ফকিরহাট উপজেলা

ফকিরহাট উপজেলা বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।

ফকিরহাট
উপজেলা
ফকিরহাট
বাংলাদেশে ফকিরহাট উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৪৬′৮″ উত্তর ৮৯°৪২′৫″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাবাগেরহাট জেলা
আয়তন
  মোট১৬১ কিমি (৬২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (১৯৯১)[1]
  মোট১,২৩,৯৫৬
  জনঘনত্ব৭৭০/কিমি (২০০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৪০ ০১ ৩৪
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

ইতিহাস

১৯৬৯ সালের ০৭ জুন ফকিরহাট পুলিশ স্টেশন স্থাপিত হয়। ১৯৮৩ সালের ১ আগস্ট ফকিরহাটকে মান উন্নিত থানা হিসাবে পরিগণিত করা হয়। উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছুই জানা যায় না। তবে জনশ্রুতি আছে যে, ফকির মঙ্গল শাহ্ নামে এক আধ্যাতিক মুসলিম সাধক ভৈরব নদীর দক্ষিণ তীরে পুলিশ স্টেশনের কাছে তার আস্তানা তৈরী করেন। জানা যায় যে, অলৌকিক ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এই সাধক পুরষ। কালে কালে তার আস্তানাকে কেন্দ্র করে দোকান পাট বসতে থাকে। কালক্রমে তা বৃদ্ধি ও প্রসার লাভ করে হাটে রুপান্তরিত হয়। ফকিরের আস্তানাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এই হাট পরবর্তীতে ফকিরহাট নামে পরিচিতি লাভ করে।

অবস্থান ও আয়তন

ফকিরহাট ২২.৭৮০৬° উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯.৭০৮৩° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। আয়তন হচ্ছে ১৬০.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। ফকিরহাট উপজেলা বাগেরহাট জেলার পশ্চিমাংশে অবস্থিত। উপজেলাটির পশ্চিমে খুলনা জেলার রূপসা উপজেলা, পূর্বে বাগেরহাট জেলার বাগেরহাট সদর উপজেলা, দক্ষিণে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলা এবং উত্তরে মোল্লাহাট উপজেলা অবস্থিত।

প্রশাসনিক এলাকা

ফকিরহাট উজেলায় ১ টি উপজেলা পরিষদ, ৮ টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং ১ টি পৌরসভা রয়েছে। উপজেলাটিতে উপজেলা প্রশাসনের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার সংগঠন কাজ করছে। এই উপজেলার ইউনিয়নগুলো হচ্ছে -

  1. বেতাগা ইউনিয়ন
  2. লখপুর ইউনিয়ন
  3. পিলজংগ ইউনিয়ন
  4. ফকিরহাট ইউনিয়ন
  5. বাহিরদিয়া-মানসা ইউনিয়ন
  6. নলধা-মৌভোগ ইউনিয়ন
  7. মূলঘর ইউনিয়ন এবং
  8. শুভদিয়া ইউনিয়ন

ইতিহাস

১৯৭১ সালে রাজাকার বাহিনী এখানে অনেক নির্যাতন চালায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় শুভদিয়া ইউনিয়নে দেয়াপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের শিবিরে রাজাকারা আকস্মিক হামলা করেন।

জনসংখ্যার উপাত্ত

শিক্ষা

ফকিরহাট শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান তিনটি কলেজ, একটি কারিগরি কলেজ, ২৪টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ১৪টি মাদ্রাসা, ৫৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে. উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান মুলঘর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৭) ,আট্টাকা কেরামত আলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বাহিরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯২) এবং দেয়াপাড়া হাই স্কুল।

অর্থনীতি

এখানকার অধিকাংশ লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। জনসংখ্যার ৩৮.১৫% কৃষি এবং কৃষি শ্রমিক, মাছ ধরায় ২.৮১%, মজুরি শ্রমিক হিসেবে ৬.০৭%, ব্যবসায়ী ১৪.৮৬%, পরিবহন ৩.০১%, সেবা কাজে ৮.০৩% এবং অন্যান্য জীবিকায় ৯.৮৬% নিযুক্ত আছে।

বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ

০১. মরহুম খান এ সবুর  :প্রাক্তন মন্ত্রী এবং রাজনীতিবিদ।

০২. স্বর্গীয় ব্রজলাল শাস্ত্রী     : শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক এবং প্রখ্যাত আইনবিদ

০৩. মরহুম ড. নীলিমা ইব্রাহিম         : প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাহিত্যিক।

০৪. ডাঃ গোলাম আলী ফকি: প্রাক্তন উপাচার্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং

  আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পর্ন্ন বিজ্ঞানী এবং প্রফেসার  

  উদ্ভিদ রোগ বিদ্যা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি

  বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

০৫. কাজী আজহার আলী    : প্রাক্তন সচিব, শিক্ষানুরাগী এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের

  বিকল্প নির্বাহী পরিচালক এবং বর্তমান উপাচার্য

  বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়।

০৬. শেখ হুমাযুন কবির       : প্রাক্তন রাষ্ট্রদুত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর মহা-

  পরিচালক এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী  

  প্রতিনিধি।

০৭. ডঃ সেকেন্দার আলী      : চেয়ারম্যান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট

                                                              বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

০৮. ডাঃ মোহরআলী                       : ইতিহাসে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ইতিহাস প্রনেতা এবং

  বর্তমান অধ্যাপক  রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়।

০৯. ডঃ জাহানারা              : বিভাগীয় প্রধান, বি.এল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, খুলনা।

১০. ডাঃ শেখ আঃ ওয়াহাব    : বর্তমান লন্ডন প্রবাসী।

১১. সৈয়দ হায়দার              : কবি সাহিত্যিক  গীতিকার এবং কলামিষ্ট।

১২. জনাব ফজলুল রহমান খন্দকা : পুলিশ বিভাগের আইজি পদে অধিষ্টিত

ছিলেন। বৃটিশ সরকার কর্তৃক ইন্ডিয়ান পুলিশ

মেডেল প্রাপ্ত।

১৩. কমরেড সচীন বসু        :      কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা

দিক্ষীত রাজনিতীবিদ

১৪. ডাঃ এস.এ মালেক       :       চিকিৎসক, রাজনিতীবিদ এবং বুদ্ধিজীবি।

১৫. আলহাজ ডাঃ শেখ বনি আমীনঃ চিকিৎসক, সমাজসেবী, রাজনীতিবিদ এবং

বীর মুক্তিযোদ্ধা।

১৬. জনাব শরীফুজ্জামান      : তরুন প্রজন্মের প্রখ্যাত সাংবাদিক, দৈনিক প্রথম আলোর

               সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।

১৭. কবি আজিম উদ্দিন      : ফকিরহাট অকালের একজন প্রাচিন কবি।

১৮. সফিউদ্দিন আহম্মদ       : সাহিত্যিক এবং বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী।

১৯. মোল্লা আফতাব উদ্দিন       : ফকিরহাট অকালের একজন প্রাচীন কবি।

২০. মরহুম সৈয়দ পানাউল হক  : বর্তমান প্রাজন্মের কবি।

২১. সৈয়দ আশরাফুল হক (টুকু): সাম্প্রতিক কালের মমনশীল কবি।

২২. শরীফ খান                               : সাহিত্যিক বণ্যপ্রাণী, পশুপাখির গবেষক এবং

    একজন পাখি বিশারদ।

২৩. মরহুম সৈয়দ মহিদুল ইসলাম : নিজ গ্রাম সৈয়দ মহল্লা। চলচিত্র পরিচালক

অভিনেতা এবং নির্দেশক

২৪. সজল কুমার ঘোষ : সমাজসেবক ২৫. বিশিষ্ট ছাত্রনেতা মরহুম শেখ আব্দুল ওয়াদুদ খোকন।

ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ত

০১. জনাব আঃ রাজ্জাক (রাজ), নিজ গ্রাম সৈয়দমহল্লা, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট

    দলের ক্রিকেটার।

০২. জনাব আঃ মজিদ-মিজ গ্রাম বালিয়াডাঙ্গা। ফুটবল খেলোয়ার। ঐতিহ্যবাহী

     ঢাকা মোহামেডান ক্লাবের সাবেক অধিনায়ক।

০৩. জনাব মিজানুর রহমান(শরী) নিজ গ্রাম আট্ট্রকী, ফুটবল খেলোয়ার, খুলনা

     মুসলিম স্পোটিং ক্লাবের সাবেক অধিনায়ক।

০৪. জনাব আলতাফ হোসেন (টিপু) ক্রীড়া সংগঠক এবং বাংলাদেশ ফুটবল

     ফেডারেশনের তালিকাভূক্ত ১ম শ্রেণীর রেফারী ও বিভিন্ন খেলায় পারদর্শী

ঐতিহাসিক স্থাপনা ও স্থান

০১. শাহ আউলিয়া (রাঃ) এর  মাজার বালিয়াডাঙ্গা।

০২. জোড়া শিব মন্দির দোহাজারী (প্রাচীন পুরাকৃত্তি)।

০৩. কামটার দীঘি-খানজাহান আলী (রাঃ) কর্তৃক খননকৃত।

০৪. লাল চন্দ্রপুর দীঘি ও মসজিদ।

০৫. মকরউল্লাহ শাহের দরবার।

০৬. রঙ্গুসারে দিঘী শাহপুর।

০৭. নিলকর সাহেবদের কুঠির, মূলঘর।

০৮. বুড়ির বটতলা মাজার।

০৯. মানসা কালিবাড়ী।

১০. সাধের বটতলা মৌসুমী গ্রাম্য শৈল্য এবং পুজা উৎসব হয়।

১১. খড়রিয়া জমিদার বাড়ী জয়পুর নলধা বড় জিলা ও মেঝে জিলাজ মিদারদের খাজনা আদায়ের কাচারী বর্তমান বসতবাড়ী এবং সাব জেল বিদ্যমান।

১২. টাউন নওয়াপাড়া জমিদার বাড়ী-জমিদারদের ব্যবহৃত একাধিক সুরঙ্গ,অট্রালিকা পূজা মন্ডপ এবং বহু দীঘির অসিত্মত্ত্ব বিদ্যমান।

১৩. মহিষ প্রজনন কেন্দ্র-দেশের একমাত্র মহিষ খামার, শুকদাড়া, ফকিরহাট।

১৪. খুলনা বিভাগীয় শিশু সদন এবং পঙ্গু পুনরবাসন কেন্দ্র, মূলঘর, ফকিরহাট।

বিবিধ

বাংলাদেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন কেন্দ্র ফকিরহাট উপজেলায় অবস্থিত।যার পাশাপাশি সরকারি ভেড়ার খামার অবস্থিত ফকিরহাটে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে ফকিরহাট"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারী ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.