ঊনকোটি

ঊনকোটি শব্দের বাংলায় এর অর্থ এককোটি থেকে একটি কম। ত্রিপুরার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হল শৈব তীর্থ ঊনকোটি। এই পর্যটন কেন্দ্রটি আগের উত্তর ত্রিপুরা জেলার এবং বর্তমান ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে অবস্থিত।

শৈব তীর্থ ঊনকোটি

অবস্থান

ঊনকোটি রাজধানী আগরতলা থেকে ১৭৮ কি মি দূরত্বে অবস্থিত। কৈলাসহর হইতে ৮ কি মি দূরে পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত।

যাতায়াত ব্যবস্থা

  • সড়কপথ : সড়কপথে আগরতলা থেকে কৈলাসহর নিয়মিত বাস চলাচল করে।ছোট প্রাইভেট কার ভাড়া নিয়ে ও যাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া ত্রিপুরা পর্যটন দপ্তর ও বাস পরিসেবা দিয়ে থাকেন (প্যকাজ ব্যবস্থাও আছে)।
  • রেলপথ :সরাসরি রেল যোগাযোগ হল কুমারঘাট এবং ধর্মনগরের সাথে,তারপর সেখান থেকে সড়ক যোগে যেতে হবে।
  • বিমান ব্যবস্থা :কৈলাসহরে একটি ছোট বিমান বন্দর আছে,তবে বর্তমানে তা বন্ধ আছে।

নামকরণ বৃত্তান্ত

হিন্দু পুরানের এই নামকরণের কাহিনীতে কথিত আছে যে কালু কামার নামে একজন স্থাপত্যকার ছিলেন, সেই সাথে দেবী পার্বতীর ভক্ত ছিলেন। একবার দেবী-মহাদেবের সাথে কৈলাসে যাচ্ছিলেন তখন কালু কামার বায়না ধরলেন তাকে যেন তাদের সঙ্গে নেন। তখন মহাদেব উনার উপর শর্ত আরোপ করে বলেন উনি যেতে পারেন তবে তার জন্য তাকে এক রাত্রির মধ্যে এককোটি দেবদেবীর মূর্তি তৈরী করে দিতে হবে। কিন্তু কালু কামার এককোটি থেকে একটি কম মানে ঊনকোটি টি মূর্তি তৈরী করে দিতে সক্ষম হন।

ঊনকোটির মুর্তিগুলি নিয়ে একাধিক কাহিনি প্রচলিত আছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আর একটি কাহিনি আছে, যার কেন্দ্রীয় চরিত্র হল মহাদেব। দেবাদিদেব শিব একবার দেবতাদের নিয়ে ত্রিপুরার উপর দিয়ে বারানসী যাচ্ছিলেন। [1] মহাদেবকে নিয়ে দেবতাদের সংখ্যা ছিল এক কোটি। সন্ধ্যে নামার পর রাত্রিবাসের ব্যবস্থা হয় এই রঘুনন্দন পাহাড়ে। পথপরিশ্রমে ক্লান্ত দেবতারা গভীর নিদ্রায় অচেতন হলেন। পরেরদিন সূর্যোদয় হওয়ার আগে সবার বারানসীর উদ্দেশে যাত্রা করার কথা, কিন্তু মহাদেব ছাড়া অন্য কোনো দেবতাদের নিদ্রাভঙ্গ হল না। মহাদেব বিরক্ত হয়ে একাই বারানসীর উদ্দেশে রওনা দিলেন। গভীর নিদ্রায় সমাধিস্থ দেবতাদের কালনিদ্রা আর ভাঙ্গল না এবং তারা অনন্তকালের জন্য পাথর হয়ে রইলেন। এই দেবতাদের সংখ্যা ছিল এক কম কোটি তাই ঊনকোটি। সেই থেকেই এই রঘুনন্দন পাহাড় হয়ে গেল শৈবতীর্থ ঊনকোটি। [2]

Unakoti ( ঊনকোটি), Tripura, India

ব্ররন্না

পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা মূর্তিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জটাধারী শিব এবং ৩০ ফুট উঁচু কালভৈরবের মূর্তি। এছাড়া গণেশ, দুর্গা, বিষ্ণু, রাম, রাবণ, হনুমান এবং শিবের বাহন নন্দীর মূর্তি। ঊনকোটির একটি প্রধান দ্রষ্টব্য হল গণেশকুন্ড। কুন্ড সংলগ্ন পাথরের দেওয়ালে দক্ষ হাতে খোদাই করা আছে তিনটি গণেশ মূর্তি। এদের ডান পাশে রয়েছে চতুর্ভুজ বিষ্ণু মূর্তি। ঐতিহাসিকদের মতে, ঊনকোটির অভিনব ভাস্কর্য তৈরী হয়েছিল অষ্টম বা নবম শতাব্দীতে।

Unakoti ( ঊনকোটি), Tripura, India

তথ্যসূত্র

  1. http://wikimapia.org/1643864/The-Unakoti-Tripura
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.