পটুয়াখালী সদর উপজেলা

পটুয়াখালী সদর বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা।

পটুয়াখালী সদর
উপজেলা
পটুয়াখালী সদর
পটুয়াখালী সদর
বাংলাদেশে পটুয়াখালী সদর উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°২০′৫৯″ উত্তর ৯০°১৯′১৯″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগবরিশাল বিভাগ
জেলাপটুয়াখালী জেলা
আয়তন
  মোট৩৬২.৬২ কিমি (১৪০.০১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট৩,১৬,৪৬২
  জনঘনত্ব৮৭০/কিমি (২৩০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৫৯.৫ %
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
১০ ৭৮ ৯৫
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান

এই উপজেলার উত্তরে দুমকি উপজেলা, পূর্বে বাউফল উপজেলাগলাচিপা উপজেলা, দক্ষিণে গলাচিপা উপজেলা ও বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলা এবং পশ্চিমে মির্জাগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ

পটুয়াখালী সদর উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পটুয়াখালী সদর থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:

ইতিহাস

পটুয়াখালী শহরের বয়স প্রায় দেড়’শ বছর। এই নামের উৎপত্তি নিয়ে মতান্তর রয়েছে। কবে, কখন, কিভাবে পটুয়াখালী নামকরণ হয়েছিল তা বলা দুরূহ ব্যাপার। এ নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোন দালিলিক প্রমাণ নেই। পটুয়াখালী নামকরণের ক্ষেত্রে মতভেদ থাকলেও অধিকাংশেই স্বর্গীয় দেবেন্দ্র নাথ দত্তের পুরানো কবিতার সূত্র ধরে “পতুয়ার খাল” থেকে পটুয়াখালী নামকরণের উৎপত্তি বলে সমর্থন করেন। সপ্তদশ শতাব্দীতে পর্তুগীজ জলদস্যুদের হামলা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, অপহরণ ও ধ্বংসলীলায় বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চল প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। এসময় বর্তমান পটুয়াখালী শহর এলাকা ছিল সুন্দরবন এবং নদীর উত্তর পাড়ে ছিল লোকালয়। উত্তর পাশের বর্তমান লাউকাঠী নদী ছিল লোহালিয়া ও পায়রা নদীর ভাড়ানী খাল। এই ভাড়ানী খাল দিয়েই পর্তুগীজ জলদস্যুরা এসে গ্রামের পর গ্রাম চালাত লুণ্ঠন ও অত্যাচার। এ খাল দিয়ে পর্তুগীজদের আগমনের কারণে স্থানীয়রা তৈরি করে অনেক কেচ্ছা ও কল্প কাহিনী। এর নাম তখন সবার মুখে মুখে পতুয়ার খাল। পরবর্তীতে এই পতুয়ার খাল থেকেই পটুয়াখালীর উত্পত্তি হয়। ১৯৮০ সনে শেরেবাংলা টাউন হলে অনুষ্ঠিত ‘পটুয়াখালী জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ শীর্ষক সেমিনারে অধিকাংশ বক্তা, প্রবন্ধকার ও ‘বরিশালের ইতিহাস’-এর লেখক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ এই মতকে সমর্থন করেন। পটুয়াখালী নামকরণের অপর দু’টি মত হচ্ছে এ অঞ্চলে একসময় পটুয়ার দল বাস করত। এরা নিপুণ হাতে মৃত্পাত্র তৈরি করে তাতে নানা ধরনের পট বা ছবির সন্নিবেশ ঘটাত। এই ‘পটুয়া’ থেকে ‘পটুয়াখালী’ নামের উত্পত্তি হয়ে থাকতে পারে। অথবা পেট-আকৃতির খাল বেষ্টিত এলাকাই হয়তো পেটুয়াখালী এবং পরে তা অভিহিত হয় পটুয়াখালী নামে। তবে শেষোক্ত অভিমত দু’টির কোনো জোরালো সমর্থন মেলেনি।

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পটুয়াখালী সদর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩,১৬,৪৬২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৫৫,৩৯৫ জন এবং মহিলা ১,৬১,০৬৭ জন। মোট পরিবার ৬৮,৮১৩টি।[1]

শিক্ষা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পটুয়াখালী সদর উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%।[1]

অর্থনীতি

পটুয়াখালী সদরের মূল ফসল ধান। এছাড়া গম, তরমুজ উৎপন্ন হয়ে থাকে এ উপজেলায়।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

  • অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
  • শেখ কবির মাহমুদ ইসলাম ধর্ম প্রচারক।
  • বি. ডি. হাবীবুল্লা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও লেখক
  • দীনেশচন্দ্র সেন বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী।
  • লাবণ্যপ্রভা দাশগুপ্ত বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী।

পত্র-পত্রিকা

দৈনিক

  • রূপান্তর
  • তেঁতুলিয়া
  • গণদাবী
  • সাথী

সাপ্তাহিক

  • পায়রা
  • পটুয়াখালী
  • অভিযাত্রী
  • পটুয়াখালী প্রশিকা

পাক্ষিক

  • মেঠো বার্তা

অবলুপ্ত সাপ্তাহিক

  • পল্লীসেবা (১৯৩৪)
  • গ্রামবাংলা
  • খেলাফত
  • প্রতিনিধি
  • জনতা
  • অভিযাত্রী
  • তৃষা

অবলুপ্ত পাক্ষিক

  • স্বদেশ দর্পণ
  • পাক্ষিক সৈকত
  • প্রিয় কাগজ

অবলুপ্ত মাসিক

  • চাবুক সাময়িকী
  • পটুয়াখালী সমাচার
  • এক মুঠো সুরভি
  • অন্বেষা

শিল্প ও কলকারখানা

পাটকল, বস্ত্রকল, ছাপাখানা, বরফকল রয়েছে এ উপজেলায়।

কুটিরশিল্প

বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা

হাটবাজার রয়েছে ৫০ এবং মেলা রয়েছে ৪। পটুয়াখালী পুরান বাজার মেলা হয় এবং ধরান্দীর দেওয়ান শরীফের মেলা হয়।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য

শুঁটকি মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার

এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.৩০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ

পটাস, ফসফরাস, খনিজ লবণ।

পানীয়জলের উৎস

নলকূপ ৯১.৮৫%, পুকুর ৫.৭০%, ট্যাপ ০.৯৭% এবং অন্যান্য ১.৪৮%।

এনজিওসমূহ

মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযুদ্ধের সময় পটুয়াখালী সদর উপজেলা ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল।

ঘটনাবলি

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পটুয়াখালী আক্রমণ করে। ৭ ডিসেম্বর পটুয়াখালী শত্রুমুক্ত হয় এবং একই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পটুয়াখালী সদরে প্রবেশ করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন

  • গণকবর ৩
  • স্মৃতিস্তম্ভ ১

তথ্যসূত্র

  1. "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (PDF)web.archive.org। Wayback Machine। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০১৯

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ


This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.