হাওয়ার্ড ফ্লোরি

স্যার হাওয়ার্ড ফ্লোরি (সেপ্টেম্বর ২৪, ১৮৯৮ - ফেব্রুয়ারি ২১, ১৯৬৮) একজন বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী অস্ট্রেলীয় জীববিজ্ঞানী। তিনি ১৯৪৫ সালে অ্যান্টিবায়োটিক আবিস্কারে অবদান রাখার জন্য জীববিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

হাওয়ার্ড ওয়াল্টার ফ্লোরি
জন্মহাওয়ার্ড ওয়াল্টার ফ্লোরি
সেপ্টেম্বর ২৪, ১৮৯৮
অ্যাডিলেড, সাউথ অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যুফেব্রুয়ারি ২১, ১৯৬৮
অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্য
কর্মক্ষেত্রBacteriology, immunology
প্রাক্তন ছাত্রঅ্যাডিলেড, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণDiscovery of penicillin's properties
উল্লেখযোগ্য
পুরস্কার
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯৪৫)

জন্ম ও পরিবার

স্যার হাওয়ার্ড ফ্লোরি ১৮৯৮ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা যোসেফ ফ্লোরি ও মা বার্থা ফ্লোরি। ১৯২৬ সালে ফ্লোরি ম্যারি ইথেল হেয়টার রিডকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান রয়েছে।

শৈশব ও শিক্ষা

শৈশবে তার শিক্ষা শুরু হয় অ্যাডিলেডের সেন্ট.পিটার'স কলেজিয়েট স্কুলে। ১৯২১ সালে তিনি অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। বিএসসি ও এমএ করার সময় অক্সফোর্ডের ম্যাগডালেন কলেজে তিনি রোড'স বৃত্তি লাভ করেন। অতঃপর তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে জন লুকাস ওয়ালকারের ছাত্র হিসেবে গমন করেন। ১৯২৫ সালে তিনি রকফেলার বৃত্তি নিয়ে এক বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন। ১৯২৬ সালে দেশে ফিরে গনভিল ও ক্যাইয়াস কলেজ থেকে ১৯২৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। একই সময় তিনি লন্ডনের ফ্রিডম রিসার্চ ফেলোসিপ (FreeDom Research Fellowship) নিয়ে লন্ডন হসপিটালে কাজ করেন।

কর্মজীবন

১৯২৭ সালে তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৩১ সালে শেলফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি যোসেফ হান্টার চেয়ার ওব প্যাথলজি (Joseph Hunter Chair of Pathology) অধিকার করেন। ১৯৩৫ সালে শেলফিল্ড ছেড়ে তিনি লিঙ্কন কলেজে প্যাথলজির অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি অক্সফোর্ডের কুইন্স কলেজের প্রভোস্ট হিসেবে যোগদেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাকে সেনাবাহিনীতে কনসাল্টেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ানিউজিল্যান্ডে নুফিল্ড ভিসিটিং প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ ফ্লোরি রয়েল সোসাইটির প্রধান ও রয়েল কলেজ অফ ফিজিসিয়ান্‌স এর ফেলো ছিলেন।

অ্যান্টিবায়োটিক আবিস্কার

তার প্রধান কাজ শুরু হয় চেইন এর সাথে কাজ করার সময় থেকে। ১৯৩৮ সালে তারা প্রাকৃতিক অণুজীব বিরোধী রসায়নের উপর গবেষণা শুরু করেন। প্রথমত, তারা লাইসোজাইম এর উপর কাজ করেন, কিন্তু পরে তারা অ্যান্টিবায়োটিকের উপর কাজ শুরু করেন।

পেনিসিলিন বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং আবিস্কার করেছিললেন। তিনি দেখেছিলেন ছাতা কিছু ব্যাক্টেরিয়া বিরোধী পদার্থ তৈরি করতে পারে। কিন্তু, ফ্লেমিং সেই রসায়নিক পদার্থ পৃথক করতে পারেননি। ১৯৩৯ সালে ফ্লোরি ও চেইন এক দল ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের দলের নেতৃত্ব দেন। তাদের কাজ ছিল ঐ পদার্থটি পৃথক করা ও প্রস্তুত করার জন্য গবেষণা করা। এই গবেষণার খরচ যুগিয়েছিল, আমেরিকার রকফেলার ফাউন্ডেশন। ১৯৪০ সালে তারা রিপোর্ট প্রকাশ করেন, কিভাবে পেনিসিলিন দেহের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়াকে ধবংস করে। এরপর, সরকার এই গবেষণায় সাহায্য করত এগিয়ে আসে। ফলশ্রুতিতে, পর্যাপ্ত পরিমাণ পেনিসিলিন তৈরি করা সম্ভব হয়, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অনেক সৈনিকের প্রাণ বাচিয়েছিল।

পুরস্কার

বিশ্বের প্রায় ১৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানিত ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। তিনি বিশ্বব্যাপি অনেক জীববিজ্ঞান ও ঔষধ সম্পর্কিত সংগঠনের সদস্য। ১৯৪৪ সালে তাকে নাইট উপাধি প্রদান করা হয়।

মৃত্যু

১৯৬৮ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এই মহান বিজ্ঞানী পরলোক গমন করেন।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.