ক্রয়ক্ষমতা সমতা

ক্রয়ক্ষমতা সমতা বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি (ইংরেজি: Purchasing Power Parity), যা পিপিপি নামে সমধিক পরিচিত, আন্ত:দেশীয় মুদ্রার প্রকৃত ক্রয়ক্ষমতা পরিমাপের একটি জনপ্রিয় সূচক। এটি একটি তত্ত্বীয় পদ্ধতি, যার মাধ্যমে দুইটি ভিন্ন মুদ্রার দীর্ঘমেয়াদে বিনিময় হারের সাহায্যে তাদের ক্রয়ক্ষমতা পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ ক্রয়ক্ষমতা সমতার তত্ত্ব অনুযায়ী দুটি ভিন্ন মুদ্রার দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বিনিময় হার-ই মূলত ঐ দুই মুদ্রার ক্রয় ক্ষমতার হার। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে সুইডেনের অর্থনীতিবিদ গুস্তাফ কাসেল এই তত্ত্বটি প্রচার করেন।[1] এটি একটি পণ্যের একটি নির্দিষ্ট মূল্যমানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ, কোনো নির্দিষ্ট আদর্শ বাজারে, কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের একটিই মাত্র মূল্যমান থাকবে।

২০০৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বের দেশগুলোর মোট জাতীয় আয়ের মুদ্রা ক্রয়ক্ষমতা বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির একটি তুলনামূলক ক্রমচিত্র। সূত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে আদর্শ ধরা হয়েছে, তাই তাঁর মান ধরা হয়েছে ১০০। বারমুডা আছে সর্বোচ্চ স্থানে। তাঁদের মান ১৫৪, অর্থাৎ বারমুডায়, একটি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের ঐ একই পণ্যের চেয়ে ৫৪% বেশি দামে বিক্রয় হয়।

পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি একটি জনপ্রিয় অর্থনৈতিক সূচক, এবং যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সহ বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা দেশসমূহের তুলনাযোগ্য জাতীয় আয় পরিমাপের জন্য এই সূচকটি প্রায়শ: ব্যবহার করে থাকে, তবু এর সমর্থনে গবেষণালব্ধ ফলাফল আদৌ নিরঙ্কুশ নয়। গত প্রায় একশত বৎসরে এ তত্ত্বটি নিয়ে শত শত গবেষণা হলেও নিশ্চিত হওয়া যায় নি যে বাস্তবে এই তত্ত্বটি প্রমাণযোগ্য।

ব্যাখ্যা

যদি এক বাক্স পণ্যের মূল্য এক ডলার হয়, এবং ঐ একই পরিমাণ ও মানের পণ্যের মূল্য যদি পাউন্ড এককে এক পাউন্ড হয়, তবে ক্রয়ক্ষমতা সমতার বিনিময় হার হবে পাউন্ড/ডলার। যদি কোনো পণ্যের আঞ্চলিক বিনিময় হার তুল্য মুদ্রার মানের থেকে বেশি হয়, তবে কম বিনিময় হার বিশিষ্ট মুদ্রাটি বড় বিনিময় হার বিশিষ্ট মুদ্রার ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে। উদাহরণস্বরূপ যদি ধরা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বা কমোডিটির মূল্য ডলার এককে ১,৫০০ ডলার, এবং ঐ একই পণ্যের মূল্য যুক্তরাজ্যে পাউন্ড এককে ১,০০০ পাউন্ড; তবে মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা হার হবে প্রতি পাউন্ডে (১৫০০/১০০০) = ১.৫ ডলার। এখন পণ্যটি বিনিময়ের সময় যদি মুদ্রাহার থাকে প্রতি পাউন্ডে ১.৮ ডলার, তবে আমরা বলে পারি ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের মূল্যমান ২০% বেশি।

(১.৮–১.৫) = ০.৩; এবং (০.৩/১.৫)% = ২০%

তথ্যসূত্র

  1. Gustav Cassel, "Abnormal Deviations in International Exchanges," Economic Journal, December, 1918, পৃষ্ঠা: 413-415

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.