সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি:

সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি: ৩৩ একর জমির উপর গড়ে উঠা সাতক্ষীরার প্রথম এবং একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। ২৯.৫৬ একর জমির উপর ১৯৮০ সালে বিটিএমসি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৮৩ সাল হতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। ২০১১ সালের জুন মাসে সরকারী ভাবে লেড অফ ঘোষণা করা হয় এবং অতপরঃ সার্ভিস চার্জ পদ্ধতির মাধ্যমে কার্যক্রম চলছে।

সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি:
গঠিত১৯৮০
ধরণসরকারী
আইনি অবস্থাসার্ভিস চার্জ পদ্ধতির মাধ্যমে কার্যক্রম চলছে
উদ্দেশ্যস্থানীয় বেকার সমস্যা দূরীকরন ও স্ব-নির্ভরতা অর্জন
সদরদপ্তরসাতক্ষীরা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে কাজ করে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা
প্রধান প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন
স্টাফ
৪৭
ওয়েবসাইটবাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন

ইতিহাস

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বেকার সমস্যা দূরীকরন ও স্ব-নির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের অনুন্নত এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল স্থাপনের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। ১ জুন ১৯৮০, তৎকালীন বস্ত্রমন্ত্রী জনাব এম, মনসুর আলী ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ৬ অক্টোবর ১৯৮৩। প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের ২৪,৯৬০টি টাকু বিশিষ্ট স্পিনিং/সুতা উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ২৬০টি মেশিন নিয়ে যাত্রা শুরু করে। স্থানীয় পর্যায়ে ১৫০০-১৭০০ জন নারী-পুরুষ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। ১৯৮৩ হতে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক অবস্থায় ছিল।[1][2]

সম্পদের বিবরণ

সমগ্র জমির পরিমাণ ২৯.৪৭ একর, অবকাঠামো এর মধ্যে রয়েছে কারখানা ভবন, গুদাম, ওয়ার্কসপ, অফিসসমূহ, পুকুর, জামে মসজিদ, বিদ্যালয়, বিশ্রামাগার, ক্লাব, আবাসিক ভবন ও টিনসেড (বর্তমানে অধিকাংশই বসবাস অনুপযোগী)। এছাড়া পতিত জমিতে বিভিন্ন শ্রেণীর প্রচুর সংখ্যক ফলজ (কিছু ব্যতিক্রমধর্মী যেমন গামওয়েল ও সৌদি খেজুর গাছ উল্লেখযোগ্য), বনজ ও ঔষধি গাছ রয়েছে।[1]

অর্থনৈতিক অবস্থা

প্রকল্প ব্যয়

  1. স্থানীয় মুদ্রাঃ ২১৭১.৫৬ লক্ষ টাকা।
  2. বৈদেশিক মুদ্রাঃ ১০৫৫.৯৮ লক্ষ টাকা।

বর্তমান ঋণের অবস্থা

বিবরণপরিমান (লক্ষ টাকায়)[1]
এডিপি লোন২৬০.০০
আইডিএ ক্রেডিট১.৫১
ইকুইটি১৩৮৬.৫১
বিটিএমসি হইতে লোন(সরকারি)৪২২১.০০
বিটিএমসি চলতি হিসাব৪০৭.০০
অন্যান্য১৭.৭১

বর্তমান পরিস্থিতি

ক্রমাগত লোকসানের কারণে লোকসান পরিহারের লক্ষ্যে সরকারি সিদ্ধান্তমতে কাপড়ের ইউনিটটি বন্ধ করে দিয়ে তদস্থলে ১৯৯৫ ইং সনে নীলকমল ইউনিট নামে চীন দেশ হতে আমদানীর মাধ্যমে ১৪,৪০০টি টাকু বিশিষ্ট সুতা তৈরীর মেশিনারীজ স্থাপন করে সুতা উৎপাদন হতে থাকে। রাষ্ট্রায়ত্ব মিলটি সরকারি তহবিল সরবরাহকালে সন ভিত্তিক লাভ/লোকসানের তথ্য নিম্নরূপ : (লক্ষ টাকায়)

সনমুল ইউনিট (তাঁত ইউনিটসহ)নীলকমল ইউনিটসনমুল ইউনিট (তাঁত ইউনিটসহ)নীলকমল ইউনিট
লাভলোকসানলাভলোকসানলাভলোকসানলাভলোকসান
১৯৮৩-৮৪২৫.১০---১৯৯০-৯১২২৮.৭৪---
১৯৮৪-৮৫২০২.১৯---১৯৯১-৯২২০৮.৪১---
১৯৮৫-৮৬২৭৮.১৮---১৯৯২-৯৩৪.৬৮---
১৯৮৬-৮৭৩৫৪.০০---১৯৯৩-৯৪-৩৪৯.৪৭--
১৯৮৭-৮৮২৮৭.০০---১৯৯৪-৯৫-১৪৯.৮৩--
১৯৮৮-৮৯৫৩২.১৩---১৯৯৫-৯৬-৩৩৫.৫৬-১৯৮.৬৫
১৯৮৯-৯০৩২৯.৮৪---১৯৯৬-৯৭-৫৪৪.১০-১৬৩.০২

আধুনিক যুগে বে-সরকারি বস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটায় তাদের উৎপাদিত পন্য প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে না পারায় দেশের বিরাজমান বিদ্যুত ঘাটতি সময়ে সময়ে সরকার ঘোষিত জাতীয় বেতন-মজুরী কমিশন বাস্তবায়নের ফলে বেতন-মজুরী খাতে ব্যয়বৃদ্ধি সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক বিদ্যুত ইউনিট রেট বৃদ্ধিতে বিদ্যুত খরচ বৃদ্ধি, বিদ্যুত বিভ্রাট ও যন্ত্রাংশের অভাব ইত্যাদি জনিত কারণে লোকসান হতে থাকে। ১৯৯৩ সাল হতে ক্রমাগত লোকসানের কারণে লোকসান পরিহারের লক্ষ্যে সরকারি সিদ্ধান্তমতে কাপড়ের ইউনিটটি বন্ধ করে দিয়ে তদস্থলে ১৯৯৫ ইং সনে নীলকমল ইউনিট নামে চীন দেশ হতে আমদানীর মাধ্যমে ১৪,৪০০টি টাকু বিশিষ্ট সুতা তৈরীর মেশিনারীজ স্থাপন করে সুতা উৎপাদন হতে থাকে। সে সময় রাষ্ট্রয়ত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠানটি চালু রেখে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকার সমস্যা দুরীকরণের লক্ষ্যে সরকারি সিদ্ধান্তমতে সার্ভিস চার্জ পদ্ধতি চালু করা হয়। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ও ২০০৭-০৮ সনে দেশে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে সুতার বাজার অত্যন্ত মন্দা থাকায় সার্ভিসচার্জ পার্টিগন ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় অপারগতা প্রকাশ করে চুক্তির অবসান ঘটান। ফলে ২০০৮ সনের নভেম্বর মাস হতে মিলটির উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।[1] নারায়ণগঞ্জের ঝুমুর এন্টারপ্রাইজের মালিক নিরঞ্জন সাহা ২০১০ সালে সার্ভিস চার্জের ভিত্তিতে এ মিলটি বিটিএমসির কাছ থেকে দু'বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন। মিলটি থেকে উৎপাদিত ৩২ কাউন্টের প্রতি ৪০০ পাউন্ডের এক বেল সুতা তৈরির মজুরি হিসাবে ৭ হাজার ৩০০ টাকা মিল কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। ইজারা নেওয়ার পর মিলটির নীলকমল ইউনিটটি চালু করা হয়। নীলকমল ইউনিটে ৩ শিফটে ৪১০ শ্রমিক, ১৫ কর্মচারী ও ৫ কর্মকর্তা কর্মরত, এ ইউনিটের সফলতার ফলে বিটিএমসি সাতক্ষীরার সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলের মূল ইউনিটও চালুর উদ্যোগ নেয়।[3][4] ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জেলা পর্যায়ে উৎপাদনে সর্বোচ্চ মূসক সম্মাননা পায় সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্, সাতক্ষীরা।[5]

তথ্যসূত্র

  1. "সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি:"বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৭
  2. "মিছিল-সমাবেশে উত্তাল সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল"। দেশের খবর। আগস্ট ৩, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  3. "সাতক্ষীরায় সার্ভিস চার্জের ভিত্তিতেচালু হলো সুন্দরবন টেক্সটাইল"। দৈনিক সমকাল। ৯ অক্টোবর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৬
  4. "সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লিঃ"বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন (বিটিএমসি)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৭
  5. "১১৯-ব্যক্তি-ও-প্রতিষ্ঠান-পেল-মূসক-সম্মাননা"। দৈনিক জনকণ্ঠ। ১৩ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৭

বহিঃসংযোগ

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ করপোরেশন

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.