কটিয়াদী উপজেলা

কটিয়াদী উপজেলা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

কটিয়াদী
উপজেলা
কটিয়াদী
বাংলাদেশে কটিয়াদী উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৪′৪৯″ উত্তর ৯০°৪৭′২৭″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাকিশোরগঞ্জ জেলা
আয়তন
  মোট২১৯.৩৯ কিমি (৮৪.৭১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট৩,১৪,৫২৯
  জনঘনত্ব১৪০০/কিমি (৩৭০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড২৩৩০
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৪৮ ৪৫
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান ও আয়তন

কটিয়াদী উপজেলার আয়তন প্রায় ২১৯.২২ স্কয়ার কিলোমিটার। শহরটির উত্তরে কিশোরগঞ্জ সদরকরিমগঞ্জ, দক্ষিণে বেলাবোমনোহরদী, পূর্বে নিকলীবাজিতপুর এবং পশ্চিমে পাকুন্দিয়া অবস্থিত।[2]

প্রশাসনিক এলাকা

কটিয়াদী থানা ১৯৮৩ সনে উপজেলায় পরিনত হয়। ৯ টি ইউনিয়ন, ৯৫ টি মৌজা আর ১৫১ টি গ্রাম নিয়ে কটিয়াদী উপজেলা গঠিত। এই উপজেলার ইউনিয়ন সমূহঃ

  1. বনগ্রাম
  2. সহশ্রাম ধুলদিয়া
  3. করগাঁও
  4. চান্দপুর
  5. মুমুরদিয়া
  6. আচমিতা
  7. মসূয়া
  8. লোহাজুরী
  9. জালালপুর[3]

ইতিহাস

কথিত আছে কটিয়াদীতে একজন পাগল বেশে দরবেশ ছিলেন। সবাই তাকে কটি পাগল বলে ডাকতো। তার নাম কটি থেকেই কটিয়াদী হয়েছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ও ভগ্নাবশেষ

এখানে ৫ নং মুমুরদিয়া ইউনিয়নের কুড়িখাই গ্রামে হযরত শামসুদ্দীন আউলিয়া সুলতান বুখারি (রঃ) এর মাজার অবস্থিত । যিনি ৩৬০ আউলিয়ার একজন । তিনি ছিলেন হযরত শাহজালাল (রঃ) এর সঙ্গী। এটি কুড়িখািই মেলা নামে পরিচিত এবং ৪ নং চান্দপুর ইউনিয়নের সেকের পাড়া গ্রামে হযরত মিয়া চান্দ শাহ এর মাজার অবস্থিত । এ মাজার চূনের মাজার নামে পরিচিত । এ ছাড়া আচমিতা ইউনিয়নে গোপীনাথ ও লক্ষীনারায়ন মন্দির এখানে অবস্থিত। লোহাজুরি ইউনিয়নে একটি পার্ক রয়েছে মরুদ্বীপ-৭১ স্বাধীনতা পার্ক । সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়ি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা অথবা রিক্সাযোগে ৬ কি.মি.দূরে মসুয়া ইউনিয়নে। কটিয়াদি থেকে মাত্র ৪ কি.মি. দূরে জালালপুর ইউনিয়নে রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় নীলচুল্লির ধ্বংসাবশেষ।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান

সিনেমা হল ২টি, নাট্য মঞ্চ ১টি।

জনসংখ্যার উপাত্ত

জনসংখ্যার শতকরা ৫১% পুরুষ ও ৪৯% মহিলা। জনসংখ্যার ৯৪% মুসলিম ৪% হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মের ২% । জনসংখ্যার প্রায় ৪৫% লোক ই কৃষি কাজ করে থাকে।

শিক্ষা

কলেজ ৩টি, উচ্চ বিদ্যালয় ২৪টি, কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১টি, মাদ্রাসা ৩৬টি, সরকারী প্রাথমিক স্কুল ১১৩ টি।

অর্থনীতি

কৃষি ও খামার হচ্ছে এই উপজেলার অন্যতম চালিকা শক্তি।

প্রবাসী রেমিটেন্স এর সাথে বিশালত্ব ভুমিকায়। মধ্যপ্রাচ্য সিংগাপুর মালয়েশিয়া এমেরিকা লন্ডন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে এ উপজেলার যুবক। আহমেদ এন্ড কোম্পানি সত্তাধিকার জনাব মেনুমিয়া সাহেবের কল্যাণে এ এলাকায় অপ্রবাসী খুব কম। প্রবাসী রেমিটেন্স এ এলাকার সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে চলছে।। অন্যদিকে পোল্ট্রি ডেইরী খামার মৎস ব্যবসা ও জেলার যেকোন উপজেলা থেকে অনেক অগ্রসর। বলা যেতে পারে উপজেলাটি অনেক সচ্ছল। প্রায় প্রতিটি পরিবার থেকেই ২/১ জন রেমিটার্স বিদেশে আছে।

পেশা সমুহ

কৃষি ৪৬,৯১%, কৃষি শ্রমিক ২২,১৭%, সাধারণ শ্রমিক ৩,৬৪%, ব্যবসা ১১,০৫%, সেবা ৩,৫৫%, পরিবহন ১.২২%, মাছধরা ১.০৩%, অন্যান্য ১০,৪৩%.

ভূমি ব্যবহার

আবাদি জমি ১৬২৪৮,৪৮ হেক্টর, পতিত জমি ৪৩০,৫৯ হেক্টর; একক ফসল ১১,৬৮%, ডবল ফসল ৫৫,৩৫% এবং ত্রিগুণ ফসলের জমি ৩২,৯৭% সেচের আওতায় জমি ২৩,২%.

প্রধান শস্য

ধান, পাট, গম, সরিষা, চিনাবাদাম, রসুন, টমেটো, পেঁয়াজ, মরিচ, আলু, আখ, সবজি. বিলুপ্ত বা প্রায় বিলুপ্ত শস্য তিল, তিসি, তুলো, কৌন, বার্লি এবং কালোজিরা.

ধর্ম ও প্রতিষ্ঠান

মসজিদ ৩৫৯টি, মাজার ২টি, মন্দির ৫টি। মুসলিম ৯৪,২৬%, হিন্দু ৪,৬০%, বৌদ্দ ০,২৫%, খ্রিষ্টান ০,৩২% ও অন্যান্য ০,৫৭%। উপজাতি ২৭ টি।

হাট, বাজার এবং মেলা

হাট বাজার আছে ২০টি। উল্লেখযোগ্য বাজার হলো, কটিয়াদী বাজার, মসূয়া বাজার, ধুলদিয়া বাজার ও করগাঁও বাজার। মেলা আছে ৮টি। উল্লেখযোগ্য মেলা হলোঃ-

  1. কুড়িখাই মেলা, কুড়িখাই।
  2. রথযাত্রা, অষ্টঘরিয়া।
  3. হাইছা পাগলার মেলা, বেতাল।
  4. বৈশাখী মেলা, মসূয়া।
  5. শিব শীতলা মেলা, দাসেরগাঁও জামষাইট
  6. শিতুলীর মেলা, বনগ্রাম

এনজিও কার্যক্রম

ব্রাক,আশা, প্রত্যাশা, মসজিদ মিশন, গ্রামীন ব্যাংক, আহসানিয়া মিশন, পল্লি বিকাশ, প্রশিকা, বিজ ও গ্লোবাল ভিলেজ।

স্বাস্থ্য কেন্দ্র

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬টি, গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩টি, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪৩টি।

কুটির শিল্প

বুনন - শিল্প ২৮১টি, বাঁশের কাজ ৩৪৮টি, কামার ৬২টি, কুমার ৫৭টি, কাঠের কাজ ২৭৬টি, পাট এবং তুলো কাজ ৫৪টি, পিতলের কাজ টি এবং অন্যদের ১৫০৪ টি।

প্রস্তুত কারক

স মিল ২০টি, চাল কল ৫টি, তৈল মিল ৪৩টি।

ব্যক্তিত্ব

রাজনৈতিক ব্যক্তি

শ্রী মনোরঞ্জন ধর, জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (১৯৭২ সাল), আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী (১৯৭৩ সাল), প্রথম আওয়ামীলীগ সরকার, চাতল গ্রাম, কটিয়াদী থানা, কিশোরগঞ্জ জেলা, ময়মনসিংহ জেলা।

আনিসুজ্জামান খোকন ২য় জাতীয় সংসদের সাংসদ।

  • মোহিনীশঙ্কর রায়, ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।
  • ডাক্তার আব্দুল মান্নান, তিনি পর পর দুইবারের সংসদের সদস্য (আওয়ামি লীগ)[4] (২০০১ এবং ২০০৮)।
  • মেজর (অবঃ) আখতারুজ্জামান (রন্জন), তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য। (১৯৯১-১৯৯৬) পরবর্তিতে তার বিতর্কিত অবস্থানের জন্য বিএনপি থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়।* সাবেক আই জি পি নূর মোহাম্মদ বাড়ি চান্দ পুর মানিক খালী ,তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বাংলাদেশ পুলিশের এক সফল আই জি পি ছিলেন
  • সাবেক আই জি পি নূর মোহাম্মদ বাড়ি চান্দ পুর মানিক খালী ,তিনি বর্তমান জাতীয় একাদশ নির্বাচনে[2019] জাতীয় সংসদের সাংসদ নির্বাচিত হন ৷

বিবিধ

কটিয়াদী উপজেলার বির শ্রেষ্ঠ সন্তানরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে কটিয়াদী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১০ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮
  3. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "ইউনিয়ন সমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৬ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. http://www.lcgbangladesh.org/parliament/mplist.php?d=dhaka#Kishoreganj%5B%5D

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.