মোহিনী চৌধুরী
মোহিনী চৌধুরী (৫ সেপ্টেম্বর, ১৯২০ - ২১ মে ১৯৮৭) একজন খ্যাতনামা বাঙালি কবি, গীতিকার ও চিত্র পরিচালক।
মোহিনী চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | ১৯২০ |
মৃত্যু | ১৯৮৭ |
নাগরিকত্ব | ![]() |
পেশা | গীতিকার, সাংসদ সচিব |
পরিচিতির কারণ | গীতিকার, চিত্র পরিচালক |
প্রারম্ভিক জীবন
তার জন্ম অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায়। কলকাতার রিপন স্কুল (সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পাশ করেন ও ওখান থেকেই আই. এস. সি পাশ করে বি. এস. সি তে ভর্তি হন। গানের প্রতি নেশায় বি.এস. সি পরীক্ষা অসমাপ্ত রেখে গান লেখার সাথে যুক্ত হন। ১৯৪০ সালে কলকাতা জিপিও তে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি আট বছর মাত্র এই চাকরিতে ছিলেন।[1]
গীতিকার ও চিত্রপরিচালনা
১৯৪৩ খৃষ্টাব্দ থেকে গ্রামোফোন রেডিও সিনেমার গীতিকার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। 'রাজকুমারী ওলো, নয়নপাতা খোলো,সোনার টিয়া ডাকছে গাছে ওই বুঝি ভোর হল' মোহিনী চৌধুরীর প্রথম গানের রেকর্ড। গানটি গাইলেন কুসুম গোস্বামী কমল দাশগুপ্তর সুরে। শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের 'অভিনয় নয়' ছায়াছবিতে প্রথম গান লেখার সুযোগ পেলে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। জিপিও'র চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সর্বক্ষনের জন্যে গানের জগতে মনোনিবেশ করেন। রায়চৌধুরী, ঘুমিয়ে আছে গ্রাম, রংবেরঙ, সন্ধ্যাবেলার রূপকথা, একই গ্রামের ছেলে, ব্লাইন্ড লেন ইত্যাদি ছবিতে সহকারী চিত্রপরিচালনার কাজ করেন এবং গান লেখেন। তার পরিচালিত ও প্রযোজিত ছবি সাধনা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হলে তিনি বিজ্ঞানী ও সাংসদ মেঘনাদ সাহার অধীনে সংসদীয় সচিবের চাকরি করেন কিছুকাল। ১৯৫৪ সালে শিল্পপতি ডি. এন ভট্টাচার্যের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করতে থাকেন। পরে প্রাইভেটে বি.এ পাশ করেন। ১৯৭১ সালে ডি.এন ভট্টাচার্যের ব্যবসা বিপর্যয় ঘটলে তার ১৭ বছরের চাকরিটি চলে যায়। শেষ জীবনে আর্থিক দুর্গতির সম্মুখীন হন এই জনপ্রিয় গীতিকার। গ্রামোফোন রেকর্ড ও সবাক চলচ্চিত্রে তার অজস্র গান শ্রোতাদের ভেতর খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। যার কিছু আজো বাঙালির মুখে মুখে ফেরে। 'মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান' নামক দেশাত্মবোধক গানটির জন্যে তিনি খ্যাতি ও সুনামের অধিকারী হয়েছিলেন। এই গানটির সুরকার ছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র দে।[1]
জনপ্রিয় গান
- মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হল বলিদান
- কাশ্মীর হতে কন্যাকুমারী
- আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়
- পৃথিবী আমারে চায়
- ভালবাসা মোরে ভিখারি করেছে
- শতেক বরষ পরে
- জেগে আছি একা জেগে আছি কারাগারে
- জয় হবে হবে জয়
- শুনি আগডুম বাগডুম বাজে
- কেন এ হৃদয় চঞ্চল হলো কে যেন ডাকে
- আজ চঞ্চল মন যদি[2]
মৃত্যু
গীতিকার মোহিনী চৌধুরী মারা যান ২১ মে, ১৯৮৭ খৃষ্টাব্দে।
তথ্যসূত্র
- দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ২৭৯। আইএসবিএন 81-86806-99-7।
- হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (২০১৬)। আনন্দধারা। কলকাতা: সপ্তর্ষি প্রকাশন।