সাতক্ষীরা জেলা

সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।

সাতক্ষীরা
জেলা
বাংলাদেশে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°২১′০″ উত্তর ৮৯°৪′৪৮″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
সংসদ আসন
আয়তন
  মোট৩৮৫৮.৩৩ কিমি (১৪৮৯.৭১ বর্গমাইল)
উচ্চতা১৬ মিটার (৫২ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১৩ আনুঃ)[1]
  মোট২০,৭৯,৮৮৪
  জনঘনত্ব৫৪০/কিমি (১৪০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার[2]
  মোট৫৩.৩২%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৯৪০০
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৪০ ৮৭
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান ও আয়তন

সাতক্ষীরা জেলার উত্তরে যশোর জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে খুলনা জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত। অবস্থানগত দিক দিয়ে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে। উচ্চতার দিকে বিবেচনা করলে এ অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ১৬ ফুট উচুঁতে। জেলার সীমানা যেভাবে নির্ধারিত হয়েছে তাতে উত্তর-দক্ষিণে দীর্ঘ। তবে এ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সব অংশে জনবসতি নেই। এর মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ বনাঞ্চল। সুন্দরবনের মধ্যে যে পরিমাণ ভূমি তার পরিমাণ ১৪৪৫.১৮ বর্গ কিলোমিটার। ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক দিয়ে তাকালে এ জেলার পূর্বে খুলনা জেলা, পশ্চিমে চব্বিশ পরগণা জেলার (ভারত) বসিরহাট মহকুমা, উত্তরে যশোর জেলা ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর

প্রশাসন

সাতক্ষীরা জেলায় ২ টি পৌরসভা , ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা , ৭৮ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১৪২৩টি গ্রাম রয়েছে এবং জাতীয় সংসদের ৪টি সংসীয় আসন রয়েছে।

জেলা প্রশাসক : এস. এম. মোস্তফা কামাল ।[3]

পৌরসভাসমূহ

উপজেলাসমূহ

আশাশুনি উপজেলা
দেবহাটা উপজেলা
কলারোয়া উপজেলা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা
শ্যামনগর উপজেলা
  • ভুরুলিয়া ইউনিয়ন
  • কাশিমাড়ী ইউনিয়ন
  • শ্যামনগর ইউনিয়ন
  • নূরনগর ইউনিয়ন
  • কৈখালী ইউনিয়ন
  • রমজাননগর ইউনিয়ন
  • মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন
  • ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন
  • বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন
  • আটুলিয়া ইউনিয়ন
  • পদ্মপুকুর ইউনিয়ন
  • গাবুরা ইউনিয়ন
তালা উপজেলা
কালীগঞ্জ উপজেলা

থানাসমূহ

  1. সাতক্ষীরা সদর
  2. তালা
  3. পাটকেলঘাটা
  4. কলারোয়া
  5. আশাশুনি
  6. দেবহাটা
  7. শ্যামনগর
  8. কালীগঞ্জ

সংসীয় আসন সমূহ

আবহাওয়া

শুষ্ক গ্রীষ্ম প্রধান জলবায়ু বিরাজমান, স্বাভাবিকভাবে গড় তাপমাত্রা ২৫°সেলসিয়াস (৭৭° ফারেনহাইট)।
উষ্নতম মাস = মে গড় তাপমাত্রা থাকে ৩০°সে (৮৬°ফা)
শীতলতম মাস = জানুয়ারী গড় তাপমাত্রা ১৮.৯°সে (৬৬°ফা)
সারাবছরের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৬.৫’’ (১৬৮৯.১ মিমি) যা জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ১৩.৯’’ (৩৫৩.১ মিমি) এবং সর্বনিন্ম জানুয়ারী মাসে ০.৩’’ (৭.৬ মিমি)। বৃষ্টিপাতের নিরীক্ষা অনুসারে বছরের ৯৮.০ দিন যা সর্বোচ্চ জুলাই মাসে ১৯.০ দিন ও সর্বনিম্ন ডিসেম্বর মাসে ১.০ দিন। [4]

সাতক্ষীরা-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) গড় ২৫
(৭৭)
২৮
(৮২)
৩৩
(৯১)
৩৪
(৯৩)
৩৪
(৯৩)
৩৩
(৯১)
৩১
(৮৭)
৩১
(৮৭)
৩২
(৮৯)
৩১
(৮৭)
২৯
(৮৪)
২৬
(৭৮)
৩০
(৮৬)
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) গড় ১২
(৫৩)
১৫
(৫৯)
২০
(৬৮)
২৪
(৭৫)
২৫
(৭৭)
২৬
(৭৮)
২৬
(৭৮)
২৫
(৭৭)
২৫
(৭৭)
২৩
(৭৩)
১৮
(৬৪)
১৩
(৫৫)
২১
(৬৯)
গড় অধঃক্ষেপণ মিমি (ইঞ্চি) ১০
(০٫৩)
২০
(০٫৯)
৩০
(১٫২)
৭০
(২٫৮)
১৪০
(৫٫৭)
২৯০
(১১٫৬)
৩৫০
(১৩٫৯)
৩৩০
(১২٫৮)
২৭০
(১০٫৫)
১৪০
(৫٫৬)
৩০
(১)
১০
(০٫৩)
১,৬৯০
(৬৬٫৫)
উৎস: ওয়েদারবেজ[5]

ইতিহাস

প্রাচীনকালে এই জেলাকে বাগড়ী, ব্যাঘ্রতট, সমতট, যশোর, চূড়ন প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হতো। অবশ্য এ জেলার নামকরণের পেছনে অনেক মত প্রচলিত আছে। প্রথম ও প্রধান মতটি হলো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এক কর্মচারী বিষুরাম চক্রবর্তী নিলামে চূড়ন পরগনা ক্রয় করে তার অর্ন্তগত সাতঘরিয়া নামক গ্রামে বাড়ি তৈরী করেন। তার পূত্র প্রাণনাথ সাতঘরিয়া অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ১৮৬১ সালে মহকুমা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর ইংরেজ শাসকরা তাদের পরিচিত সাতঘরিয়াতেই প্রধান কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যেই সাতঘরিয়া ইংরেজ রাজকর্মচারীদের মুখে ‘সাতক্ষীরা’ হয়ে যায়। দ্বিতীয় মতটি হলো একদা সাত মনীষী সাগর ভ্রমণে এসে একান্ত শখের বসে (মতানৈক্যে রান্নার উপকরণাদি না পেয়ে) ক্ষীর রান্না করে খেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ‘ক্ষীর’ এর সাথে ‘আ’ প্রত্যেয় যুক্ত হয়ে ‘ক্ষীরা’ হয় এবং লোকমুখে প্রচলিত হয়ে যায় সাতক্ষীরা।

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ বনভূমি সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের উপকূল এবং ভারতীয় সীমান্তে অবস্থিত সাতক্ষীরা নামক অঞ্চলটি মানব বসতি গড়ে ওঠার আগে ছিল একটি বিস্তীর্ণ জলাভূমি। পরবর্তীতে মানব বসতি গড়ে ওঠে। ১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৮৬৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে এই মহকুমার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অর্ন্তভূক্ত একটি মহকুমা হিসাবে স্থান লাভ করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।[6][7][8]

অর্থনীতি

ব্রিটিশ যুগ থেকেই উপঢৌকন হিসেবে চব্বিশ পরগণা (বর্তমানের সাতক্ষীরা) লাভের পর ব্রিটিশ বেনেরা নিজ স্বার্থেই সুন্দরবনের উন্নয়ন ও এতদাঞ্চলের অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। দেখা যায়, অচিরেই নানাবিধ কৃষিপণ্য, গৃহপালিতপশু, লবণাক্ত ও মিষ্টি পানির মাছ এবং সুন্দরবনের কাঠ, মধু ও পশুর চামড়া সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার তথা সাতক্ষীরার অর্থনীতির ভিত্তি হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ শাসনের অব্যবহিত পূর্ব যুগে অবশ্য অবিভক্ত বাংলার উপকূলীয় জেলাগুলোতে কিছু লবণ শিল্প গড়ে ওঠার সংবাদ পাওয়া যায়।[9]
জেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রগুলো হলো- বড়দল, পাটকেলঘাটা, পারুলিয়া, আখড়াখোলা, আবাদের হাট, নওয়াবেকি, ঝাউডাঙ্গা, বুধহাটা, কলারোয়া, বসন্তপুর, কালিগঞ্জ, নকিপুর, নাজিমগঞ্জ, ভেটখালি, হবিনগর, হোগলা, বুড়িগোয়ালিনী, বাঁশতলা ইত্যাদি। এছাড়া কয়েকটি ফিস প্রসেসিং প্লান্ট, কোল্ড স্টোরেজ, আইস প্লান্ট, রাইস মিল, অটো রাইস মিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, বেকারী, ইট ভাটা, বাঁশ ও বেতের দ্রব্যাদি, আসবাবপত্র, তাঁত, লবণ, গুড়, পাটজাত দ্রব্য ও মাছ প্রভৃতি বর্তমানে সাতক্ষীরা শিল্প বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে।
খামারের মধ্যে ৮৬ টি গবাদিপশু, ৩২২ টি পোল্ট্রি খামার, ৩০৪৬ টি মৎস্য খামার (মিঠা পানির), ৩৬৫০ টি চিংড়ি খামার, ৬৬ টি হ্যাচারি এবং ১ টি গরু প্রজনন কেন্দ্র আছে। চামড়া শিল্পেও সাতক্ষীরার অবদান রয়েছে।

চিংড়ি চাষ

চিংড়ির ঘের/খামার (সাতক্ষীরার অর্থনীতির মূল ভিত)

সাতক্ষীরার দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ মৎস্যচাষের (ইংরেজি Fish farming) উপর নির্ভরশীল। সরকারী হিসাবে, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে ৫৫ হাজার চিংড়ি ঘের (মৎস খামার) রয়েছে বেশির ভাগই বাগদা চিংড়ির চাষ হয় এবং বছরে ২২ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে[10] এবং উৎপাদন মান ও পরিমান বৃদ্ধিতে আধুনিকরনে বিভিন্ন মৎস চাষী ও মালিকপক্ষ তৎপর রয়েছে[11]। ইউরোপসহ বহি:বিশ্বে রপ্তানীকৃত শতকরা ৭০ভাগ চিংড়ি সাতক্ষীরা থেকে উৎপাদিত হয়। সাতক্ষীরার বাগদা ও গলদা চিংড়ি বহিঃবিশ্বে অনেক জায়গায় হোয়াইট গোল্ড নামে পরিচিত। চিংড়ি শুধু বিদেশে নয় দেশেও যথেষ্ট কদর রয়েছে[9]। চিংড়ি চাষের জন্যে প্রয়োজনীয় মাছের পোনা বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও সংগ্রহীত হচ্ছে (সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় এবং শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ও নওয়াবেকির হ্যাচারি থেকে) যা পূর্বে মৎস্য চাষীদের শতভাগ নির্ভর করতে হতো কক্সবাজারের হ্যাচারীর উপর [10]

বনজশিল্প

পাশ্ববর্তী সুন্দরবন এর কারণে সাতক্ষীরা বনজ সম্পদে যথেষ্ট সমৃদ্ধ। ব্রিটিশ শাসন আমল থেকেই সুন্দরবনের কাঠ, মধু ও পশুর চামড়া এবং নদীর মাছ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার তথা সাতক্ষীরার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি হয়ে ওঠে।

কৃষিজ পণ্য

ধান প্রধান কৃষিজ পণ্যের মধ্যে থাকলেও পাট, গম, পান পাতা স্থান নিয়ে আছে এবং প্রধান ফল আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, লিচু, সফেদা, জামরুল, কদবেল, বরই এবং পেয়ারা উৎপাদনে সাতক্ষীরার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাছাড়া সাতক্ষীরার আমের দেশে-বিদেশে অনেক সুনাম আছে। বাংলাদেশ থেকে সাতক্ষীরার আম সর্বপ্রথম বিদেশে রপ্তানি করা হয়। হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি আম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। [12][13]

কুটির শিল্প

দুগ্ধজাত হস্তচালিত তাঁত, নৌকা তৈরি, খেলনা, কাঠের আসবাবপত্র, বেত ও বাঁশজাত দ্রব্যাদি ও আসবাবপত্র। [14]

বৃহৎ শিল্প

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন বস্ত্রমন্ত্রী প্রয়াত এম, মনসুর আলীর ১৯৮০ সালের ১লা জুনে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি: ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং এটাই সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, ৩৩ একর জমির উপর গড়ে উঠা এই মিলটি দেশের অন্যতম লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। স্থানীয় ভাষ্যমতে ১৯৯২ সালে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর পরামর্শে দেশের লাভজনক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো যখন বিরাষ্ট্রীয়করণ শুরু হয় তখন তার মধ্যে পড়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল এবং অর্থনীতির গ্রাফ ক্রম নামতে থাকে[15]। ১মবার ১৯৯২ সালে মিল বন্দ হবার পর বিভিন্ন পর্যায়ে খোলার চেষ্টা করা হয় এবং বর্তমানে বন্ধ আছে। মিলটি চালুর পদক্ষেপে স্থানীয় অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হবার প্রত্যাশায় স্থানীয় জনগন।[16]

স্থল বন্দর

ভোমরা স্থল বন্দর

২রা জুন ১৯৯০ শুল্ক স্টেশন হবার পর ১১ই মে ১৯৯৫ ভোমরা স্থল বন্দর নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ৩০ একর জমির উপর শুল্ক স্টেশনটি অবস্থিত, ভোমরা স্থল বন্দর শুল্ক স্টেশন থেকে সরকার দৈনিক ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার রাজস্ব পাচ্ছে। ভোমরা স্থল বন্দর শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্র অনুসারে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত এবন্দর থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৯১৭ কোটি ৭১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩২ টাকা[17]। এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আনার, আপেল, আংগুর মাল্টা, আম, টমেটো, সয়াবিন বড়ি, মেথি মশলা সহ প্রায় ৮১ প্রকার পণ্য আমাদের দেশে আসে আবার আমাদের দেশ থেকে গার্মেন্টেসের জুট ও নারকেলের ছোবড়া সহ ১২/১৪ প্রকার ভারতে যায় এবং ভোমরা বন্দরে বর্তমানে ৭০০ থেকে ১০০০ শ্রমিকের কর্ম-সংস্থান। জাতীয় অর্থনীতির বিকাশে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ভোমরা স্থল বন্দর আজও পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দরের মর্যাদা পায়নি। এখানে উল্লেখ্য, কোলকাতা থেকে বেনাপোলের দূরত্ব ৮৪ কিলোমিটার কিন্তু কোলকাতা থেকে ভোমরার দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। ভোমরা পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তরিত হলে ব্যবসায়ীদের যাতায়াতের দূরত্ব কমবে কমপক্ষে ৬০ কিলোমিটার। তবে আশার কথা, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৪৫ বিঘা জমির উপর ৩৫ কোটি ব্যয় করে ওয়্যার হাউজ নির্মাণ করছে। এছাড়া রাস্তা সংস্কারে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

শিক্ষা

যশোর শিক্ষাবোর্ডের নিয়ন্ত্রণে সাতক্ষীরা এর শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, সাতক্ষীরায় ১টি মেডিকেল কলেজ, ২টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪৪ টি কলেজ, ১৩৫টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৫টি মাদ্রাসা রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন

  • মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ২ঃ দেবহাটা, শ্যামনগর উপজেলার কলারোয়া বাজার;
  • বধ্যভূমি ৬ঃ সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা, সাতক্ষীরা সরকারি স্কুলের পেছনে দীনেশ কর্মকারের বাড়ি ও সংলগ্ন পুকুর, বিনেরপোতা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, বাঁকাল ও গাঙ্গনী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, মাহমুদপুর হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকা (সাতক্ষীরা সদর), হরিনগর ও কাতখালী (শ্যামনগর);
  • স্মৃতিস্তম্ভ ৫ঃ বালিয়াডাঙ্গা ও কলারোয়া (কলারোয়া), গোপালপুর ও হরিনগর (শ্যামনগর), সাতক্ষীরা সদর;
  • স্মৃতিফলক ১ঃ মুরারীকাঠী (কলারোয়া);
  • স্মরণি ৩ঃ ঝাউডাঙ্গা শহীদ সিরাজ স্মরণি (সাতক্ষীরা সদর), শহীদ কাজল স্মরণি, শহীদ নাজমুল স্মরণি (দেবহাটা)।

প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা

প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার বিচারে সাতক্ষীরার স্থান যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। প্রধান স্থাপনা সমূহ :

চিত্তাকর্ষক ও দর্শনীয় স্থান

  • সুন্দরবন;
  • মান্দারবাড়ী সমুদ্র সৈকত - শ্যামনগর;
  • জমিদার বাড়ি ও যশোরেশ্বরী মন্দির - শ্যামনগর;
  • নলতা রওজা শরীফ - কালীগঞ্জ;
  • নীলকুঠি - দেবহাটা থানা;
  • মাইচম্পার দরগা;
  • লাবসা - সাতক্ষীরা;
  • জাহাজমারী বিল (এবি পার্ক) - কলারোয়া;
  • বৌদ্ধ মঠ - কলারোয়া;
  • তেঁতুলিয়া মসজিদ - তালা;
  • মোজাফফর গার্ডেন;
  • বনলতা বাগান ও মিনি পিকনিক স্পট - কালিগঞ্জ,সাতক্ষীরা;
  • আব্বাস গার্ডেন;
  • শ্যামনগর জমিদার বাড়ি (জমিদার হরিচরনের বাড়ি)- শ্যামনগর;
  • রেজওয়ান খানের জমিদার বাড়ি
  • দেবহাটা জমিদার বাড়ি
  • জাহাজঘাটা-ভুরুলিয়া, শ্যামনগর;
  • মাটির টালি তৈরির কারখানা - কলারোয়া, সাতক্ষীরা;
  • বনবিবির বটগাছ- দেবহাটা, সাতক্ষীরা;
  • কলাগাছি, সুন্দরবন;
  • আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার; মুন্সিগঞ্জ, শ্যামনগর;
  • ভোমরা স্থল বন্দর, সাতক্ষীরা;
  • শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহাসিক গোপালপুর স্মৃতিসৌধ;
  • রেডিও নলতা- নলতা, কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরা

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব

সরকারি স্কুলের তালিকা

সরকারি কলেজের তালিকা

পত্র-পত্রিকা

  1. দৈনিক সাতক্ষীরা নিউজ (বাংলা ও ইংরেজী)
  2. দৈনিক দৃষ্টিপাত
  3. পত্রদূত
  4. দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র।
  5. দৈনিক সাতনদি
  6. সাপ্তাহিক সূর্যের আলো
  7. লাল সবুজের কথা (অনলাইন)

আরও দেখুন

তথ্যসুত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে জেলার পরিচিতি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৮ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৬
  2. শিক্ষা প্রতিবেদন শিশু জরীপ ২০১০ অনুসারে
  3. {{তথ্যসূত্র =http://www.satkhira.gov.bd/site/officer_list/d8b93e16-1c4b-11e7-8f57-286ed488c766/জেলা-প্রশাসক
  4. আবহাওয়া সারমর্ম
  5. "মাসিক আবহাওয়া এর সারমর্ম"। ওয়েদারবেজ। ২০১৩। সংগৃহীত ৩০শে মে ২০১৩
  6. জ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, মাসুদ কামাল (১৯৮৬)। ব্যাঘ্রতট পরিক্রমণ
  7. পল্টু বাসার (১৯৯৮)। মৌয়াল
  8. স্রোত। ২০০০।
  9. "শিল্প ও বাণিজ্য"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  10. "সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে গড়ে উঠছে চিংড়ি হ্যাচারী"ভয়েস অব সাতক্ষীরা। ১৭ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৬
  11. "সাতক্ষীরা-পঞ্চগড়ে চিংড়ি চাষে ব্যাপক সাফল্য"বিডি কৃষি নিউজ (হৃদয়ে বাংলার কৃষি)। বিডি কৃষি নিউজ। ২৫ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৬
  12. "রপ্তানি হচ্ছে সাতক্ষীরার আম"দৈনিক আমাদের সময়। ৪ জুন ২০১৬।
  13. "কোন আম কখন খাবেন"প্রথম আলো। ২৭ মে ২০১৫।
  14. "সাতক্ষীরার গ্রামীণ কুটির শিল্পে দুর্দিন"। দৈনিক সাতক্ষীরা। ২৬ নভেম্বর ২০১৬। ১৯ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  15. "মিছিল-সমাবেশে উত্তাল সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল"। দেশের খবর। আগস্ট ৩, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  16. "সাতক্ষীরায় সার্ভিস চার্জের ভিত্তিতেচালু হলো সুন্দরবন টেক্সটাইল"। দৈনিক সমকাল। ৯ অক্টোবর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  17. "সমস্যার বোঝা মাথায় নিয়ে এগিয়ে চলেছে ভোমরা স্থল বন্দর"। খুলনা নিউজ। ১৪ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.