বিশাখাপত্তনম
বিশাখাপত্তনম হল অন্ধ্রপ্রদেশের বৃহত্তম মহানগর ও বাণিজ্যিক রাজধানী। অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং ভারতের গভীরতম সমুদ্র বন্দর বিশাখাপত্তনামে অবস্থিত। ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলির মধ্যে বিশাখাপত্তনম অন্যতম। এই শহর ভারত সরকার-এর স্বচ্ছ ভারত অভিযানে প্রথম দশটি পরিচ্ছন্ন শহরের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।[4]
বিশাখাপত্তনম ভাইজ্যাক - ওয়াল্টেয়ার | |
---|---|
মহানগরী | |
![]() উপর থেকে নীচে, বাম থেকে ডানে: কৈলাশগিরি পার্ক থেকে বিশাখাপত্তনম ও বঙ্গোপসাগর, সিমহাচলম মন্দির, কিং জর্জ হাসপাতাল_বিশাখাপত্তনম, বিশাখাপত্তনম বন্দর, আইএনএস কুরসূরা সাবমেরিন মিউজিয়াম, বিশাখাপত্তনম ইস্পাত শিল্প, রামকৃষ্ণ মিশন সমুদ্র সৈকত | |
ডাকনাম: ইস্ট কোস্ট জুয়েল প্রাচ্যের গোয়া অন্ধ্রপ্রদেশের আর্থিক রাজধানী | |
![]() ![]() বিশাখাপত্তনম ![]() ![]() বিশাখাপত্তনম | |
স্থানাঙ্ক: ১৭°৪১′১৮″ উত্তর ৮৩°১৩′০৭″ পূর্ব | |
দেশ | ![]() |
রাজ্য | অন্ধ্রপ্রদেশ |
জেলা | বিশাখাপত্তনম |
নামকরণের কারণ | বিশাখা |
সরকার | |
• শাসক | গ্রেটার বিশাখাপত্তনম পৌরসংস্থা (জিভিএমস) |
• পৌর কমিশনার | এম. হরি নারায়ণ |
• নগরপাল | টি. যোগেন্দ্র, আই পি এস |
• পুলিশ সুপার | রাহুল দেব শর্মা |
• জেলা কালেক্টর | প্রবীন কুমার, আই.এ.এস |
আয়তন[1] | |
• মহানগরী | ৫৪০.০০ কিমি২ (২০৮.৫০ বর্গমাইল) |
• মহানগর[2] | ৫৫৭৩ কিমি২ (২১৫২ বর্গমাইল) |
উচ্চতা[3] | ৪৫ মিটার (১৪৮ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মহানগরী | ২০,৩৫,৯২২ |
• ক্রম | ১৪ তম (ভারত) প্রথম (অন্ধ্রপ্রদেশ) |
• জনঘনত্ব | ৩৮০০/কিমি২ (৯৮০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর[2] | ৫৩,৪০,০০০ |
ভাষা | |
• সরকারি | তেলেগু |
সময় অঞ্চল | আইটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৫৩০ ০XX, ৫৩১ ১XX |
টেলিফোন কোড | +৯১-৮৯১-XXX XXXX |
যানবাহন নিবন্ধন | এপি–৩১,৩২,৩৩,৩৪ |
ওয়েবসাইট | গ্রেটার বিশাখাপত্তনম পৌর কর্পোরেশন |
ইতিহাস
বিশাখাপত্তনমের ইতিহাস খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী থেকে শুরু হয় এবং শহরটির উল্লেখ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ চতুর্থ শতাব্দীতে পাণিনির ও কাত্যায়নের লেখা প্রাচীন গ্রন্থে পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকভাবে কলিঙ্গ অঞ্চলের অংশ হিসাবে বিবেচিত এই অঞ্চলটি[5][6] মধ্যযুগীয় সময়ে এটি ভেঙ্গি রাজ্য, পল্লব এবং পূর্ব গঙ্গার রাজবংশের দ্বারা শাসিত হয়েছিল।[7] প্রত্নতাত্ত্বিক নথিগুলি নির্দেশ করে যে বর্তমান শহরটি ১১র্থ এবং ১২তম শতাব্দীতে চোল রাজবংশের রাজা প্রথম কুলোতুঙ্গা কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে তামিলনাড়ুর চোলা রাজবংশ ও উড়িষ্যার গজপতি রাজবংশের কাছে শহরটির উপর নিয়ন্ত্রণ ছিল,[5][6] যতদিন না ১৫তম শতাব্দীতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের বিজয় লাভ ঘটে।[7] ১৬তম শতাব্দীতে এটি মুঘলরা দখল করে নেয়। ইউরোপীয় শক্তিগুলি অবশেষে শহরটি বাণিজ্য স্বার্থে স্থাপন করেছিল এবং বিশাখাপত্তনম ১৮ শতকের শেষদিকে ফরাসি শাসনের অধীনে আসে।[5][6]
অবস্থান

বিশাখাপত্তনাম শহরটি সমুদ্র সমতল থেকে ১০ মিটার এবং কোথাও ১০ মিটারের অনেকটাই বেশি উচুতে অবস্থিত। শহরটি পূর্বঘাট পর্বতমালার পূর্বে বঙ্গোপোসাগরের তীরে অবস্থিত।
জলবায়ু
Visakhapatnam-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) রেকর্ড | ৩৪٫৮ (৯৫) |
৩৮٫২ (১০১) |
৪০٫০ (১০৪) |
৪০٫৫ (১০৫) |
৪৫٫০ (১১৩) |
৪৫٫৪ (১১৪) |
৪১٫৪ (১০৭) |
৩৮٫৮ (১০২) |
৩৮٫২ (১০১) |
৩৭٫২ (৯৯) |
৩৫٫০ (৯৫) |
৩৪٫০ (৯৩) |
৪৫٫৪ (১১৪) |
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) গড় | ২৮٫৯ (৮৪) |
৩১٫৩ (৮৮) |
৩৩٫৮ (৯৩) |
৩৫٫৩ (৯৬) |
৩৬٫২ (৯৭) |
৩৫٫৩ (৯৬) |
৩২٫৯ (৯১) |
৩২٫৭ (৯১) |
৩২٫৫ (৯১) |
৩১٫৭ (৮৯) |
৩০٫৪ (৮৭) |
২৮٫৯ (৮৪) |
৩২٫৫ (৯১) |
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) গড় | ১৮٫০ (৬৪) |
১৯٫৯ (৬৮) |
২৩٫০ (৭৩) |
২৬٫১ (৭৯) |
২৭٫৭ (৮২) |
২৭٫৩ (৮১) |
২৬٫১ (৭৯) |
২৬٫০ (৭৯) |
২৫٫৬ (৭৮) |
২৪٫৩ (৭৬) |
২১٫৬ (৭১) |
১৮٫৬ (৬৫) |
২৩٫৭ (৭৫) |
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) রেকর্ড | ১০٫৫ (৫১) |
১২٫৮ (৫৫) |
১৪٫৪ (৫৮) |
১৮٫৩ (৬৫) |
২০٫০ (৬৮) |
২১٫১ (৭০) |
২১٫৩ (৭০) |
২১٫১ (৭০) |
১৭٫৫ (৬৪) |
১৭٫৬ (৬৪) |
১২٫৯ (৫৫) |
১১٫৩ (৫২) |
১০٫৫ (৫১) |
গড় অধঃক্ষেপণ মিমি (ইঞ্চি) | ১১٫১ (০٫৪৪) |
১০٫৫ (০٫৪১) |
১৩٫০ (০٫৫১) |
২৬٫২ (১٫০৩) |
৭০٫৫ (২٫৭৮) |
১১৭٫০ (৪٫৬১) |
১৩৩٫৩ (৫٫২৫) |
১৬৩٫৬ (৬٫৪৪) |
১৯১٫১ (৭٫৫২) |
২৫৮٫১ (১০٫১৬) |
১১৫٫৫ (৪٫৫৫) |
৮٫৮ (০٫৩৫) |
১,১১৮٫৭ (৪৪٫০৫) |
বৃষ্টিবহুল দিনের গড় | ০٫৫ | ০٫৫ | ০٫৫ | ১٫২ | ৩٫০ | ৬٫৪ | ৮٫৭ | ৯٫৩ | ৯٫৯ | ৮٫৭ | ২٫৭ | ০٫৬ | ৫২٫০ |
গড় আর্দ্রতা (%) | ৭১ | ৭০ | ৬৯ | ৭১ | ৬৯ | ৭১ | ৭৬ | ৭৭ | ৭৮ | ৭৪ | ৬৮ | ৬৭ | ৭১٫৮ |
উৎস #১: India Meteorological Department (record high and low up to 2010)[8][9] | |||||||||||||
উৎস #২: NOAA (humidity 1971–1990)[10] |
জনপরিসংখ্যান
ভারতে ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, বিশাখাপত্তনমের জনসংখ্যা হল ১৭,২৮,১২৮ জন, যাদের মধ্যে ৮,৭৩,৫৯৯ জন পুরুষ এবং ৮,৫৪,৫২২ জন মহিলা ছিল। শহরটিতে প্রতি ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে ৯৭৮ জন নারী রয়েছেন। জনসংখ্যার ঘনত্ব ১৮,৪৮০ জন/বর্গ কিলোমিটার (৪৭,৯০০ জন/বর্গ মাইল)। ০-৬ বছর বয়সের ১,৬৪,১২৯ টি শিশু রয়েছে এই শহরে, যার মধ্যে ৮৪,২২৮ জন ছেলে এবং ৭৯,৮৩১ মেয়ে- প্রতি ১,০০০ টি ছেলের বিপরীত ৯৪৭ টি মেয়ে রয়েছে। ২০১১ সালের হিসাবে বিশাখাপত্তনমের মোট জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৮১.৭৯%, অর্থাৎ মোট ১২,৭৯,১৭ জন সাক্ষর, যার মধ্যে ৬,৮৮,৬৭৮ জন পুরুষ এবং ৫,৯০,৪৫৯ জন নারী।[11][12] বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শহরগুলির তালিকাতে বিশাখাপাতনম ১২২ তম স্থান পেয়েছে।[13] শহরটির মোট জনসংখ্যার জনসংখ্যার ৪৪.৬১% লোক বস্তিবাসী, যার অর্থ শহরের ৭,৭০,৯৭১ জন লোক বস্তিতে বসবাস করে।[14]
শহরের সীমা সম্প্রসারণের পরে জনসংখ্যা দুই মিলিয়ন অতিক্রম করেছে এবং বর্তমান ২০,৩৫,৯২২ জনে দাঁড়িয়েছে।[1]
ঐতিহাসিক জনসংখ্যা | ||
---|---|---|
বছর | জন. | ±% |
১৮৭১ | ৩২,১৯১ | — |
১৮৮১ | ৩০,২৯১ | −৫.৯% |
১৮৯১ | ৩৪,৪৮৭ | +১৩.৯% |
১৯০১ | ৪০,৮৯২ | +১৮.৬% |
১৯১১ | ৪৩,৪১৩ | +৬.২% |
১৯২১ | ৪৪,৭১১ | +৩% |
১৯৩১ | ৫৭,৩০৩ | +২৮.২% |
১৯৪১ | ৭০,২৪৩ | +২২.৬% |
১৯৫১ | ১,০৮,০৪২ | +৫৩.৮% |
১৯৬১ | ২,১১,১৯০ | +৯৫.৫% |
১৯৭১ | ৩,৬৩,৪৬৭ | +৭২.১% |
১৯৮১ | ৬,০৩,৬৩০ | +৬৬.১% |
১৯৯১ | ৭,৫২,০৩৭ | +২৪.৬% |
২০০১ | ১৩,৪৫,৯৩৮ | +৭৯% |
২০১১ | ২০,৩৫,৯২২ | +৫১.৩% |
ভাষা এবং ধর্ম
পরিবহন
সড়ক পথ
শহরটির মধ্যদিয়ে ৫ নং জাতীয় সড়ক (ভারত) চলেগেছে।এই জাতীয় সড়ক এর দ্বারা শহরটি কলকাতা ও চেন্নাই শহরের সঙ্গে যুক্ত।
রেলপথ
হাওড়া চেন্নাই মেন লাইন এর একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন হল বিশাখাপত্তনম। শহরের সমুদ্র বন্দরটিও রেল পথ এর সঙ্গে ভালভাবে যুক্ত। এই শহর থেকে রেল দ্বারা কলকাতা, চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই, ও ব্যাঙ্গালোর ভালোভাবে যুক্ত।
বিমানবন্দর
বিশাখাপত্তনম একটি বিমানবন্দর রয়েছে।
অর্থনীতি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
খেলাধূলা
ক্রিকেট সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, এছাড়া টেনিস এবং ফুটবল ও বেশ জনপ্রিয় । বিশাখাপত্তনম 2002 সালে হায়দরাবাদ শহরের পাশাপাশি ৩২তম ন্যাশনাল গেমস কো -হোস্ট করে । ডাঃ ওয়াই. এস. রাজশেখরা রেড্ডী এসিএ-ভিডিসিএ ক্রিকেট স্টেডিয়াম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য ব্যবহার করা হয়।
পর্যটন
সমুদ্র সৈকত
- ঠোটলাকোন্ডা সৈকত - উত্তরে
- টেঁনেত্তি সৈকত - মধ্যভাগে
- রামকৃষ্ণ সৈকত - দক্ষিণে , বন্দরের পাশে
তথ্যসূত্র
- "Municipalities, Municipal Corporations & UDAs" (PDF)। Directorate of Town and Country Planning। Government of Andhra Pradesh। ৭ জুন ২০১৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬।
- "Key Facts on VMR" (PDF)। Visakhapatnam Urban Development Authority। পৃষ্ঠা 44–45। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৫।
- "Elevation for Visakhapatnam"। Veloroutes। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৫।
- "ভারতের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ১০ শহর"। এনডিটিভি। সংগ্রহের তারিখ ২৯-০৯-২০১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - "Visakhapatnam Climatological Table Period: 1951–1980"। India Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৫।
- "Ever recorded Maximum and minimum temperatures up to 2010" (PDF)। India Meteorological Department। ২১ মে ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৫।
- "Visakhapatnam Climate Normals 1971–1990"। National Oceanic and Atmospheric Administration। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৫।
- "District Census Handbook – Visakhapatnam" (PDF)। Census of India। পৃষ্ঠা 26–27, 52। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৫।
- G, Siva (২৫ আগস্ট ২০১৪)। "Greater Visakhapatnam Municipal Corporation polls unlikely this year"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৫।
- "World's fastest growing urban areas (1)"। City Mayors। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৪।
- "Visakhapatnam City Census 2011 data"। Census 2011। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৭।