পুরাণগড় ইউনিয়ন
পুরাণগড় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন।
পুরাণগড় | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
![]() | |
![]() ![]() পুরাণগড় | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৯′৯″ উত্তর ৯২°৭′৪৯″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
উপজেলা | সাতকানিয়া উপজেলা ![]() |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | মাহবুবুল হক সিকদার |
আয়তন | |
• মোট | ২৫.৬৫ কিমি২ (৯.৯০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৭,৮০৯ |
• জনঘনত্ব | ৬৯০/কিমি২ (১৮০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৩৭.৩১% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৩৮৮ ![]() |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
আয়তন
পুরাণগড় ইউনিয়নের আয়তন ৬৩৩৭ একর (২৫.৬৫ বর্গ কিলোমিটার)।[1]
জনসংখ্যা
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পুরাণগড় ইউনিয়নের লোকসংখ্যা ১৭,৮০৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮,৬৩০ জন এবং মহিলা ৯,১৭৯ জন।[1]
অবস্থান ও সীমানা
সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর-পূর্বাংশ জুড়ে পুরাণগড় ইউনিয়নের অবস্থান। উপজেলা সদর থেকে এ ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। এ ইউনিয়নের দক্ষিণে বাজালিয়া ইউনিয়ন; পশ্চিমে সাঙ্গু নদী, দোহাজারী পৌরসভা ও চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়ন; উত্তরে সাঙ্গু নদী ও চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়ন এবং পূর্বে বান্দরবান জেলার বান্দরবান পৌরসভা ও বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়ন অবস্থিত।
প্রশাসনিক কাঠামো
পুরাণগড় ইউনিয়ন সাতকানিয়া উপজেলার আওতাধীন ১৪নং ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম সাতকানিয়া থানার আওতাধীন। এটি জাতীয় সংসদের ২৯১নং নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-১৪ এর অংশ। এটি ৬টি মৌজায় বিভক্ত। এ ইউনিয়নের গ্রামগুলো হল:
- শীলঘাটা
- বৈতরণী
- কেশুয়া নালা
- কোদালা
- ফকিরখীল
- পুরাণগড়
- মনেয়াবাদ
নামকরণ
মোগল সম্রাট শাহজাহান তখন অন্ধকার জেলের কোণায়। তাঁর চার পুত্র দারা-মাসুদ আর সুজা-আওরঙ্গজেব দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পর ক্ষমতা যুদ্ধে লিপ্ত। পরাজিত ভাইদের খুন করে এবার আওরঙ্গজেব লাগল সুজার পিছু। প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রী-কন্যা আর বিপুল ধন-রত্ন এবং অনুগত কিছু সৈন্য নিয়ে ছুটল বর্মা মুল্লুকে (আরাকান রাজ্য)। পালানোর সময় যে পথ তৈরী করেছিলেন সেটাই আজকের ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, যা আরাকান রোড বা শাহ সুজা রোড নামেই সর্বাধিক পরিচিত। মগ রাজার আশ্রয়ে থাকার কয়েকদিনের মধ্যেই আরেক সমস্যা। মগ রাজপুত্র বিয়ে করতে চায় সুজার মেয়েকে, সুজা সাফ জানিয়ে দিলেন এ কোনদিনই সম্ভব নয়। তাতেই মগরাজা গেলেন চটে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্য ছাড়ার হুকুম। ওই সময় না পেরুতেই মগরা তাঁকে আক্রমণ করে বসল। সবাইকে কচুকাটা করে পলায়নরত সুজাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভাতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে আওরঙ্গজেব পাঠালেন দুই হাজার সৈন্য। বর্তমান দক্ষিণ চট্টগ্রাম আর পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেকাংশ মোগলদের অধীনে চলে আসে। মূল আরাকান আক্রমণের জন্য সৈন্যরা গহীন জঙ্গলে আশ্রয় নিলেও ওরা আর ফিরে যায়নি। ওখানেই স্থানীয় মগদের মুসলিম বানিয়ে বর্তমান আলিকদম গড়ে তোলে। সদ্য অধিকৃত অঞ্চল দুই হাজার সৈন্যের সেনাপতি নাগ সাহেবকেই দিয়ে দিলেন আওরঙ্গজেব। নাগ পরিবারের জমিদারী এলাকাই এখনকার দোহাজারী। সাঙ্গু নদীর পূর্ব তীরটাই ছিলো যুদ্ধকালীন সৈন্য সমাবেশের নিরাপদ স্থান। এখান থেকেই আসে পুরাণগড় গ্রামের নাম । "পুরাণ" অর্থ নিরাপদ আর "গড়" অর্থ দুর্গ , অর্থাৎ নিরাপদ দুর্গ বা পুরাণগড়।
ইতিহাস
ঐহিত্যবাহী পুরাণগড় ইউনিয়নের তৎকালীন প্রখ্যাত জমিদার ছিলেন আবদুল গফুর সিকদার। জমিদার হিসাবে তার নাম খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁরই সুযোগ্য পুত্র আবিদুর রহমান সিকদার অত্র পুরাণগড় ইউনিয়নের তৎকালীন সুযোগ্য ইউনিয়ন পরিষদ পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে ৪টি প্রধান গ্রাম যথা শীলঘাটা, বৈতরণী, পুরাণগড় ও মনেয়াবাদ নিয়ে পুরাণগড় ইউনিয়ন গঠন করা হয়।[3]
শিক্ষা ব্যবস্থা
পুরাণগড় ইউনিয়নের সাক্ষরতার হার ৩৭.৩১%।[1] এ ইউনিয়নে ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা ও ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[4]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- পুরাণগড় শাহ শরফুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়
- মাদ্রাসা
- পুরাণগড় শাহ শরফুদ্দীন (রহ.) দাখিল মাদ্রাসা
- শীলঘাটা নূরে মদীনা দাখিল মাদ্রাসা
- প্রাথমিক বিদ্যালয়
- উত্তর পুরাণগড় কালিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- দক্ষিণ পুরাণগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- দক্ষিণ শীলঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- পুরাণগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ফকিরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- বৈতরণী শহীদ সোলায়মান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- মনেয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- শীলঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
যোগাযোগ ব্যবস্থা
পুরাণগড় ইউনিয়নে যোগাযোগের প্রধান সড়ক বাজালিয়া-শীলঘাটা সড়ক। প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম সিএনজি চালিত অটোরিক্সা।
ধর্মীয় উপাসনালয়
পুরাণগড় ইউনিয়নে ২৭টি মসজিদ, ৩টি ঈদগাহ, ১০টি মন্দির ও ৫টি বিহার রয়েছে।[4]
খাল ও নদী
পুরাণগড় ইউনিয়নের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলেছে সাঙ্গু নদী। এছাড়া এ ইউনিয়নের অভ্যন্তরে প্রবাহিত হচ্ছে ছক্কা কোদালা খাল এবং সুয়ালক খাল।[8]
হাট-বাজার
পুরাণগড় ইউনিয়নের প্রধান ২টি হাট/বাজার হল পুরাণগড় নতুন হাট এবং ফকিরখীল কুমার পাড়া বাজার।[9]
দর্শনীয় স্থান
- শাহ শরফুদ্দীন (রহ.) মাজার[10]
জনপ্রতিনিধি
- বর্তমান চেয়ারম্যান: মাহবুবুল হক সিকদার[11]
- চেয়ারম্যানগণের তালিকা
ক্রম নং | চেয়ারম্যানের নাম | সময়কাল |
---|---|---|
০১ | বাচা মিয়া সিকদার | |
০২ | মনির আহমদ চৌধুরী | |
০৩ | সিরাজুল হক | |
০৪ | নুরুল ইসলাম | |
০৫ | আবু ইউসুফ | ১৯৮২-১৯৯৩ |
০৬ | নুরুল ইসলাম | ১৯৯৩ |
০৭ | রাশেদ হোসেন সিকদার | ১৯৯৩-২০০৩ |
০৮ | এ জে এম জাহাঙ্গীর টিপু | ২০০৩-২০১১ |
০৯ | রাশেদ হোসেন সিকদার | ২০১১-২০১৬ |
১০ | মাহবুবুল হক সিকদার | ২০১৬-বর্তমান |
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "সাতকানিয়া উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org।
- "গ্রামভিত্তিক লোকসংখ্যা - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "পুরানগড় ইউনিয়নের ইতিহাস - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "এক নজরে পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "মাধ্যমিকবিদ্যালয় - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "মাদ্রাসা - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "প্রাথমিকবিদ্যালয় - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "খাল ও নদী - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "হাটবাজার - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "দর্শনীয় স্থান - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।
- "সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় চেয়ারম্যান হলেন যারা"। ৫ জুন ২০১৬। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৭।
- "ইউনিয়ন পরিষদের পূর্বতন চেয়ারম্যানবৃন্দ - পুরানগড় ইউনিয়ন - পুরানগড় ইউনিয়ন"। puranagarup.chittagong.gov.bd।