বেলুড় মঠ

বেলুড় মঠের মূল মন্দিরে রামকৃষ্ণ পরমহংসের মর্মরমূর্তি

১৮৯৭ সালে পাশ্চাত্য থেকে কয়েকজন অনুগামী সংগ্রহ করে কলম্বো প্রত্যাবর্তন করেন স্বামী বিবেকানন্দ। এরপর ভারতে ফিরেই তিনি দুটি মঠের গোড়াপত্তন করেন। একটি আলমোড়ার নিকট হিমালয়ে অবস্থিত মায়াবতীতে অদ্বৈত আশ্রম ও অপরটি কলকাতার সন্নিকটস্থ বেলুড়ে রামকৃষ্ণ মিশন।[6][7] এই মঠদুটি স্থাপনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল রামকৃষ্ণ মিশনে যোগদানে ইচ্ছুক যুবকদের গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ এবং তাদের মিশনের কাজকর্মের উপযুক্ত করে তোলা। এই বছরেই দুর্ভিক্ষের সময় জনসেবার মাধ্যমে মিশনের কাজের সূচনা হয়।[7]

বিশ্বধর্ম মহাসভায় ভাষণদানের আগে পরিব্রাজক জীবনে স্বামী বিবেকানন্দ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল পর্যটন করেছিলেন। এই সময় তাজমহল, ফতেপুর সিক্রি, দেওয়ান-ই-খাস, রাজপুতানার প্রাসাদ এবং মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও অন্যান্য অঞ্চলের প্রাচীন মন্দিরগুলি দর্শন করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ভ্রমণকালে সেই অঞ্চলের আধুনিক, মধ্যযুগীয়, গথিক ও রেনেসাঁ স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যগুলিও অবগত হন। কথিত আছে, এই সকল স্থাপত্যের সংমিশ্রণে স্বামী বিবেকানন্দই বেলুড় মঠ স্থাপত্যের পূর্বপরিকল্পনা রচনা করেছিলেন।.[8]

স্বামী বিবেকানন্দের পরিকল্পনা অনুযায়ী তার সন্ন্যাসী-ভ্রাতা ও রামকৃষ্ণ পরমহংসের অপর সাক্ষাতশিষ্য স্বামী বিজ্ঞানানন্দ মন্দিরের নকশা প্রস্তুত করেন। বিজ্ঞানানন্দ পূর্বাশ্রমে ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। ১৬ মার্চ, ১৯৩৫ মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। মার্টিন বার্ন অ্যান্ড কোম্পানি এই বিরাট মন্দিরটি নির্মাণ করেন। রামকৃষ্ণ মিশন এই মন্দিরের বর্ণনা দেন “স্থাপত্যের ঐকতান” রূপে।[9]

বরানগরের রতনবাবুর ঘাট থেকে বেলুড় মঠ

আধুনিক ধর্মস্থান বেলুড় মঠ মন্দির, মসজিদ ও গির্জার স্থাপত্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণে নির্মিত।[10] রামকৃষ্ণ ভাবান্দোলনের বিশ্বাস অনুসারে বিশ্বধর্মের আদর্শকে তুলে ধরার জন্য একাধিক ধর্মের স্থাপত্য ও প্রতীকতত্ত্ব থেকে মন্দিরের এই স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য সংকলিত হয়েছে।[11][12] ধর্মের রূপতাত্ত্বিক দিকটিরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন এই মন্দির।[11]

মন্দিরের মূল প্রবেশপথটি বৌদ্ধ আদর্শে নির্মিত। মূল প্রবেশপথের উপরের অংশটি উচ্চ স্তম্ভযুক্ত দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরের আদর্শে নির্মিত। মন্দিরের ভিতরের জানালা ও অলিন্দ উত্তর ভারতের রাজপুত ও মুঘল স্থাপত্যের আদর্শে তৈরি। কেন্দ্রীয় গম্বুজটি ইউরোপীয় রেনেসাঁ স্থাপত্যের নিদর্শন। আবার ভিতরের মেঝেটি কতটা খ্রিস্টান ক্রসের আকারে বিন্যস্ত।[11]

বেলুড় মঠের অভ্যন্তরে দ্রষ্টব্য স্থানগুলি হল শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির, পুরনো ঠাকুরঘর, স্বামী বিবেকানন্দের বাসকক্ষ, স্বামী ব্রহ্মানন্দ মন্দির, শ্রীমা সারদাদেবী মন্দির, স্বামী বিবেকানন্দ মন্দির, সমাধি পীঠ, পুরনো মঠ, রামকৃষ্ণ মিউজিয়াম ইত্যাদি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বহিরাগত দর্শক ও পূণ্যার্থীদের দর্শনের নিমিত্ত মঠ ও মন্দিরের দ্বার খোলা রাখা হয়। দেশ ও বিদেশ থেকে বহু মানুষ প্রতিদিন এই মন্দিরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন।

ভারত, বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মঠ প্রাচীন শাখার চেন্নাই শাখা.

জাতীয় যুব দিবস পালনের অংশ হিসাবে, এই বছরের সমস্ত ভারত স্তর সংক্ষিপ্ত ফিল্ম প্রতিযোগিতা চেন্নাই রামকৃষ্ণ মঠ দ্বারা ঘোষণা করা হয়েছে.[15]

• রামকৃষ্ণ পরমহংস
• রামকৃষ্ণ মঠ
• রামকৃষ্ণ মিশন
• স্বামী বিবেকানন্দ
• সারদা দেবী

2. Sarina Singh; Joe Bindloss; Paul Clammer; Janine Eberle। India। পৃষ্ঠা 452।
3. "Belur Math"। ২০০৮-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-১০।
4. Cyrus R. Pangborn। "The Ramakrishna Math and Mission"। Hinduism: New Essays in the History of Religions। পৃষ্ঠা p.118।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত লেখা (link)
5. "Day of anjali & attraction"। The Telegraph। October 7 , 2008। সংগ্রহের তারিখ 2008-10-10। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
6. By Hendrik Kraemer। World Cultures and World Religions। পৃষ্ঠা p.151।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত লেখা (link)
7. J. N. Farquhar। Modern Religious Movements in India। পৃষ্ঠা p.202।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত লেখা (link)
8. Swami Tattwajnanananda। "prelude"। A Symphony in Architecture Ramakrishna Temple Belur Math।
9. Swami Tattwajnanananda। A Symphony in Architecture Ramakrishna Temple Belur Math।
10. Pilgrimage Centers of India। পৃষ্ঠা p.167।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত লেখা (link)
11. Open University Course Team। Introduction to the Humanities। পৃষ্ঠা p.75।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত লেখা (link)
12. Pilgrimage Centers of India। পৃষ্ঠা p.167। This symbolises the main message of the master that all religions and men are essentially one and united.উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত লেখা (link)
13. "Oasis of peace"। The Statesman। ১ মার্চ ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-০৬।
14. Dutta, Indrani (১ এপ্রিল ২০০৫)। "Evolution of a spiritual movement on display"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-০৬।
15. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৪।

উইকিভ্রমণে Kolkata সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে।

• বেলুড় মঠের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
• বেলুড় মঠের দ্রষ্টব্য স্থান - মঠের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট থেকে
• Read Details about Belur Math, Kolkata
• Brahmachari Gurudas (২০০৭)। "A Visit to the Belur Math: January 1907"। Prabuddha Bharata। আইএসএসএন 0032-6178। অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)

উইকিমিডিয়া কমন্সে বেলুড় মঠ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।