আলমডাঙ্গা উপজেলা
আলমডাঙ্গা উপজেলা বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা ।
আলমডাঙ্গা | |
---|---|
উপজেলা | |
বাংলাদেশে আলমডাঙ্গা উপজেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৫′৪৩″ উত্তর ৮৮°৫৭′১০″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | চুয়াডাঙ্গা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩৬৫ কিমি২ (১৪১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ৩,৪৫,৯২২ |
• জনঘনত্ব | ৯৫০/কিমি২ (২৫০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৯.৪% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ১৮ ০৭ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তন
৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের আলমডাঙ্গা উপজেলাটি খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্তর্ভুক্ত। আলমডাঙ্গা উপজেলা ২৩°৩৭' উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩°৫০' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৭' পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৮৯°০০' পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে অবস্থিত। এর উত্তর পার্শ্বে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর ও মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা, পূর্বে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ও ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলা, পশ্চিমে দামুড়হুদা উপজেলা ও মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা এবং দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা সদর ও দামুড়হুদা উপজেলা অবস্থিত।
ইতিহাস
নামকরণ
আলমডাঙ্গা উপজেলার নামকরণ নিয়ে তেমন কোন নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র পাওয়া যায় না । তবে কথিত আছে যে, একদা আলম ফকির নামে একজন কামেল সাধক, ইতিহাস প্রসিদ্ধ কুমার নদী সাঁতরিয়ে ডাঙ্গায় উঠে এবং আলমডাঙ্গার উপকন্ঠে তার আস্তানা গড়ে তোলেন; সেই থেকে ঐ সাধকের নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম রাখা হয় "আলমডাঙ্গা"।[2]
মুক্তিযুদ্ধে আলমডাঙ্গা
মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তৎকালীন নেতৃবৃন্দ চুয়াডাঙ্গা জেলাকে বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী ঘোষণা করে সরকার গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করলে এ অঞ্চলটি পাকিস্তানী বাহিনীর টার্গেট পয়েন্টে রুপান্তরিত হয়। ফলে এ অঞ্চলে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুহুর্মুহু প্রতিরোধ ও সম্মুখ যুদ্ধ লেগেই থাকে। আলমডাঙ্গায় সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধগুলো হচ্ছে- ১. হাড়গাড়ী সুকচা, বাজিদপুর যুদ্ধ- ১৩ আগষ্ট, ১৯৭১। এ যুদ্ধে ১জন শহীদ হন, ২. আলমডাঙ্গা সদরে সংঘটিত যুদ্ধ- ১২ নভেম্বর, ১৯৭১। এ যুদ্ধে ৪জন শহীদ হন।
মুক্তিবার্তা (লাল কভার) অনুযায়ী বর্তমানে আলমডাঙ্গা উপজেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যাঃ ৪৪৮ জন।
প্রশাসনিক এলাকা
আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১টি পৌরসভা এবং ১৫ টি ইউনিয়ন রয়েছে ।
♦ পৌরসভা ♦
- আলমডাঙ্গা পৌরসভা
♦ ইউনিয়ন ♦
- আইলহাস ইউনিয়ন
- ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন
- হারদী ইউনিয়ন
- কুমারী ইউনিয়ন
- বাড়াদী ইউনিয়ন
- গাংনী ইউনিয়ন
- খাদিমপুর ইউনিয়ন
- জেহালা ইউনিয়ন
- বেলগাছি ইউনিয়ন
- ডাউকী ইউনিয়ন
- জামজামী ইউনিয়ন
- নাগদাহ ইউনিয়ন
- খাসকররা ইউনিয়ন
- কালিদাসপুর ইউনিয়ন এবং
- চিৎলা ইউনিয়ন.
নদ-নদী
আলমডাঙ্গা উপজেলার অন্যতম নদীঃ মাথাভাঙ্গা নদী, কুমার নদ, নবগঙ্গা নদী[3][4] ভাটুই নদী ও মরা নদী। এছাড়াও এখানে রয়েছে ওয়াবদার খাল, জহুরুলনগর খাল, অণুপনগর খাল প্রভৃতি। এখানকার অন্যতম বিলগুলো হলোঃ গাড়িয়াল বিল, বোয়ালিয়া বিল, বলেশ্বরপুর-হাড়োকান্দি বিল, রাযশাবিল, বেলসাদপুর কাঁঠালিয়া বিল, মনিদহ বিল, চাকিলার বিল, খড়কাটি বিল প্রভৃতি। এছাড়া ঘোলদাড়ী বাজারে অবস্থিত নীলকুটিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুটির নদী অন্যতম।
শিক্ষা
আলমডাঙ্গা উপজেলায় শিক্ষার হার ৫৫.১৪%। আলমডাঙ্গা উপজেলায় বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হলোঃ
- এরশাদপুর একাডেমী
- আলমডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসা
- আলমডাঙ্গা পাইলট গাল্স হাই স্কুল
- আলমডাঙ্গা পাইলট হাই স্কুল
- আলমডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজ
- আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজ
- এম.এস.জোহা কৃষি কলেজ
অর্থনীতি
১৮৬২ সালে কলকাতার সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলে রেল পথে পূর্ববঙ্গের সঙ্গে আলমডাঙ্গার যোগাযোগ সুবিধাজনক থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। বর্তমানে এখানে প্রায় ৩৫টি হাট-বাজার রয়েছে। এ সকল হাটে বিভিন্ন ধরনের পশু, কৃষি পণ্য, তামাক, ভুট্টা প্রভৃতি ব্যাপক আমদানী ঘটে থাকে। আলমডাঙ্গা উপজেলায় প্রায় ১৫০টি চালের মিল রয়েছে। মিলগুলো থেকে উৎপাদিত চাল উপজেলার অভ্যন্তরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলার প্রায় ২৫% লোক ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত।
দর্শনীয় স্থান
কৃতী ব্যক্তিত্ব
- খোদা বক্স শাহ্ - একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সাধক ও গীতিকার।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে আলমডাঙ্গা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারী ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "আলমডাঙ্গা উপজেলার পটভূমি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯০, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬১৩। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।