টিম হান্ট

স্যার রিচার্ড টিমোথি হান্ট,FRS FMedSci FRSE MAE (জন্ম ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩) একজন ব্রিটিশ প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান শরীরতত্ত্ববিদ। ২০০১ সালে কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রক প্রোটিন অণু আবিষ্কারের জন্য পল নার্সলেল্যান্ড এইচ. হার্টওয়েলের সাথে যৌথভাবে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে সামুদ্রিক অর্চিনের ডিম সম্পর্কে পড়ার সময় হান্ট সাইক্লিন নামের একধরনের প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা চক্রাকারে একীভূত হয় এবং কোষ বিভাজন চক্রে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

স্যার টিম হান্ট
২০০৯ সালে টিম হান্ট
জন্ম (1943-02-19) ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩
নেস্টন, চেশায়ার, ইংল্যান্ড
বাসস্থানইংল্যান্ড
নাগরিকত্বযুক্তরাজ্য
কর্মক্ষেত্রপ্রাণরসায়ন
প্রতিষ্ঠান
  • লন্ডন রিসার্চ ইন্সটিটিউট
  • ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
  • ইম্পেরিয়াল ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ড
  • ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
  • মেরিন বায়োলজিক্যাল ল্যাবরেটরি
  • ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউট
প্রাক্তন ছাত্রক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (বিএ, পিএইচডি)
সন্দর্ভসমূহThe synthesis of haemoglobin (১৯৬৯)
পরিচিতির কারণকোষ বিভাজন চক্র
উল্লেখযোগ্য
পুরস্কার
আব্রাহাম হোয়াইট সায়েন্টিফিক অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (১৯৩৩)
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার (২০০১)
রয়্যাল মেডেল (২০০৬)
স্ত্রী/স্বামীম্যারি কলিন্স
ওয়েবসাইট
www.crick.ac.uk/about-us/who-we-are/how-we-got-here/notable-alumni/tim-hunt

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

হান্ট ১৯৪৩ সালের ১৯-শে ফেব্রুয়ারি[1] চেশায়ারের নেস্টনে লিভারপুলের প্রাচীন-লিপি শাস্ত্রের শিক্ষক রিচার্ড উইলিয়াম ও কাঠ ব্যবসায়ীর মেয়ে কিট রোল্যান্ডের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।[2] মা-বাবা দুজনেরই মৃত্যুর পর, হান্ট জানতে পারেন তার বাবা বুশ হাউজে কাজ করতেন, তারপর কাজ করেছেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস রেডিওর হেডকোয়ার্টারে ও সম্ভবত ইন্টেলিজেন্সে, কিন্তু নিশ্চিত করে জানা যায়নি তিনি আসলে কী করতেন।[2] ১৯৪৫ এ তার বাবা রিচার্ড বডলিয়েন লাইব্রেরিতে পশ্চিমা পান্ডুলিপিগুলোর রক্ষক হিসেবেও ছিলেন, এবং তখনই তার পরিবার অক্সফোর্ডে স্থানান্তরিত হয়। আট বছর বয়সে হান্ট ড্রাগন স্কুল-এ ভর্তির সুযোগ পান।[1] সেখানেই তিনি জার্মান শিক্ষক জার্ড সোমারহফ এর সংস্পর্শে জীববিজ্ঞানে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।[2] চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি ম্যাগডালেন কলেজ স্কুল, অক্সফোর্ডে ভর্তি হন, যেখানে বর্তমানে বিজ্ঞানের পুরস্কারসমূহ তারই নামানুসারে প্রদান করা হয়। সেখানে তিনি প্রাণিবিজ্ঞান ও রসায়ন অধ্যয়ন করেন এবং বিজ্ঞানে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।[2][3][4][5]

১৯৬১ সালে ক্যামব্রিজ ক্লেয়ার কলেজে হান্ট প্রকৃতি বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ পান। ১৯৬৪ সালে পড়ালেখা শেষ করেই তিনি অ্যাশের করনারের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগে কাজ শুরু করেন। সেখানে তিনি টনি হান্টার, লুইস রিচার্ডের মতো বিজ্ঞানীদের সাথে কাজ করার সুযোগ পান। ১৯৬৫-তে ভারনন ইংরাম এক বক্তব্য তাকে হিমোগ্লোবিন সংশ্লেষণে আগ্রহী করে তোলে। এ বিষয়ে ১৯৬৬-র এক গ্রিক সম্মেলনে তিনি হেমাটোলজিস্ট ও জিনবিশেষজ্ঞ আরভিং লন্ডনকে সে বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত, নিউইয়র্কের আলবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অফ মেডিসিনে আরভিংয়ের ল্যাবরেটরিতে কাজ করার অনুমতি দিতে রাজি করাতে সক্ষম হন। তার পিএইচডি তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন অ্যাশের করনার। পিএইচডির মূল বিষয়বস্তু ছিলো অক্ষত খরগোশ রেটিকুলোসাইটের (অসম্পূর্ণ লোহিত রক্তকণিকা) হিমোগ্লোবিন সংশ্লেষণ। ১৯৬৮ সালে তিনি এর জন্য পুরস্কৃতও হন।[6][7][8]

কর্মজীবন ও গবেষণা

প্রারম্ভিক কর্মজীবন

পিএইচডি শেষে হান্ট, ইরভিং লন্ডন, নেকার্ণা কসোয়ের ও তার স্বামী এডওয়ার্ড কসোয়ের এবং এলি এরেনফেল্ডের সাথে কাজ করার জন্য নিউইয়র্কে চলে আসেন। সেখানে তারা আবিষ্কার করেন রেটিকুলোসাইটের প্রোটিন সংশ্লেষণে স্বল্প পরিমাণ গ্লুটাথিওন নিরোধকের কাজ করে এবং সেই স্বল্প পরিমাণের আরএনএ সামগ্রিকভাবে সংশ্লেষণকে বন্ধ করে দেয়। ক্যামব্রিজে ফেরার পর তিনি আবার টনি হান্টার ও রিচার্ড জ্যাকসনের সাথে কাজ করতে শুরু করেন, যারা হিমোগ্লোবিন সংশ্লেষণ শুরু হতে ব্যবহৃত আরএনএ সূত্র আবিষ্কার করেন। ৩-৪ বছর পর এই দল অন্তত আরো দুটি নিরোধক আবিষ্কার করে।

সারা গ্রীষ্ম তিনি নিয়মিতভাবে ম্যাসাচুসেট্‌সের উডস হোলের মেরিন বায়োলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে কাজ করতেন। এটি বিজ্ঞানীদের মাঝে অ্যাাডভান্সড সামার কোর্সের জন্য বিখ্যাত ছিলো এবং বিশেষ করে তাদের মাঝে যারা মাইটোসিস নিয়ে আগ্রহী। এই জায়গাটিতে সামুদ্রিক অর্চিন ও সার্ফ ক্লামের(এক ধরনের শামুক) সরবরাহ ছিলো যথেষ্ট। এগুলোই সেই ইনভার্টিব্রেট যেগুলো বিশেষভাবে এমব্রায়োজেনেসিসের প্রোটিন সংশ্লেষণের গবেষণায় অত্যন্ত উপকারি কেননা এমব্রায়োগুলো সহজাতভাবেই শোধিত সামুদ্রিক জলের প্রভাবেই উৎপন্ন ও এমব্রায়ো কোষোগুলোর স্বচ্ছতাও মাইক্রোস্কোপিক পর্যবেক্ষণের উপযোগী।[9]

সাইক্লিন আবিষ্কার

১৯৮২-র গ্রীষ্মে, উডস হোলে সামুদ্রিক অর্চিনের ডিম (Arbacia punctulata) কে অঙ্গাণু হিসেবে ব্যবহার করে তিনি সাইক্লিন অণু আবিষ্কার করেন। হান্ট সাইকেল চালানোই বেশ উৎসাহী ছিলেন এবং তিনি এই প্রোটিনের ভিতর স্তরে স্তরে এমন সাইক্লিক বা চাক্রিক পরিবর্তন লক্ষ্য করে এর নাম সাইক্লিন রাখেন।[10]

সাইক্লিন হলো এমন এক ধরনের প্রোটিন যেগুলো কোষ বিভাজন চক্রে মুখ্যভূমিকা পালন করে।[11] হান্ট খোঁজে পান, সাইক্লিনগুলো সংশ্লেষিত হতে শুরু করে যখন ডিমগুলো পরিস্ফুটিত হয়, এবং ইন্টারফেজ দশায় এর অবস্থান বৃদ্ধি করতে থাকে, যতক্ষণ না মাইটোসিস বিভাজনে খুব দ্রুতই এটি পড়ে না যায়। তিনি আরো দেখতে পান, সাইক্লিন ভার্টিব্রেট কোষগুলোতেও উপস্থিত থাকে এবং সেখানেও এটি কোষচক্রকে প্রভাবিত করে। তিনি এবং অন্যরা পর্যায়ক্রমে দেখিয়েছেন যে সাইক্লিন একগুচ্ছ প্রোটিন কাইনেসিসকে আবদ্ধ করে ও চালু করে দেয়, যাকে বর্তমানে সাইক্লিন নির্ভর কাইনেসিস বলা হয়, পল নার্সের আবিষ্কৃত একটি গূরুত্বপূর্ণ কোষচক্র প্রভাবক হিসেবে এটি পরিচিত। এই কোষ বিভাজনের সাইক্লিন মেকানিজম সকল সজীব অঙ্গাণুর (ব্যাকটেরিয়া ছাড়া) জন্য এটি একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। একারণেই এই সাধারণ অঙ্গাণুসমূহে প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা মানবশরীরে টিউমার বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে নানা দিক উন্মোচন করেছে।

পরবর্তী কর্মজীবন

১৯৯০ এ তিনি ইম্পেরিয়াল ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ডে (পরবর্তীতে ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে লন্ডন রিসার্চ ইন্সটিটিউট নামকরণ হয়) কাজ শুরু করেন। এখানে তার কাজের মূল লক্ষ্য ছিলো, কী একটি কোষকে ক্যান্সার আক্রান্ত করে তা বুঝতে পারা। তা হলোঃ সাধারণ ইনহেবিটরি সিগনাল বন্ধ অবস্থায় অনিয়ন্ত্রিত প্রোলিফেরেট।[12] ২০১০ এর শেষ দিকে ক্লেয়ার হল ল্যাবরেটরিতে তার নিজস্ব ল্যাবরেটরি ছিলো এবং ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউটের এমিরেটাস গ্রুপ লিডার রয়ে যান।[1][13] ক্যাম্পেইন ফর সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য তিনি। জীবন বিজ্ঞান ও মেডিসিনে প্রদত্ত শও প্রাইজের নির্বাচনী পর্ষদে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।[14] ২০১০ সালে, হান্ট অস্ট্রিয়ার থিংক থ্যাংক অ্যাকাডেমিয়া সুপিরিয়র, ইন্সটিটিউট ফর ফিউচার স্টাডিজের প্রাতিষ্ঠানিক উপদেষ্টা পরিষদে যোগদান করেন।[15]

রিসার্চ কমিউনিটিতে হান্ট সর্বদায় একজন লোকপ্রিয় সহকর্মী ও মেন্ট্র বিবেচিত হয়ে আসছেন।[16][17] সমগ্র কর্মজীবনে তিনি হাগ পেলহাম, জোনাথন পাইনস সহ অসংখ্য পিএইচডি ছাত্রদের সুপারভাইজ করেছেন।

বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ ও অবসর

বিজ্ঞানে অবদানের ক্ষেত্রে, হান্ট সারাজীবনভর বিজ্ঞান গবেষণার একজন অনুরাগী। ২০০১ এ নোবেল পাওয়ার পর, তিনি বিশ্বভ্রমণ এবং জনপ্রিয় ও দক্ষ শ্রোতাদের সাথে কথা বলায় বেশি সময় ব্যয় করেছেন। এই আলোচনাগুলোতে তিনি অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তার বৈশিষ্টপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরেছেন, যেগুলো কাজে আনন্দ ও ভাগ্যবান অনুভব করার প্রতি বেশি গূরুত্বারোপ করে। তিনি এটিও বিশ্বাস করেন যে, বিজ্ঞান তখনই বেশি উপকৃত হয় যখন ক্ষমতা তুলে দেয়া হয় তরুণদের হাতে।[18]

২০১৫ এর জুনে, তিনি সিউলের বিজ্ঞান সাংবাদিকদের বিশ্ব কনফারেন্সে হান্টের কিছু কাজকে যৌনবৈষম্যমূলক দাবি করে, একটি অনলাইন শেমিং ক্যাম্পেইন তাকে প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। এতে তাকে ইউরোপিয়ান রিসার্চ কাউন্সিলের মতো নানা গবেষণা ও কেন্দ্রীয় দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হয়। এবং তিনি সাময়িকভাবে তার প্রোফেশনাল কর্মকাণ্ড ও বাইরের জীবন থেকে সরে আসেন।[19] ২০১৫ তে তার পূর্ব পরিকল্পিত লিন্ডাও মিটিং এ আসাও স্থগিত করে দেন।[20]

২০১৭ সালে দিকে হান্ট আবার লেকচার দিতে শুরু করেন। জুনে তিনি নোবেল প্রাইজে অনুপ্রেরণার উদ্দ্যোগ নিয়ে জার্মানিতে যান। অক্টোবরে, টকিও ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে তিনি দ্বিতীয় মলিকিউলার ফ্রন্টিয়ার সিম্পোজিয়াম উপস্থাপন করেন। ডিসেম্বরে তিনি নেপলসে অ্যান্টন দর্ন জুলজিক্যাল স্টেশনের গবেষণা বছরের উদ্বোধনী ভাষণ প্রদান করেন। ২০১৯ এর মার্চে, তিনি টোকিওর চতুর্থ নোবেল পুরস্কার কথোপকথোনে অংশ নেন।[21]

পুরস্কার ও সম্মাননা

হান্ট ১৯৭৮ সালে ইউরোপিয়ান মলিকিউলার বায়োলজি অর্গানাইজেশনের একজন সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সদস্য থেকেছেন সংগঠনটির ফেলোশিপ কমিটির ১৯৯০-১৯৯৩ সালে, ২০০৮-২০০৯ এ মিটিং কমিটির এবং ২০০৪-২০০৯ এ এর দাপ্তরিক কাঠামো, দি কাউন্সিলের। তিনি ১৯৯১ সালে দি রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। তার নির্বাচনি সার্টিফিকেট এরকমঃ

প্রাণিকোষে প্রোটিন সংশ্লেষণ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে অধ্যয়ন ও ইউক্যারিয়টিক কোষচক্রের প্রভাবক সাইক্লিন নামক প্রোটিন আবিষ্কারের স্বীকৃতি ও সম্মাননাস্বরূপ। জ্যাকসন ও তাদের ছাত্রদের সাথে নিয়ে, তিনি প্রোটিন সংশ্লেষণে ইনিসিয়েশন কমপ্লেক্স (initiation complex) গঠন হওয়ার ধাপসমূহ ব্যাখ্যা করেন। তিনি দেখান, রাইবোজোমাল সাবইউনিট (40S ribosomal subunit) এম-আরএনএ এর পূর্বে টি-আরএনএ -কে যুক্ত করে, এবং এটিই অন্যান্য প্রভাবকগুলোর মূল লক্ষ্য যেমনঃ দ্বি-সুত্রক আরএনএ বা হায়েম ডেফিসিয়েনসি। তারা আরো উপস্থাপন করেন, প্রোটিন সংশ্লেষণে বাধা প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে দুটি ভিন্ন প্রোটিন কাইনেসিস এর প্রারম্ভিক ফ্যাক্টর eIF-2 এর প্রতিবর্তনযোগ্য ফসফোরাইলেশন। তারা প্রোটিন সংশ্লেষণে থাইরেডক্সিন ও থাইরেডক্সিন রেডাকটেজ এর আকস্মিক ভূমিকা ব্যাখা করেন। রাডারম্যান ও রোসেনথালের সাথে তিনি ব্যাখ্যা করেন ক্ল্যাম বা খোলসযুক্ত প্রারম্ভিক এমব্রায়োসমূহে এম-আরএনএর নির্বাচনমূলক নিয়ন্ত্রণ। এ থেকে হান্ট সাইক্লিন আবিষ্কার করেন, যা এমন এক ধরণের প্রোটিন যেটি মাইটোসিস বিভাজনের সময় নির্দিষ্টভাবে ধ্বংস হতে থাকে। তিনি একই সাথে সামুদ্রিক অর্চিন ও ব্যাঙ থেকে সাইক্লিন সি-ডিএনএ ক্লোন ও পুনর্বিন্যাস করেন। এবং এ সম্পর্কিত এম-আরএনএ বিচ্ছিন্নকারী পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি দেখান ব্যাঙ এমব্রায়োসমূহে সাইক্লিন ট্রান্সলেশন অত্যন্ত গূরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো দেখান সাইক্লিন হলো মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় প্রবেশোদ্দীপক মাইটোসিস-প্রোমোটিং-ফ্যাক্টর এর একটি অংশ বা সাবইউনিট। তার সাইক্লিন আবিষ্কার ও বৈশিষ্ট্যজ্ঞাপন ইউক্যারিওটিক কোষচক্র প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানে অনেক বড় একটি অবদান।

১৯৯৮-এ হান্ট যুক্তরাজ্যের অ্যাকাডেমি অব মেডিকেল সাইন্সেস এর ফেলো (FMedSci) এবং ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের "ফরেন অ্যাসোসিয়েট" নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে তিনি সাইক্লিন কর্তৃক কোষচক্র নিয়ন্ত্রণ ও সাইক্লিন নির্ভর কাইনেসিস সম্পর্কিত আবিষ্কারের জন্য পল নার্সলেল্যান্ড এইচ হার্টওয়েলের সাথে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। উক্ত তিন লরেটকে তাদের কোষচক্রের মূখ্য নিয়ামকের আবিষ্কারগুলোর জন্য উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে হান্ট বিশেষভাবে পুরষ্কৃত হন তার সিডিকে ফাংশনের প্রভাবক সাইক্লিন, প্রোটিন আবিষ্কারের জন্য। তিনি দেখান সাইক্লিনগুলো প্রতি কোষ বিভাজনে পর্যায়ক্রমে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে, যা কোষচক্র নিয়ন্ত্রণের প্রমাণিত পদ্ধতি হিসেবে গূরুত্ব পায়।

২০০৩ সালে, হান্ট এডিনবার্গ রয়্যাল সাইন্স সোসাইটির সম্মানসূচক ফেলো (HonFRSE) নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে তিনি রয়েল সোসাইটির রয়েল মেডেল পান। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এটি প্রতিবছর দুইবার প্রদান করা হয়। তার ক্ষেত্রে, তার নিজের প্রধান আগ্রহের ঘরানা থেকে বেরিয়ে- কোষচক্র নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি, সাইক্লিন নির্ভর কাইনেসিসের মূল উপাদান প্রোটিন সাইক্লিন আবিষ্কারের মতো বিশেষ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এটি প্রদান করা হয়।

হান্ট ২০০৬ বার্থডে অনার্সে বিজ্ঞানে অবদানের জন্য নাইট উপাধি পান।

ব্যক্তিগত জীবন

হান্ট ক্যামব্রিজ গ্রাজুয়েট ম্যারি কলিন্সের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই মেয়ে আছে।

কলিন্স রোগপ্রতিরোধ বিদ্যার প্রফেসর। ২০১৬ এর গ্রীষ্মে তিনি নবনির্মিত অকিনাওয়া ইন্সটিটিউট অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজির গবেষণা পরিচালক নির্বাচিত হন, এবং তারা প্রায় ৫ বছরের জন্য জাপানে স্থানান্তরিত হন।

আরো জানুন

নির্বাচিত প্রকাশনাসমূহ

তথ্যসূত্র

  1. "Charkin, Richard Denis Paul, (born 17 June 1949), Executive Director, Bloomsbury Publishing plc, since 2007"Who's Who। Oxford University Press। ২০০৭-১২-০১।
  2. On Superconductivity and Superfluidity। Berlin, Heidelberg: Springer Berlin Heidelberg। পৃষ্ঠা 139–173। আইএসবিএন 9783540680048।
  3. Hunt, Tim (৮ আগস্ট ২০১৫)। "Pursuing the impossible: an interview with Tim Hunt"BMC Biology13: 64। doi:10.1186/s12915-015-0164-y। PMID 26253553পিএমসি 4528683
  4. Creative Breakthroughs | Tim Hunt | TEDxLancasterU
  5. BBC Radio 4 interview with Jim Al-Khalili on The Life Scientific
  6. Hunt, Richard Timothy (১৯৬৯)। The synthesis of haemoglobin (গবেষণাপত্র)। University of Cambridge। ওসিএলসি 885437139টেমপ্লেট:EThOS
  7. Hunt, Tim; Hunter, Tony; Munro, Alan (১৯৬৮)। "Control of haemoglobin synthesis: Distribution of ribosomes on the messenger RNA for α and β chains"। Journal of Molecular Biology36 (1): 31–45। doi:10.1016/0022-2836(68)90217-9। PMID 5760537
  8. Hunt, Tim; Hunter, Tony; Munro, Alan (১৯৬৮)। "Control of haemoglobin synthesis: a difference in the size of the polysomes making alpha and beta chains"। Nature220: 481–483। doi:10.1038/220481a0। PMID 5686164
  9. Jackson, Peter K. (জুলাই ২০০৮)। "The Hunt for Cyclin"। Cell134 (2): 199–202। doi:10.1016/j.cell.2008.07.011
  10. "Understanding how cells divide – the story of a Nobel prize"Cancer Research UK - Science blog। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৫
  11. The Nobel Prize in Physiology or Medicine 2001 Illustrated Lecture
  12. Liz Hunt (২১ ডিসেম্বর ২০১০)। "Sir Tim Hunt: I am interested in how cells know what they are and how they should behave (Interview)"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫
  13. "Tim Hunt biography on the web pages of the Francis Crick Institute"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৯
  14. "Shaw Prize Website: Selection Committee"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫
  15. Academia Superior - Academic Advisory Board. Retrieved March 30, 2019.
  16. "Tim Hunt plaudits (Letter to the editor)"The Times। ২৩ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫
  17. Whipple, T. (২৩ জুন ২০১৫)। "Women scientists defend 'sexist' Nobel winner"The Times। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫
  18. Torres, Isabel (এপ্রিল ২০১৪)। ""I Believe in Giving Power to the Young""Labtimes। Freiburg: LJ-Verlag। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৯
  19. Robin McKie (১৯ ডিসেম্বর ২০১৫)। "Tim Hunt and Mary Collins: 'We're not being chased out of the country. Our new life's an adventure'"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫
  20. Varmus H E, Schmidt B P. 2016 Jun 27. Video - Panel Discussion (2015) - Communication Overkill? (Panelists Schmidt, Varmus, Ladd, McNutt, Rehman; Moderator: Adam Smith). Discussion at 1:15:45. Accessed 2019 Mar 31.
  21. Sim, Walter (১৭ মার্চ ২০১৯)। "Nobel laureates urge governments to promote active ageing and embrace 100-Year Life idea"The Straits Times। Tokyo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৯
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.