কুমারখালী উপজেলা

কুমারখালী উপজেলা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের এক উল্লেখযোগ্য অংশ এই উপজেলার শিলাইদহ অঞ্চলে কাটিয়েছেন এবং এখানেই তিনি গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন।এই কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। এবং লালন সাইঁজির বাস্তুুুভিটা এইখানে।

কুমারখালী
উপজেলা
কুমারখালী উপজেলা
কুমারখালী
বাংলাদেশে কুমারখালী উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫১′২৩.৩০″ উত্তর ৮৯°৬′৫৩.৩৬″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাকুষ্টিয়া জেলা
কুমারখালী-খোকসা(যৌথ)কুষ্টিয়া-৪
সরকার
আয়তন
  মোট২৬৫.৮৯ বর্গ কি.মি কিমি ( বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট৩,১৯,০১৬.
সাক্ষরতার হার
  মোট৬৩.২১%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৪০ ৫০ ৭১
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান ও আয়তন

২৬৫.৮৯ বর্গকিলোমিটার (১০২.৬৬ বর্গমাইল) আয়তনের কুমারখালী উপজেলার পূর্বে খোকসা উপজেলা, পশ্চিমে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা, উত্তরে পাবনা সদর উপজেলা এবং দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলা অবস্থিত।[1] গড়াই নদীর কোল ঘেসে এর অবস্থান।

ইতিহাস

কুমারখালী অনেক পুরনো একটি উপজেলা। ১৩টি পরগনা নিয়ে ১৮৫৫ সালে কুমারখালী থানা গঠিত হয়, যেটি ১৮৫৭ সালে পাবনার একটি মহকুমায় উন্নীত হয়; তবে ১৮৭১ সালে তা অবলুপ্ত হয়ে কুষ্টিয়া মহকুমার অংশ হিসেবে নদীয়া জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়।[2] ১৯৮৩ সালে কুমারখালী থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।[3]

নামকরণ

প্রচলিত মতানুসারে, কুমার নদের নাম আনুসারে এই এলাকার নামকরণ "কুমারখালী" হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধে কুমারখালী

ভৌগোলিক উপাত্ত

ভূপ্রকৃতি

মৃত্তিকা

নদ-নদী

কয়া ইউনিয়নে পদ্মা নদী

কুমারখালী উপজেলায় অনেকগুলো নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে পদ্মা নদী, গড়াই নদী, কুমার নদ, কালীগঙ্গা নদী, ও ডাকুয়া খাল নদী।[4][5] কুমারখালী উপজেলাটি গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত।

সাংষ্কৃতিক বৈশিষ্ট্য

ভাষা

বাংলা

উৎসব

একুশে বইমেলা, বৈশাখী মেলা,

খেলাধুলা

প্রশাসনিক এলাকা

১৮৭টি মৌজা ও ২০২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত কুমারখালী উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে;[1] এগুলো হলোঃ

  • পৌরসভাঃ কুমারখালী
  • ইউনিয়নঃ * কয়া, * চর সাদিপুর, * চাপড়া, * চাঁদপুর, * জগন্নাথপুর, * নন্দলালপুর, * পান্টি, * বাগুলাট, * যদুবয়রা, * শিলাইদহ এবং * সদকি

নির্বাচনী এলাকা ও জনপ্রতিনিধি

  1. উপজেলা চেয়ারম্যান- আব্দুল মান্নান খাঁন। আওয়ামীলীগ
  2. উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান - আফজাল হোসেন। জামায়াত
  3. উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)- আনজুয়ারা জোসনা।জামায়াত
  4. পৌরসভার মেয়র- সামছুজ্জামান অরুন।
  5. সদকী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান - অাব্দুল মজিদ।
  6. পান্টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান - হাফিজুর রহমান।
  7. জগন্নাথপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান - ফারুক খাঁন।
  8. নন্দলালপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান - নওসের আলী। #শিলাইদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান- সালাহ্উদ্দীন খান তারেক

জনসংখ্যার উপাত্ত

কুমারখালী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩,১৫,১৩৮ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১,৬০,৭৮১ জন ও নারী ১,৫৪,৩৫৭ জন। এখানে বুনো, বাঁশফোঁড় প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।[2]

ধর্ম

এখানে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষ বসবাস করে। এছাড়াও এখানে রয়েছে বেদে ও বৈরাগী (বাউল সমাজ) সম্প্রদায়।

স্বাস্থ্য

  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স - ১টি;
  • উপজেলা মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র - ১টি;
  • ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র - ১৪টি।

শিক্ষা

  • সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ ১৪৬ টি;
  • সরকারী কলেজঃ ১টি
  • বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটঃ ৩ টি;
  • সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ঃ ১টি;
  • উচ্চ বিদ্যালয়ঃ ৫২টি;
  • মাদ্রাসাঃ ২১টি;
  • কলেজঃ ৯টি।
  • উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:কুমারখালি সরকারী কলেজ(স্থাপিত:১৯৭০), কুমারখালি এম এন পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় (স্থাপিত:১৮৫৬),কুমারখালি সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়(স্থাপিত:১৮৬২)

কৃষি

ধান, মুগ ডাল, খেসারির ডাল, তরমুজ, বাঙ্গি, বাদাম ইত্যাদি জন্মে। এছাড়াও আখ এবং প্রচুর পরিমাণ পাট, সর্ষে জন্মে। অনেক ভালো মানের গবাদি পশুপালন করার জন্য এই এলাকার সুনাম রয়েছে।

অর্থনীতি

শিল্প-প্রতিষ্ঠান

এখানে মোট ৫,৯৯৩ টি (বড় - ৯টি, মাঝারি - ২৭০টি এবং ক্ষুদ্র - ৫,৭১৪টি) শিল্প-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য শিল্প-প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইষ্টার্ন ফেব্রিক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

সড়কপথ

মোট রাস্তার পরিমান ৮৮১ কিলোমিটার (পাকা ১৪২ কি:মি: এবং কাঁচা ৭৩৯ কি:মি:)।

রেলপথ

মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য ১৯.৫ কিলোমিটার। রেলস্টেশন-এর সংখ্যা ২টি।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

  1. ফকির লালন সাঁই - বাউল সাধক;
  2. কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের - লোক কবি;
  3. মীর মশাররফ হোসেন - সাহিত্যিক;
  4. বাঘা যতীন - অগ্নিযুগের বিপ্লবী;
  5. জলধর সেন - ভ্রমণ কাহিনী ও উপন্যাস লেখক
  6. লিটন আব্বাস - টিভি,মঞ্চ নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক;
  7. মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা - সাহিত্যিক;
  8. শুভেন্দু বিশ্বাস - বিশ্বখ্যাত হরবোলা শিল্পী;
  9. গোলাম কিবরিয়া - রাজনীতিবিদ;
  10. আবুল হোসেন তরুন - রাজনীতিবিদ;
  11. আব্দুল আওয়াল মিয়া - রাজনীতিবিদ;
  12. নুরে আলম জিকু - রাজনীতিবিদ;
  13. আবু তালেব, বীর উত্তম - বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী;
  14. শরফুদ্দীন আহমেদ, বীর উত্তম - বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী।
  15. কাজী মিঞাজান -ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকারী
  16. দেলওয়ার হুসাইন -শিক্ষাবিদ

দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা

  • বৌদ্ধ মন্দির;
  • বালিয়াকান্দি শাহী মসজিদ;
  • কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের বাস্তুভিটা ও ছাপাখানা-কুমারখালী ও জাদুঘর।
  • আলাউদ্দিন আহম্মেদ শিক্ষা পল্লী পার্ক।
  • ইকো পার্ক - কুমারখালী;
  • শিশু পার্ক - কুমারখালী;
  • রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী - শিলাইদহ;
  • লালন শাহ্-এর মাজার ও লালন একাডেমি - ছেউড়িয়া;
  • মীর মশাররফ হোসেন সেতু - কুমালখালী টু কুষ্টিয়া হাই ওয়ে;
  • মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা - লাহিনীপাড়া;
 ★শিলাইদহ পাঁচ তলা কাঠের বাড়ি..  রানী মন্দির..  পদ্মাচর★

বিবিধ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. শেখ মোঃ বদরুল আলম টিপু (৯ এপ্রিল ২০১৫)। "কুমারখালী উপজেলা"বাংলাপিডিয়া - বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৬
  2. ref name="নদীকোষ">ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯০, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯
  3. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ৬১২, ISBN 984-70120-0436-4

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.