জিম পিবল্‌স

ফিলিপ জেমস এডুইন পিবল্‌স OM এফআরএস (ইংরেজি: Philip James "Jim" Edwin Peebles; জন্ম ২৫ এপ্রিল ১৯৩৫) ২০১৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী একজন কানাডীয়-মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী। পিবল্‌স বর্তমানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে সংখ্যাতিরিক্ত সাম্মানিক অধ্যাপক (এমেরিটাস প্রফেসর) হিসেবে নিয়োজিত আছেন।[3][4] তিনি ১৯৭০-এর দশক থেকে তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের আদি পরমাণুকেন্দ্র সংশ্লেষণ (প্রিমর্ডিয়্যাল নিওক্লিওসিনথেসিস), তমোপদার্থ এবং মহাজাগতিক তরঙ্গ নিয়ে কাজ করার জন্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তার লেখা তিনটি গ্রন্থ ফিজিক্যাল কসমোলজি ("ভৌত বিশ্বতত্ত্ব", প্রকাশনাকাল ১৯৭০), লার্জ স্কেল স্ট্রাকচার অব দি ইউনিভার্স ("মহাবিশ্বের বৃহৎ মাপের কাঠামো", প্রকাশনাকাল ১৯৮০) এবং প্রিন্সিপালস অব ফিজিক্যাল কসমোলজি ("ভৌত বিশ্বতত্ত্বের মূলনীতিসমূহ", প্রকাশনাকাল ১৯৯৩) পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিগণিত হয়। তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে মৌলিক গবেষণা মহাবিশ্বের গঠন ও ক্রমবিকাশের পাঠে নতুন আলোর সঞ্চার করার আবিষ্কারের স্বীকৃতিতে ২০১৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন (মিশেল মাইয়র এবং দিদিয়ে কেলোজ-এর সাথে)।[2][5]

জিম পিবল্‌স

OM এফআরএস
জন্মফিলিপ জেমস এডুইন পিবল্‌স
(1935-04-25) ২৫ এপ্রিল ১৯৩৫
উইনিপেগ, ম্যানিটোবা, কানাডা
কর্মক্ষেত্র
  • তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান
  • নভোপদার্থবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানপ্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাক্তন ছাত্র
পরিচিতির কারণজ্যোতির্বিজ্ঞানে অণুতরঙ্গ তেজস্ক্রিয়তা
উল্লেখযোগ্য
পুরস্কার
  • এডিংটন পদক (1981)
  • হাইনম্যান প্রাইজ (1982)
  • রয়েল সোসাইটির ফেলো (সভ্য) নির্বাচিত (1982)[1]
  • হেনরি নরিস রাসেল লেকচারশীপ (1993)
  • ব্রুস পদক (1995)
  • অস্কার ক্লাইন পদক (1997)
  • গোল্ড মেডেল অব দ্য রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাওয়ার্ড (1998)
  • হার্ভে পুরস্কার (2001)
  • শ পুরস্কার (2004)
  • ক্রাফোর্ড পুরস্কার(2005)
  • হিটকক প্রফেসরশীপ (2006)
  • ডিরেক পদক (2013)
  • অর্ডার অব ম্যানিটোবার সদস্য নির্বাচিত (2017)
  • নোবেল পুরস্কার (2019)[2]

প্রারম্ভিক জীবন

পিবল্‌স ১৯৩৫ সালের ২৫শে এপ্রিল কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশের উইনিপেগ শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানে ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক উপাধি লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যয়ন শেষ করে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, যেখান থেকে তিনি রবার্ট ডিক-এর তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট উপাধি অর্জন করেন।[6] তিনি তার উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্মজীবনের বাকি অংশ প্রিন্সটনে কাটিয়েছেন।

উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্মজীবন

বৃহৎ বিস্ফোরণ প্রতিমান (মডেল) নিয়ে পিবল্‌সের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ২০১৯ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস বলছে, পিবলসের কাজ পুরো জ্যোতির্বিদ্যার গবেষণাকেই সমৃদ্ধ করেছে এবং গত ৫০ বছর ধরে সৃষ্টিতত্ত্বের ধারণাগুলোকে বিজ্ঞানের রূপ দিতে ভূমিকা রেখেছে। আজকের বিশ্বে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বকে যেভাবে দেখেন, তার কাঠামো তৈরি করে দিয়েছে পিবলসের তত্ত্বীয় কাজ।[5] পিবল্‌স, ডিক ও অন্যান্যরা মহাজাগতিক অণুতরঙ্গের তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করেন, তার প্রায় দুই দশক আগে জর্জ গ্যামোভ, রালফ অ্যা. আলফাররবার্ট হারম্যান এই তিনজন বিজ্ঞানীও এই বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন।

১৯৭০-এর দশকে তিনি বৃহৎ বিস্ফোরণ, নিউক্লিয়াস বা পরমাণুকেন্দ্র সংশ্লেষণ, তমোপদার্থতমোশক্তি নিয়ে অবদানের পথিকৃৎদের অন্যতম ছিলেন।[7]

তিনি মহাবিশ্বের গঠন কেমন হবে এবং এর মধ্যে অবস্থিত পদার্থ এবং শক্তি নিয়ে ধারণা দিয়েছিলেন। মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ (CMB)-এর অনুমান করেছিলেন তিনি। যা পরবর্তীতে সঠিক বলে প্রমাণ হয়। তিনি ছায়াপথপুঞ্জের ধারণা দেন! ছায়াপথপুঞ্জ হলো অনেকগুলি ছায়াপথের সমাহার। আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমরা শুধু মাত্র ৫% সম্পর্কে জানি। বাকি ৯৫% -ই হচ্ছে তমোপদার্থ এবং তমোশক্তি। তমোপদার্থের কারণে ছায়াপথ অধিক ভরের হয়ে থাকে আর তমোশক্তির কারণে মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। তমোপদার্থের আধুনিক প্রতিমানও এসেছে তার হাত ধরেই! পিবল্স‌ নোবেল পুরস্কারের সংবাদ সম্মেলনে বলেন,“যদিও আমরা মহাবিশ্বের বিবর্তন সম্পর্কে অনেক কিছু বুঝেছি, তারপরও অনেক প্রশ্ন বাকি আছে যেগুলোর উত্তর এখনও অনিশ্চিত।”

তার লেখা তিনটি গ্রন্থ ফিজিক্যাল কসমোলজি ("ভৌত বিশ্বতত্ত্ব", প্রকাশনাকাল ১৯৭০), লার্জ স্কেল স্ট্রাকচার অব দি ইউনিভার্স ("মহাবিশ্বের বৃহৎ মাপের কাঠামো", প্রকাশনাকাল ১৯৮০) এবং প্রিন্সিপালস অব ফিজিক্যাল কসমোলজি ("ভৌত বিশ্বতত্ত্বের মূলনীতিসমূহ", প্রকাশনাকাল ১৯৯৩) পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিগণিত হয়।

সম্মাননা

পুরস্কারসমূহ

  • এডিংটন পদক (1981)
  • হাইনম্যান প্রাইজ (1982)
  • রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত (1982)[1]
  • হেনরি নরিস রাসেল লেকচারশীপ (1993)
  • ব্রুস পদক (1995)
  • অস্কার ক্লেইন পদক (1997)
  • গোল্ড মেডেল অব দ্য রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাওয়ার্ড (1998)
  • হার্ভে পুরস্কার (2001)
  • শ পুরস্কার (2004)
  • ক্রাফোর্ড পুরস্কার(2005)
  • হিটকক প্রফেসরশীপ (2006)
  • ডিরেক পদক (2013)
  • অর্ডার অব ম্যানিটোবার সদস্য নির্বাচিত (2017)
  • নোবেল পুরস্কার (2019)[2]

'

তথ্যসূত্র

  1. "Phillip Peebles biography"। Royal Society। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৭
  2. "The Nobel Prize in Physics 2019"Nobel Media AB। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৯
  3. "Princeton University Physics Department"। মে ১১, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  4. "Princeton University News"। এপ্রিল ১৩, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
  5. "মহাবিশ্বের নতুন পাঠে নোবেল"bdnews24। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৯
  6. Seeing Cosmology Grow
  7. "Announcement-The Shaw Laureate in Astronomy 2004"। Shaw Foundation। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.