। ১১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২
  149. Uma Dasgupta (২০১১)। Science and Modern India: An Institutional History, C. 1784-1947। Pearson Education India। আইএসবিএন 9788131728185।
  150. Bernhard Joseph Stern। Science and Society। পৃষ্ঠা 84।
  151. "Indian Association for the Cultivation of Science, Kolkata"dst.gov.in। ২৯ ২ মে ০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 19 April 2014 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  152. "History of IICB"iicb.res.in। ৩০ ২ মার্চ ০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 19 April 2014 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  153. "Narayana Health, CSIR-Indian Institute of Chemical Biology joins hand for transitional research"indiatimes.com। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৪
  154. "Indian Institute of Chemical Biology"nti.org। ১৯ ২ এপ্রিল ০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 19 April 2014 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  155. CESSI IISER Kolkata
  156. Eaman, Ross (১২ অক্টোবর ২০০৯)। The A to Z of Journalism। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 86। আইএসবিএন 978-0-8108-7067-3। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৩
  157. "Areawise analysis for the period July/December 2007 to January – June 2010" (XLS)। Audit Bureau of Circulations। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১২
  158. "Business development mission to India 29 November – 5 December 2006" (PDF)। International Trade Administration। ২৫ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০০৭
  159. Banerjee, Himadri; Gupta, Nilanjana; Mukherjee, Sipra, সম্পাদকগণ (২০০৯)। Calcutta mosaic: essays and interviews on the minority communities of Calcutta। New Delhi: Anthem Press। পৃষ্ঠা 9–10। আইএসবিএন 978-81-905835-5-8। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২
  160. "Little magazines of Bengal"। Asiaweek। Hong Kong। 10 (27–39): 42। ১৯৮৪।
  161. Nag, Dulali (১৯৯৭)। "Little magazines in Calcutta and a postsociology of India"। Contributions to Indian Sociology। Delhi: Institute of Economic Growth। 31 (1): 109–11। doi:10.1177/006996679703100106
  162. "Radio stations"। All India Radio। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১১
  163. "Radio stations in West Bengal, India"। Asiawaves। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১১
  164. "Doordarshan"। Ministry of Broadcasting, Government of India। ১৭ ২ জানুয়ারি ০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 24 January 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  165. "CalTel launches IPTV in Kolkata, invests Rs 700 cr in 07-08"Outlook India। New Delhi। Press Trust of India। 1 February 2008। ২ ২ মে ০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 24 January 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  166. "CAS on brink of blackout"Times of India। New Delhi। TNN। ১৪ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১২
  167. "Direct-to-home comes home"Times of India। New Delhi। TNN। ৯ অক্টোবর ২০০৩। ২০১২-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১২
  168. "Consolidated list of channels allowed to be carried by dable operators/ multi system operators/ DTH licensees in India" (PDF)। Ministry of Information & Broadcasting, Government of India। ২৬ ২ জানুয়ারি ০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 24 January 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  169. "About Kolkata Metro"। Kolkata Metro। ২০০৭-০৮-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০১
  170. "Intra-city train travel"reaching India। Times Internet Limited। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩১
  171. "HC admits PIL on waterlogging"Times of India। Times Internet Limited। ১১ জুলাই ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-১৮
  172. "Rain abates, but water logging paralyses normal life in Kolkata"dailyindia.com। DailyIndia.com। ৪ জুলাই ২০০৭। ২০০৭-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-১৮
  173. "Table E2 Registered Motor Vehicles in Million-plus Cities,1991 to 1996 (As on 31 March)"। National Institute of Urban Affairs। ২০০৫-০২-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  174. "Traffic Accident Characteristics of Kolkata" (PDF)UNESCAP। ২০০৬-০৭-২৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৭-০৫
  175. "Call to ensure traffic discipline in Kolkata"। The Hindu Business Line। ২০০৪-০৯-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  176. "New station flag-off- Amenities added"। The Telegraph। ২০০৬-০২-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০২
  177. "Geography : Railway Zones"IRFCA.org। Indian Railways Fan Club। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩১
  178. "Salient Physical Features"Kolkata Port Trust। Kolkata Port Trust, India। ২০০৭-০৩-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-০৯
  179. "Sound Practices Composting"। United Nations Environment Programme। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  180. Dheri SK, Misra GC। "Fire: Blazing Questions" (PDF)। indiadisasters.org। ২০০৪-১২-২৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬
  181. "Medical institutions and sanctioned no. of beds in districts of West Bengal as on 30.11.2011" (PDF)। Department of Health & Family Welfare, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১২
  182. The population (4,486,679) and hospital beds (27,687) have been used to derive this rate.
  183. "Hospital beds"। World Health Organistation। ৯ ২ জুলাই ০১২ তারিখে মূল (XLS) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 31 January 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  184. Shah, Mansi (2007)। "Waiting for health care: a survey of a public hospital in Kolkata" (PDF)Centre for Civil Society। ১৩ ২ আগস্ট ০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 31 January 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  185. Husain, Zakir; Ghosh, Saswata; Roy, Bijoya (2008)। "Socio economic profile of patients In Kolkata: a case study of RG Kar and AMRI" (PDF)Institute of Development Studies, Kolkata। পৃষ্ঠা 19–20। ২৮ ২ জুন ০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 31 January 2012 অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  186. Mitra, Dola (২০ এপ্রিল ২০০৫)। "Calcutta Medical College, Calcutta"The Telegraph। Kolkata। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০০৭
  187. Mitra, Prithvijit (৯ এপ্রিল ২০১১)। "On hospital floor for 12 days"Times of India। New Delhi। ২০১২-০৭-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১২
  188. "Mamata inducts two new ministers"। Sify। ১৬ জানুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১২
  189. "Kolkata woman gives birth on road, dies after no admission by hospitals"Hindustan Times। New Delhi। 13 January 2012। ১৮ ২ জানুয়ারি ০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 31 January 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  190. Gupta, Kamla; Arnold, Fred; Lhungdim, H. (২০০৯)। "Health and living conditions in eight Indian cities" (PDF)National Family Health Survey (NFHS-3), India, 2005–06.। Mumbai: International Institute for Population Sciences; Calverton, Maryland, US। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  191. "Malaria, dengue down in Kolkata"। IBNLive.in। ১৩ জানুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  192. "KMC wins battle against malaria, dengue"The Statesman। Kolkata। 7 October 2011। ১০ ২ মে ০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 26 February 2012 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  193. "Annual report 2009–10" (PDF)। Department of AIDS Control, Ministry of Health & Family Welfare, Government of India। পৃষ্ঠা 106। ২০ ২ অক্টোবর ০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ২ নভেম্বর ০১৩ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ=, |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  194. "Annual Report 2009-10" (PDF)। West Bengal State AIDS Prevention & Control Society। পৃষ্ঠা 10। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  195. Prabhakaran, Shaji (১৮ জানুয়ারি ২০০৩)। "Football in India - A Fact File"। LongLiveSoccer.com। ২০০৬-১০-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬
  196. Khosla, Varuni; Sharma, Ravi Teja (১৩ জুন ২০১৪)। "Forget cricket, football is catching fast in India"The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪
  197. Dineo, Paul; Mills, James (২০০১)। Soccer in South Asia: empire, nation, diaspora। London: Frank Cass Publishers। পৃষ্ঠা 17। আইএসবিএন 978-0-7146-8170-2।
  198. "India strive for improvement"। FIFA। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  199. "Mohun Bagan vs East Bengal: India's all-consuming rivalry"। FIFA। ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৪
  200. "What happened to para cricket?"Times of India। New Delhi। TNN। ২০ জানুয়ারি ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  201. "Para cricket tourney gets off to a cracking start"Times of India। New Delhi। TNN। ২২ জানুয়ারি ২০১১। ২০১২-০৭-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  202. "FIFA president visits big three of Kolkata maidan"The Hindu। Chennai। ১৬ এপ্রিল ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  203. "Eden Gardens"। Cricket Web। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-০৪
  204. "100 000+ Stadiums"। World Stadiums। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬
  205. "The Asian Football Stadiums (30.000+ capacity)"। Gunther Lades। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬
  206. Raju, Mukherji (১৪ মার্চ ২০০৫)। "Seven Years? Head Start"। The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬
  207. "Royal Calcutta Golf Club"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩০
  208. Himatsingka, Anuradha (৯ জানুয়ারি ২০১১)। "Royal Calcutta Turf Club in revival mode"Economic Times। New Delhi। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  209. "History of Polo"। Hurlingham Polo Association। ২০০৬-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩০
  210. Singh, Jaisal (২০০৭)। Polo in India। London: New Holland Publishers। পৃষ্ঠা 12। আইএসবিএন 978-1-84537-913-1।
  211. Jackson, Joanna (২০১১)। A Year in the life of Windsor and Eton। London: Frances Lincoln। পৃষ্ঠা 80। আইএসবিএন 978-0-7112-2936-5।
  212. "About AITA"। All India Tennis Association। ২২ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  213. Das Sharma, Amitabha (৭ এপ্রিল ২০১১)। "Young turks rule the roost"Sportstar Weekly (The Hindu)। Chennai। 34 (14)। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  214. Das Gupta, Amitava (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮)। "Sunfeast Open seeks date shift"Times of India। New Delhi। ২০১২-০৭-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১২
  215. "AITA's no to private players"The Telegraph। Kolkata। ২ সেপ্টেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১২
  216. "Rugby thrives in India"। International Rugby Board। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮। ৫ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  217. "About CCFC"। Calcutta Cricket & Football Club। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  218. Nag, Shivani (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Kolkata watches as rugby legacy vanishes year after year"Indian Express। New Delhi। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  219. "About AAEI"। Automobile Association of Eastern India। ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  220. "The automobile movement in India"The Horseless Age। Horseless Age Co। 14 (9): 202। জুলাই–ডিসেম্বর ১৯০৪। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  221. "India, Bhutan in car rally"The Telegraph। Kolkata। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  222. "About Bengal Motor Sports Club"। Bengal Motor Sports Club। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১১
  223. O'Brien, Barry (৪ ডিসেম্বর ২০০৪)। "All hail hockey on history high"The Telegraph। Kolkata। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  224. "Indian Airlines lift Beighton Cup"The Hindu। Chennai, India। ১১ এপ্রিল ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১২
  225. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ২০০২, পৃ. ৩
  226. শ্রীরামকৃষ্ণ-ভক্তমালিকা, অখণ্ড, স্বামী গম্ভীরানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, ২০১০, পৃ. ৩৬৭
  227. Mazumdar, Jaideep (১৭ নভেম্বর ২০১৩)। "A tale of two cities: Will Kolkata learn from her sister?"Times of India। New Delhi। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০১৩
  228. "Sister Cities"। Official site of Odessa। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৭, ২০১৮
  229. "The Twinning of Thessaloniki and Calcutta"। ২১ জানুয়ারি ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৮
  230. "Agreement on the establishment of Sister City Relations between Kolkata, Republic of India and Kunming, People's Republic of China"। অক্টো ২৩, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৭, ২০১৮
  231. "Incheon Metropolitan City - Incheon City - Sister Cities"। Incheon Metropolitan City। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  232. "Islamabad to get new sister city"Dawn। ৫ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৮

আরও পড়ুন

  • Chaudhuri, S (১৯৯০)। Calcutta: the living City (ইংরেজি ভাষায়)। ১ম ও ২য়। কলকাতা: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 0-19-562585-4।
  • Dutta, Krishna (২০০৩)। Calcutta: a cultural and literary history (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্য: সিগন্যাল বুকস। আইএসবিএন 978-1-902669-59-5।
  • Mitra, A (১৯৭৬)। Calcutta diary [কলকাতার ডায়েরী] (ইংরেজি ভাষায়)। লন্ডন: ফ্রাঙ্ক ক্যাস। আইএসবিএন 0-7146-3082-9।
  • Mukherjee, SC (১৯৯১)। The changing face of Calcutta: an architectural approach (ইংরেজি ভাষায়)। কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ASIN B0000D6TXX
  • Roy, A (২০০২)। City requiem, Calcutta: gender and the politics of poverty (ইংরেজি ভাষায়)। মিনিয়াপলিস, যুক্তরাষ্ট্র: ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটা প্রেসআইএসবিএন 0-8166-3932-9।
  • Thomas, Frederic C. (১৯৯৭)। Calcutta poor: elegies on a city above pretense (ইংরেজি ভাষায়)। অরম্নক, নিউ ইয়র্ক সিটি: M.E. Sharpe। আইএসবিএন 1-56324-981-2।
  • Lapierre, Dominique (১৯৮৫)। La cité de la joie [আনন্দের শহর] (ফরাসি ভাষায়)। কলকাতা: Arrow। আইএসবিএন 0-09-914091-8।
  • Singh, Malvika (২০১১)। Kolkata: A Soul City (Historic and Famed Cities of India) (ইংরেজি ভাষায়)। একাডেমিক ফাউন্ডেশন। পৃষ্ঠা 110। আইএসবিএন 978-81-7188-886-3।
  • Hazra, Indrajit (১ ডিসেম্বর ২০১৩)। Grand Delusions: A Short Biography of Kolkata (ইংরেজি ভাষায়)। আলেফ বুক কোম্পানি। পৃষ্ঠা 156। আইএসবিএন 978-93-82277-28-6।
  • Ghosh, Amitav (২২ এপ্রিল ২০০৯)। Calcutta Chromosome: A Novel of Fevers, Delirium and Discovery (ইংরেজি ভাষায়)। পেঙ্গুইন ইন্ডিয়া। পৃষ্ঠা 200। আইএসবিএন 978-0-14-306655-2।
  • Deb, Binaya Krishna (১৯০৫)। The Early History and Growth of Calcutta (ইংরেজি ভাষায়)। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়: রমেশ চন্দ্র ঘোষ। পৃষ্ঠা 278।
  • Chaudhuri, Sukanta (১৯৯০)। Calcutta, the Living City: The past (ইংরেজি ভাষায়)। the University of Michigan: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 292। আইএসবিএন 978-0-19-562718-3।
  • Roy, Ananya (১ অক্টোবর ২০০২)। City Requiem, Calcutta: Gender and Politics of Poverty (ইংরেজি ভাষায়)। ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটা প্রেস। পৃষ্ঠা 352। আইএসবিএন 978-0-8166-3933-5।
  • Chatterjee, Jayabrato; Khullar, Rupinder (১ জানুয়ারি ২০০৪)। Kolkata: the dream city (ইংরেজি ভাষায়)। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়: UBS Publishers' Distributors। পৃষ্ঠা 93। আইএসবিএন 978-81-7476-471-3।
  • Moorhouse, Geoffrey (১৯৭১)। Calcutta (ইংরেজি ভাষায়)। পেঙ্গুইন বুকস ইন্ডিয়া। পৃষ্ঠা 393। আইএসবিএন 978-0-14-009557-9।
  • Chatterjee, Partha (২০১২)। The Black Hole of Empire: History of a Global Practice of Power (ইংরেজি ভাষায়)। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 425। আইএসবিএন 978-0-691-15201-1।
  • Chattopadhyay, Swati (২০০৫)। Representing Calcutta: Modernity, Nationalism, and the Colonial Uncanny (ইংরেজি ভাষায়)। সাইকোলজি প্রেস। পৃষ্ঠা 314। আইএসবিএন 978-0-415-34359-6।
  • Dey, Ishita; Samaddar, Ranabir (২০১৬)। Beyond Kolkata: Rajarhat and the Dystopia of Urban Imagination (ইংরেজি ভাষায়)। রাউটলেজ। পৃষ্ঠা 304। আইএসবিএন 9781134931378।
  • Husain, Zakir; Dutta, Mousumi (২০১৩)। Women in Kolkata’s IT Sector: Satisficing Between Work and Household (ইংরেজি ভাষায়)। স্প্রিঙের সাইন্স & বিসনেস মিডিয়া। পৃষ্ঠা 133। আইএসবিএন 9788132215936।
  • Bose, Pablo Shiladitya (২০১৫)। Urban Development in India: Global Indians in the Remaking of Kolkata (ইংরেজি ভাষায়)। রাউটলেজ। পৃষ্ঠা 178। আইএসবিএন 9781317596738।
  • Ray, Raka; Qayum, Seemin (২০০৯)। Cultures of Servitude: Modernity, Domesticity, and Class in India (ইংরেজি ভাষায়)। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 255। আইএসবিএন 9780804760713।
  • Ghosh, Anindita। Claiming the City: Protest, Crime, and Scandals in Colonial Calcutta, c. 1860-1920 (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 340। আইএসবিএন 978-0199464791।
  • Sanyal, Shukla (২০১৪)। Revolutionary Pamphlets, Propaganda and Political Culture in Colonial Bengal (ইংরেজি ভাষায়)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 219। আইএসবিএন 9781107065468।
  • Busteed, Henry Elmsley (১৮৮৮)। Echoes from Old Calcutta: Being Chiefly Reminiscences of the Days of Warren Hastings, Francis, and Impey (ইংরেজি ভাষায়)। এশিয়ান এডুকেশনাল সার্ভিসেস। পৃষ্ঠা 359। আইএসবিএন 9788120612952।
  • Fruzzetti, Lina; Östör, Ákos (২০০৩)। Calcutta Conversations (ইংরেজি ভাষায়)। ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকশন। পৃষ্ঠা 242। আইএসবিএন 9788180280092।
  • Richards, E. P. (২০১৪)। The Condition, Improvement and Town Planning of the City of Calcutta and Contiguous Areas: The Richards Report (ইংরেজি ভাষায়)। রাউটলেজ। পৃষ্ঠা 492। আইএসবিএন 9781317617006।
  • Chatterjee, Arnab; Yarlagadda, Sudhakar (২০০৭)। Econophysics of Wealth Distributions: Econophys-Kolkata I (ইংরেজি ভাষায়)। স্প্রিঙের সাইন্স & বিসনেস মিডিয়া। পৃষ্ঠা 248। আইএসবিএন 9788847003897।
  • Sarkar, Tanika। Calcutta: The Stormy Decades (ইংরেজি ভাষায়)। সোশ্যাল সাইন্স প্রেস। পৃষ্ঠা 486। আইএসবিএন 978-9383166077।
  • Choudhury, Ranabir Ray। A City in the Making: Aspects of Calcutta's Early Growth (ইংরেজি ভাষায়)। নিয়োগী বুকস। পৃষ্ঠা 564। আইএসবিএন 978-9385285288।
  • Banerjee, Sumanta (২০১৬)। Memoirs of Roads: Calcutta from Colonial Urbanization to Global Modernization (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 192। আইএসবিএন 978-0199468102।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.