বরিশাল জেলা
বরিশাল জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি ১৭৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরের পূর্বতন নাম চন্দ্রদ্বীপ। দেশের খাদ্যশষ্য উৎপাদনের একটি মূল উৎস এই বৃহত্তর বরিশাল। একে বাংলার 'ভেনিস' বলা হয়। বরিশাল দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নদীবন্দর।[2]
বরিশাল | |
---|---|
জেলা | |
![]() বরিশাল টাউন হল | |
![]() বাংলাদেশে বরিশাল জেলার অবস্থান | |
![]() ![]() বরিশাল ![]() ![]() বরিশাল | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৪৮′০″ উত্তর ৯০°২২′১২″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | বরিশাল বিভাগ |
আয়তন | |
• মোট | ২৭৯১ কিমি২ (১০৭৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২৩,২৪,৩১০ |
• জনঘনত্ব | ৮৩০/কিমি২ (২২০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬১.২% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৮২০০ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ১০ ০৬ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
আয়তন ও অবস্থান
উত্তরে চাঁদপুর, মাদারিপুর ও শরিয়তপুর জেলা; দক্ষিণে ঝালকাঠি, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা; পূর্বে লক্ষ্মীপুর, ভোলা জেলা ও মেঘনা নদী এবং পশ্চিমে পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও গোপালগঞ্জ জেলা অবস্থিত।
- নদ-নদী
মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, বিষখালী, কীর্তনখোলা, তেতুলিয়া, কালাবদর, সন্ধ্যা ইত্যাদি।
ইতিহাস
নামকরণের ইতিহাস
বরিশালের নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। কিংবদন্তি থেকে জানা যায়, পূর্বে এখানে খুব বড় বড় শাল গাছ জন্মাতো; আর শাল গাছ থেকেই 'বরিশাল' নামের উৎপত্তি। 'আইতে শাল, যাইতে শাল / তার নাম বরিশাল' প্রবাদটি উল্লেখ্য। আবার, কেউ কেউ দাবি করেন যে, পর্তুগীজ বেরি ও শেলির প্রেমকাহিনীর জন্য বরিশাল নামকরণ করা হয়েছে। অন্য এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায়, গিরদে বন্দরে (গ্রেট বন্দর) ঢাকার নবাবদের বড় বড় লবণের গোলা ও চৌকি ছিল। ইংরেজ ও পর্তুগীজ বণিকরা বড় বড় লবণের চৌকিকে 'বরিসল্ট' বলতো। আবার, অনেকের ধারণা, এখানকার লবণের দানাগুলোর আকার বড় বড় ছিল বলে 'বরিসল্ট' বলা হতো। পরবর্তিতে এ শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে বরিশাল নামের উৎপত্তি হয়েছে।
সাধারণ ইতিহাস
বাকেরগঞ্জে ম্যাজিস্ট্রেসি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৭৯৭ সালে রেগুলেশন-৭ অনুযায়ী বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ নিয়ে বাকেরগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সময়ের প্রভাবশালী জমিদার আগা বাকের খানের নামানুসারে এ জেলার নামকরণ হয়। ১৮০১ সালের ১লা মে স্যার জন শ্যোর এ জেলার সদর দপ্তর বর্তমানে বরিশাল শহরে স্থানান্তরিত করেন। পরবর্তীতে বরিশাল নামেই এ জেলা পরিচিতি পায়। ১৮১৭ সালে এজেলা একটি কালেক্টরেটে পরিণত হয়। ১৮২৯ সালে ঢাকা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে এই জেলা ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হয়। যে চারটি কালেক্টরেট নিয়ে ঢাকা বিভাগ বা কমিশনারশিপ গঠিত এটি তারই একটি। এটি কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ মাইল পূর্বে অবস্থিত ছিল। সেসময় জেলার আয়তন ছিল ৪,০৬৬ বর্গমাইল (১৮৭২ সাল অনুসারে) যা বর্তমান মাদারীপুর, বরিশাল, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। ১৮৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত 'Calcutta Gadget' থেকে তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার সীমানার উল্লেখ পাওয়া যায়, তাতে বলা হয়, "বিশদভাবে এই জেলার উত্তরে ফরিদপুর, পশ্চিমে ফরিদপুর ও বলেশ্বর নদী যা যশোর থেকে পৃথক করেছে, দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর এবং পূর্বে মেঘনা নদী ও এর মোহনা।"
যে গঙ্গা বা পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার সম্মিলিত জলরাশি বাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত ব-দ্বীপের নিম্নভাগে এ জেলার অবস্থান, আর এটি ২১ ডিগ্রি থেকে ২৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ ডিগ্রি থেকে ৯১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত। সংক্ষেপে এর সীমারেখা হচ্ছে: উত্তরে ফরিদপুর, পশ্চিমে ফরিদপুর ও বালেশ্বর নদী ( এ নদী জেলাটিকে যশোর থেকে পৃথক করেছে), দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পূর্বে মেঘনা ও তার মোহনা। উত্তর থেকে দক্ষিণে এ জেলার দৈর্ঘ্য হচ্ছে প্রায় ৮৫ মাইল আর দক্ষিণ শাহবাজপুর দ্বীপসহ এর প্রশস্ততা হচ্ছে প্রায় ৬০ মাইল। এর আয়তন হচ্ছে প্রায় ৪,৩০০ বর্গমাইল।
এ জেলায় গ্রাম ও শহরের সংখ্যা ৩৩১২ টি হবে বলে মনে হয়। ভূমি রাজস্ব হচ্ছে প্রায় ১৩ লাখ ৭০ হাজার রুপি (১৩৭,০০০ পাউন্ড) এবং সব উৎস থেকে প্রাপ্ত মোট রাজস্বের পরিমাণ হচ্ছে ১৬ লাখ রুপি। স্থানীয় প্রশাসনের ব্যয় তিন লাখেরও কম।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
বরিশাল জেলার উপজেলাগুলি হল-
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরিশাল জেলার মোট জনসংখ্যা ২৩,২৪,৩১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১,৩৭,২১০ জন এবং মহিলা ১১,৮৭,১০০ জন। মোট পরিবার ৫,১৩,৬৭৩টি।[3]
শিক্ষা
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরিশাল জেলার সাক্ষরতার হার ৬১.২%।[3]
চিত্তাকর্ষক স্থান
- শাপলা বিল,উজিরপুর,বরিশাল।
- বিবির পুকুর,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- ব্রজমোহন কলেজ,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- বরিশাল মহাশ্মশান,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- জীবনানন্দ দাশ এর বাড়ি(ধানসিঁড়ি),বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিউদ্দীনের বাসভবন,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- অক্সফোর্ড মিশন গীর্জা,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- বেল ইসলামিয়া হসপিটাল,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- বঙ্গবন্ধু উদ্যান(বেলস পার্ক),বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- ৩০ গোডাউন,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- ৩০ গোডাউন বধ্যভূমি,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- অশ্বিনী কুমার টাউন হল।,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- এবাদুল্লাহ মসজিদ,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- শ্বেতপদ্ম পুকুর,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- মুকুন্দ দাসের কালিবাড়ী,বরিশাল সদর উপজেলা,বরিশাল
- দুর্গাসাগর দিঘী,বাবুগঞ্জ উপজেলা,বরিশাল
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়,বরিশাল
- বাইতুল আমান জামে মসজিদ(গুঠিয়া মসজিদ),উজিরপুর উপজেলা,বরিশাল
- মাহিলারা মঠ।
- সংগ্রাম কেল্লা।
- শরিফলের দুর্গ।
- শের-ই-বাংলা জাদুঘর।
- শংকর মঠ।
- মাধবপাশা জমিদার বাড়ি
- লন্টা বাবুর দিঘী (লাকুটিয়া)।
- কবি বিজয়গুপ্তর * মনসামঙ্গল কাব্যে উল্লেখিত মনসা মন্দির।]]
- আদম আলী হাজীর গলি।
- পাক্কা বাড়ি দূর্গ (মেহেন্দিগঞ্জ)
- লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি( বরিশাল সদর উপজেলা বরিশাল)
- কড়াপুর মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ ( বরিশাল সদর বরিশাল)
- নাটু বাবুর জমিদার বাড়ি
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
- অশ্বিনী কুমার দত্ত
- কামিনী রায়
- আবুল কাশেম ফজলুল হক
- কুসুমকুমারী দাশ
- জীবনানন্দ দাশ
- আরজ আলী মাতুব্বর
- বেগম সুফিয়া কামাল
- উৎপল দত্ত
- বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর
- শহীদ তারেকশ্বর সেনগুপ্ত
- মাওলানা ফজলুল করীম
- আগা বাকের খান
- হানিফ সংকেত
- আবদুর রহমান বিশ্বাস
- সেক্টর কমান্ডার মেজর আব্দুল জলিল
- ডঃ সুরেন্দ্র নাথ
- ডঃ কামাল হোসেন
- আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
- মোশাররফ করিম
- গোলাম মুস্তাফা
- সুরকার আলতাফ মাহমুদ
- অমৃত লাল দে
- সরদার ফজলুল করিম
- মুকুন্দ দাস
- মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতা
- স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ
- ফণিভুষণ দাশগুপ্ত
- মনোরঞ্জন ব্যাপারী
- মনোরমা বসু
- আবদুর রব সেরনিয়াবত
- আবুল হাসানাত আব্বদুল্লাহ্
- বিজয় গুপ্ত
- মেজর জলিল
- রাশেদ খান মেনন
- আল হাজ্জ্ব হাবিবুল্লাহ মিয়া
- মুন্না মিয়া
- আল-নাহিয়ান খান জয়
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- ব্রজমোহন কলেজ (বিএম কলেজ),
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
- বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ
- বরিশাল সরকারি কলেজ
- বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
- বরিশাল সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ
- বরিশাল মডেল কলেজ
- শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বরিশাল সরকারি জিলা স্কুল
- বরিশাল সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- শহীদ আরজুমনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- ব্রজমোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বরিশাল কালেক্টরেট মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- এস.সি.জি.এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- মানিক মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- আছমত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- নুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- ব্যাপ্টিষ্ট মিশন বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- নপাইয়া হোগলটুলি হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা (মেহেন্দিগঞ্জ, বরিশাল)
- কাশিপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ
- রূপাতলী জাগুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- শেরে-ই-বাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- মথুরানাথ পাবলিক স্কুল
- অক্সফোর্ড মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- কাউনিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- জগদীশ সাবস্বত বালিকা স্কুল ও কলেজ
- এম.এম. (মমতাজ মজিদু্ন্নেছা) বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বরিশাল নৈশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
সংগঠন
- বরিশাল হলিডে স্কুল (বিএইচএস)
- বাধন
- সন্ধানী
- উত্তরণ
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে বরিশাল"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৪ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন, ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - "প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-০৭।
- "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (PDF)। web.archive.org। Wayback Machine। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৯।
আরো দেখুন
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিভ্রমণে বরিশাল জেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |
- বাংলাপিডিয়ায় বরিশাল জেলা
- বরিশাল জেলা - জাতীয় তথ্য বাতায়ন।